আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
40 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (1 point)
আমার খুব কাছে একজন মেয়ে বন্ধুর সাথে আমার খুবই ভাল সম্পর্ক ছিল বেশ দীর্ঘদিন। এক পর্যায়ে আমরা দুজনই দুজনের উপর আবেগী হয়ে শারীরিক সম্পর্ক করতে থাকি (বেশ কয়েকবার)। আমরা দুজনেই অবিবাহিত ছিলাম তখন। আমার মনে আল্লাহর ভয় আসায় এবং আমাদের শারীরিক সম্পর্ক বেড়ে যাওয়ায়, আমি তড়িঘড়ি করে অন্যত্র বিবাহ করি, যেন অবৈধ শারীরিক সম্পর্ক থেকে মুক্ত হতে পারি। সে তখনও অবিবাহিত। আমি বেশ কিছুদিন নিজেকে আটকে রাখি। একটা সময়, আমি আবারও শারীরিক সম্পর্কে জড়াই তার সাথে। এবার সে বিবাহ করে। কিন্তু তার কিছু ব্যক্তিগত মুহুর্তের ছবি আমার কাছে থাকায় তাকে আমি আবারও শারীরিক সম্পর্ক করতে বাধ্য করি, সে করে।

ইতিমধ্যে আমি বুঝতে পারি, এ অবৈধ সম্পর্কের কারণে আমার স্ত্রীর সাথে আমার অনেক দূরত্ব হয়ে গেছে। এবং আমাকে অর্থলোভে পেয়ে বসে, আমার কাছে যেহেতু তার বেশ কিছু ছবি ছিলই, আমি ফেইক পরিচয়ে তার কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে আনুমানিক ৩ লক্ষ টাকা নেই। সে অনেক কষ্ট করে টাকাটা দেয় আমাকে। এবং এরপরেই সে দেশ ছেড়ে স্বামীসহ লন্ডনে চলে যায়।

যেহেতু আমরা তখনও ভাল বন্ধু ছিলাম, সে আমাকে প্রায়ই বলত, যে বা যারা তার কাছ থেকে অন্যায়ভাবে টাকা নিল এবং এত কষ্ট দিল, তাদের সে ক্ষমা করবে না।

যাই হোক একটা সময়ে আমি আমার সকল ভুল বুঝতে পারি, একদিন ফজরের নামাজ পড়ার পরে আমার মনে হল আর না, সাথেসাথেই তার সকল প্রমাণ (ব্যক্তিগত ছবি, ভিডিও) আমি ডিলেট করে দেই। এখন কিছুই নাই। আমি পরিপূর্ণ আল্লাহর পথে ফিরে আসার চেষ্টা করি এবং আল্লাহর রহমতে গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে দ্বীনের সাথে আছি, আল্লাহর অনুগ্রহে, এই এক বছরেরও কিছুটা বেশি সময়ের মধ্যে হাতে গুণা কয়েক ওয়াক্ত নামাজ জামাত ছাড়া (তাও উপযুক্ত ওজর আছে) পড়েছি। কিছুদিনে আগে উমরাহ হজ্জ্বও করে আসছি।

এখন আমার সমস্যা হল:

১। তার টাকা আমি তো হারাম উপায়ে নিয়েছি, আমি ফেরতও দিতে চাই, কিন্তু কোনভাবে সে যদি জানে মানুষটা আমি, এইটা অনেক ঝামেলা হবে, আমার সাংসারিক ঝামেলা তো আছেই, এক্ষেত্রে কি করতে পারি আমি?

২। সে এখনও দেশের বাইরেই আছে, এবং আমার পরিচয় সামনে আনাও সসম্ভব না নিরাপত্তার স্বার্থে। এতে এমনও হতে পারে সে স্ট্রোকও করতে পারে যদি জানে আমিই তারে এত কষ্ট দিছি। আমি কিভাবে তার মনে যে এত কষ্ট দিয়েছি তা হতে ক্ষমা পেতে পারি?

৩। আমি নামাজের / ইবাদতের একচুয়াল টেস্টটা পাচ্ছি না, আমার মনে হয় এর পিছনে তার মনে কষ্ট দেওয়া, তার আর্থিক ক্ষতি করা, শারিরীক ক্ষতি করা, এসবই দায়ী। আমি ১.৫ বছর ধরে চেষ্টা করেও বাবা হতে পারছি না। আমি কি করব এমতাবস্থায়?

৪। আমি আমার বিবাহের আগে এবং পরে, দুইসময়ই যিনা করেছি, এর সমাধান কি হতে পারে এখন?

৫। কুরআন এবং নামাজ আমার অন্তরকে নাড়া দিচ্ছে না সেটা আমি বুঝতে পারি, আমার অপরাধের কথা মনে আসায় কান্নাও আসে না, আমার অন্ত্র মনে হয় আল্লাহ সীলগালা করে দিয়েছেন। আমাকে কিছু আমল শিক্ষা দিন।

আমি আরও বেশি সংশোধন কিভাবে হতে পারি, সে জ্ঞানও আমাকে দিন, আমার জন্যে দুয়াও করবেন। আমার নাম না প্রকাশ করা শর্তে, আমাকে উত্তরগুলো দিলে অনেক উপক্রিত হব।

1 Answer

0 votes
ago by (597,300 points)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
قُلۡ يَٰعِبَادِيَ ٱلَّذِينَ أَسۡرَفُواْ عَلَىٰٓ أَنفُسِهِمۡ لَا تَقۡنَطُواْ مِن رَّحۡمَةِ ٱللَّهِۚ إِنَّ ٱللَّهَ يَغۡفِرُ ٱلذُّنُوبَ جَمِيعًاۚ إِنَّهُۥ هُوَ ٱلۡغَفُورُ ٱلرَّحِيمُ-
‘হে আমার বান্দারা যারা নিজেদের ওপর যুলম করেছো তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ সকল গুনাহ মাফ করবেন। তিনি ক্ষমাশীল দয়ালু।’ (সূরা আয-যুমার, আয়াত: ৫৩)

এ আয়াতটি মহান পালনকর্তার অনুগত ও আজ্ঞাবহ তাওবাকারীদের জন্য সুসংবাদস্বরূপ।

আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:
وَمَن يَعۡمَلۡ سُوٓءًا أَوۡ يَظۡلِمۡ نَفۡسَهُۥ ثُمَّ يَسۡتَغۡفِرِ ٱللَّهَ يَجِدِ ٱللَّهَ غَفُورٗا رَّحِيمٗا- 
‘যে গুনাহ করে কিংবা নিজের ওপর যুলম করে অতঃপর আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে তখন সে আল্লাহকে ক্ষমাশীল ও করুণাময় পাবে।’ (সূরা আন-নিসা, আয়াত: ১১০)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
অতীতের সমস্ত গেনাহের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। ঐ নারীর কাছ থেকে যেই টাকা নিয়েছেন, সেই টাকা তাকে যে কোনো উপায়ে হস্তান্তর করুন। তাকে তার টাকা হস্তান্তর করা ব্যতিত তাওবাহ কবুল হবে না। যেকোনো ভাবে তার একাউন্ট নাম্বার সংগ্রহ করে নাম পরিচয় ব্যতিত তার টাকা তার একাউন্টে দিয়ে দিবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...