বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
ইসলাম পুরুষদেরকে যথেচ্ছ বিবাহের কোন সুযোগ দেয় নি। (এক সময়ে চারটির অধিক স্ত্রী রাখা সম্পূর্ণ হারাম।) আর ইসলাম পুরুষদেরকে একাধিক তথা চারটি বিয়ের ‘নির্দেশ’ দেয়নি, বরং প্রয়োজনীয় শর্ত সাপেক্ষে ‘অনুমতি’ দিয়েছে। যদি শর্ত পূরণ করা না যায় তাহলে একটির অধিক বিবাহ করাকেও হারাম বলেছে। ইরশাদ হয়েছে,
فَانكِحُوا مَا طَابَ لَكُم مِّنَ النِّسَاءِ مَثْنَىٰ وَثُلَاثَ وَرُبَاعَ ۖ فَإِنْ خِفْتُمْ أَلَّا تَعْدِلُوا فَوَاحِدَةً
অর্থ: "তোমরা বিয়ে কর নারীদের মধ্যে যাকে তোমাদের ভাল লাগে; দু’টি, তিনটি অথবা চারটি। আর যদি ভয় কর যে, তোমরা সমান আচরণ করতে পারবে না, তবে একটি।" (সূরা নিসা, আয়াত ৩)
এই আয়াতে একের অধিক বিয়ে করার আগে সমতার শর্ত দেয়া হয়েছে। একাধিক স্ত্রীর সবার মাঝে সমতা ও সমান অধিকার বিধান করা ফরজ করেছে। যদি সকলের হক যথাযথভাবে আদায় করার ক্ষেত্রে সামান্যতমও সংশয় থাকে তাহলে একের অধিক বিয়েকে ‘হারাম’ ঘোষণা করেছে। আল্লাহ তা‘আলা কুরআনে পুরুষদেরকে স্ত্রীদের মধ্যে সমতা বিধানের নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ বলেন,
﴿وَلَن تَسۡتَطِيعُوٓاْ أَن تَعۡدِلُواْ بَيۡنَ ٱلنِّسَآءِ وَلَوۡ حَرَصۡتُمۡۖ فَلَا تَمِيلُواْ كُلَّ ٱلۡمَيۡلِ فَتَذَرُوهَا كَٱلۡمُعَلَّقَةِۚ وَإِن تُصۡلِحُواْ وَتَتَّقُواْ فَإِنَّ ٱللَّهَ كَانَ غَفُورٗا رَّحِيمٗا ١٢٩﴾ [النساء: ١٢٩]
“তোমরা যতই আগ্রহ পোষণ কর না কেন তোমরা কখনো স্ত্রীদের প্রতি সমান ব্যবহার করতে পারবে না। তবে তোমরা কোনো একজনের দিকে সম্পূর্ণরূপে ঝুঁকে পড় না ও অপরকে ঝুলন্ত অবস্থায় রেখ না। যদি তোমরা নিজেদেরকে সংশোধন কর ও সাবধান হও তবে আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু”। [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ১২৯]
এখানে কাম্য হলো, রাত্রি যাপনে স্ত্রীদের মধ্যে সমতা রক্ষা করা, পর্যায়ক্রমে প্রত্যেকের নিকট এক রাত করে যাপন করা এবং প্রত্যেকের থাকা, খাওয়া ও পরার যথোপযুক্ত বন্দোবস্ত করা। অন্তরের ভালোবাসা সবার জন্য সমান হতে হবে এমন বিধান শরী‘আত দেয় নি। কেননা তা মানুষের ইখতিয়ার বহির্ভূত। কিছু মানুষ আছে, যারা তাদের একাধিক স্ত্রীর একজনকে নিয়ে পড়ে থাকে, অন্যজনের দিকে ভ্রুক্ষেপও করে না; একজনের নিকট বেশি বেশি রাত কাটায় কিংবা বেশি খরচ করে, অন্যজনের কোনো খোঁজই নেয় না। নিঃসন্দেহে এরূপ একপেশে আচরণ হারাম। কিয়ামত দিবসে তাদের যে অবস্থা দাঁড়াবে তার একটি চিত্র আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বর্ণিত নিম্নোক্ত হাদীসে আমরা পাই। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«مَنْ كَانَتْ لَهُ امْرَأَتَانِ فَمَالَ إِلَى إِحْدَاهُمَا، جَاءَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَشِقُّهُ مَائِلٌ»
‘যার দু’জন স্ত্রী আছে, কিন্তু সে তাদের একজনের প্রতি ঝুঁকে পড়ে, কিয়ামত দিবসে সে এক অংশ অবস অবস্থায় উঠবে”।( সুনান আবু দাউদ-২১৩৩)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!
অন্তর যেহেতু কারো ইখতিয়ারে নেই,তাই যদি অন্তর কারো প্রতি একটু ঝুকে যায়,এবং অন্যান্যর প্রতি ঠিকই বাহ্যিক খেয়াল রাখা হয়,তাহলে অন্তরের এই ঝুকে যাওয়ার ধরুণ ঐ ব্যক্তির কোনো প্রকার গোনাহ হবে না