আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
31 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (17 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম।

১. আমার ফ্যামিলি প্র্যাক্টিসিং না। আমার চাচা পরিবারের কর্তা। উনি কিছু কারণে পরিবারকে চাপ দিচ্ছে লোন নিতে। উনি বিদেশ থাকে। লোনের সাথে অবশ্যই সুদ জড়িত থাকে আমাদের দেশে। উনি পরিবারের কারো সাথে যোগাযোগ করেন না। শুধু আমার সাথেই কথা বলে। তো এই ব্যাপারে খোঁজ খবর আমাকে জানাচ্ছে। মূলত পরিবারের লোক আর উনার মধ্যে আমি তথ্য আদান প্রদান করছি এই ব্যাপারে বলা যায়।
তো এখানে কি আমারও গুনাহ হবে? সুদের সাথে জড়ানো হয়ে যাবে? উনি বদমেজাজি হওয়ার পরেও আমি উনাকে বলেছি এভাবে লোন নিলে তো সুদ দিতে হয়। কিন্তু পরিবারে আমার মতের গুরূত্ব নেই। আমার কিছু বলার আর করারও নেই। উনার সাথে যোগাযোগ করবো না এই উপায়ও নেই। কী করতে পারি? উনি অল্পতেই রেগে গিয়ে অকথ্য ভাষা ব্যবহার করে। যার কারণে উনার সাথে চুপচাপ কথা বলা ছাড়া কিছু করার নেই। আমার ফ্যামিলি লোন নিয়ে উনাকে বিদেশে পাঠাবে। তাই কীভাবে কি করতে হবে সেটাই আমাকে জানাচ্ছে। আমিও এই ব্যাপারে কত টাকা লাগবে, মাসে কত টাকা করে লোন পরিশোধ করতে হবে সেটা জানাচ্ছি। এটা সুদের সাথে জড়িয়ে যাওয়া হয়? আমার করণীয় কী?

২. আমার এক ক্লোজ আত্মীয় তার বাচ্চার জন্মদিনে দাওয়াত দিয়েছে  আমি বাচ্চাকে স্পষ্টভাবে যাবো না বলে দিয়েছি যেহেতু জন্মদিন পালন জায়েজ নেই। কিন্তু এরপরও যদি যেতে হয় বা উনারা খাবার পাঠায় সেই খাবার খাওয়া হারাম হবে?

৩. আবার সেই বাচ্চাকে আমি পড়াই। আমার সে আত্মীয় জ্বীন সংক্রান্ত কাজের সাথে জড়িত। উনাদের সাথে নাকি এক জ্বীনের যোগাযোগ আছে এবং মানুষের ট্রিটমেন্ট করে থাকে তারা জ্বীন সংক্রান্ত সমস্যার। এবং উনাদের ইনকামও আসে এই থেকে। তো উনাদের থেকে টিউশন ফি নেওয়াটা আমার জন্য হালাল হবে? উনারা যেহেতু আমাদের আত্মীয় আমরা পুরো ইগনোর করতে পারি না। প্রায় তাদের বাসায় যেতে হয়, খাওয়া হয় সেটাও কি হারাম? এসব নিয়ে খুবই দুঃশ্চিন্তায় আছি। টিউশন ফি টা আমার জরুরী। কষ্ট করে পড়ানোর পর যদি হারাম হয়!

৪. ইফতারের সময় যদি ৫:১১ তে দেওয়া থাকে আর সূর্যাস্ত যদি ৫:০৮ এ হয় তাহলে ৫:০৮ এর পর ইফতার করা যাবে না? আযান আগে দেওয়ার কারণে ৫:০৮ এর পরই ইফতার করেছি। এতে কি  রোযা কমপ্লিট হয়নি?

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
শরীয়তের বিধান মতে সুদ গ্রহণ, সুদ প্রদান উভয়ই লানতপ্রাপ্ত গোনাহ। তাই এ ভিত্তিতে লোন নেওয়া,তা দিয়ে ব্যবসা করা,অন্যকে এ থেকে লোন দেওয়া জায়েজ নয়। হারাম। 

মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন  

الَّذِينَ يَأْكُلُونَ الرِّبَا لَا يَقُومُونَ إِلَّا كَمَا يَقُومُ الَّذِي يَتَخَبَّطُهُ الشَّيْطَانُ مِنَ الْمَسِّ ۚ ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمْ قَالُوا إِنَّمَا الْبَيْعُ مِثْلُ الرِّبَا ۗ وَأَحَلَّ اللَّهُ الْبَيْعَ وَحَرَّمَ الرِّبَا ۚ فَمَنْ جَاءَهُ مَوْعِظَةٌ مِنْ رَبِّهِ فَانْتَهَىٰ فَلَهُ مَا سَلَفَ وَأَمْرُهُ إِلَى اللَّهِ ۖ وَمَنْ عَادَ فَأُولَٰئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ ۖ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ [٢:٢٧٥

যারা সুদ খায়, তারা কিয়ামতে দন্ডায়মান হবে, যেভাবে দন্ডায়মান হয় ঐ ব্যক্তি, যাকে শয়তান আসর করে মোহাবিষ্ট করে দেয়। তাদের এ অবস্থার কারণ এই যে, তারা বলেছেঃ ক্রয়-বিক্রয় ও তো সুদ নেয়ারই মত! অথচ আল্লাহ তা’আলা ক্রয়-বিক্রয় বৈধ করেছেন এবং সুদ হারাম করেছেন। অতঃপর যার কাছে তার পালনকর্তার পক্ষ থেকে উপদেশ এসেছে এবং সে বিরত হয়েছে, পূর্বে যা হয়ে গেছে, তা তার। তার ব্যাপার আল্লাহর উপর নির্ভরশীল। আর যারা পুনরায় সুদ নেয়, তারাই দোযখে যাবে। তারা সেখানে চিরকাল অবস্থান করবে। {সূরা বাকারা-২৭৫}

হাদীস শরীফে এসেছে  
عبد الله بن مسعود عن أبيه عن النبي صلى الله عليه وسلم قال لعن الله آكل الربا وموكله وشاهديه وكاتبه

হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাঃ এর পিতা থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-“যে সুদ খায়, যে সুদ খাওয়ায়, তার সাক্ষী যে হয়, আর দলিল যে লিখে তাদের সকলেরই উপর আল্লাহ তায়ালা অভিশাপ করেছেন। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস নং-৩৮০৯, মুসনাদে আবি ইয়ালা, হাদিস নং-৪৯৮১)
,
ব্যাংক লোন হারাম।কিন্তু ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে আসার পর সেই লোনকে পরিশোধ করার পর উক্ত লোন দিয়ে যা খরিদ বা তৈরী করা হয়েছিলো,সেটা হালালই থাকছে।যদিও লোন গ্রহণ করা হারাম ও অবৈধ ছিলো।

ব্যাংক লোন সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুন 

ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে ব্যবসা করা জায়েজ নয়।

লোন গ্রহণ নাজায়েয ও হারাম। যদি লোনকে হালাল টাকা দ্বারা পরিশোধ করা হয়, তাহলে লোনের টাকা দ্বারা যা কিছুই করা হবে, তা জায়েয।পরবর্তীতে যত ইনকাম হবে, তার সবই জায়েয।
লোন গ্রহণের জন্য তাওবাহ করতে হবে।

আরো জানুনঃ 

লোন নিয়ে ব্যবসা করলে ব্যবসার মুনাফা হারাম হবে কিনা,সেটি নির্ভর করবে লোন পরিশোধ করছে কোন টাকা দিয়ে,সেটির উপর। 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি লোন নেয়ার কোনো কাজে কথা/মেধা দিয়ে কোনো প্রকারের সাহায্য সহায়তা করবেননা।

তারা এই ব্যাপারে কোনো কথা বললে বা আপনার থেকে সহযোগিতা চাইলে আপনি চুপ হয়ে থাকবেন,অন্য রুমে চলে যাবেন।

(০২)
সেই খাবার খাওয়া নাজায়েজ।
আপনি সেই খাবার গ্রহন করবেননা,অগত্যা গ্রহন করলে তাহা ফিরিয়ে দিবেন। 

ফিরিয়ে দেয়া সমস্যাকর হলে সেক্ষেত্রে কোনো গরিব মিসকিনকে সেই খাবাত দিয়ে দিবেন,আপনারা তাহা ভক্ষন করবেননা।

(০৩)
প্রশ্নের বিবরণ মতে টিউশন ফি হালাল হবে।
আর তাদের অধিকাংশ ইনকাম তো সেখান থেকে আসেনা,বরং তাদের অধিকাংশ ইনকাম তো হালাল,সুতরাং তাদের বাসায় যাওয়া যাবে,খাবার খাওয়া যাবে।

(০৪)
এটা ইসলামীক ফাউন্ডেশন কর্তৃক প্রনীত স্থায়ী ক্যালেন্ডারের আপনার জেলার টাইম হয়,বা অন্য কোনো নির্ভরযোগ্য সোর্স থেকে নেয়া টাইম হয়,সেক্ষেত্রে আপনার রোযা হয়েছে। 

তদুপরি আগামীতে সতর্ক থাকবেন,ইফতারের যেই সময় দেয়া থাকবে,সেই টাইমের আগে ইফতার করবেননা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...