আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
41 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (1 point)
আসসালাম আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু। প্রিয় মুফতি সাহেব, আশা করি আল্লাহর রহমত এ ভালো আছেন। আমি অনেক চিন্তিত একটি বিষয় নিয়ে মুফতি সাহেব। একটু দ্রুত উত্তর টা দিলে মনে একটু শান্তি আসবে। মূল প্রশ্ন শেষে লিখা আছে।
পরিচয়:
ছেলে(আমি): [নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক] ২৫ বছর বয়স, বাংলাদেশ এ থাকি (ফার্মগেট, ঢাকা), ইউনিভার্সিটির বিবিএ এর ২য় বর্ষের ছাত্র। আপাতত কোনো চাকরি বাকরি নেই। আহলে হাদিস মাযহাব এর অনুসারী।আমি হানবালি মাযহাব অনুসরণ করি না। পৈতৃক ঠিকানা: জামালপুর
মেয়ে: [নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক] 23 বছর বয়স, সাভার থাকে। ইউনিভার্সিটির অনার্সে পড়ছে। হানাফী মাযহাব এর অনুসারী। পৈতৃক ঠিকানা: বরিশাল
প্রাসঙ্গিক বিষয়: (মূল প্রশ্ন অংশ নিচে আছে)
আমরা দীর্ঘ ৪ মাস একটি সম্পর্কে আবদ্ধ থাকি।আমরা একজন আরেকজনকে অনেক ভালোবাসি। আমাদের পরিচয় সোশ্যাল মিডিয়ায় হয়। এবং কয়েক মাস কথা বলার এক পর্যায়ে আমরা একজন আরেকজনকে ভালোবেসে ফেলি। এবং যেহেতু আমরা উভয়েই ঢাকায় থাকি তো অনেকভাবেই দেখা সাক্ষাত হচ্ছিল। কিন্তু হারামভাবে সম্পর্কে আর থাকতে চাচ্ছিলাম না। এই অবস্থায় বাবা মাকেও জানানো যাচ্ছিল না কারণ আমি  মাত্র পড়াশোনা করছি, বেকার এবং এই অবস্থায় ওর বাবা মা ও আমাকে মেনে নিবে না আর আমার বাব মা ও এখন বিয়ে করাতে আগ্রহী হবেন না কারণ আমার বোনের বিয়ের চিন্তাও বাবার মাথায় ঘুরতেছে এবং বাবা ও শারীরিক ভাবে সুস্থ না। আমরা চাচ্ছিলাম পড়া যখন শেষের দিকে থাকবে তখন পরিবারকে জানিয়ে কাবিন এবং পারিবারিক ভাবে বিয়ে টা করব।কিন্তু এত সময় আমরা হারামভাবে থাকতে পারব না।তাই সম্পর্কটা যাতে হালাল হয়।তাই আমরা রেজিস্ট্রি ছাড়া ইসলামিকভাবে বিয়ে টা সেরে ফেলি। ২ জন পুরুষ সাক্ষীর সামনে ইজাব কবুল করে আমরা বিবাহ সম্পন্ন করি। এটা আমাদের দুজনের সম্মতিতেই হয় এবং দুজন সামনাসামনি বসেই বিবাহের কাজটা সম্পন্ন করি।
মুফতি সাহেব আমরা একজন আরেকজনের প্রতি ভীষণ দুর্বল এবং কসম করেছিলাম একজন আরেকজনকে ছাড়া বিবাহ করব না। থাকতে পারব না।
মূল প্রশ্নের বিষয়:
এমন পেরেশানির ভেতর থাকতে থাকতে দুইজন এ ডিসিশন নিলাম যে যেহেতু কসম করে ফেলছি যে একে অপরকে ছাড়া বিয়ে করবো না। সেহেতু নিকাহ টা করে ফেলি বাবা মা কে না জানিয়ে। এরপর না হয় আমরা পরে আবার লোক দেখানো বিয়ে করে ফেলবো। আমরা নিকাহ ছাড়া কোনো পথ দেখি নি মুফতি সাহেব।  আমরা আমাদের ভুলের জন্য আল্লাহর কাছে লজ্জিত। আমরা আল্লাহর কাছে প্রতিদিন তওবা করি। কিন্তু মুফতি সাহেব, আমরা দুইজন একে অপরের জন্য ভীষণ দুর্বল। আমরা আমাদের সম্পর্ক কে হালাল করতে চেয়েছিলাম। আর আমরা কাছাকাছি থাকায় যেহেতু দেখা সাক্ষাত হবে তাই হালাল করাটা জরুরী মনে করেছিলাম। কারণ আমরা তো গুনাহ এর সম্পর্কের মধ্যে ছিলাম। এই কারণে ওই মেয়েটাকে আমি বলি যে, তুমি আমাকে বিয়ে করে ফেলো, তুমি আমাকে তোমার উকিল বানিয়ে নাও। আমি ২ জন পুরুষ সাক্ষীর সামনে কবুল করে নিবো। এরপর আমরা সামনাসামনি বসে প্রথমে মেয়েটি আমার সাথে তোমার ২৫০০০ টাকা মোহর এর বিনিময়ে বিবাহ করার জন্য তোমাকে আমার উকিল হিসেবে নিযুক্ত করলাম”এটা বলে কবুল বলে। আমি এই বিষয়ে রাজি হলাম। এরপর ২ জনকে সাক্ষী করে বললাম, “অমুক এর মেয়ে তমুককে বিয়ে করে নেওয়ার জন্য তমুক আমাকে তার উকিল বানিয়েছে। আমি ২৫০০০ টাকা মোহরের শর্তে তার সাথে এই বিয়ে কবুল করে নিলাম।”
কুফু সংক্রান্ত বিষয়গুলো পেশ করছি:
সম্পত্তি :
মেয়ে: মেয়ের বাবার বরিশাল ও সাভারে বাড়ি এবং জমিজমা আছে।বাবা অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা।আর্থিকভাবে সচ্ছল। মেয়ের নিজের নামে কিছু জমি আাছে। কিন্তু সে কোনো কাজ করে না।
ছেলে( আমি) : বাবার ব্যবসা আছে। নিজ এলাকায় বাড়ি এবং জমিজমা আছে। আর্থিকভাবে সচ্ছল। ছেলের নিজস্ব কোনো সম্পত্তি নেই। কিন্তু শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ আছে।
ধর্মীয় দিক:
মেয়ে: ৫ ওয়াক্ত সালাত নিয়মিত আাদায়ের চেষ্টা করে
ছেলে: ৫ ওয়াক্ত সালাত নিয়মিত আাদায়ের চেষ্টা করে

বংশ
মেয়ে: হানাফি মাযহাব অনুসরণ করে। পারিবারিক ভাবে সুনাম আছে
ছেলে: আহলে হাদিস মাযহাব অনুসরণ করে নামাজ আদায় করে। কিন্তু বাকি নিয়ম এতটা দৃঢ়ভাবে মানা হয় না। হানবালি মাযহাব অনুসরণ করা হয় না। পারিবারিকভাবে অনেক সুনাম আছে।
মূল প্রশ্ন :
এমতাবস্থায় বাবা  মাকে না জানিয়ে এই বিয়ে করাটা কি ইসলামিকভাবে জায়েজ হয়েছে বা কুফুর মধ্যে পড়ে? আহলে হাদিস হিসেবে কি বিয়েটা কবুল হয়েছে? এবং যদি না হয় কুফু মিলতে এক্ষেত্রে কি কি নিয়ম মেনে করতে হতো সে বিষয়গুলো স্পষ্ট হতে চাই।
এই কয়দিন আমরা ২ জন অনেক পেরেশানির মধ্যে আছি। উত্তর টা একটু দ্রুত দেওয়ার আশায় লিখলাম। আল্লাহ আপনার এবং আপনাদের মত সকল আলেমদেরকে কবুল করে নিন সেই দোয়া করি। আমীন।

1 Answer

0 votes
by (569,520 points)
জবাবঃ- 
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

শরীয়তের বিধান হলো যদি দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক সমঝদার সাক্ষ্যির সামনে প্রাপ্ত বয়স্ক পাত্র ও পাত্রি যদি প্রস্তাব দেয় এবং অপরপক্ষ তা গ্রহণ করে নেয়, তাহলে ইসলামী শরীয়াহ মুতাবিক বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যায়। অভিভাবকের সম্মতি থাকুক বা না থাকুক। অভিভাবক জানুক বা না জানুক।

তবে যদি গায়রে কুফুতে বিবাহ করে, তথা এমন পাত্রীকে বিবাহ করে, যার কারণে ছেলে বা মেয়ের পারিবারিক সম্মান বিনষ্ট হয়, তাহলে পিতা সে বিয়ে আদালতের মাধ্যমে ভেঙ্গে দিতে পারে। যদি কুফুতে বিবাহ করে, তাহলে পিতা এ অধিকারও পাবে না।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ؛ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «الْأَيِّمُ أَحَقُّ بِنَفْسِهَا مِنْ وَلِيِّهَا.

হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, মেয়ে তার ব্যক্তিগত বিষয়ে অভিভাবকের চেয়ে অধিক হকদার। {মুয়াত্তা মালিক, হাদীস নং-৮৮৮, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৪২১, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১৮৮৮, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২০৯৮, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২২৩৪, সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-১১০৮, সুনানে নাসায়ী, হাদীস নং-৩২৬০, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৪০৮৪, সুনানে দারাকুতনী, হাদীস নং-৩৫৭৬}

আরো জানুনঃ-

উক্ত মাসয়ালার ক্ষেত্রে চার মাযহাবের অবস্থান দলিল সহ জানুনঃ-

https://ifatwa.info/82185/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
কে কোন মাযহাব মানছে? কে কোন ইমামকে মানছে? এটাকে দেখে ফাতাওয়া দেওয়া হবে না।বরং যিনি ফাতাওয়া দিচ্ছেন, উনি উনার মাযহাবের আলোকেই ফাতাওয়া দিবেন।এটাই ফিকহের মূলনীতি।

যেমন, বৃটিশ হাইকোর্টে উঠে এটা বলা যাবে যে, আমাদের জন্য বাংলাদেশের ল অনুযায়ী রায় দেন, বরং কোর্ট যেহেতু বৃটিশ, তাই তারা তাদের তথা ইউ,কে  এর আইন অনুযায়ী রায় দিবে।

আমরা হানাফি ফিকহের মূলনীতির আলোকে ফাতাওয়া দিয়ে থাকি। সুতরাং অন্য মাযহাবে কি আছে, বা কে কোন মাযহাবকে ফলো করছে, সেটা আমাদের দেখার বিষয় নয়। যে যে মাযহাবকে অনুসরণ করবে, তার একান্ত দায়িত্ব সে ঐ মাযহাবের আলেমের নিকট মাস'আলা জিজ্ঞাসা করবে,ও সেই অনুযায়ী আ'মল করবে। স্বামী স্ত্রীর মধ্যে পরস্পর পরস্পরের মাযহাব ভিন্ন হলে, স্বামীর মাযহাবের আলোকেই বিষয়টার সমাধান বা নিষ্পত্তি হবে।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই,
প্রশ্নের বিবরন মতে উক্ত বিবাহ শুদ্ধ হয়েছে।
শরীয়তের দৃষ্টিকোন হতে আপনারা এখন বৈধ
স্বামী স্ত্রী।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (1 point)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকা তুহ মুফতি সাহেব। জবাবটি দ্রুত দপয়ার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে। মুফতি সাহেব আপনার জবাবটি লিখিতভাবে ইমেইলে দেয়ার জন্য একান্ত ভাবে অনুরোধ করছি। ধন্যবাদ।
Email- *Emails are not allowed*
by (569,520 points)
আপনার  ইমেইল ঠিকানা দিন।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...