আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
81 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (3 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু উস্তায।

গত ২৬ এপ্রিল আমার বিয়ে হয়। যদিও বিয়ে তে আমি রাজি ছিলাম না কেননা ছেলের সাথে কথা বলে আমার তাকে ভালো লাগে নি। তার সাথে আমার কুফু বা যোগ্যতা কোনোটাই মিলে না। সেটা আমার পরিবারকে অনেক বার করে জানাই এবং বিয়েটা যাতে না হয় তার জন্য সব রকম চেষ্টা করি। পাশাপাশি ইস্তেখারার নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইতে থাকি। তাও আল্লাহর হুকুমে আমার বিয়ে টা হয় এখানে। পরিবারের চাপে পরে বাধ্য হয়ে বিয়ে হলেও আমি মানাই নেওয়ার চেষ্টা করি। । কিন্তু বিয়ের পর ই স্বামীর খারাপ গুণ গুলো প্রকাশ পেতে থাকে। তারা বিয়ের ক্ষেত্রে অনেক মিথ্যা তথ্য দেয়। চাকরি, বয়স, ফ্যামিলি সব কিছু তে। যা আমি বিয়ের পর বুঝতে পারি। আমাকে পর্দায় রাখবে বলার পরও তা করেনি উল্টো আমাকে নানাভাবে অপমান করেছে পর্দার বিষয়ে। আমার স্বামী থেকে আমি লম্বা এবং ফর্সা হওয়ার পরও সে আমায় বলে আমি সুন্দর না, লম্বা না। আমার সামনের কিছু দাঁত বাকা হওয়ায় সে আমাকে বলে আমার দাঁত দেখলে নাকি আমায় বিয়ে ই করত না। বিয়ের পরপরই সে আমায় বলে আমাকে নাকি বিয়ের আগে ফিজিক্যালি চেক করে নেওয়া উচিত ছিল, আমার শরীর অন্য মেয়েদের মত না, আমাকে তার বন্ধুর সাথে এক্সচেঞ্জ করে দেখবে আমি কেমন আর বন্ধুর বউ কেমন। এছাড়াও আমাকে বলে কাবিনের ৫ লাখ টাকা দিতে পারবে না বলে বাধ্য হয়ে আমার সাথে সংসার করে। অথচ বিয়ের কথা যখন হয় তখন তারা এই কাবিনে রাজি হয় মূলত বড়লোকি দেখানোর জন্য উদ্দেশ্য ছিল আমার কাছ থেকে পরবর্তীতে মাফ চেয়ে নেওয়া। কিন্তু আমার কাছে মাফ চাইলে আমি ভালো ভাবে ই তাকে বলি যে এটা আমার হক আমি মাফ করব না। সে প্রথম থেকে ই আমাদের মাঝের সব কিছু ইভেন প্রাইভেট মোমেন্ট এর কথাও তার ফ্যামিলির সবার সাথে বলে। আমাদের ছোটখাটো কথা কাটাকাটি বা নরমাল কথা সব ই বলে। আমার ফ্যামিলিকেও অনেক ছোট করে। আমি যখন তার এই স্বভাব বুঝতে পারি তখন আস্তে আস্তে আমি তার সাথে দূরত্ব বজায় চলতে শুরু করি এবং কথাও একদম কম বলি। এমনকি সে যখন আমার সাথে ইনটিমেট হয় তখন তার দিক থেকে আমি কোনো টান, মায়া বা ভালোবাসা ফিল করি না বরং তাতে শুধু লালসা ই প্রকাশ পায়। পশুর মত ব্যবহার করে যেন আমি মানুষ ই না। তার এইসব ব্যবহার এর জন্য তার প্রতি আমার অরুচি এসে গেছে, আমার তাকে অসহ্য লাগে, দেখলে ই ঘৃণা হয় রাগ হয়। আমার দিকে এত বাজে ভাবে তাকায় মনে হয় যেন রাস্তা ঘাটে কোনো চরিত্রহীন মানুষ কোন মেয়ে কে চোখ দিয়ে গিলে খাচ্ছে।

আমি বর্তমানে ৬ মাসের প্রেগন্যান্ট। বিয়ের প্রথম থেকে ই সে এবং তার ফ্যামিলি বাচ্চা নেওয়ার জন্য আমাকে অনেক প্রেশার দিতে থাকে। কিন্তু যখন আমি আমার কনসিভ করার কথা তাকে জানাই তখন তার প্রথম রিয়েকশন ছিল কোথ থেকে আসল? আমি তো কিছু করি ই নাই। বিয়ের পর পর আমার পরীক্ষা শুরু হওয়ায় আমি তখন শ্বশুর বাড়ি কম থাকি বাড়িতে ই বেশি থাকা হয়। পরীক্ষা শেষ হলে শ্বশুর বাড়িতে একমাস থাকি। সেই সময় সম্পর্ক আরও খারাপ হতে থাকে। কনসিভ করার পর থেকে আমার নানা রকম সমস্যা দেখা দেয় তার মধ্যে একটা ছিল অল্পতেই মেজাজ খারাপ হয়ে যাওয়া। তার উপর তার থেকে আসা মানসিক অত্যাচার আমাকে শেষ করে দিতে থাকে। একদিন তার ব্লুটুথ হারায় গেলে সে আমাকে চোর সন্দেহ করে আমার ব্যাগ চেক করে আমার অবর্তমানে। ব্যাপারটা আমি বুঝতে পেরে তাকে জিজ্ঞেস করলে সে বিভিন্ন তালবাহানা শুরু করে। বিষয় টা আমার কাছে খুবই অপমান জনক লাগায় আমি রাগে তার সাথে কথা না বললে সে আমার ফ্যামিলিকে ছোট করে কথা বলতে শুরু করে, আমার বাবাকে বাড়ি থেকে উঠায় এনে মারার কথা বলে। তার মা বাবা কে ডেকে এনে আমায় অপমান করে। এই ঘটনার পর আমি বাবার বাড়ি চলে গেলে সে আমার কোনো খোঁজ খবর নেয় না, কোনো খরচও দেয় না ৩ মাস পর গত মাসের ৫ তারিখে আবারও ফ্যামিলির চাপে পরে আমি শ্বশুর বাড়ি আসতে বাধ্য হই। যেহেতু আমার মা বাবা অসুস্থ আর ছোট দুই বোন এখনও অবিবাহিত তাই তাদের কথা চিন্তা করে আমাকে আসতে হয়। যেহেতু আমার চাচাদের কথা দিয়ে আসে যে এখন আর আগের মত কোনো কিছু হবে না তাই আমিও সরল মনে তাদের সাথে মিলেমিশে চলার চেষ্টা করি। তার ফ্যামিলির সাথে পিছনে বা সামনে কখনো ই আমি কোনো খারাপ ব্যবহার করি নি,তাদের প্রতি কোনো হিংসা বিদ্বেষও রাখি নি। এমনকি তার কাছেও কখনো কোনো অভিযোগ করি নি। কিন্তু যেহেতু আমার স্বামী আমার মন থেকে উঠে গিয়েছিল তাই তার সাথে আমি স্বাভাবিক হতে পারি না। এবং সেও তার স্বভাব পালটাতে পারে নি। সে তার বোনদের কাছে ফোন দিয়ে আমায় ছোট করে তুই তুকারি ভাষা ব্যবহার করে কথা বলে, আমাকে সে আনতে চায় নাই, আমি খারাপ আমার বাবা মা খারাপ, আমাকে লাথি দিয়ে বাবার বাড়ি দিয়ে আসবে এইরকম নানা কথা বলতে থাকে। একদিন তো আমার সাথে থেকে গিয়ে পাশের রুমে বোনকে বলতেছে আমি বেয়াদব, ত্যাড়া, মোবাইল চালাই আমাকে লাথি দিয়ে বাবার বাড়িতে ফালায় দিয়ে আসবে।

তার ফ্যামিলির কাছে আমাদের মাঝের ছোট বড় সব কথা বলতে থাকে, ফ্যামিলির সামনে আমাকে অপমান করে কথা বলতে থাকে। আমার কাছ থেকে সব কিছু এমন ভাবে আড়াল করে যেন আমি তাদের কেউ ই না। নিজে তো অপমান করত ই সাথে আবার ফ্যামিলির মানুষকে আমার পিছনে লাগাই দিত আমাকে যাতে কথা শোনায়, অপমান করে। যদিও তাদের সবার স্বভাব হল সামনে এক পিছনে আরেক যার কারণে তারা কখনো ই সরাসরি আমাকে কিছু বলে না কিন্তু পিছনে খুবই বাজে মন্তব্য করে। আমার স্বামী খুবই মিথ্যাবাদী এবং ভন্ড একজন মানুষ। কথায় কথায় মিথ্যা বলে, আমার নিজের কানে শোনা কথা বলার পরও সে সেটা অস্বীকার করে উল্টো আমায় মিথ্যাবাদী বলে। আমি নাকি তার নামে মিথ্যা অপবাদ দেই আল্লাহ নাকি আমার বিচার করবেন এইসব বলে। আমার বাবা মা কেও গালিগালাজ করে কথা বলে। যেহেতু আমি এখন প্রেগন্যান্ট তাই আমি আমার সুবিধা মত শুইতে চাইলে এটাতেও তার প্রবলেম। সে সবার কাছে বিচার দেয়। আমি তার সাথে তর্কে জড়াইতে না চাইলে বা কথা না বললে বলবে আমি তাকে দেখতে পারি না, আবার কথা বললে বলবে ঝগড়াট্টা, বেয়াদব, মুখে মুখে তর্ক করি। মানে আমার সব কিছুতে ই দোষ। আবার তার বোনদের কাছে এটাও বলে আমায় সে ভালো ভাবে দেখলে নাকি বিয়ে ই করত না।
আমার দোষ হল তার এইসব বৈশিষ্ট্য প্রকাশ পাওয়ার পর থেকে সে আমার মন থেকে উঠে গেছে। আমি তার সাথে স্বাভাবিক ভাবে মিশতে পারি না, আমার তাকে পছন্দ না, রাগ উঠে যায় আমার খুব। আর যেহেতু আমি তার নিচু এবং নোংরা মনমানসিকতা বুঝে গেছি এবং সে যেহেতু সব কথা ই বাইরে বলে দেয় তার কারণে তার সাথে স্বাভাবিক কথাবার্তাও বলতে পারি না। আর তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করতেও আমার ঘৃণা লাগে।

এখন উস্তায আমি চাই আমার বাবার বাড়িতে থাকতে, পাশাপাশি কোনো চাকরির জন্য চেষ্টা করতে, তার সাথে দূরত্ব বজায় রাখতে। আমি কোনো ভাবে ই তার মত একজনকে আমার স্বামী হিসেবে মেনে নিতে পারছি না। আমার ফ্যামিলি কেন ভালো ভাবে খোঁজ নিল না এবং কি দেখে তার সাথে আমার বিয়ে দিল এই শোকে ই আমি পাগল হয়ে যাচ্ছি। সে আমার বা আমার ফ্যামিলির সাথে কোনো ভাবে ই যায় না। তাও যদি মানুষ টা ভালো হইত তাহলেও মানায় নেওয়া যাইত। আমার চাওয়ার সম্পূর্ণ উল্টো একজন মানুষ সে। আমার আসলে এখন করণীয় কি উস্তায?

তার যেই কল রেকর্ড গুলো আমার কাছে আছে সেগুলো তার এবং আমার ফ্যামিলিতে জানিয়ে তার আসল রূপ কি সবার সামনে আনা উচিত?
আমি কোনোভাবে ই তার সাথে মানায় চলতে পারছি না আমি কি করব এখন? কি করলে ভালো হবে?
by
আপনি জানতেন তাহলে বেবি কেনো নিলেন আপু।  বেবি নেওয়ার আগে ভাব উচিত ছিলো। লেট হয়ে গেছে অনেক। আল্লাহর উপর ভরসা করেন। দোয়া করেন

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
যেহেতু বেবি কনসিভ করে ফেলছেন, এবং বেবির বয়সও ৬ মাস প্লাস। তাই এখন বিকল্প চিন্তা না করে বরং কোনো ভাবে সংসার করার চেষ্টা করুন। বর্ণিত পরিস্থিতিতে তালাক চাওয়ার রুখসত থাকলেও সংসার করাই সর্বোত্তম বলে আমাদের মনে হচ্ছে। স্বামীর হেদায়তের জন্য দু'আ করুন। এবং তার সাথে সর্বোত্তম আচার ও ব্যবহার করুন।
হাদীস শরীফে এসেছে....
ﺻﻞ ﻣﻦ ﻗﻄﻌﻚ ﻭﺃﺣﺴﻦ ﺇﻟﻰ ﻣﻦ ﺃﺳﺎﺀ ﺇﻟﻴﻚ ﻭﻗﻞ ﺍﻟﺤﻖ ﻭﻟﻮ ﻋﻠﻰ ﻧﻔﺴﻚ
হযরত আলী রাঃ থেকে বর্ণিত, তুমি সম্পর্ক স্থাপন কর তার সাথে যে তোমার সাথে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করেছে,এবং সৎদ্ব্যবহার কর তার সাথে যে তোমার সাথে মন্দ ব্যবহার করেছে,এবং সত্য কথা বল যদিও তোমার নিজের বিরুদ্ধে হয়।(জামে সগির-৪৯৮৭)

ﻭَﻟَﻤَﻦ ﺻَﺒَﺮَ ﻭَﻏَﻔَﺮَ ﺇِﻥَّ ﺫَﻟِﻚَ ﻟَﻤِﻦْ ﻋَﺰْﻡِ ﺍﻟْﺄُﻣُﻮﺭِ ) ﺍﻟﺸﻮﺭﻯ 43/ " ﺍﻧﺘﻬﻰ .
অবশ্যই যে সবর করে ও ক্ষমা করে নিশ্চয় এটা সাহসিকতার কাজ।(৪২/৪৩)
নবী কারীম সাঃ বলেনঃ
ﻭﻗﺎﻝ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ : ( ﻳَﺎ ﻋُﻘﺒَﺔَ ﺑﻦَ ﻋَﺎﻣِﺮ : ﺻِﻞْ ﻣَﻦْ ﻗَﻄَﻌَﻚَ ، ﻭَﺃَﻋْﻂِ ﻣَﻦْ ﺣَﺮَﻣَﻚَ ، ﻭَﺍﻋْﻒُ ﻋَﻤَّﻦ ﻇَﻠَﻤَﻚَ )
হে উকবা তুমি সম্পর্ক স্থাপন কর তার সাথে যে তোমার সাথে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করেছে,এবং দান কর তাকে যে তোমাকে বঞ্চিত করেছে,এবং মাফ করে দাও তাকে যে তোমার উপর যুলুম করেছে।(মসনদে আহমদ-৪/১৫৮)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...