আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
40 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (14 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। এক বোনের প্রশ্ন নিচে উল্লেখ করলাম-

আমরা এক এলাকায় ভাড়া থাকি। সেখানে এক সাথে বেশ অনেক কয়েক টা পরিবার একসাথে থাকি,, এখানের রুম গুলো অর্ধেক পাকা আর বাকিটা টিনের। তোহ আমার রুমের পাশেই আরেক রুম। সেই রুমের আন্টি প্রতিদিন সকালে 5/6টার দিকে আমার রুমের এক সাইডে ঝাড়ু দেন। উনি বলে উনার রুমে নাকি ধুলোবালি যায়। অথচ এটা অসম্ভব। এভাবে ধুলো যাওয়ার তোহ প্রশ্ন ই আসে না। উনি ইচ্ছা কৃত এভাবে সকালে ঝাড়ু দিয়ে ঘুম নষ্ট করে।টিনের মধ্যে ঝাড়ু দিয়ে অনেক জোরে বাড়ি মারে। এর ফলে প্রবলেম হয়। উনার সাথে এটা নিয়ে তর্ক ও হয়েছে কিন্ত তারপরও উনি প্রতিদিন এটা করেই জান। বলা চলে উনি হিংসা বসত এমনটি করেন।


এখন প্রশ্ন হলো- ১। সেই আন্টি কি সেই বোনের হক নষ্ট করছেন? এতে কি সেই আন্টির গুনাহ হচ্ছে?

২। সেই বোনের করণীয় কি? উনি কি সবর করবেন? কারণ বাসা চেঞ্জ করা সম্ভব নয়।

1 Answer

0 votes
by (61,230 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম

জবাব:-

https://ifatwa.info/97343/   নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ইসলাম প্রতিবেশীর অধিকার রক্ষার নির্দেশ দিয়েছে। যে তার প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয় সে কবিরা গুনাহ করে। নিজ প্রতিবেশীকে যে কোনভাবে কষ্ট দেয়া কবীরা গুনাহ্। যে ব্যক্তি নিজ প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয় সে সত্যিকারের মু’মিন নয়।

আবূ শুরাইহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

وَاللهِ لَا يُؤْمِنُ، وَاللهِ لَا يُؤْمِنُ، وَاللهِ لَا يُؤْمِنُ، قِيْلَ: وَمَنْ يَا رَسُوْلَ اللهِ!؟ قَالَ: الَّذِيْ لَا يَأْمَنُ جَارُهُ بَوَائِقَهُ.

‘‘আল্লাহ্’র কসম! সে ব্যক্তি মু’মিন হতে পারে না। আল্লাহ্’র কসম! সে ব্যক্তি মু’মিন হতে পারে না। আল্লাহ্’র কসম! সে ব্যক্তি মু’মিন হতে পারে না। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করা হলো: হে আল্লাহ্’র রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! সে ব্যক্তি কে? তিনি বললেন: যার অনিষ্ট থেকে তার প্রতিবেশী নিরাপদ নয়’’। (বুখারী ৬০১৬)

প্রতিবেশীকে কষ্ট দিয়ে জান্নাতে যাওয়া যাবে না। আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

لَا يَدْخُلُ الْـجَنَّةَ مَنْ لَا يَأْمَنُ جَارُهُ بَوَائِقَهُ.

‘‘সে ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে না যার অনিষ্ট থেকে তার প্রতিবেশী নিরাপদ নয়’’। (মুসলিম ৪৬)

নিজ প্রতিবেশীর প্রতি দয়াশীল হওয়া সত্যিকারের ঈমানের পরিচায়ক। আবূ হুরাইরাহ্ এবং আবূ শুরাইহ্ (রা.) থেকে বর্ণিত তাঁরা বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ فَلْيُحْسِنْ إِلَى جَارِهِ.

‘‘যে ব্যক্তি আল্লাহ্ তা‘আলা ও পরকালে বিশ্বাসী সে যেন তার প্রতিবেশীর প্রতি দয়াশীল হয়’’। (মুসলিম ৪৭, ৪৮)

প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয়া জাহান্নামে যাওয়ার অন্যতম কারণ। আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন:

قِيْلَ: يَا رَسُوْلِ اللهِ ! إِنَّ فُلَانَةً تُصَلِّيْ اللَّيْلَ وَتَصُوْمُ النَّهَارَ، وَفِيْ لِسَانِهَا شَيْءٌ يُؤْذِيْ جِيْرَانَهَا سَلِيْطَةٌ، فَقَالَ: لَا خَيْرَ فِيْهَا، هِيَ فِيْ النَّارِ.

‘‘রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলা হলো: হে আল্লাহ্’র রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! অমুক মহিলা রাত্রিবেলায় নফল নামায পড়ে এবং দিনের বেলায় নফল রোযা রাখে অথচ সে কর্কশভাষী তথা নিজ মুখ দিয়ে অন্যকে কষ্ট দেয়। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: তার মধ্যে কোন কল্যাণ নিহিত নেই। সে জাহান্নামী’’। (হা’কিম ৪/১৬৬)

সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

১. যদি প্রকৃত অর্থেই উক্ত মহিলা প্রতিবেশীকে কষ্ট দেওয়ার উদ্দেশ্যে প্রশ্নেল্লিখিত আচরণগুলো করে থাকে তাহলে সে প্রতিবেশীর সাথে খারাপ ব্যবহার করার কারণে গুনাহগার হবে।

২. এমন পরিস্থিতিতে সবর ও দোয়া করার পাশাপাশি উক্ত মহিলাকে বুঝানোর জন্য চেষ্টা করতে হবে। প্রয়োজনে স্থানীয় কোন আলেমা বা দ্বীনি কোন বোনের মাধ্যমে তাকে দ্বীনের দাওয়াত দিতে হবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...