আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
31 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (39 points)
আসসালামু আলাইকুম মাতুল্লাহি ওয়াবারকাতুহ।
উস্তাদ অনুগ্রহ করে এই প্রশ্ন গুলোর উত্তর পয়েন্ট আকারে দিবেন।

১/ নামাযের পাজামায় ইস্তেহাজার রক্ত ছোট ছোট ২ ফোটা লেগেছিল।কিন্তু আমি সেটা জানতাম না।না জেনে আমি এই পাজামা দিয়ে কয়েক দিনের নামায আদায় করেছি।এখন আমার নামায গুলো কি হয়েছে?নাকি পাজামা টা নাপাক হয়ে গেছে?

২/ বিতির নামাযে দুয়া কুনুত পড়ার জায়গায়  ভুল করে ছানা অর্ধেকের থেকে কম পড়ে ফেলেছি।পরে যখন মনে পড়েছে তখন ছানা বাদ দিয়ে দোয়া কুনুত পড়েছি। এখানে কি  সাহু সিজদার প্রয়োজন আছে? আমি সাহু সিজদা দিইনি।নামাজ কি হবে?

৩/ গত কাল রাতে আমার নিয়ত ছিল কাজা রোজা রাখার।কাজা রোজা রাখবো বলে একসাথে রাতে ভাত খেয়ে ফেলেছি
ভোর রাতে আর খাইনি।মনে মনে কাজা রোজা রাখবো এটা ভাবলেও (আমার জিম্মায় থাকা যত গুলো কাজা রোজা আছে তার সর্বপ্রথম কিংবা সর্বশেষ রোজাটি কাজা   আদায় করবো)এই ধরনের স্পেসিফিক নিয়ত করতে আমি ভুলে গেছি।ফজরের প্রায় ৪ মিনিট আগে তখন আমি বিতির নামায পড়ছিলাম,এই নামায পড়ার মধ্যে আমার রোজার নিয়তের কথা মনে পড়ে,তখন আমি মনে মনে আবছা আবছা নিয়ত করেছি।যদিও উপরের বর্ণিত নিয়তটি আমার মনে পুরোপুরি কাজ করছিল না।এখন এই অবস্থায় আমি রোজাটি রেখেছি।তাহলে আমার রোজাটি কি কাজা রোজা হিসেবে দার্তব্য হবে নাকি নফল রোজা হিসেবে গণ্য হবে?

৪/এবারের বন্যায় আমার মামার কাছে বিভিন্ন লোকেরা বন্যা কবলিত মানুষের জন্য
ত্রাণ পাঠিয়েছিল। তো সেখান থেকে কিছু ত্রাণ সামগ্রী আমার মামা আমার আন্টির জন্য পাঠিয়েছিল।প্রয়োজনের তুলনায় হয়তো একটু বেশিও পাঠিয়েছিল, আল্লাহই ভাল জানেন।আমার আন্টির স্বামীর আর্থিক অবস্থা মোটামুটি ভালো।মামা আন্টির জন্য যখন ত্রাণ পাঠিয়েছে তখন তাদের উঠানে এবং চারপাশে পানি ছিল।রাস্তার পাশেই উনাদের বাড়ি।আমার আন্টির দেবর চাইলেই পানি দিয়ে উঠানটা পার হয়ে রাস্তা দিয়ে বাজার করে আনতে পারতেন।কিন্তু তাও তারা এই ত্রাণ সামগ্রী গ্রহণ করেছে।এটা কি তাদের উচিত হয়েছে?আমাদের আর্থিক অবস্থা বলতে গেলে অনেক দরিদ্র।মাত্র ৬ হাজার টাকা বেতনের চাকরি করেন আমার বাবা।এখন যদি এই ত্রাণ সামগ্রী আমার আন্টিদের জন্য হারাম হয়ে থাকে তাহলে সেটা কি আমাদের জন্যও হারাম হবে?আমরা উনাদের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে অনেকবার এই ত্রাণের খাবারগুলো খেয়েছি।আমাদের জন্য যদি হারাম হয়ে থাকে তাহলে কিভাবে এর কাফফারা দিব?

1 Answer

0 votes
by (569,520 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

عن أبي هريرة رضي الله عنه  عن رسول الله صلى الله عليه و سلم قال : تعاد الصلاة من قدر الدرهم من الدم (سنن الدر قطنى، كتاب الصلاة، باب قدر النجاسة التي تبطل الصلاة، رقم الحديث-1)

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-এক দিরহাম পরিণাম রক্তের দরুন নামাযকে পুনরায় আদায় কর। {সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-১, সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-৩৮৯৬, জামেউল আহাদীস, হাদীস নং-১০৭৮৩, মারেফাতুস সুনান ওয়াল আসার লিল বায়হাকী, হাদীস নং-১৩২৩, আল জামেউল কাবীর, হাদীস নং-২৩৮}

ইবরাহীম নাখায়ী রাহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রক্ত প্রস্রাব ইত্যাদি নাপাকি যদি দিরহাম পরিমাণ হয় তাহলে তোমার নামায পুনরায় পড়ে নাও। আর যদি দিরহামের কম হয় (এবং তুমি নামাযে থাক) তাহলে ঐ অবস্থায়ই তোমার নামায পূর্ণ করো। 
(কিতাবুল আসার, ইমাম মুহাম্মাদ রাহ. ১৪৬)

সায়ীদ ইবনে মুসাইয়িব রাহ., হাম্মাদ রাহ., যুহরী রাহ. প্রমুখ তাবেয়ী থেকেও এমনটি বর্ণিত আছে।
(মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ৩৯৭৮, ৩৯৭৯, ৩৯৮৩,৩৯৮৪)

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
এক্ষেত্রে রক্ত গুলির পরিমান যদি এক দিরহাম থেকে কম হয়,সেক্ষেত্রে আপনার নামাজ হয়ে গিয়েছে।

এর যদি এর পরিমান এক দিরহাম সমপরিমাণ বা তার চেয়ে বেশি হয়,সেক্ষেত্রে নামাজ গুলি আদায় হয়নি।

পুনরায় আদায় করে নিবেন।

উল্লেখ্য, 
এক দিরহাম সমপরিমাণ বলতে বর্তমান ৫ টাকার কয়েন সমপরিমাণ উদ্দেশ্য। 

(০২)
এক্ষেত্রে সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবেনা।আপনার বিতির নামাজ আদায় হয়ে গিয়েছে।

(০৩)
কাজা রোযা হিসেবেই ধর্তব্য হবে।

(০৪)
প্রশ্নের বিবরণ মতে আপনার আন্টিদের বাসা বন্যা কবলিত এলাকার মধ্যেই ছিলো।

সুতরাং তাদের জন্য ত্রান নেয়া জায়েজ আছে।
তবে অন্যায় ভাবে অতিরিক্ত ত্রান দিয়ে থাকলে সেই অতিরিক্ত ত্রান গ্রহন করা ঠিক হয়নি।

তাদের বাসায় গিয়ে যে আপনারা সেই ত্রানের খাবার খেয়েছেন,এর দরুন আপনার কাফফারা দিতে হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...