আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
302 views
in সালাত(Prayer) by (25 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

১) যে ৩ ওয়াক্তের ফরজ নামাজে কেরাত শব্দ করে পড়তে হয় সেই সব নামাজ একাকি আদায় করার সময় যদি কেও উচ্চস্বরে না পরে যুহর ও আসরের মত পড়ে তাহলে নামাজের কোন ক্ষতি হবে?

২) নামাজ শেষ মাঝে মধ্যে মনেহয় যে ইমামের সালাম ফিরানোর সাথে সাথে আমি সালাম ফিরানোর সময় সালাম বলেছি কি না। নামাজ শেষে জিকির করা অবস্থায় এমন সন্দেহ হলে (৫০/৫০)  আমি আবার নিজে নিজে সালাম ফিরিয়ে নিই  ।এই পদ্ধতি কি ঠিক আছে?

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
নামাযে শব্দ করে পড়ার অর্থ হল, অন্তত এতটুকু আওয়াজে পড়া যাতে নিজের পিছনে দাঁড়ানো কিছু লোক তা শুনতে পায়। আর নামাযে আস্তে পড়ার অর্থ হল, মাখরাজ আদায় করে জিহবা ও ঠোঁট নেড়ে ভালোভাবে উচ্চারণ করে পড়া।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ
  
حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ حَفْصٍ، قَالَ حَدَّثَنَا أَبِي قَالَ، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، حَدَّثَنِي عُمَارَةُ، عَنْ أَبِي مَعْمَرٍ، قَالَ سَأَلْنَا خَبَّابًا أَكَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَقْرَأُ فِي الظُّهْرِ وَالْعَصْرِ قَالَ نَعَمْ. قُلْنَا بِأَىِّ شَىْءٍ كُنْتُمْ تَعْرِفُونَ قَالَ بِاضْطِرَابِ لِحْيَتِهِ.

আবূ মা‘মার (রহ.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা খাববাব (রাযি.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি যুহর ও ‘আসরের সালাতে কিরাআত পড়তেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। আমরা প্রশ্ন করলাম, আপনারা কী করে তা বুঝতেন? তিনি বললেন, তাঁর দাড়ির নড়াচড়ায়। (বুখারী শরীফ ৭৪৬, (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৭১৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৭২৪)

আরো জানুনঃ 

জোড়ে কিরাআতের নামাজে মুনফারিদ তথা একাকী নামাজ আদায় কারীর ইখতিয়ার রয়েছে,সে চাইলে জোড়েও কিরাআত পড়তে পারে।
চাইলে আস্তেও কিরাআত পড়তে পারে।
শরীয়ত তাকে জোড়ে কিরাআত পড়া আবশ্যক বলেনি।

ফাতাওয়ায়ে আলমগীরী তে আছেঃ  
ہندیہ  :
’’و المنفرد لا يجب عليه السهو بالجهر و الإخفاء؛ لأنهما من خصائص الجماعة، هكذا في التبيين‘‘. ( الباب الثاني عشر في سجود السهو، قبيل فصل سهو الإمام يوجب عليهالخ د، ١/ ١٢٨، ط: رشيدية)
সারমর্মঃ  মুনফারিদ এর জন্য জোড়ে আস্তে কিরাআত পড়ার দ্বারা সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবেনা।
কেননা সেটি জামা'আতের সাথে নামাজের সাথে নির্দিষ্ট।

بدائع الصنائع  :
’’وَإِنْ كَانَ مُنْفَرِدًا فَإِنْ كَانَتْ صَلَاةً يُخَافَتُ فِيهَا بِالْقِرَاءَةِ خَافَتَلَا مَحَالَةَ، وَهُوَ رِوَايَةُ الْأَصْلِ، وَذَكَرَ أَبُو يُوسُفَ فِي الْإِمْلَاءِ إنْ زَادَ عَلَى مَا يُسْمِعُ أُذُنَيْهِ فَقَدْ أَسَاءَ. وَذَكَرَ عِصَامُ بْنُ أَبِي يُوسُفَ فِي مُخْتَصَرِهِ وَأَثْبَتَ لَهُ خِيَارَ الْجَهْرِ وَالْمُخَافَتَةِ، اسْتِدْلَالًابِعَدَمِ وُجُوبِ السَّهْوِ عَلَيْهِ إذَا جَهَرَ، وَالصَّحِيحُ رِوَايَةُ الْأَصْلِ لِقَوْلِهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : «صَلَاةُ النَّهَارِ عَجْمَاءُ مِنْ غَيْرِ فَصْلٍ» ؛ وَلِأَنَّ الْإِمَامَ مَعَ حَاجَتِهِ إلَى إسْمَاعِ غَيْرِهِ يُخَافِتُ فَالْمُنْفَرِدُ أَوْلَى وَلَوْ جَهَرَ فِيهَا بِالْقِرَاءَةِ فَإِنْ كَانَ عَامِدًا يَكُونُ مُسِيئًا، كَذَا ذَكَرَ الْكَرْخِيُّ فِي صَلَاتِهِ وَإِنْ كَانَ سَاهِيًا لَا سَهْوَ عَلَيْهِ نَصَّ عَلَيْهِ فِي بَابِ السَّهْوِ بِخِلَافِ الْإِمَامِ. (وَالْفَرْقُ) أَنَّ سُجُودَ السَّهْوِ يَجِبُ لِجَبْرِ النُّقْصَانِ، وَالنُّقْصَانُ فِي صَلَاةِ الْإِمَامِ أَكْثَرُ؛لِأَنَّ إسَاءَتَهُ أَبْلَغُ؛ لِأَنَّهُ فَعَلَ شَيْئَيْنِ نُهِيَ عَنْهُمَا: أَحَدُهُمَا - أَنَّهُ رَفَعَ صَوْتَهُ فِي غَيْرِ مَوْضِعِ الرَّفْعِ، وَالثَّانِي - أَنَّهُ أَسْمَعَ مَنْ أُمِرَ بِالْإِخْفَاءِ عَنْهُ، وَالْمُنْفَرِدُ رَفَعَ صَوْتَهُ فَقَطْ فَكَانَ النُّقْصَانُ فِي صَلَاتِهِ أَقَلَّ، وَمَا وَجَبَ لِجَبْرِ الْأَعْلَى لَا يَجِبُ لِجَبْرِ الْأَدْنَى وَإِنْ كَانَتْ صَلَاةً يُجْهَرُ فِيهَا بِالْقِرَاءَةِ فَهُوَ بِالْخِيَارِ، إنْ شَاءَ جَهَرَ وَإِنْ شَاءَ خَافَتَ، وَذَكَرَ الْكَرْخِيُّ إنْ شَاءَ جَهَرَ بِقَدْرِ مَا يُسْمِعُ أُذُنَيْهِ وَلَا يَزِيدُ عَلَى ذَلِكَ، وَذَكَرَ فِي عَامَّةِ الرِّوَايَاتِ مُفَسَّرًا أَنَّهُ بَيْنَ خِيَارَاتٍ ثَلَاثٍ: إنْ شَاءَ جَهَرَ وَأَسْمَعَ غَيْرَهُ، وَإِنْ شَاءَ جَهَرَ وَأَسْمَعَ نَفْسَهُ، وَإِنْ شَاءَ أَسَرَّ الْقِرَاءَةَ، أَمَّا كَوْنُ لَهُ أَنْ يَجْهَرَ فَلِأَنَّ الْمُنْفَرِدَ إمَامٌ فِي نَفْسِهِ، وَلِلْإِمَامِ أَنْ يَجْهَرَ. وَلَهُ أَنْ يُخَافِتَ بِخِلَافِ الْإِمَامِ؛ لِأَنَّ الْإِمَامَ يَحْتَاجُ إلَى الْجَهْرِ لِإِسْمَاعِ غَيْرِهِ وَالْمُنْفَرِدُيَحْتَاجُ إلَى إسْمَاعِ نَفْسِهِ لَا غَيْرُ، وَذَلِكَ يَحْصُلُ بِالْمُخَافَتَةِ، وَذُكِرَ فِي رِوَايَةِ أَبِي حَفْصٍ الْكَبِيرِ أَنَّ الْجَهْرَ أَفْضَلُ؛ لِأَنَّ فِيهِ تَشْبِيهًا بِالْجَمَاعَةِ، وَالْمُنْفَرِدُ إنْ عَجَزَ عَنْ تَحْقِيقِ الصَّلَاةِ بِجَمَاعَةٍ لَمْ يَعْجِزْ عَنْ التَّشَبُّهِ، وَلِهَذَا إذَا أَذَّنَ وَأَقَامَ كَانَ أَفْضَلَ هَذَا فِي الْفَرَائِضِ وَأَمَّا فِي التَّطَوُّعَاتِ فَإِنْ كَانَ فِي النَّهَارِ يُخَافِتُ، وَإِنْ كَانَ فِي اللَّيْلِ فَهُوَ بِالْخِيَارِ إنْ شَاءَ خَافَتَ وَإِنْ شَاءَ جَهَرَ، وَالْجَهْرُ أَفْضَلُ؛ لِأَنَّ النَّوَافِلَ أَتْبَاعُ الْفَرَائِضِ، وَالْحُكْمُ فِي الْفَرَائِضِ كَذَلِكَ....‘‘الخ (١/ ١٦١)

সারমর্মঃ  জোড়ে কিরাআতের নামাজে মুনফারিদ তথা একাকী নামাজ আদায় কারীর ইখতিয়ার রয়েছে,সে চাইলে জোড়েও কিরাআত পড়তে পারে।
চাইলে আস্তেও কিরাআত পড়তে পারে।

(০২)
মুক্তাদীর জন্য উভয় দিকে السلام عليكم ورحمة الله 
বলা সুন্নাত।
একবার সালাম শব্দ বলা ওয়াজিব।
যদি সে সালাম শব্দ না বলে,তাহলে সে নামাজ থেকেই বের হবেনা।

قال ابن عابدین : قَوْلُہُ وَلَا یَخْرُجُ الْمُوٴْتَمُّ) أَیْ عَنْ حُرْمَةِ الصَّلَاةِ فَعَلَیْہِ أَنْ یُسَلِّمَ، حَتَّی لَوْ قَہْقَہَ قَبْلَہُ انْتَقَضَ وُضُوئُہ۔(الدر المختار مع رد المحتار :۵۲۴/۱۔۵۲۶)
সারমর্মঃ মুক্তাদীর উপরেও সালাম দেওয়া ওয়াজিব।
যদি সে সালাম ফিরানোর আগেই অট্রহাসি দেয়,তাহলে তার অযু ভেঙ্গে যাবে।   
,
সুতরাং আপনাকে অবশ্যই সালাম ফিরাতে হবে।
তবে প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতটি আপনার নিছকই ওয়াসওয়াসা। 
এটি পরিহার করতে হবে।
,
ওয়াসওয়াসার ভিত্তিতে এমনটি করা ঠিক নয়। 
হ্যাঁ যদি আপনার প্রবল ধারনা হয়,যে আপনি সালাম ফিরাননি,তাহলে নামাজ ভঙ্গকারী কোনো কিছু পাওয়া না গেলে,কোনো কথা না বললে, এবং মসজিদ থেকে আপনি যদি বের না হোন,তাহলে সালাম ফিরাতে হবে।
তবে আবার সেজদায়ে সাহু দেওয়া ওয়াজিব হবে।     


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 219 views
...