আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
58 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (4 points)

আমার একটি বান্ধবীর শুক্রবারে বিয়ে কিন্তু তার বিয়েটা আমার বাসা থেকে অনেক দূরে রাতে হওয়ার কারণে আমার যাওয়া হবে না তার গায়ে হলুদ আমার এলাকায় হবে আমি জানি যে ইসলামে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান করা জায়েজ নেই প্রথমে আমি না করে দিলেও পরবর্তীতে আমি আর না করতে পারিনি কারণ সে আমার খুবই ঘনিষ্ঠ বান্ধবী আমি যেহেতু তার বিয়েতে যেতে পারবো না আর গায়ে হলুদ আমার এলাকাতে হবে তাই তার জীবনের এই গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে আমি যদি একটিবারও তার সাথে দেখা না করি তাহলে সে খুবই কষ্ট পাবে আমি তার সাথে একটিবার দেখা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি যেন সে মন খারাপ না করে কারণ বিয়ের পরে সে চলে যাবে এরপরে কবে দেখা হবে সেটা আমরা কেউই জানিনা

আমার বান্ধবী এবং তার পরিবার আমার পর্দার ব্যাপারটা খুবই সম্মানের সাথে দেখে, তারা আমার কাছ থেকে অনেক কিছু জানার চেষ্টা করে এবং আমাকে দেখে তারা অনেক অনুপ্রাণিত হয় আমিও বিভিন্নভাবে তাদেরকে দ্বীনের দাওয়াত দেওয়ার চেষ্টা করি 

এমতাবস্থায় আমি যদি পরিপূর্ণ পর্দার সহিত তার সাথে দেখা করার উদ্দেশ্যে গিয়ে তার গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার আগে দেখা করে চলে আসি তাহলে কি আমি গুনাগার হব?

আমি যদি সেখানে গেলে গুনাহগার হই তাহলে আমি তাকে কি বলে মানা করতে পারি (যেন সে কষ্ট না পায়)? এক্ষেত্রে কি মিথ্যা বলা জায়েজ আছে?

আর যদি আমার সেখানে যাওয়ার অনুমতি থাকে (আমি যদি গুনাহগার না হয়ে থাকি) বা আমার যদি কোন কারনে প্রোগ্রাম পর্যন্ত থাকতে হয় কিন্তু আমি প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ না করি বা প্রোগ্রামের স্থানে না থাকি তাহলে এটা কি জায়েজ হবে? আর আমি সেখানে থাকলে আমার কি কি মেনে চলা উচিত?

1 Answer

0 votes
by (61,230 points)
edited by

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম 

জবাব,

 আমাদের সমাজে যে গায়ে হলুদ হয়,সেটা সম্পূর্ণ বিজাতীয় হিন্দুওয়ানি সংস্কৃতি। সুতরাং  শুধু নিজের পরিবারের সদস্য দের নিয়ে পর্দার সহিত কোনো প্রকারের গান-বাজনা ছাড়া হলেও এমন অনুষ্টানের কোনো বৈধতা নাই। এটা সম্পূর্ণ নাজায়েয ও হারাম।


সুতরাং প্রশ্ন উল্লেখিত গায়ে হলুদ করা জায়েজ নেই।

হিন্দু ধর্মাবলম্বীগণ দীর্ঘস্থায়ী বিবাহিত জীবন, বংশবিস্তার, নবদম্পতির সুখ-শান্তি কামনা এবং অপশক্তির প্রভাব দূর করতে ধর্মীয় আবশ্যকীয় রীতি হিসেবে এ গায়ে হলুদ অনুষ্ঠান পালন করে থাকে। যা স্পষ্ট শিরক।

বস্তুত হিন্দুধর্মালম্বী ও আদিবাসী উপজাতীদের থেকেই গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানের উৎপত্তি হয়েছে। সেখান থেকে মুসলিম সমাজে এর অনুপ্রবেশ ঘটেছে। মুসলিম সংস্কৃতিতে গায়ে হলুদের অবস্থান কোনো কালেই ছিলো না। সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানও জায়েজ নেই।

আরো জানুনঃ

https://ifatwa.info/7278/


আরো জানুনঃ 

https://ifatwa.info/6154/

https://ifatwa.info/5959/


 সম্বন্ধে সংসদ বাংলা অভিধান বলছে, গায়ে-হলুদ, বিবাহের অব্যবহিত পূর্বে পাত্রপাত্রীকে হলুদ মাখাইয়া স্নান করানর হিন্দু সংস্কার বিশেষ। পৃ. ১৬৯।

عَنْ عَبْدِ اللهِ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، أَنَّهُ قَالَ:: ” الْمَرْءُ مَعَ مَنْ أَحَبَّ

হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসঈদ রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, ব্যক্তি [কিয়ামতের দিন] তার সাতে থাকবে যাকে সে মোহাব্বত করে। {মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৩৭১৮, বুখারী, হাদীস নং-৬১৬৮, ৫৮১৬}

عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ

হযরত ইবনে ওমর রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন- যে ব্যক্তি যার সাদৃশ্য গ্রহণ করে, সে তাদেরই অন্তর্ভূক্ত। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৪০৩১}

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

১. যদি শুধু সাক্ষাৎ করা উদ্দেশ্য হয় তাহলে কিছু আলেমের মতে তা জায়েজ হবে। তবে মনে রাখতে হবে যে,

সাধারণত আমাদের দেশের বিয়ের আগে গায়ে হলুদ অনুষ্টানে বেপর্দা ও বেহায়াপনা হয়ে থাকে যা ইসলাম কখনই সমর্থন করে না। এছাড়াও এটি বিজাতীয় একটি সংস্কৃতি যা পরিহার করা আবশ্যক। তবে কোন আনুষ্ঠানিকতা না করে পরিপূর্ণ  পর্দার বিধান মান্য করে যদি স্বাভাবিকভাবে কেউ গায়ে হলুদ দেয় তাহলে তা জায়েয হবে বলে আশা করা যায়। তবে তা না করাই শ্রেয়।

সুতরাং যদি অনুষ্ঠানে বেপর্দা ও বেহায়াপনা থাকে তাহলে আপনার জন্য সেখানে যাওয়া জায়েজ হবে না। শরিয়তের বিষয় তাকে সুন্দর ভাবে বুঝিয়ে বলতে হবে। ব্যক্তিকে খুশী করতে গিয়ে আল্লাহকে নারাজ করা জয়েয হবে না।

২-৩. এগুলোর উত্তর উপরে উল্লেখ করা হয়েছে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...