আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
47 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (3 points)
আসসালামু আলাইকুম। আমি গ্রামীণ ব্যাংক এ চাকরি করতাম। অবসরে আসার পর আমার পুরো টাকাই আমি ব্যাংক এ রেখে দেই সুদের ভিত্তিতে।কারণ আমার স্বামী আমার সংসার এর দায়িত্ব নিতে অবহেলা করতেন। আমার এবং আমার দুই মেয়ের পড়াশোনার সকল খরচ আমি বহন করতাম। আমি তখনও জানতাম না যে সুদ হারাম।যখন জানতে পেরেছি তখন আমি আল্লাহর কাছে তওবা করেছি এবং সিদ্ধান্ত নিয়েছি ব্যাংকে রাখা টাকার যখন মেয়াদ শেষ হবে,তারপর আর কোনোমতেই ব্যাংকে টাকা রাখব না। ৩ মাস আগে আমার একাউন্ট ম্যাচিউরড হয়েছে এবং আমি টাকা উঠিয়ে নিয়ে এসেছি।এই ৩ মাস‌ আমার স্বামী সংসার এর ব্যায়ভার বহন করেছে। আমার স্বামী আমার সংসার এর পাশাপাশি তার ভাইয়ের সংসারের খরচ বহন করেন । আমি এই ব্যাপারে কোনো দিন তাকে কিছু বলি নি। একসাথে ২টা সংসার চালাতে গিয়ে তিনি যখনি হিমশিম খাচ্ছেন তখনি তিনি আমার দায়িত্ব আমাকে নিজেকে নিতে বলছেন । এমনকি মেয়েরা যদি তার সাথে যায় তাহলে তাদের দায়িত্ব নিবেন। নাহলে আমাদের ৩জনের দায়িত্বই আমাকে নিতে বলছেন।আমার স্বামীকে টাকা গুলো দিয়ে জমি কিনে দিতে বলেছি। তিনি আমাকে জমি কিনে দেন নি। এখন আমাকে জোর করছেন আমি যেন টাকা গুলো আবার সুদের ভিত্তিতে ব্যাংকে রেখে দেই।এ বিষয় নিয়ে আমার স্বামী প্রায়ই আমার সাথে কথা বলা বন্ধ করে দেন।আবার এখন বলছেন আমার ২ সন্তান কে নিয়ে অন্য জায়গায় থাকবেন । আমার কোনো দায় দায়িত্ব নিবেন না এই জন্য যে তার কথা মতো ব্যাংকে টাকা না রেখে আমি তার অবাধ্যতা করেছি। আমি আর ব্যাংকে টাকা রেখে সুদ খেতে চাই না।আমি আমার আল্লাহর কাছে তওবা করে বলেছি আর কখনো সুদ খাব না।
প্রশ্ন ১: টাকা ব্যাংক এ রাখার ব্যাপারে আমি যে স্বামীর অবাধ্যতা করেছি এতে কি আমার পাপ হবে?

প্রশ্ন:২:এখন এই পরিস্থিতিতে আমার করণীয় কি?

1 Answer

0 votes
by (572,970 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

https://ifatwa.info/38201/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
হাদীস শরীফে এসেছেঃ  
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:

لَوْ كُنْتُ آمِرًا أَحَدًا أَنْ يَسْجُدَ لِغَيْرِ اللهِ لأَمَرْتُ الْمَرْأَةَ أَنْ تَسْجُدَ لِزَوْجِهَا وَالَّذِى
نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ لاَ تُؤَدِّى الْمَرْأَةُ حَقَّ رَبِّهَا حَتَّى تُؤَدِّىَ حَقَّ زَوْجِهَا وَلَوْ سَأَلَهَا نَفْسَهَا وَهِىَ عَلَى قَتَبٍ لَمْ تَمْنَعْهُ-

“যদি আমি কাউকে নির্দেশ দিতাম আল্লাহ ব্যতীত অন্যকে সিজদা করার, তাহ’লে স্ত্রীকে নির্দেশ দিতাম তার স্বামীকে সিজদা করার জন্য।ঐ সত্তার শপথ করে বলছি যার হাতে আমার জীবন, মহিলারা ঐ পর্যন্ত আল্লাহর হক আদায় করতে পারে না যতক্ষণ পর্যন্ত সে স্বামীর হক আদায় না করে, এমনকি স্বামী যদি যাত্রা পথে ঘোড়ার পৃষ্ঠেও তাকেও আহবান করে তখনও তাকে বাধা না দেয়।” (ইবনে মাজাহ হা/১৮৫৩; সহীহাহ হা/১২০৩।)

ইফকের ঘটনায় মা আয়েশা রা. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকট তার বাবা-মার কাছে যাওয়ার অনুমতি চাওয়ার হাদিস:
তিনি বলেন:
أتأذن لي أن آتي أبوي

“(হে আল্লাহর রাসূল,) আপনি কি আমাকে আমার বাবা-মার কাছে যাওয়ার অনুমতি দিবেন?” (সহিহ বুখারী ও মুসলিম)

لا يجوز للمرأة الخروج من بيت زوجها إلا بإذنه ، لا لوالديها ولا لغيرهم ؛ لأن ذلك من حقوقه عليها ، إلا إذا كان هناك مسوغ شرعي يضطرها للخروج

“কোন মহিলার জন্য স্বামীর অনুমতি ছাড়া বাড়ির বাইরে যাওয়া জায়েয নয়। পিতামাতা বা অন্য কারো নিকট নয়। কারণ এটি তার উপর স্বামীর হক। অবশ্য যদি শরিয়ত সম্মত বিশেষ কোনো কারণ থাকে তাহলে ভিন্ন কথা।” (ফাতাওয়া লাজনা দায়েমা ১৯/১৬৫)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
স্ত্রীর জন্য জরুরি হল, বিশেষ কোনো কাজে বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন হলে স্বামীর নিকট অনুমতি নেয়া। স্বামী অনুমতি দিলে পরিপূর্ণ পর্দা সহকারে এবং নিজেকে ফিতনা থেকে হেফাযতে রেখে স্ত্রী বাইরে যেতে পারে। দূরে কোথাও যাওয়ার দরকার হলে অবশ্যই তার পিতা, ভাই ইত্যাদি মাহরাম পুরুষের সাথে যাবে। কিন্তু স্বামী যদি তাকে যেতে নিষেধ করে তাহলে স্ত্রীর জন্য তা লঙ্ঘন করা বৈধ নয়। অন্যথায় সে স্বামীর ‘অবাধ্য’ হিসেবে গণ্য হবে এবং গুনাহগার হবে।

চার মাযহাব সম্বলীত সর্ব বৃহৎ ফেক্বাহী গ্রন্থ 'আল-মাওসু'আতুল ফেক্বহিয়্যায়' রয়েছে,
" ﻃﺎﻋﺔ ﺍﻟﻤﺨﻠﻮﻗﻴﻦ - ﻣﻤّﻦ ﺗﺠﺐ ﻃﺎﻋﺘﻬﻢ – ﻛﺎﻟﻮﺍﻟﺪﻳﻦ ، ﻭﺍﻟﺰّﻭﺝ ، ﻭﻭﻻﺓ ﺍﻷﻣﺮ : ﻓﺈﻥّ ﻭﺟﻮﺏ ﻃﺎﻋﺘﻬﻢ ﻣﻘﻴّﺪ ﺑﺄﻥ ﻻ ﻳﻜﻮﻥ ﻓﻲ ﻣﻌﺼﻴﺔ ، ﺇﺫ ﻻ ﻃﺎﻋﺔ ﻟﻤﺨﻠﻮﻕ ﻓﻲ ﻣﻌﺼﻴﺔ ﺍﻟﺨﺎﻟﻖ " ﺍﻧﺘﻬﻰ
যাদের আদেশ-নিষেধ এর অনুসরণ শরীয়ত কর্তৃক ওয়াজিব।যেমন-মাতাপিতা,স্বামী,সরকারী বিধিনিষেধ,এর অনুসরণ ওয়াজিব।
এ হুকুম ব্যাপক হারে প্রযোজ্য হবে না বরং ঐ সময়-ই প্রযোজ্য হবে যখন তা গুনাহের কাজ হবে না।কেননা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত রয়েছে আল্লাহর অবাধ্যতায় কোনো মাখলুকের অনুসরণ করা যাবে না।(২৮/৩২৭)

স্বামী/মাতাপিতার আদেশকে মান্য করা মূলত তিনটি মূলনীতির আলোকে হয়ে থাকে।
(১) তাদের আদেশ কোনো মুবাহ বিষয়ে হতে হবে।কোনো ওয়াজিব তরকের ব্যাপারে হতে পারবে না।এবং কোন হারাম কাজের জড়িত হওয়ার জন্যও হতে পারবে না।
(২)যে কাজের আদেশ তারা দিবেন,এতে তাদের ফায়দা থাকতে হবে,বা শরীয়তের পছন্দসই কাজ হতে হবে।
(৩)যে কাজের আদেশ দিচ্ছেন,তা তাদের সন্তানদের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারবে না।

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/1707

এ সম্পর্কে আরো জানুনঃ-https://www.ifatwa.info/1722

★স্ত্রী ও সন্তানদের ভরনপোষণ দেয়া স্বামীর উপর ওয়াজিব।

এ সংক্রান্ত জানুনঃ- 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
(০১)
এতে আপনার কোনো গুনাহ হবেনা।

(০২)
আপনি উভয় পরিবারের মুরব্বিদের মাধ্যমে মিটিং এর ব্যবস্থা করবেন। যাতে সকলেই বুঝিয়ে আপনার ও আপনার সন্তানদের ভরনপোষণ এর ব্যবস্থা আপনার স্বামী করে,সেই বিষয় নিয়ে ফায়সালা করবেন।

আপনি যে গ্রামীণ ব্যাংক এ চাকরি করতেন,সেই চাকরি বেতন সবই হারাম।
সুতরাং আপনার স্বামী যে আপনাকে ব্যাংকে টাকা রাখতে বলতেছে,সেই মূলধনও হারাম,আবার লভ্যাংশ যাহা আসবে,সেটিও হারামা। অর্থাৎ সবই  হারাম আর হারাম।

এভাবে হারামের মধ্যে ডুবে থেকে কোনো মুসলিম চলতে পারেনা।

সুতরাং পারিবারিক ভাবে এর সমাধান দ্রুত আবশ্যক। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...