আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
406 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (14 points)
১.জয়েন ফ্যামিলিতে থাকি। সন্তান নেই। এমন অবস্থায় আমি জানি আমার দায়িত্ব হচ্ছে স্বামীর দেখভাল করা, তার খেদমত করা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। কিন্তু সংসারের রান্নাবান্নার দায়িত্ব আমি নিতে চাইলেও শাশুড়ী দেন না। এ নিয়ে অনেক অশান্তিও হয়েছে। সমস্যা হচ্ছে আমার স্বামীকে প্রায়ই সকালে না খেয়ে বের হতে হয়। আমার খুব খারাপ লাগে যে না খেয়ে যাচ্ছে, আমি আমার দায়িত্ব পালন করতে পারছিনা,  আমাকে রান্নার দায়িত্বও দিচ্ছেন না এবং নিজেও উদাসীন।  এ অবস্থায় যেহেতু আমার স্বামীর খাওয়া দাওয়ায় সামান্য সমস্যা হচ্ছে, এতে কি আমি তার হক আদায় না করার জন্য আল্লাহর নিকট গুনাহগার হবো??


উল্লেখ্য ঘরে ২ জন নন মাহরাম সর্বক্ষণ  থাকায় আমি রুমের বাইরে অন্যদের রুমের টুকটাক কাজ যেমন ঘর ঝাড়মোছা বা পরিষ্কার করতে যাইনা। কিন্তু আমাকে এসব কাজের জন্য বলেন। কথাও শুনান এসব করিনা বলে। আমার কাছে মনে হয় পর্দা নষ্ট হচ্ছে, ঝাড়মোছা করার সময় খুব বিশ্রী লাগবে নিজেকে। আমি এখন এ অবস্থায় কী করতে পারি? যেহেতু সন্তান নেই শুধু স্বামীর উপর আমার দায়িত্ব তাও পালন করতে পারছিনা অনেক অংশে। প্রশ্ন হচ্ছে এর জন্য কি আমাকে আল্লাহর নিকট জবাবদিহি করতে হবে??


২.আমি একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট।  নকডাউনের কারণে বিয়ের পর থেকে বাসায়ই আছি। লকডাউন শেষ হলে যদি ভার্সিটি তে যেতে হয় তবে সেটা সফর দূরত্বে এবং নিজের একার থাকা লাগবে। আমার মনে হয় দূরে থাকলে তো আমি আমার দায়িত্ব পালন করতে পারব না। আমার একা দূরে থাকতে ইচ্ছা করে না কিন্তু আমার স্বামী খুব আগ্রহ করেন এবং আমি পড়তে না চাইলেও বাধা দেন। এমন অবস্থায় দূরে একা থেকে পড়াশোনা করা কি জায়েজ হবে আমার জন্য?যেহেতু স্বামীর অনুমতি আছে

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
স্ত্রীর জন্য জরুরি হলো স্বামীর অধিকার রক্ষা করা,তার সাথে সদব্যবহার করা।
অনুরূপ ভাবে স্বামীর জন্যেও জরুরি হলো  স্ত্রীর অধিকার রক্ষা করা,তার সাথে সদব্যবহার করা।

নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন

ألا واستوصوا بالنساء خيرا، فإنما هن عوان عندكم ليس تملكون منهن شيئا غير ذلك

শোন হে! তোমরা আমার পক্ষ হতে নারীদের প্রতি সদাচরণের উপদেশ গ্রহণ কর। তারা তো তোমাদের কাছে আটকে আছে। তোমরা তাদের কাছ থেকে এছাড়া আর কিছুর অধিকার রাখো না। (জামে তিরমিযী, হাদীস: ১০৮৩

কুরআন মাজীদের ভাষ্য অনুযায়ী বিবাহের অন্যতম প্রধান লক্ষ হলো

لِتَسْكُنُوا إِلَيْهَا

যাতে তোমরা স্ত্রীদের সান্নিধ্যে পৌঁছে (দেহমনের) প্রশান্তি লাভ করতে পার (রূম : ২১)। 

হাদীসে আছে,

إذا دعا الرجل زوجته لحاجته فالتأته، وإن  كانت على التنور

স্বামী যখন নিজ প্রয়োজনে স্ত্রীকে ডাকবে তখন সে যেন তাতে সাড়া দেয়, যদিও সে চুলায় (রান্নার কাজে) থাকে (জামে তিরমিযী, হাদীস : ১১৬০; সুনানে নাসাঈ, হাদীস : ৮৯৭১)।

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন স্ত্রীর উপর স্বামীর খেদমত আবশ্যক,সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যেহেতু স্বামীর অধিকাংশ সময়েই না খেয়ে বের হতে হয়,তাই বিষয়টি স্বামীর সাথে বসে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
প্রয়োজনে পারিবারিক ভাবে বসে রান্নার বিষয়টি নিয়ে  আলোচনা করেই বিষয়টি মিটমাট করতে হবে।
,
তারপরেও যদি রান্নার কাজ আপনার উপর রাখা দেওয়া হয়,আর আপনার স্বামী এই কষ্টকে মেনে নেয়,তাহলে তো কোনো সমস্যাই নেই।
,
তবে প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে স্বামীর না খেয়ে যাওয়াতে আপনার কোনো গুনাহ হবেনা।
,
উক্ত ঘর মোছা ইত্যাদি কাজ আপনার উপর শরীয়ত কর্তৃক জরুরি নয়।
তারপরেও যেহেতু পর্দার সমস্যা আছে,তাই সেই রুম গুলো পরিস্কারের জন্য কোনোভাবেই আপনার যেতে হবেনা।
,
বিষয়টি নিয়ে সমস্যা করা হলে পর্দার বিষয়টি বুঝাবেন,না বুঝলে এটার জন্যেও পারিবারিকভাবে স্বামী সহকারে বসে বুঝান। 
,
ইনশাআল্লাহ সমাধান হবে।  

আরো জানুনঃ 
,
(০২)
★প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে মহিলাদের জন্য হোস্টেলে থেকে পর্দার শহিত, শরিয়তের বিধি বিধান মেনে চলে, জ্ঞানার্জন  করা জায়েজ আছে।

তবে শর্ত হলো হোস্টেলে কোনো পুরুষ না থাকা,ফেতনার আশংকা না থাকা,সফরের দূরত্বে হল সেখানে আসা যাওয়ার মাঝে কোনো মাহরাম পুরুষের সাথে যাওয়া ইত্যাদি।   

হাদীস শরীফে এসেছেঃ    

عن أبي سعيد الخدري قال قال رسول الله صلى الله عليه و سلم لا يحل لإمرأة تؤمن بالله واليوم الآخر أن تسافر سفرا يكون ثلاثة أيام فصاعدا إلا ومعها أبوها أو ابنها أو زوجها أو أخوها أو ذو محرم منها

হযরত আবু সাঈদ খুদরী রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ আল্লাহ তাআলা এবং কিয়ামত দিবসের উপর ঈমান রাখে
এমন কোন মহিলার জন্য জায়েজ নয়, তিন দিন বা এর চেয়ে অধিক দিনের সফর করে অথচ তার সাথে তার পিতা, তার ছেলে, বা তার স্বামী বা তার ভাই কিংবা কোন মাহরাম না থাকে। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৪২৩}

বিস্তারিত জানুনঃ 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...