আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
44 views
in পবিত্রতা (Purity) by (17 points)
১/আমরা জানি ফরজ গোসলের তিনটি ফরজ। মুখে পানি দিয়ে গডগড়া করা নাকের নরম জায়গা পর্যন্ত পানি পৌঁছানো পুরো শরীর ধৌত করা। প্রশ্ন হল মুখে পানি দিয়ে গডগড়া করতেছি এমন সময় বায়ু বের হলে অথবা মুখে পানি দিয়ে গড়গড়া করার পর নাকে পানি দিব এমন সময় বায়ু বের হলে তাহলে কি প্রথম থেকে আবার শুরু করা লাগবে। মানে ফরজ আদায়ের সময় বায়ু যে বের হচ্ছে ফরজ গোসলের কি সমস্যা হবে। গোসল আদায় হবে। নাকি বায়ু বের হচ্ছে হোক সমস্যা নাই আমি আমার মত গোসলের ফরজ আদায় করে সুন্দরভাবে ফরজ গোসল শেষ করব।?
২/দাঁত থেকে রক্ত বের হলে রক্তের পরিমাণ যদি থুতু থেকে বেশি হয় বা সমান হয় তাহলে ওযু ভেঙ্গে যাবে। তাই অযু সময় যদি দেখি রক্ত বের হচ্ছে তাহলে রক্ত বন্ধ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করি রক্ত বন্ধ হলে তারপর ওযু করি। প্রশ্ন হল ফরজ গোসল করার সময় যদি দেখি রক্ত দাঁত  থেকে বের হচ্ছে তাহলে কি রক্ত বন্ধ হওয়া পযন্ত অপেক্ষা করবো। নাকি রক্ত বের হচ্ছে হোক সমস্যা নাই ঐ অবস্থাতে আমার মত করে ফরজ গোসলের ফরজ আদায় করে সুন্দর করে ফরজ গোসল সম্পন্ন করবো রক্ত বের হওয়া অবস্থায়।

৩/মোবাইলে নাপাক লাগলে পাক করতে কি ৩ বার ভিজা কাপড় দিয়ে মুচার কি কোন প্রয়োজন আছে। ৩বার না মুচে ২বার বা ১ বার মুচলে তো চলবে। মানে নাপাকির আচর দুর করলে তো পাক হয়ে গেল ৩ বারই মুচতে হবে এরকম কি আছে।
৪/ আমার ওয়াসওয়াসা নিয়ে খুবই সমস্যা আছি কোন সময় হাতে নাপাক লাগলে সেই হাতে যেখানে হাত দিই মনে হয় সব নাপাক হয়ে গেছে। বিশেষ করে মোবাইল এ কারণ এটা তো সব সময় পকেটে রাখতে হয় হাতে রাখতে হয়। ঘরের সুইচ। সব জায়গায় সন্দেহ। তাই আমি একটা সমাধান বের করছি। নামাজের জায়গা ব্যাতিত কোন জায়গায় পবিত্র করবোনা। মোবাইলে নাপাক লাগলেও টিসু দিয়ে মুচে সুকিয়ে নিবো। বা নিজে নিজে সুকিয়ে জাবে।
ক) পরবর্তীতে ভিজা হতে শুকনো নাপাক  মোবাইল বা শুকনো সুইচে নাপাক যায়গায় হাত দিলে যে হাত নাপাক হবে বিষয়টা তো এমন না। কারন যতক্ষণ না নাপাকের আলামত বা রং বর্ণ গন্ধ  না আসে হাতে। সে হিসেবে তো ভিজা হাতে শুকনো নাপাক মোবাইল বা শুকতো নাপাক জায়গায় হাত দিলে নাপাক হবে না?
খ)ওয়াসওয়াসা কে প্রসয় না দেয়ার আরেক টা উপায়। ধরেই নিলাম ভিজা হাতে শুকনো নাপাক মোবাইল বা শুকনো  নাপাক যে কোন জায়গা হাত দিলাম তাতে যদি হাতে নাপাক লাগে ১ দিরহাম তো জীবনেও লাগবে না তাহলে তো হাত ও নাপাক হবে না নামাজ পড়তে পারবো।
গ)শুকনা নাপাক ফোন পকেটে রাখলে রান থেকে ঘাম লেগে মোবাইল ভিজা ভিজা হয় তাই বলে কি প্যান্ট নাপাক হবে?  কারন দৃশ্যমান তো কিছু লাগে নাই রং নাই বর্ণ নাই গন্ধ নাই, আসলে কি নাপাক হবে।আর যাদি ঘামের কারনে মোবাইল থেকে প্যান্ট এ নাপাক লাগেও একদিরহাম তো জীবনেও হবে না এটা সম্ভব না। নামাজ কি পড়তে পারবো।
৫/যে কোন কারনে হাতে নাপাক লাগছে তো আলনা থেকে টি শাট নিছি হাত দিয়ে গায়ে দিতে। টি শাট নাপাক হইছে ধৌত করছি সেটা সমস্যা নাই। সন্দেহ হচ্ছে সেটা নেয়ার সময় সেটার নিচে প্যান্ট ছিলো সেটা তে হাত লাগছে কিনা বা এর পর বিচানায় বসছি শুইছি পরে বিচানা থেকে উঠে খেয়াল করলাম শীতের কাপড় ছিল বিচানায়। কথা হলো শীতের কাপড় নাপাক হইছে কিনা বা আলনা থেকে কাপড় নেয়ার সময় যে নিচে কাপড় ছিল সেটা নাপাক হইছে কিনা সন্দেহ। কি করবো। এখন তবে আমার মনে হচ্ছে মন বলতেছে আলনা থাকা টি-শার্টের নিচে থাকা কাপড়ে নাপাক লাগে নাই বা বিছানায় থাকা শীতের কাপড় এ নাপাক লাগে নাই.
৬/ ফজরের নামাজ কাজা হলে যোহরের আগে পড়ে নিই। শুধু ফরজ পড়ি।  ফজরের কাজা কি আদায় হবে??  আমাদের ইমাম বললো সুন্নত ও কাজা পড়তে হবে না হলে ফজরের কাজা আদায় হবে না?

1 Answer

0 votes
by (574,050 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
https://ifatwa.info/98247 নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ-
ফরয গোসল করার সময় যদি কোনো কারনে বায়ু ত্যাগ হয় অথবা পেশাব বের হয় তখন  আবার কুলি করা ও নাকে পানি দিতে হবেনা।

বিস্তারিতঃ-

আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাযি. থেকে বর্ণিত,  নিশ্চয় রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
إِنَّمَا الْوُضُوءُ مِمَّا خَرَجَ ، وَلَيْسَ مِمَّا دَخَلَ
শরীর থেকে যা কিছু বের হয় এ কারণে অযু ভেঙ্গে যায়, প্রবেশের দ্বারা ভঙ্গ হয় না। (সুনানে কুবরা লিলবায়হাকী ৫৬৮)

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই /বোন, 
গোসলের দ্বারা শরীর পাক হওয়ার ক্ষেত্রে উক্ত বায়ু বের হওয়া ও না বের হওয়ার কোন সম্পর্কই নেই। এর দ্বারা গোসলের মাঝে কোন প্রভাব সৃষ্টি করবে না। গোসলের ফরজ আদায় করে গোসল আদায় করলে গোসল আদায় হবে যাবে। বায়ু বের হওয়ার দ্বারা মানুষ হুকুমের দিক থেকে নাপাক হয়, শারিরিক দিক থেকে নাপাক হয় না।

"و لو ضرب یدیه فقبل أن یمسح أحدث لا یجوز المسح بتلک الضربة کما لو أحدث في الوضوء بعد غسل بعض الأعضاء الخ."

(الفتاوی الهندیة، کتاب الطھارة، الباب الرابع فی التیمم، الفصل الأول،26/1، ط: المطبعة الکبری الأمیریة، بولاق، مصر)
সারমর্মঃ-
যদি কাহারো তায়াম্মুম করার জন্য মাটিতে হাত মারার পর মাসাহ করার পূর্বেই  অযু ভেঙ্গে যায়, তাহলে ওই হাত দ্বারা মাসাহ জায়েজ নেই। কারো যদি গোসলের কয়েকটি অঙ্গ ধোয়ার পর আবার অজু ভেঙ্গে যায় সেক্ষেত্রেও এমনটি হবে।

যদি গোসলের মাঝে ওযু ভেঙ্গে যায় তাহলে পুরোপুরি গোসল দ্বিতীয়বার করা আবশ্যক হবে না তবে গোসলের পূর্ণতার জন্য বাকি অঙ্গ গুলো ধোয়াই যথেষ্ট। 

তদুপরি গোসলের মধ্যে ওযু ভেঙ্গে যাওয়ার পর যদি ওযুর অঙ্গ গুলো ধোয়া না হয় সেক্ষেত্রে গোসলের পর পুরোপুরি অজু করে নেওয়া আবশ্যক তবে যদি গোসলের মাঝে ওযু ভেঙ্গে যাওয়ার পর অজুর অঙ্গ গুলো ধোয়া হয়ে যায়, সেক্ষেত্রে অযু করা জরুরী নয়।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে বায়ু বের হচ্ছে হোক সমস্যা নেই, আপনি আপনার মত গোসলের ফরজ আদায় করে সুন্দরভাবে ফরজ গোসল শেষ করবেন।

তবে এক্ষেত্রে বায়ু বের হওয়ার পর যদি ওযুর অঙ্গ গুলো পুনরায় ধোয়া না হয়, সেক্ষেত্রে গোসলের পর পুরোপুরি অজু করে নেওয়া আবশ্যক।

তবে যদি গোসলের মাঝে বায়ু বের হওয়ার পর অজুর অঙ্গ গুলো পুনরায় ধোয়া হয়ে যায়, সেক্ষেত্রে আর অযু করা জরুরী নয়।

(০২)
রক্ত বের হচ্ছে হোক, ঐ অবস্থাতে আপনার মত করে ফরজ গোসলের ফরজ আদায় করে সুন্দর করে ফরজ গোসল সম্পন্ন করতে পারবেন, রক্ত বের হওয়া অবস্থায়।

তবে এক্ষেত্রে রক্ত বের হওয়া বন্ধ হওয়ার পর যদি ওযুর অঙ্গ গুলো পুনরায় ধোয়া না হয়, সেক্ষেত্রে গোসলের পর পুরোপুরি অজু করে নেওয়া আবশ্যক।

হ্যাঁ,  যদি রক্ত বের হওয়া বন্ধ হওয়ার পর অজুর অঙ্গ গুলো পুনরায় ধোয়া হয়ে যায়, সেক্ষেত্রে আর অযু করা জরুরী নয়।

(০৩)
তিনবারই মুছতে হবে।

(০৬)
এক্ষেত্রে আপনার ফজরের কাজা আদায় হবে।

জোহরের ওয়াক্ত আসার আগে ফজর কাজা করলে সেক্ষেত্রে সুন্নাতেরও কাজা আদায় করবেন। সেক্ষেত্রে সুন্নাতের কাজাও আদায় হয়ে যাবে।

এটিই হাদীসের শিক্ষা।

তবে সুন্নাতের কাজা আদায় না করলে ফজরের ফরজের কাজা আদায় হবেনা,একথাটি সঠিক নয়।

(৪-৫)
ওয়াসওয়াসা হল এমন এক মানসিক রোগ যা একজন মুসলিমকে বিভ্রান্ত করার জন্য শয়তানের পক্ষ থেকে মনে আসা  কুমন্ত্রনার ফাঁদ। এই রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা এখন কম নয়।  কিন্তু এই রোগ সম্পর্কে ধারনা বা ইলমে জ্ঞান না থাকার ফলে একজন সাধারন ব্যক্তি ধীরে ধীরে মানসিক রোগীতে পরিণত করতে পারে। কারণ শুরুতেই যদি এর চিকিৎসা না করা হয়, তাহলে এটি বাড়তে থাকে।

আমরা আমাদের বিগত সহস্রাধিক প্রশ্ন রিসার্চ করে দেখেছি যে ওয়াসওয়াসা আক্রান্ত ব্যক্তি বিভিন্ন মাসলা মাসায়েল বা ফতোয়ার প্রশ্নের উত্তর ঘাটাঘাটি করে আরও বেশি ওয়াসওয়াসাতে আক্রান্ত হয়ে যায়। এবং প্রশ্নের উত্তর হল একজন ওয়াসওয়াসা আক্রান্ত রোগীদের রোগ বৃদ্ধির খোরাক। এবং একটা প্রশ্ন উত্তর পাওয়ার পর একজন ওয়াসওয়াসা আক্রান্ত ব্যক্তি ক্রমাগত একই প্রশ্ন বারবার ঘুরিয়ে পেচিয়ে শতাধিকবার করতে থাকেন।  যেটা উনাকে বরং ক্রমাগত অধিকতরও খারাপের দিকে নিয়ে যেতে থাকে। 

বিষয়গুলো পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ওয়াসওয়াসা আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে নিচের দেওয়া বাধ্যতামূলক সুস্থ হওয়ার কোর্সটি কমপ্লিট না হওয়া পর্যন্ত কোনো প্রশ্নের উত্তর দেয়া হবে না । 

এবং আমরা আশা করছি এবং আল্লাহর উপরে ভরসা রেখে বলছি যারা নিচের এই কোর্সটি করবেন ইনশাআল্লাহ সুস্থ হয়ে যাবেন। 

আর কোর্সের ভিতরে একটা অংশে আমাদের মুফতি সাহেবদের সাথে সরাসরি জুম মিটিংয়ের মাধ্যমে প্রশ্ন-উত্তরের ব্যবস্থা থাকবে। 

আল্লাহ আমাদের সমস্ত শারীরিক ও মানসিক রোগ থেকে হেফাজত করুন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...