জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
(০১)
প্রশ্নের বিবরণ মতে এক্ষেত্রে আপনার গুনাহ হবেনা।
(০২)
হতাশ হবেননা,আল্লাহ তায়ালা আপনাকে পছন্দ করেন,ইনশাআল্লাহ।
আপনি পূর্ণ মনোযোগ সহকারে নামাজ আদায়ের চেষ্টা চালিয়ে যাবেন,সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন,ইনশাআল্লাহ আপনার নামাজ কবুল হবে।
(০৩)
মুমিনদের কেহ জাহান্নামে গেলেও একদিন না একদিন শাস্তি ভোগের পর জান্নাতে যাবেই।
হাদীস শরীফে আছে,
আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেন, “(পরকালে) আল্লাহ বলবেন, সেই ব্যক্তিকে জাহান্নাম থেকে বের কর, যে “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলেছে এবং তার হৃদয়ে যবের দানা পরিমাণ মঙ্গল (ঈমান) আছে। সেই ব্যক্তিকেও জাহান্নাম থেকে বের কর, যে “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলেছে এবং তার হৃদয়ে গমের দানা পরিমাণ মঙ্গল (ঈমান) আছে। আর সেই ব্যক্তিকেও জাহান্নাম থেকে বের কর, যে “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলেছে এবং তার হৃদয়ে অণু পরিমাণ মঙ্গল। (ঈমান) আছে।” (আহমাদ ৩/২৭৬, তিরমিযী ২৫৯৩ নং হাদীস)
তবে কাফের বেঈমানরা চিরদিন জাহান্নামে আযাবের মধ্যে বসবাস করবে। তাদের শাস্তি ক্ষমা করা হবে না, লাঘব করা হবে না এবং তারা বা জাহান্নাম ধ্বংস হয়ে যাবে না। এ ব্যাপারে মহান আল্লাহ বলেন,
وَالَّذِينَ كَفَرُوا وَكَذَّبُوا بِآيَاتِنَا أُولَٰئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ ۖ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ
অর্থাৎ, যারা (কাফের) অবিশ্বাস করে ও আমার নিদর্শনকে মিথ্যাজ্ঞান করে, তারাই অগ্নিবাসী সেখানে তারা চিরকাল থাকবে। (বাক্বারাহঃ ৩৯)
وَالَّذِينَ كَذَّبُوا بِآيَاتِنَا وَاسْتَكْبَرُوا عَنْهَا أُولَٰئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ ۖ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ
অর্থাৎ, যারা আমার নিদর্শনসমূহকে মিথ্যা মনে করেছে এবং অহংকারে তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, তারাই দোযখবাসী; সেখানে তারা চিরকাল থাকবে। (আরাফঃ ৩৬)
إِنَّ الَّذِينَ كَذَّبُوا بِآيَاتِنَا وَاسْتَكْبَرُوا عَنْهَا لَا تُفَتَّحُ لَهُمْ أَبْوَابُ السَّمَاءِ وَلَا يَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ حَتَّىٰ يَلِجَ الْجَمَلُ فِي سَمِّ الْخِيَاطِ ۚ وَكَذَٰلِكَ نَجْزِي الْمُجْرِمِينَ
অর্থাৎ, অবশ্যই যারা আমার নিদর্শনাবলীকে মিথ্যা বলে এবং অহংকারে তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, তাদের জন্য আকাশের দ্বার উন্মুক্ত করা হবে না এবং তারা বেহেশ্তেও প্রবেশ করতে পারবে না যতক্ষণ না সুচের ছিদ্রপথে উট প্রবেশ করে। এরূপে আমি অপরাধীদেরকে প্রতিফল দিয়ে থাকি। (আরাফঃ ৪০)
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
আল্লাহ তায়ালা তাদেরকেও জান্নাতে দিবেন।
তবে তারা নিজেদের কৃতকর্মের শাস্তি ভোগের পর জান্নাতে যাবে।
হ্যাঁ, যদি আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে ক্ষমা করে দিয়ে বিনা হিসাবে জান্নাতে দেন,তাহলে তাহা ভিন্ন কথা।
সেক্ষেত্রে তাদের জাহান্নামে যেতে হবেনা।
(০৪)
তাহাজ্জুদের আগে ওযু করার পর তাহিয়্যাতুল ওযুর নামায পড়া যাবে।
আবার তাহাজ্জুদ নামাজের ক্ষেত্রে তাহিয়্যাতুল ওযুর নামায এর নিয়তও করা যাবে।
মানে একই দুই নিয়তে এক নফল নামাজ আদায় করা যাবে।
আছরের সময় ওযুর পর তাহিয়্যাতুল ওযুর নামায পড়া যাবে।
তবে মাগরিব ও ফজরের সময় ফরজ নামাজের আগে তাহিয়্যাতুল ওযুর নামাজ পড়া যাবেনা।
হ্যাঁ, ফজরের সুন্নাত আদায়ের সময় সুম্মাত আদায়ের নিয়তের পাশাপাশি তাহিয়্যাতুল ওযুর নামাজ এর নিয়ত সেক্ষেত্রে উভয় নামাজই আদায় হয়ে যাবে।
৫.ইশরাক চাশত না পড়লে গুনাহ হবেনা।
৬.যারা আগে নামায পড়েনি, তারা
যেদিন থেকে বালেগ/বালেগাহ হয়েছেন,সেদিন থেকে আজ পর্যন্ত প্রবল ধারণার ভিত্তিতে কাজা নামাজের হিসাব করবেন।
সেক্ষেত্রে চেষ্টার পরে অনুমানে কিছু ভুল হলে আশা করি আল্লাহ তায়ালা ক্ষমা করবেন।
তারা এভাবে কাজা নামাজের নিয়ত করবেনঃ-
"আমার জিম্মায় যত ফজরের নামায কাযা রয়েছে, সে অনাদায়কৃত নামায সমূহের মধ্য থেকে প্রথম ফজরের নামাযকে এখন কাযা আদায় করছি”
আরো জানুনঃ-
বর্তমান নামাযের ফরয ও সুন্নত নামায +আগের নামাযের ফরযগুলো আদায় করবে।
পাশাপাশি আগের প্রতিদিনের আনাদায়ী বিতত নামাজেরও কাজা আদায় করতে হবে।
নামায গুলো আদায় করা কষ্টকর হলেও আদায় করতেই হবে।
জীবদ্দশায় উক্ত নামাজ আদায় করা ব্যাতিত কোনো উপায় নেই।
৭.নামাযে সূরা ফাতিহার পর একাধিক সূরা পড়া যাবে।
কেউ যদি লম্বা সূরাগুলোর কয়েক আয়াত পড়তে চায় সূরা ফাতিহার পরে,সেটা পড়া যাবে।
৮.চার রাকাআত বিশিষ্ট সুন্নত নামাজের ক্ষেত্রে চার রাকাআতেই সূরা ফাতিহার সাথে অন্য সূরা মিলিয়ে পড়তে হবে।
তিন/চার রাকাআত বিশিষ্ট ফরজ নামাজের ক্ষেত্রে তিন/চার রাকাআতেই সূরা ফাতিহার সাথে অন্য সূরা মিলিয়ে পড়তে হবেনা।
শুধুমাত্র ১ম দুই রাকাতে সূরা ফাতিহার সাথে অন্য সূরা মিলিয়ে পড়তে হবে।
৯.মনে মনে সন্দেহ করা,দোষারোপ করা কুধারণা।
এ থেকে বেঁচে থাকার জন্য কাহারো সম্পর্কে খারাপ ধারনা পোষন করা যাবেনা।
১০.আল্লাহ তায়ালার প্রিয় বান্দা কারা,এ সম্পর্কে হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
হজরত উসামা ইবনু শারিক (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা নবি কারিম (সা.)-এর কাছে এমনভাবে বসে ছিলাম মনে হয় আমাদের মাথার ওপর পাখি বসে আছে। আমাদের কেউই কোনো কথা বলছিল না। হঠাৎ কিছু মানুষ এলো এবং বলল, আল্লাহর কাছে কোন বান্দা সবচেয়ে প্রিয়? রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, যে সবচেয়ে বেশি চরিত্রবান (সে-ই আল্লাহর কাছে সর্বাধিক প্রিয় বান্দা)। (সিলসিলা সহিহা, ১৩)।
১১.বাসার সবাই একসাথে উঠে তাহাজ্জুদ পড়লেও একাকী নির্জনে তাহাজ্জুদ পড়ার সেইম সওয়াব হবে,ইনশাআল্লাহ ।
তবে কাহারো মনে যেনো ইবাদতে রিয়া তথা লোক দেখানোর বিষয় না থাকে।
১২.
এ সংক্রান্ত জানুনঃ-
১৩.
এক্ষেত্রে নামায হবে। কোনো সমস্যা নেই।
১৪.
আমরা সেই দোয়া গুলি পড়তে পারবো।
১৫.
আপনি যেহেতু মেয়ে,সুতরাং কোনো গায়রে মাহরাম পুরুষ সেই ছবি দেখার কোনো আশংকা না থাকলে সেই ছবি তোলা যাবে।
তবে অনেক উলামায়ের কেরাম এ থেকেও নিষেধ করে থাকেন।
১৬.
কোনো গায়রে মাহরাম পুরুষ যদি সেই ফটোগ্রাফ দেখার কোনো আশংকা না থাকে,আর প্রিন্ট যদি না করা হয়, প্রচার প্রসার না করা হয়,অন্য কাউকে না দেয়া হয়,সেক্ষেত্রে সেই ফটো তোলা যাবে।
তবে অনেক উলামায়ের কেরাম এ থেকেও নিষেধ করে থাকেন।
১৭.
ছবিটি প্রিন্ট করা না হলে এবং কোনো গায়রে মাহরাম পুরুষ সেই ছবি দেখার কোনো আশংকা না থাকলে ছবি তুলে দেয়া যাবে।
তবে অনেক উলামায়ের কেরাম এ থেকেও নিষেধ করে থাকেন।