আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
17 views
ago in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (2 points)
আসসালামু আলাইকুম উস্তায
আমি যখন কলেজে পড়ি আমিই একমাত্র ফুল পর্দা করতাম।এবং এটা নিয়ে প্রচুর সমস্যা হয়।কলেজে কলেজ ড্রেস ছাড়া অন্যকিছু এলাউড ছিল না।সেখানে আমি বোরকা মুজা সব করতাম যা নিয়মের পুরো বাহিরে। তখন ৪-৫ জন স্যার ম্যাম খুব রূঢ় আচরন করেছেন এমনকি ক্লাস থেকেও বের হয়ে যেতে বলেছেন।এগুলো নিয়ে প্রচুর ঝামেলা হয়। শেষে তারা এলাউড করেছে দ্বাদশ শ্রেণির লাস্টের দিকে।আমাদের কলেজ মহিলা কলেজই তারপরও এরকম ঝামেলা করেছে।তবে অন্যান্য স্যার ম্যাম খুব এপ্রিশিয়েট করতেন,যথেষ্ট স্নেহ করতেন সব বিষয়েই।

বর্তমানে কলেজ থেকে আমাকে ডাকা হয়েছে জানুয়ারীর দিকের প্রোগ্রাম গুলোয় এটেন্ডে করার জন্য, এবং সামনের নবীনবরনেও।সেগুলোতে এটেন্ড এজন্য করতে বলেছে যাতে আমি ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখি,পর্দা সম্পর্কে বলি,বিভিন্ন বিষয় আলেচনা করি,অন্যান্য সিনিয়র বোন+ব্যাচমেটসদের সাথে আমাকেও ডাকা হয়েছে।এসব প্রোগ্রামে বিভিন্ন শীর্ষস্থানীয় নেতারা থাকবেন। এবং সেসব নেতাদের অনেকেই(৬-৭ জন) পূর্বে আমাকে ভয় দেখিয়েছিল, আমার বাসায় হুমকি দিয়েছি কিডন্যাপ করবে, তুলে নিয়ে বিয়ে করবে এরকম কিছুর জন্য । আমার প্রশ্ন -

এসব প্রোগ্রামে এটেন্ড করা ছাত্রীদের মাঝে আলোচনা করা কী জায়েজ হবে?কর্তপক্ষ অনেক রিকোয়েস্ট করেছেন।কিন্তু আমি একদম স্ট্রিক্ট লেভেলের দ্বীন পালন করার চেষ্টা করি।যদিও ভুল হয়ে যায় মাঝে মধ্যে।আল্লহুম্মাগফিরলী

আমার মন কোনোভাবেই পুরুষদের সামনে বক্তব্য দিতে সায় দেয় না।এখানে আবার ভিডিও করা হবে মিডিয়ায় সেটা দেখানো হবে।নাচ গান এসব ইভেন্টও থাকতে পারে।

উক্ত পরিস্থিতিতে কী করা উচিত এক্সচুয়ালি।বিস্তারিত জানতে চাই

1 Answer

0 votes
ago by (567,180 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ    

يَا نِسَاءَ النَّبِيِّ لَسْتُنَّ كَأَحَدٍ مِنَ النِّسَاءِ إِنِ اتَّقَيْتُنَّ فَلَا تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَيَطْمَعَ الَّذِي فِي قَلْبِهِ مَرَضٌ وَقُلْنَ قَوْلًا مَعْرُوفًا (32) وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى

হে নবীর স্ত্রীগণ! তোমরা অন্য নারীদের মত নও [ইহুদী খৃষ্টান)। তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় পাও তবে আকর্ষণধর্মী ভঙ্গিতে কথা বলনা, যাতে যাদের মাঝে যৌনলিপ্সা আছে তারা তোমাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়। বরং তোমরা স্বাভাবিক কথা বল। এবং তোমরা অবস্থান কর স্বীয় বসবাসের গৃহে, জাহেলী যুগের মেয়েদের মত নিজেদের প্রকাশ করো না। {সূরা আহযাব-৩২}

وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ ذَلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ

অর্থ : আর তোমরা তাঁর (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর স্ত্রীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্য এবং তাঁদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ। {সূরা আহযাব-৫৩}

রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,

الْمَرْأَةُ عَوْرَةٌ ، وَإِنَّهَا إِذَا خَرَجَتِ اسْتَشْرَفَهَا الشَّيْطَانُ ، وَإِنَّهَا لا تَكُونُ أَقْرَبَ إِلَى اللَّهِ مِنْهَا فِي قَعْرِ بَيْتِهَا

‘নারী গোপন জিনিস, যখন সে ঘর থেকে বের হয় শয়তান তাকে তাড়া করে। আর সে আল্লাহ তাআলার সবচে’ নিকটতম তখন হয় যখন সে নিজের ঘরের মাঝে লুকিয়ে থাকে।’ (তাবরানী ২৯৭৪)

★গ্রহনযোগ্য মতানুসারে মহিলাদের কন্ঠও সতরের অন্তর্ভুক্ত। 
,
বিস্তারিত জানুনঃ  

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত প্রোগ্রাম গুলোতে অংশগ্রহণ করলে আপনাকে যেহেতু পুরুষদের সামনে বক্তব্য দিতে হবে,এটা জায়েজ নয়।

পাশাপাশি প্রশ্নের বিবরন মতে এখানে আবার ভিডিও করা হবে, মিডিয়ায় সেটা দেখানো হবে।নাচ গান এসব ইভেন্টও থাকতে পারে।

সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত প্রোগ্রাম গুলোতে অংশগ্রহণ করা কোনোক্রমেই জায়েজ নেই।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ
ইবনে আসাকির হযরত আনাস রাঃ সূত্রে বর্ণনা করেন,রাসুলুল্লাহ সাঃ ইরশাদ করেছেন

من استمع قينة صب في أذنيه الآنك يوم القيامة)(ضعیف الجامع الصغیر للالبانی حدیث:4510 والضعیفه حديث:4549

যে ব্যক্তি কোন গায়কের নিকট বসে গান শুনলো, কিয়ামতের দিন  আল্লাহ্ পাক তার কানে গলিত সীসা ঢেলে দিবেন।
(যয়ীফুল জামিউস সাগির লিল আলবানী ৪৫১০)
,
اَلْغِنَائُ یَنْبِتُ الْنِّفَاقَ فِی الْقَلْبِ کَمَا یُنْبِتُ الْمَاءُ الْبَقْلَ۔‘ (السنن الکبری للبیهقی،رقم:۲۱۰۰۸، سنن ابی داؤد،بَابُ کَرَاهِیَةِ الْغِنَاء ِ وَالزَّمْرِ،رقم:۴۹۲۷)

রাসুল সাঃ বলেন  গান বাজনা কলবে নিফাক সৃষ্টি করে,যেমনভাবে পানি শষ্য উৎপাদন করে।

আব্দুল্লাহ ইবন আমর রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, 

أَنَّ نَبِيَّ اللَّهِ ﷺ نَهَى عَنِ الْخَمْرِ وَالْمَيْسِرِ وَالْكُوبَةِ وَالْغُبَيْرَاءِ وَقَالَ كُلُّ مُسْكِرٍ حَرَامٌ

রাসূলুল্লাহ ﷺ শরাব পান করতে, জুয়া খেলতে, ঢোল বা তবলা বাজাতে এবং ঘরের তৈরী শরাব পান করতে নিষেধ করেছেন। আর বলেছেন, প্রত্যেক নেশা সৃষ্টিকারী বস্তুই হারাম। (আবু দাউদ ৩৬৪৪)

আবু হুরাইরা রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,

إِذَا اتُّخِذَ الْفَئُْ دُوَلاً، وَالأَمَانَةُ مَغْنَماً، والزَّكَاةُ مَغْرَماً، وَتُعُلَّمَ الْعِلْمُ لِغَيْر الدِّين، وَأَطَاعَ الرَّجُلُ امْرَأَتَهُ، وَعَقَّ أُمَّهُ، وأَدْنَى صَدِيقَهُ، وأُقْصَى أبَاهُ، وظَهَرَتِ الأصْوَاتُ فى المسَاجدِ، وسَادَ الْقَبيلَةَ فَاسِقُهُمْ، وَكانَ زَعِيمَ الْقَوْمِ أَرْذَلُهُمْ، وَأُكْرِمَ الرَّجُلُ مخَافَةَ شَرِّهِ، وَظَهَرَتِ الْقَيْنَاتُ وَالمَعَازِفُ، وشُرِبَتِ الْخَمْرُ، وَلَعَنَ آخِرُ هذِهِ الأُمَّةِ أَوَّلهَا، فَلْيَرْ تَقِبُوا عِنْدَ ذلِكَ رِيحاً حَمْرَاءَ، وَزَلْزَلَةً وَخَسْفاً، وَمَسْخاً، وَقَذفاً، وآيَاتٍ تتابع كَنِظَامٍ بَالٍ قُطِعَ سِلْكُهُ فَتَتَابَعَ

গনীমত সম্পদ যখন ব্যক্তিগত সম্পদ বলে গণ্য করা হবে, যাকাত হবে জরিমানা বলে, দ্বীনী উদ্দেশ্য ছাড়া ইলম অর্জন করা হবে, পুরুষরা স্ত্রীদের আনুগত্য করবে, এবং মা‘দের অবাধ্য হবে, বন্ধুদের নিকট করবে আর পিতাকে করবে দূর, মসজিদে শোরগোল করবে, পাপাচারীরা গোত্রের নেতা হয়ে বসবে, নিকৃষ্ট লোকেরা সমাজের নেতা হবে, অনিষ্টের আশংকায় একজনকে সম্মান করা হবে, গায়িকা ও বাদ্যযন্ত্রের বিস্তার ঘটবে, মদ্যপান দেখা দিবে, উম্মতের শেষ যুগের লোকেরা প্রথম যুগের লোকদেরকে অভিসম্পাত করবে তখন তোমরা অপেক্ষা করবে অগ্নিবায়ু, ভূমিকম্প, চেহারা বিকৃতি, পাথর বর্ষণের আযাবের এবং আরো আলামতের যা পরপর নিপতিত হতে থাকবে, যেমন একটি পুরান হারের সূতা ছিড়ে গেলে একটার পর একটা দানা পড়তে থাকে। (তিরমিযী ২২১৪)

আরো জানুনঃ 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...