আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
34 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (5 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহি ওয়া বারকাতুহ। বিয়ে হয়েছিলো ফোনে, আত্মীয়-স্বজন নিয়ে আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে। ছেলে মুখে 'কবুল' বলেছিলো আর মেয়ের মুখ থেকে কবুল না নিয়ে মেয়ের বাবা মজলিসে মত দেওয়ার মাধ্যমে বিয়েটা হয়। কিন্ত রেজিস্ট্রি হয়নি যেহেতু ছেলে সশরীরে উপস্থিত ছিলোনা সিগনেচার দেওয়ার জন্য। কথা ছিলো, ছেলে দেশে আসার পর বর-কনে কে আবার কবুল বলিয়ে রেজিস্টার করা হবে।

ছেলে দেশে আসার পরই বলছে, এই বিয়ের সম্পর্ক বাদ দিয়ে দিতে। পরে জানতে পারি, ছেলে এই বিয়ের পর পরকিয়া করে আরেকটি বিয়ে করেছে গোপনে এমনকি দেশে কয়েকবার এসেও গিয়েছে যা মেয়ে পক্ষের কেউই জানতো না। ছেলে চায় না এই বিয়েটা রাখতে এবং এসব নতুন তথ্য শোনার পর মেয়ে পক্ষও চায় না এই সম্পর্কটা স্থায়ী হোক।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে,

১) ছেলে-মেয়ের বিয়েটা কি ইসলামি শরীয়ত মোতাবেকে সম্পন্ন হয়েছিল না ?

২) বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য বর্তমানে করণীয় কি ? রেজিস্ট্রি যেহেতু হয়নি তাহলে তো ডিভোর্স পেপারের প্রয়োজন নেই। এখন কি ছেলেকে নিজ মুখে ৩ বার 'তালাক' বলতে হবে সাক্ষী রেখে ? (আল্লোহুম্মাগফিরলি, আল্লাহ সবাইকে সঠিক হিদায়েত দিক আমীন)

উত্তরটা দ্রুত দিলে অনেক ভালো হয় কেননা ছেলে আজই বিদেশ চলে যাবে, ফায়ছালাটা আজকেই প্রয়োজন।

-জাযাকাল্লাহু খইরন

1 Answer

0 votes
by (572,970 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

ইসলামী শরীয়তে বিবাহ শুদ্ধ হবার জন্য কয়েকটি শর্ত রয়েছে। যথা-
বর ও কনেকে কিংবা তাদের প্রতিনিধিকে ইজাব তথা প্রস্তাবনা ও কবুল বলতে হয়।

উক্ত ইজাব ও কবুলটি বলতে হয় দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক মসলিম পুরুষ বা একজন পুরুষ ও দুইজন মহিলার সামনে।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

وَ اسۡتَشۡہِدُوۡا شَہِیۡدَیۡنِ مِنۡ رِّجَالِکُمۡ ۚ فَاِنۡ لَّمۡ یَکُوۡنَا رَجُلَیۡنِ فَرَجُلٌ وَّ امۡرَاَتٰنِ مِمَّنۡ تَرۡضَوۡنَ مِنَ الشُّہَدَآءِ اَنۡ تَضِلَّ اِحۡدٰىہُمَا فَتُذَکِّرَ اِحۡدٰىہُمَا الۡاُخۡرٰی

আর তোমরা তোমাদের পুরুষদের মধ্য হতে দু’জন সাক্ষী রাখ, অতঃপর যদি দু’জন পুরুষ না হয় তবে একজন পুরুষ ও দু’জন স্ত্রীলোক যাদেরকে তোমরা সাক্ষী হিসেবে পছন্দ কর, যাতে স্ত্রীলোকদের মধ্যে একজন ভুলে গেলে তাদের একজন অপরজনকে স্মরণ করিয়ে দেয়।
(সুরা বাকারা ২৮২)

হাদিস শরিফে এসেছে, 

لَا يَجُوزُ نِكَاحٌ، وَلَا طَلَاقٌ، وَلَا ارْتِجَاعٌ إِلَّا بِشَاهِدَيْنِ

‘রাসূল (সা.) বলেছেন, দুইজন সাক্ষী ছাড়া বিবাহ, তালাক ও ফিরিয়ে আনা বৈধ হবে না।’ [মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, হাদিস: ১০২৫৪]

قوله صلى الله عليه وسلم : ( لا نكاح إلا بولي وشاهدي عدل ) رواه البيهقي من حديث عمران وعائشة ، وصححه الألباني في صحيح الجامع (7557) 

রাসুলুল্লাহ  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “অভিভাবক ও দুইজন সাক্ষী ছাড়া কোন বিবাহ নেই।” [তাবারানী কর্তৃক সংকলিত, সহীহ জামে (৭৫৫৮)]।

 নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী- “তোমরা বিয়ের বিষয়টি ঘোষণা কর।”[মুসনাদে আহমাদ এবং সহীহ জামে গ্রন্থে হাদিসটিকে ‘হাসান’ বলা হয়েছে (১০৭২)]
۔
ইজাব ও কবুলটি উভয় সাক্ষ্যি স্বকর্ণে শুনতে হবে।

উক্ত তিনটির কোন একটি শর্ত না পাওয়া গেলে ইসলামী শরীয়তে বিবাহ শুদ্ধ হয় না।

উপরোক্ত তিনটি শর্ত  পাওয়া গেলে বিবাহ হবে,অন্যথায় বিবাহ হবেনা।
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই বোন,    
বিবাহ সহীহ হওয়ার জন্য শর্ত হল দু’জন আযাদ প্রাপ্ত বয়স্ক বিবেকবান দুই জন মুসলিম স্বাক্ষের সামনে পাত্র/পাত্রি প্রস্তাব দিবে আর অপরপক্ষে পাত্র/পাত্রি তা কবুল করবে। আর সাক্ষিগণ উভয়ের কথা সুষ্পষ্টভাবে শুনবে। আর শরয়ী এ শর্তাবলী পরিপূর্ণভাবে টেলিফোনে পাওয়া সম্ভব নয়। তাই টেলিফোন বা মোবাইলে বিবাহ করা জায়েজ নয়। {ফাতওয়ায় উসমানী-২/৩০৪,৩০৫}

আরো জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
প্রশ্নের বিবরণ মতে ইসলামি শরীয়ত মোতাবেক বিবাহটি সম্পন্ন হয়নি।

(০২)
যেহেতু ফোনের মাধ্যমে হওয়া সেই বিবাহটি শুদ্ধই হয়নি,তাই তালাকের কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই।
ইদ্দতেরও কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই।

ঐ মেয়ে অন্যত্রে বিবাহ বসতে পারবে,কোনো সমস্যা নেই।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (572,970 points)
এ সংক্রান্ত আর কোনো বিষয় জানার থাকলে সেক্ষেত্রে কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন।
by (5 points)
reshown by
আরেকটা বিয়ের কথা বলছি, সেখানেও ছেলে প্রবাসে থাকা অবস্থায় ফোনে বিয়েটা হয়। ভিডিও কলে প্রবাসে ছেলের সাথে কিছু মানুষ ছিলো বিয়ে পড়ানোর সময়। আর দেশে দুই পক্ষের পরিবার ও আত্মীয়-স্বজন নিয়ে হুজুর বিয়ে পড়ায়। সেই বিয়েতে ছেলে-মেয়ে উভয়েই মুখে 'কবুল' বলেছে। কিন্ত রেজিস্ট্রি হয়নি, সিগনেচার বিষয়টার জন্য (ছেলে সশরীরে দেশে উপস্থিত নেই বলে)। 
১)এই বিয়েটাও কি হয়নি ?
২) বিয়ের পর ছেলে-মেয়ের মেসেজে, ফোন কলে কথা হতো। তাহলে কি এসব কথা হারাম হিসেবে গণ্য হবে, আমলনামায় কি গুনাহ যুক্ত হবে ?

দয়া করে রিপ্লাই দিবেন উস্তাদ, প্লিজ। মেয়ে আগে কখনোই হারাম রিলেশন তো দূরে থাক কোনো ছেলের দিকে তাকাতো না পর্যন্ত, হালালের জন্য অপেক্ষা করেছে, অপর ব্যক্তির কোন হক নষ্ট করতে চায়নি। এখন এসব কথা শুনে খুব ভয় লাগছে, সে খারাপ কিছু করে ফেলেছে কিনা....আল্লাহ মাফ করো!
-জাযাকুমুল্লোহু খইরন

by (572,970 points)
১)এই বিয়েটাও হয়নি। 
২) বিয়ের পর ছেলে-মেয়ের মেসেজে, ফোন কলে কথা এসব হারাম হিসেবে গণ্য হবে, আমলনামায় গুনাহ যুক্ত হবে।

শরীয়তের বিধান অনুযায়ী পুনরায় বিবাহ পড়িয়ে নিতে হবে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...