ওয়া আলাইকুম আসসালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃসহবাসের সময় স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের গোপনাঙ্গের দিকে তাকানো জায়েয আছে।
হাদিসে এসেছে, বাহয বিন হাকীম তিনি তাঁর পিতা তিনি তাঁর দাদা থেকে বর্ণনা করেছেন, একদা তিনি বললেন, ‘হে আল্লাহর রসূল! আমাদের গোপনাঙ্গ কী গোপন করব, আর কী বর্জন করব?’ তিনি বললেন,
احْفَظْ عَوْرَتَكَ ، إِلَّا مِنْ زَوْجَتِكَ ، أَوْ مَا مَلَكَتْ يَمِينُكَ
‘তুমি তোমার স্ত্রী ও ক্রীতদাসী ছাড়া অন্যের নিকটে লজ্জাস্থানের হেফাযত কর।’ সাহাবী বললেন, ‘হে আল্লাহর রসূল! লোকেরা আপোসে এক জায়গায় থাকলে?’ তিনি বললেন, যথাসাধ্য চেষ্টা করবে, কেউ যেন তা মোটেই দেখতে না পায়।’ সাহাবী বললেন, ‘হে আল্লাহর রসূল! কেউ যদি নির্জনে থাকে?’ তিনি বললেন,
اللهُ أَحَقُّ أَنْ يُسْتَحْيَا مِنْهُ مِنَ النَّاسِ
‘মানুষ অপেক্ষা আল্লাহ এর বেশী হকদার যে, তাঁকে লজ্জা করা হবে।’ (আবূ দাঊদ ৪০১৯, তিরমিযী ২৭৯৪)
উক্ত হাদিসের ব্যাখ্যায় হাফেয ইবন হাজর আসকালানী রহ. বলেন,
وَمَفْهُومُ قَوْلِهِ (إِلَّا مِنْ زَوْجَتك) يَدُلُّ عَلَى أَنَّهُ يَجُوزُ لَهَا النَّظَرُ إِلَى ذَلِكَ مِنْهُ ، وَقِيَاسه أَنَّهُ يَجُوزُ لَهُ النَّظَرُ
‘তুমি তোমার স্ত্রী ছাড়া’ (إِلَّا مِنْ زَوْجَتِكَ)-এর দ্বারা বোঝা যায়, স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের গোপনাঙ্গের দিকে তাকানো জায়েয। যুক্তিও বলে, এটা জায়েয হবে। (ফাতহুল বারী ১/৩৮৬)
ইবন কুদামা আল মাকদেসী রহ. বলেন,
وَيُبَاحُ لِكُلِّ وَاحِدٍ مِنْ الزَّوْجَيْنِ النَّظَرُ إلَى جَمِيعِ بَدَنِ صَاحِبِهِ ، وَلَمْسُهُ ، حَتَّى الْفَرْجِ … ؛ وَلِأَنَّ الْفَرْجَ يَحِلُّ لَهُ الِاسْتِمْتَاعُ بِهِ ، فَجَازَ النَّظَرُ إلَيْهِ وَلَمْسُهُ ، كَبَقِيَّةِ الْبَدَنِ
স্বামী-স্ত্রী একে অপরের সমস্ত দেহের দিকে তাকানো, স্পর্শ করা, এমনকি যৌনাঙ্গের ক্ষেত্রেও বৈধ। কেননা, যৌনাঙ্গে মিলন হালাল। সুতরাং শরীরের অন্যান্য অঙ্গের মত তা দেখা ও স্পর্শ করাও জায়েয। (আল মুগনী ৭/৭৭)
হাশিয়াতুত দাসুকী (২/২১৫)-তে আছে,
وَحَلَّ لَهُمَا ، أَيْ لِكُلٍّ مِنْ الزَّوْجَيْنِ … نَظَرُ كُلِّ جُزْءٍ مِنْ جَسَدِ صَاحِبِهِ ، حَتَّى نَظَرُ الْفَرْجِ ، وَمَا وَرَدَ مِنْ أَنَّ نَظَرَ فَرْجِهَا يُورِثُ الْعَمَى مُنْكَرٌ لا أَصْلَ لَهُ
স্বামী-স্ত্রীর জন্য জায়েয একে অপরের সমস্ত দেহের দিকে তাকানো, এমনকি যৌনাঙ্গের দিকেও। বলা হয়, স্ত্রীর গোপনাঙ্গের দিকে তাকালে স্বামীর চোখের জ্যোতি কমে যায়-একথার কোনো ভিত্তি নেই।
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১)প্রয়োজন ছাড়া গোপনাঙ্গের দিকে তাকালে গুনাহ হবে না। তবে না তাকানো-ই উত্তম।
(২)ইস্তিঞ্জা করার সময় বা নাভির নিচের লোম পরিষ্কার করার সময় গোপনাঙ্গের দিকে তাকানো যাবে। তবে যথাসম্ভব নজরকে হেফাজত করা উত্তম।
(৩)"গোপনাঙ্গের দিকে তাকালে স্মৃতিশক্তি কমে যায়",একথার কোনো ভিত্তি নেই।