আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
49 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (7 points)
আসসালামু আলাইকুম,
ওস্তাদ আমি একজন জেনারেল শিক্ষিতা মেয়ে এবং আই ও এম এর আলিম প্রিপারেটরী কোর্স এর ছাত্রী এই তো এবার ফারেগ হয়ে যাবো ইন শা আল্লাহ। দ্বীনের পথে অটলভাবে চলার জন্য চাকরী করতে ইচ্ছুক নই পর্দা পরিপূর্ণ ভাবে করার জন্য। তাই শুধু দ্বীন দেখে বিবাহ করেছি, উল্লেখ্য আমাদের কুফুতে মিল নাই,
আমার স্বামী একজন আলেম, হাফেজ, মুফতি,

বিবাহ হয়েছে ৭ মাসের মত, শুরু থেকেই কোন ঝামেলা হলে কথা বলা বন্ধ করে দেন, আমার খুব কষ্ট হয় বার বার বলেছি তার পরেও তেমন ই করবে।

তিনি অত্যাধিক রাগী কখনো কখনো কি কারণে রাগ হন সেটাও আমি বুঝতে পারি না, না বলেই রাগ হয়ে যান।

আমাকে বিশ্বাস করতে পারেন না, যদিও কোন দিন কোন কিছু পান নাই অবিশ্বাসের আমার থেকে।

আমার কথা হলো আমাকে কিছু শিখাতে হলে নম্র ভাষায় ভাল বেসে শিখাতে পারে কিন্তু সে রাগই বেশি হয়।

তিনি ফোন,  ল্যাপটপ ব্যবহার করা পছন্দ করেন না, তাই আমিও ভেবেছি আস্তে আস্তে বা কোর্স টা শেষ হলে ছেড়ে দেওয়ার চেষ্টা করবো, তিনি ফেসবুক পছন্দ করেন না আমি ডিলেট করে দিয়েছি যদিও সেখানে শুধু মেয়েরাই এড ছিলো আর সাধারণত দ্বীনের কাজেই ব্যবহার  করা হতো।

যেদিন দেখতে আসেন আমাকে  সেদিন আমি তার স্মার্ট ফোন দেখেছি আমি তাই এ ব্যাপারে তাকে পজিটিভ ই ভেবেছি,  কিন্তু পরবর্তীতে এগুলোর জন্য আমাকে আর মানতে পারে না। উল্লেখ্য যে আমি আই সি টি (টেকনোলজি) তে পড়াশোনা করেছি, যেখানে এগুলা ইউজ স্বাভাবিক বিষয়, বিয়ের আগে সে জানতো যে আমি অনলাইনে পড়াশোনা করি কিন্তু এগুলো নিয়ে কোন আপত্তি তোলে নাই, বিয়ের পরে এই কোর্স টা শেষ করার অনুমতি দিয়েছেন আমাকে তার পর  এর মধ্যে বেশ কয়েকবার না হয়ে গেছেন আবার অনুমতি দিয়েছেন, আমি আগে যেভাবে বেশি এগুলা ইউজ করেছি সেভাবে ইউজ করি না অনেক কমায়ে দিয়েছি যদিও দ্বীনের খাতিরে ইউজ হয় সাধারণত , আর বলছিও যে বাদ দিয়ে দিব ইন শা আল্লাহ,  তিনি মাদ্রাসার আবাসিক শিক্ষক তার সাথে যোগাযোগ এর জন্য ফোন লাগে যেহেতু সে দূরে থাকে,   তারপরও সে আমি কি করতেছি না করতেছি এই চিন্তা করে করে রাগ হয়ে যায়, সে নিজে ঠিকি ইউটিউবে খবর দেখেন আমি বলেছি মেয়েদের কণ্ঠের সংবাদ টা শুনলে আমার খারাপ লাগে তাও শুনে, তার কথা বুযুর্গ রা নাকি স্মার্ট ফোন ব্যবহার করে না, তাই ফোন ইউজ করতে দিবে না।এখন প্রয়োজনের সাপেক্ষে ইউজ করতেছি তার পরো সে মাঝে মাঝেই নিজে নিজে চিন্তা করে এটা নিয়ে খারাপ ব্যবহার করে ফেলে।

আমার ফোন এর সিম জিপি আর এয়ারটেল এর এপ গুলো তার ফোনে লগ ইন করে রেখেছেন, সেখানে দেখেন কয় এম বি ফুরালো কোন সময়, কেন ফুরালো এসবের জন্য মাঝে খারাপ ব্যবহার করে ফেলে, উল্লেখ্য যে এপে সব সময় সঠিক তথ্য দেয় না। আমি জানিও না এমন সময়ের তথ্য নিয়ে আমাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছে এর আগে।

নিজেই কোর্স শেষের অনুমতি দেয়, ফোনে এমবি ভরে দেয় কিনতু সবর করতে পারে না কয়টা দিন।আমি বার বার তাকে জানাইছি আমি ফোনে কোন খারাপ কিছু করতেছি না ক্লাস করা, ইসলামিক লেকচার শোনা,  গজল শোনা, কোন প্রোয়জনীয় যোগাযোগ করা, তাও আগের চেয়ে অনেক
কমে গেছে এগুলা আমার।

এখন আমার কি করণীয়?
সে আমার সম্পর্কে অনেক সময় ই খারাপ ধারণা করে যেগুলো সঠিক নয়, বলে ফেলে যে ভার্সিটিতে পড়া না জানি কি করেছি।অথচ আমি আমার জীবনে কখনোই কোন ছেলের সাথে বন্ধুত্ব করি নাই, তাদের থেকে সব সময় দূরে থাকার চেষ্টা করেছি। তার এ ধরনের কথায় আমার ও তার প্রতি আস্থা হারিয়ে যায়, বার বার হতাশা দেখায়, বলে ফেলে কি করলাম জীবনে,  মানে আমাকে বিয়ে করে হতাশ সেটা বুঝিয়ে ফেলে,

বলে ফেলে মাদ্রাসার মেয়ে হলে এমন হতো না, নিজে যাই করুক আমার আচরণ একটুও খারাপ হওয়া যাবে না। আমাকে ফেরেশতার মত আশা করে, একটু কিছু হতে না হতেই বিচছেদের চিন্তা করে ফেলে,
চিন্তায় চিন্তায় আমার ভাল লাগেনা। এই সংসার টিকবে কিনা সেই চিন্তা হয়।

আমার করণীয় কি ওস্তাদ,  কিভাবে তার আস্থাভাজন ও বিশ্বাসী হতে পারি, যেহেতু ২ জন ২ লাইনের অনেক কিছুতেই মতের অমিল দেখা যায়, কিভাবে ২ জনের সম্পর্ক উন্নত করতে পারি?

আমার বাসা থেকে কিছু দেওয়া হলো না হাদিয়া হিসেবে তেমন যেগুলা আমি নিষেধ করেছি আমার অপছন্দনীয় তাই কিন্তু সে ভাবে যে তাকে দাম দিচ্ছে সম্মান করতেছে না আমার বাসার লোক তাই তাকে দেয় নাই। আমি তাকে দাম দেই না ছোট হই না এসব বলে অথচ রাগ হয়ে থাকলে কোন দিন নিজে থেকে আগাইছে ঠিক করার জন্য এরকম কমই আছে সবসময় আমিই আগাই৷ ভুল থাকলেও ভুল না থাকলেও।

সব কিছু তো অল্প কথায় তুলে ধরা যায় না।অল্প ই তুলে ধরেছি।

আমার কি করণীয় এই সম্পর্ক সুন্দর করার জন্য?

1 Answer

0 votes
by (62,670 points)

ওয়া ‘আলাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্ল-হি ওয়া বারাকা-তুহু।

বিসমিল্লা-হির রহমা-নির রহীম।

জবাবঃ

আলহামদুলিল্লাহ!

وَاسْتَعِينُوا بِالصَّبْرِ وَالصَّلَاةِ ۚ وَإِنَّهَا لَكَبِيرَةٌ إِلَّا عَلَى الْخَاشِعِينَ

ধৈর্য্যর সাথে সাহায্য প্রার্থনা কর নামাযের মাধ্যমে। অবশ্য তা যথেষ্ট কঠিন। কিন্তু সে সমস্ত বিনয়ী লোকদের পক্ষেই তা সম্ভব। (সূরা বাকারা-৪৫)


স্বামীর জন্য জরুরি হলো স্ত্রীর অধিকার রক্ষা করা, তার সাথে সদব্যবহার করা।

নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন

ألا واستوصوا بالنساء خيرا، فإنما هن عوان عندكم ليس تملكون منهن شيئا غير ذلك

শোন হে! তোমরা আমার পক্ষ হতে নারীদের প্রতি সদাচরণের উপদেশ গ্রহণ কর। তারা তো তোমাদের কাছে আটকে আছে। তোমরা তাদের কাছ থেকে এছাড়া আর কিছুর অধিকার রাখো না। (জামে তিরমিযী, হাদীস: ১০৮৩


https://ifatwa.info/91615/ নং ফাতওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ-

ﻭَﻋَﺎﺷِﺮُﻭﻫُﻦَّ ﺑِﺎﻟْﻤَﻌْﺮُﻭﻑ

নারীদের সাথে সদ্ভাবে জীবন-যাপন কর। (সূরা নিসা-১৯)


হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ عَمْرِو بْنِ الأَحْوَصِ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي أَنَّهُ، شَهِدَ حَجَّةَ الْوَدَاعِ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَحَمِدَ اللَّهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ وَذَكَّرَ وَوَعَظَ فَذَكَرَ فِي الْحَدِيثِ قِصَّةً فَقَالَ " أَلاَ وَاسْتَوْصُوا بِالنِّسَاءِ خَيْرًا… أَلاَ وَحَقُّهُنَّ عَلَيْكُمْ أَنْ تُحْسِنُوا إِلَيْهِنَّ فِي كِسْوَتِهِنَّ وَطَعَامِهِنَّ " .

সুলাইমান ইবনু আমর ইবনুল আহওয়াস (রহঃ) হতে তার পিতার সূত্র থেকে বর্ণিতঃ বিদায় হজ্জের সময় তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে ছিলেন। তিনি আল্লাহ তা'আলার প্রশংসা ও গুণগান করলেন এবং ওয়াজ-নাসীহাত করলেন। এ হাদীসের মধ্যে বর্ণনাকারী একটি ঘটনা বর্ণনা করে বলেন, তিনি (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ স্ত্রীদের সাথে ভালো আচরণের উপদেশ নাও। ... জেনে রাখ! তোমাদের প্রতি তাদের অধিকার এই যে, তোমরা তাদের উত্তম পোশাক-পরিচ্ছদ ও ভরণপোষণের ব্যবস্থা করবে। (সুনানে তিরমিযী ১১৬৩)


স্বামীর উপর আবশ্যক হলোঃ- স্ত্রীর সাথে উত্তম ব্যবহার করা। স্ত্রীর সঙ্গে প্রয়োজনে একান্তে বসা ও খোশগল্প করা।

অবসরে স্ত্রীর সঙ্গে একান্তে বসে কিছু গল্পগুজব করা, তার মনের কথা জানা-বোঝা, তার কোনো চাহিদা থাকলে তা জেনে নিয়ে পূরণ করা স্বামীর জন্য জরুরি।  প্রয়োজন মাফিক স্ত্রীকে সময় দেয়া।

বিস্তারিত জানুনঃ-

https://ifatwa.info/26084/


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!


হয়তো আল্লাহ আপনাকে পরীক্ষা করছেন। ধৈর্য্য সহকারে পরিস্থিতির মুকাবেলা করুন। ধৈর্য্য ও নাম্যের মাধ্যমে পরিস্থিতির মুকাবেলা করুন। আল্লাহ আপনার সহায় হোক, আমীন। আল্লাহ তায়ালা আপনাকে ধৈর্য্য ধরার কারণে অনেক অনেক সওয়াব দিবেন ইনশাআল্লাহ।

আল্লাহর কাছে দুআ করতে থাকুন। বিশেষ করে তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ে। আশা করা যায় আল্লাহ তায়ালা আপনার প্রতি তার ভালোবাসা বৃদ্ধি করে দিবেন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...