আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
50 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (9 points)
স্বপ্ন দুটি আমার আম্মুর পক্ষ থেকে
১. স্বপ্ন দেখেন এমন আমার নানু অর্থাৎ আমার আম্মুর বাবা যিনি গত 2 বছর আগে মারা গিয়েছেন উনি আমার আম্মুর মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন আর বলতেছেন মা তোর মাথা এত গরম কেন আগুনের মত তাপ বের হচ্ছে মাথা দিয়ে ।
এটি দেখেছেন ঘুমিয়ে যাবার পর পর ই রাত 11 টা  12টার দিকে ।
২. এই স্বপ্ন দেখেছেন ফজর এর একটু আগে 3-৪ টার দিকে ।
আম্মুর কোলে ফুটফুটে এক বাচ্চা , অনেক সুন্দর , আম্মু বলতেছি এটা হয়ত আমার মত অথবা আমার বড় বোন(যিনি মারা গেছেন আমার জন্ম এর আগে ,25 বছর আগে ,উনার বয়স ছিল 8 মাস এর মত ) এর মত । অনেক ক্ষণ কোল এ ছিল , বাচ্চার পটি ও পরিষ্কার করে দিয়েছে আম্মু ।
স্বপ্ন দুটির কি ব্যাখ্যা হতে পারে উস্তায ?
৩. এটি আমি রিলেটেড।
আমি ভার্সিটি তে পরি অর্থাৎ সহশিক্ষার অন্তর্ভুক্ত। শুরুতে 3,4 জন মেয়ে বন্ধু ছিল ,ফ্রী মিক্সিং এ অভ্যস্ত ছিলাম । এখন ফাইনাল ইয়ারে । গত এক বছর এটা থেকে অনেকট্টাই বিরত ছিলাম । বর্তমানে ভার্সিটি আর আছে ৮ মাস এর মত , পূর্বের একজন নন মাহরাম যে আমার অনেক ক্ষতি করেছে ব্যক্তিগত এবং এটার জন্য আমি কোন মতেই তাকে মন থেকেনমাফ করতে পারব না । কিন্তু বর্তমানে  তার সাথে একাডেমিকে প্রয়োজন এই কথা বলতে হচ্ছে ।  এখন প্রায়োজোন এ কথা বললেও 2,1 টা কথা এবং স্বাভাবিক সম্পর্ক এর মত যেমন ছোট খাট হেল্প যেমন তার টাকা ধার লাগলে সে আমাকে নক দিচ্ছে এবং এরকম হেল্প লাগলে সে আমাকে বলতেছে। এই বিষয়ে হেল্প করতে পারব কি না ।  আর আমি এখানে মাজুর সে ছাড়া অন্য কারোর কাছে একাডেমিক হেল্প নিতে পারব না  । আমার ছেলে বন্ধু রা নিয়মিত কেউ ক্লাস করে না এবং আমি নিজেও ক্লাস করি না , আমি বিবাহিত ভার্সিটি দূরে এজন্য ক্লাস করার প্ল্যান নেই শুধু পরীক্ষা দেয়া ।
আমার সর্বোচ্চ সতর্কতা থাকি এবং কম কথা বলি এরপরও 2,1 টা কথা এক্সট্রা হয়েই যায় ইসতিগফার করার চেষ্টা করি ।
৪. আমার পরি এর সমস্যা আছে এটা আমার বিশ্বাস হত না । কিন্তু 4,5 জন হুজুর এর কাছে গিয়েছে আমার আম্মু সবাই সেইম কথা বলেছে মিল পেয়েছি সবার কথায় এজন্য বর্তমানে আমি শঙ্কিত।
তারা বলেছে যে আমার উপর নজর দেয় সে ভাল না এবং ঘুমের মাঝে স্বপ্নের মাঝে সে আমার সাথে যোগাযোগ করে আর আর আমি যখন আমার বউ এর সাথে থাকি তখন নাকি সে অনেক রেগে যায় । অনেক শুকায় গেছি , হুট করেই একটা জিনিষ খেয়াল করলাম সকল হুজুর ই বলেছে এটা 2 বছর থেকে এমন । গত 2 বছর অনেকবার মেডিকেল টেস্ট করানো হয়েছে আমার এখানে দেখি আমার শরীরে রক্তের পরিমাণ অনেক বেশি ছিল এটা 3, 4মাস পর পর যে টেস্ট রিপোর্ট দেখলাম তাতে একটু একটু করে কমতেছে ,লাস্ট টাইম অনুযায়ী স্বাভাবিক এর থেকেও একটু কম ছিল । উদাহণস্বরূপ 14.7 এরপর 14.৩ এরপর 14.0 এরপর 13.5 লাস্ট টাইম 13 এর কম ।
এটা নিয়ে অনেকটা ভয় পাচ্ছি , বাস্তবে আমার এখন ও বিশ্বাস হয় না যে আমার উপর পরীর আছর আছে কেনোনা ভিজিবল কিছুই পাই না ।
মেইন সমস্যা হল সকল হুজুর এ ঝার ফুক দিয়েছে কিন্তু এরপর ও পার্মানেন্ট কোন সলুশন পাই নি এখন ও । আমার কি করণীয় যাতে পার্মানেন্ট সলুশন পাব
৫. কোন এক স্ত্রী দেখে তার হাসবেন্ড অন্য এক নন মাহরাম কে দুয়া শিখাচ্ছেন কিন্তু তাকে শিখাচ্ছেন না , কোন নন মাহরাম সেটা মনে করতে পারে নি হয়ত ( এটার কি ব্যাখ্যা হতে পারে )

1 Answer

0 votes
by (575,580 points)
জবাবঃ- 
بسم الله الرحمن الرحيم 

ইসলামী দৃষ্টিতে স্বপ্ন তিন প্রকার। 
,
১. যা আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দাহকে দেখানো হয় যা কল্যানকর হয়।

২. শয়তানের পক্ষ হতে দেখানো হয় যাতে মানুষ খারাপ, মন্দ ভয়ংকর কিছু দেখে থাকে।

তবে শয়তান স্বপ্ন দেখানোর দ্বারা মানুষের কোন ক্ষতি করতে পারেনা।
,
 ভয়ংকর স্বপ্ন দেখলে দুশ্চিন্তার কোন কারন নেই। শয়তান মানুষকে দুশ্চিন্তায় ফেলার জন্যই এমন সব আজব আজব জিনিস দেখায়। এমনটা দেখলে ঘুম থেকে জেগে বাম দিকে থুথু ফেলে আস্তাগফিরুল্লাহ বলতে হয়। 

৩. মানুষের কল্পনা। অর্থাৎ মানুষ যা কল্পনা করে স্বপ্নে তা দেখতে পায়। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي عُمَرَ الْمَكِّيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ الثَّقَفِيُّ، عَنْ أَيُّوبَ السَّخْتِيَانِيِّ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ سِيرِينَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِذَا اقْتَرَبَ الزَّمَانُ لَمْ تَكَدْ رُؤْيَا الْمُسْلِمِ تَكْذِبُ وَأَصْدَقُكُمْ رُؤْيَا أَصْدَقُكُمْ حَدِيثًا وَرُؤْيَا الْمُسْلِمِ جُزْءٌ مِنْ خَمْسٍ وَأَرْبَعِينَ جُزْءًا مِنَ النُّبُوَّةِ وَالرُّؤْيَا ثَلاَثَةٌ فَرُؤْيَا الصَّالِحَةِ بُشْرَى مِنَ اللَّهِ وَرُؤْيَا تَحْزِينٌ مِنَ الشَّيْطَانِ وَرُؤْيَا مِمَّا يُحَدِّثُ الْمَرْءُ نَفْسَهُ فَإِنْ رَأَى أَحَدُكُمْ مَا يَكْرَهُ فَلْيَقُمْ فَلْيُصَلِّ وَلاَ يُحَدِّثْ بِهَا النَّاسَ "
মুহাম্মাদ ইবনু আবূ উমার আল-মাক্কী (রহঃ) ..... আবূ হুরাইরাহ (রাযিঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন যুগ ও সময় (কিয়ামাতের) সন্নিকটে হয়ে আসবে তখন প্রায়শ (খাঁটি) মুসলিমের স্বপ্ন মিথ্যা ও ভ্রান্ত হবে না। তোমাদের (মাঝে) অধিক সত্যভাষী লোক সর্বাধিক সত্য (ও বাস্তব) স্বপ্নদ্রষ্টা হবে। আর মুসলিমের স্বপ্ন নুবুওয়াতের পয়তাল্লিশ ভাগের এক ভাগ। আর স্বপ্ন তিন (প্রকার)- ভাল স্বপ্ন আল্লাহর তরফ হতে সুসংবাদ (বাহক)। আর (এক ধরনের) স্বপ্ন শাইতানের পক্ষ হতে দুর্ভাবনা তৈরি করে। আর (এক ধরনের) স্বপ্ন যা মানুষ তার মনের সাথে কথা বলে (এবং ভাবনা-চিন্তা করে) তা থেকে (উদ্ভূত)।

অতএব তোমাদের কেউ যদি এমন কিছু (স্বপ্ন) দর্শন করে- যা সে পছন্দ করে না, তাহলে সে যেন (ঘুম থেকে) উঠে দাঁড়ায় এবং সলাত (সালাত/নামাজ/নামায) আদায় করে আর মানুষের নিকট সে (স্বপ্নের) কথা গোপন রাখে।
(মুসলিম ৫৭৯৮, (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৫৭০৮, ইসলামিক সেন্টার ৫৭৪০)

خَالِدُ بْنُ مَخْلَدٍ حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا سَلَمَةَ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا قَتَادَةَ يَقُوْلُ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلميَقُوْلُ الرُّؤْيَا مِنْ اللهِ وَالْحُلْمُ مِنْ الشَّيْطَانِ فَإِذَا رَأٰى أَحَدُكُمْ شَيْئًا يَكْرَهُه“فَلْيَنْفِثْ حِينَ يَسْتَيْقِظُ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ وَيَتَعَوَّذْ مِنْ شَرِّهَا فَإِنَّهَا لاَ تَضُرُّه“وَقَالَ أَبُو سَلَمَةَ وَإِنْ كُنْتُ لأَرَى الرُّؤْيَا أَثْقَلَ عَلَيَّ مِنَ الْجَبَلِ فَمَا هُوَ إِلاَّ أَنْ سَمِعْتُ هٰذَا الْحَدِيثَ فَمَا أُبَالِيهَا.

আবূ ক্বাতাদাহ হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছিঃ ভাল স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়, আর মন্দ স্বপ্ন হয় শয়তানের তরফ থেকে। সুতরাং তোমাদের কেউ যদি এমন কিছু স্বপ্ন দেখে যা তার কাছে খারাপ লাগে, তা হলে সে যখন ঘুম থেকে জেগে ওঠে তখন সে যেন তিনবার থুথু ফেলে এবং এর ক্ষতি থেকে আশ্রয় চায়। কেননা, তা হলে এটা তার কোন ক্ষতি করতে পারবে না। 

আবূ সালামাহ বলেনঃ আমি যখন এমন স্বপ্ন দেখি যা আমার কাছে পাহাড়ের চেয়ে ভারি মনে হয়, তখন এ হাদীস শোনার ফলে আমি তার কোন পরোয়াই করি না। [বুখারী ৫৭৪৭ মুসলিম পর্ব ৪২/হাঃ ২২৬১, আহমাদ ২২৭০৭] 
,
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(১.২)
ومن رای انہ مات…………ان رای شیئا من ہیئۃ الاموات کالغسل والکفن فذالک زیادۃ فی نقص دینہ (تعطیر الانام ۲۹۱؍ج۲؍باب المیم،موت،مطبوعہ مصر)

যার সারমর্ম হলো কেহ স্বপ্নে দেখে যে সে মারা গিয়েছে,,বা মৃতদের হালত,কাফন গোসল ইত্যাদি  দেখে,তাহলে সেটি নিজের দ্বীনের কমতি মনে করতে হবে।
,
ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যাহ তে এসেছে যে স্বপ্নে মৃত মানুষ দেখা এটি কবরের কথা স্বরন করে দেওয়ার জন্য।
(ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যাহ ২৯/১৬০)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার মায়ের আমল বাড়িয়ে দিতে হবে,দ্বীনদার লোকদের সাথে উঠাবসা করতে হবে,পবিত্র হালতে থাকতে হবে,অহংকার থেকে বেঁচে থাকতে হবে। 
বেশি বেশি কুরআন তেলাওয়াত, যিকির আযকার,ফরজ সহ নফল নামাজ পড়তে হবে। 
স্বপ্নের কথা কাউকে বলা যাবেনা।
,
চাইলে সাধ্য মতো দান ছদকাহ করতে পারেন।

(০৩)
এক্ষেত্রে আপনার গুনাহ হচ্ছে।
তওবা করে তার সাথে কথা বলা বন্ধ করা আবশ্যক। 

(০৪)
চিকিৎসা গ্রহনের পরামর্শ থাকবে। 

(০৫)
মনের কল্পনা প্রসূত স্বপ্ন বলেই মনে হচ্ছে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...