জবাব,
بسم الله الرحمن الرحيم
আল্লাহ তা'আলা মাতাপিতার আদেশকে মান্য করা এবং তাদের সাথে উত্তম
ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছেন।তাদের অবাধ্য হওয়াকে হারাম ঘোষনা দিয়েছেন।এ বিষয়ে সমস্ত
উলামায়ে কেরাম ঐক্যমত পোষণ করে থাকেন।
মা বাবার সর্বদায় আনুগত্য করতে হবে,তাদের কথার নাফরমানী করা যাবেনা।
তাদের সাথে সর্বদায় ভালো ব্যবহার করতে হবে। তারা কষ্ট পায়,এমন কাজ কখনোও করা যাবেনা।
তাদের হক বা অধিকারসমূহ এবং তাদের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করা সন্তানের ওপর ওয়াজিব বা
আবশ্যক।
আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَوَصَّيْنَا الْإِنسَانَ بِوَالِدَيْهِ إِحْسَانًا ۖ حَمَلَتْهُ أُمُّهُ كُرْهًا وَوَضَعَتْهُ كُرْهًا ۖ وَحَمْلُهُ وَفِصَالُهُ ثَلَاثُونَ شَهْرًا
“আমি
মানুষকে তার পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহারের আদেশ দিয়েছি। তার মা তাকে কষ্টসহকারে গর্ভে
ধারণ করেছে এবং কষ্টসহকারে প্রসব করেছে। তাকে গর্ভে ধারণ করতে ও তার স্তন্য ছাড়তে লেগেছে
ত্রিশ মাস।” (সূরা আহকাফ-১৫)
আল্লাহ তা'আলা আরও বলেন,
وَقَضَى رَبُّكَ أَلاَّ تَعْبُدُواْ إِلاَّ إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِندَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلاَهُمَا فَلاَ تَقُل لَّهُمَآ أُفٍّ وَلاَ تَنْهَرْهُمَا وَقُل لَّهُمَا قَوْلاً كَرِيمًا
তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যে, তাঁকে ছাড়া অন্য কারও এবাদত করো
না এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব-ব্যবহার কর। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায়
বার্ধক্যে উপনীত হয়; তবে তাদেরকে ‘উহ’ শব্দটিও
বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না এবং বল তাদেরকে শিষ্ঠাচারপূর্ণ কথা।(সূরা বনী ইসরাঈল-২৩)
পিতা মাতার বৈধ বিধান তরক করলে গোনাহ হবে।
চার মাযহাব সম্বলীত সর্ব বৃহৎ ফেক্বাহী গ্রন্থ 'আল-মাওসু'আতুল ফেক্বহিয়্যায়'
রয়েছে,
যাদের আদেশ-নিষেধ এর অনুসরণ শরীয়ত কর্তৃক ওয়াজিব।যেমন-মাতাপিতা,স্বামী,সরকারী
বিধিনিষেধ,এর অনুসরণ ওয়াজিব।
এ হুকুম ব্যাপক হারে প্রযোজ্য হবে না বরং ঐ সময়-ই প্রযোজ্য হবে যখন
তা গুনাহের কাজ হবে না।কেননা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত রয়েছে আল্লাহর অবাধ্যতায় কোনো মাখলুকের
অনুসরণ করা যাবে না। (২৮/৩২৭)
মাতাপিতার আদেশকে মান্য করা মূলত তিনটি মূলনীতির আলোকে হয়ে থাকে।
(১) তাদের আদেশ কোনো মুবাহ বিষয়ে হতে হবে। কোনো ওয়াজিব তরকের ব্যাপারে
হতে পারবে না।এবং কোন হারাম কাজের জড়িত হওয়ার জন্যও হতে পারবে না।
(২) যে কাজের আদেশ তারা দিবেন, এতে তাদের ফায়দা থাকতে হবে, বা শরীয়তের
পছন্দসই কাজ হতে হবে।
(৩) যে কাজের আদেশ দিচ্ছেন, তা তাদের সন্তানদের জন্য ক্ষতিকারক হতে
পারবে না।
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/1707
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-
https://www.ifatwa.info/1722
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার পিতা যদি আপনাকে
গালি গালাজ করে, অকথ্য কথা বলে ও জঘন্যতম বাক্য ব্যবহার করে অবশ্যই অবশ্যই আপনার পিতা
অন্যায় ও গোনাহের কাজ করে ফেলেছে। এটা করা তার জন্য আদৌ ঠিক হয়নি।
প্রিয় ভাই! প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার পিতার
সাথে একেবারে কথা বলা বন্ধ করবেন না। বরং মাঝে মধ্যে কথা বলবেন যদিও অল্প হোক। তাই
খুবই অল্প হলেও মাঝে মধ্যে কথা বার্তা বলবেন। খোঁজ খবর নিবেন। আপনি আপনার দায়িত্ব পালনের
চেষ্টা করবেন। তার হেদায়াতের জন্য দোয়া করতে থাকবেন, আল্লাহ তায়ালা যেন তাকে দ্বীনের
প্রকৃত বুঝ দান করেন।
উল্লেখ্য যে, তাকে মাফ করে দিবেন। তাহলে
দেখবেন আল্লাহ তায়ালাও আপনাকে মাফ করে দিবেন এবং মর্যাদা বৃদ্ধি করে দিবেন।
আরো জানুন- https://ifatwa.info/22770/
বি. দ্র: নাজায়েয কোনো কাজের আদেশ মাতাপিতা
দিলে, সেই আদেশকে মান্য করা সন্তানের উপর ওয়াজিব হবে না। তাছাড়া এজন্য না বুঝে যদি
মাতাপিতা সন্তানকে তিরস্কার করেন, তাহলে তখনো সন্তান তার মাতাপিতার সাথে ভালো ও উত্তম
আচরণ করবে। সন্তান তার ভালোর জন্য এবং মাতাপিতার হেদায়তের জন্য দু'আ করবে। নিরবে পরিস্থিতির
মুকাবেলা করবে মাতাপিতার সাথে তর্কে লিপ্ত হবে না। নিজের জন্য দ্বীন সঙ্গির দু'আ করবে, বিশেষত তাহাজ্জুদের নামায পড়ে দু'আ করবে।