আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
31 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (16 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম হুজুর
আমি ইসলাম সম্পর্কে ধরতে গেলো কিছুই জানি না এই জন্য কিছু বেসিক বিষয় নিয়ে জানতে চাই।

১।ইসলামের সকল বিষয় কে সঠিক ভালো নির্ভুল মনে মনে বলা এবং মুখ দিয়ে উচ্চারণ করে বলা এবং মনে মনে বিশ্বাস করা কি  ইমান?

২।আকিদা মানে কি আমি জানি না। আকিদা মানে কি ইসলামের সকল কিছু কে মনে মনে বলা, মানা, স্বীকার করা, বিশ্বাস করা কে বুঝায়।

৩।আল্লাহ পাক রাসুল সাঃ কে মুখ দিয়ে  উচ্চারণ করে  গালি দিলে সে কি কাফের মুরতাদ হবে?

৪।আল্লাহ পাক রাসুল সাঃ কে মনে মনে ইচ্ছাকৃত গালি দিলে কাফের মুরতাদ হবে?

৫।ইসলামের কোনো বিষয় কে মুখ দিয়ে উচ্চারণ করে  গালি দিলে সে কি কাফের মুরতাদ হবে?

৬।ইসলামের কোনো কিছু কে মনে মনে ইচ্ছাকৃত গালি দিলে কাফের মুরতাদ হবে?

1 Answer

0 votes
by (569,520 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
https://ifatwa.info/18113/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
ইসলাম গ্রহনের গোটা প্রক্রিয়াটা হচ্ছে- সুন্দর দুটি বাক্য উচ্চারণ করা; যে বাক্যদ্বয়ের মধ্যে পরিপূর্ণ ইসলামের মর্ম নিহিত রয়েছে। যাতে অন্তর্ভুক্ত আছে- মানুষের পক্ষ থেকে আল্লাহর দাসত্বের স্বীকৃতি, আল্লাহর প্রতি আত্মসমর্পণ, আল্লাহকে উপাস্য হিসেবে স্বীকার করে নেয়া, নিজের ওপর আল্লাহকে যা ইচ্ছা হুকুমদাতা হিসেবে মেনে নেয়া। যাতে রয়েছে- মুহাম্মদ আল্লাহর বান্দা ও তাঁর নবী (বার্তাবাহক); তিনি আল্লাহর পক্ষ থেকে যা কিছু অহী হিসেবে নিয়ে এসেছেন সেসব অনুসরণ করা আবশ্যকীয়, তাঁর আনুগত্য হচ্ছে- আল্লাহরই আনুগত্য। 

যে ব্যক্তি পরিপূর্ণ একীন ও বিশ্বাসের সাথে এ সাক্ষ্যবাণীদ্বয় উচ্চারণ করবে সে ইসলামে প্রবেশ করবে এবং মুসলমানদের একজন হিসেবে গণ্য হবে। মুসলমানদের প্রাপ্য যে যে অধিকার রয়েছে তার জন্যেও সেসব অধিকার সাব্যস্ত হবে এবং মুসলমানদের ওপর যে যে দায়িত্ব রয়েছে তার ওপর সেসব দায়িত্ব বর্তাবে। ইসলাম গ্রহণের পর পরই সে ব্যক্তি আল্লাহ তার ওপর যেসব আবশ্যকীয় দায়িত্ব অর্পণ করেছেন সেগুলো পালন করা শুরু করবে। যেমন- যথাসময়ে নামায আদায় করা, রমযান মাসে রোজা  পালন করা ইত্যাদি।

মুসলিম হতে হলে গোসল করে নিবে এবং বলবে “আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া সত্য কোন উপাস্য নেই; আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মদ আল্লাহর বান্দা ও রাসূল (বার্তাবাহক)।”

আল্লাহ তা‘আলা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন-

آَمَنَ الرَّسُولُ بِمَا أُنْزِلَ إِلَيْهِ مِنْ رَبِّهِ وَالْمُؤْمِنُونَ كُلٌّ آَمَنَ بِاللَّهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ لَا نُفَرِّقُ بَيْنَ أَحَدٍ مِنْ رُسُلِهِ وَقَالُوا سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا غُفْرَانَكَ رَبَّنَا وَإِلَيْكَ الْمَصِيرُ      

তরজমা: রাসূল ঈমান আনয়ন করেছেন ঐ সকল বস্তু সম্পর্কে যা তার পালনকর্তার পক্ষ থেকে তাঁর ওপর অবতীর্ণ হয়েছে এবং মুসলমানরাও। সবাই ঈমান রাখে আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফেরেশতাগণের প্রতি, তাঁর কিতাবসমূহের প্রতি এবং তাঁর নবীগণের প্রতি। তারা বলে, আমরা তাঁর নবীগণের মাঝে কোন পার্থক্য করি না এবং তারা আরো বলে, আমরা শুনেছি এবং কবুল করেছি। আমরা আপনার নিকট ক্ষমা চাই, ওহে আমাদের পালনকর্তা! আমরা সকলেই আপনারা দিকে প্রত্যাবর্তন করি। [সূত্র : সূরা বাকারা, আয়াত ২৮৫।]

وَمَنْ يَكْفُرْ بِاللَّهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ وَالْيَوْمِ الْآَخِرِ فَقَدْ ضَلَّ ضَلَالًا بَعِيدًا     

“যে ব্যক্তি আল্লাহর ওপর, তাঁর ফেরেশতাগণের উপর, তাঁর কিতাবসমূহের ওপর এবং তাঁর রাসূলগণের ওপর ও কিয়ামত দিবসের ওপর বিশ্বাস করবে না, সে পথভ্রষ্ট হয়ে বহু দূরে গিয়ে পড়বে”। [সূত্র: সূরা নিসা, আয়াত ১৩৬।

হাদীসে জিবরাঈলে উল্লেখ আছে, হযরত জিবরাঈল আ. আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে ছদ্মবেশে এসে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলেন, ঈমান কাকে বলে? জবাবে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ

اَنْ تُؤ مِنَ بِا للّهِ وَمَلئِكَتِه وَكُتُبِه وَرُسُلِه والْيَؤمِ الاَخِرِ وَتُؤْمِنُ بِا لْقَدْرِ خَيْرِه وَ شَرِّه

ঈমানের হাকীকত হলো, তুমি মনে-প্রাণে বদ্ধমূলভাবে বিশ্বাস স্থাপন করবে আল্লাহ তা‘আলার ওপর, তাঁর ফেরেশতাগণের ওপর, আসমানী কিতাবসমূহের ওপর, আল্লাহ তা‘আলার নবী-রাসূলগণের উপর, কিয়ামত দিবসের ওপর এবং তাকদীরের ভালো-মন্দ সবকিছুই আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত হওয়ার ওপর।  [সূত্র: বুখারী খণ্ড-১, পৃষ্ঠা-১২ ও মুসলিম। মিশকাত শরীফ, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা-১১] 

উল্লেখিত আয়াত ও অত্যন্ত প্রসিদ্ধ এ হাদীসটি ‘ঈমানে মুফাসসাল’-এর ভিত্তি। ঈমানে মুফাসসালের মাধ্যমে এ কথাগুলোরই স্বীকৃতি জানানো হয় এবং মনে-প্রাণে বদ্ধমূল বিশ্বাসের ঘোষণা করা হয় যে,

أَ مَنْتُ باِ للهِ وَ مَلأَئِكَتِه وَ كُتُبِهِ وَرُسُلِه وَالْيَوْ مِ الأخِرِ وَالقَدْرِ خَيْرِه وَشَرِّه مِنَ ا للهِ تَعَالي والْبَعْثِ بَعْدَا لْمَوْتِ

আমি ঈমান আনলাম বা অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে বিশ্বাস করলাম-১. আল্লাহ তা‘আলাকে, ২. তাঁর ফেরেশতাগণকে, ৩। তাঁর প্রেরিত সকল আসমানী কিতাবকে, ৪. তাঁর প্রেরিত সকল নবী-রাসূলকে, ৫. কিয়ামত দিবসকে অর্থাৎ সমস্ত বিশ্বজগত একদিন শেষ হবে, তাও বিশ্বাস করি, ৬। তাকদীরকে বিশ্বাস করি অর্থাৎ জগতে ভালো-মন্দ যা কিছু হয়, সবই আল্লাহ তা‘আলার সৃষ্ট, তাঁরই পক্ষ হতে নির্ধারিত এবং মৃত্যুর পর কিয়ামতের দিন পুনর্বার জীবিত হতে হবে, তাও অটলভাবে বিশ্বাস করি। 
,
সুতরাং ইসলাম গ্রহনের  সাথে সাথে উপরোক্ত বিষয়বলির উপর পুরোপুরি ঈমান আনতে হবে।
,   
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
কালেমায়ে শাহাদাত পাঠের পাশাপাশি অন্তর দিয়ে তাহা মেনে উপরোক্ত ৬ টি বিষয় বিশ্বাস করাকে ঈমান বলে।

ঈমানের চাহিদা হলো ইসলামের সমস্ত বিষয়কে মেনে নেয়া,কোনো বিধান নিয়ে হাসি ঠাট্রা অস্বীকার ইত্যাদি না করা।

মুসলমানদের আকীদা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ- 

(০২)
সেগুলোকে বিশ্বাস করতে হবে।

আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের আকীদা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ- 

(০৩)
হ্যাঁ,সে মুরতাদ হয়ে যাবে।

(০৪)
সে মুরতাদ হয়ে যাবেনা।

(০৫)
কুরআনের কোনো আয়াত,মহান আল্লাহর নাম,রাসুলুল্লাহ সাঃ, হাদীস, ও শরীয়তের কোনো জরুরি বিধান নিয়ে হাসি ঠাট্রা,গালি গালাজ করলে ঈমান চলে যায়।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

(০৬)
না,এতে কেউ মুরতাদ হয়ে যাবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...