আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
42 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (10 points)
আসসালামু আলাইকুম,
আমাদের বাড়ির আশে পাশে প্রচুর শামুক। আগে ছিলো না। কোন যায়গা থেকে এসেছে। পুরো গ্রামেই এই অবস্থা। হাজার হাজার শামুক। এই শামুক গাছের কচি পাতা, ডাল খেয়ে ফেলে। নতুন গাছ হলেই খেয়ে ফেলে। শামুকের সাইজ মুরগির ডিমের সমান। এই শামুক অনেকে লবন দিয়ে, অনেকে লাঠি দিয়ে মেরে ফেলে। এই শামুক মেরে ফেলা কি জায়েজ হবে?
শামুকের ছবি - https://drive.google.com/file/d/1psn_xpMPvCgeTj-Cfbo46c7l3X7KuWHK/view?usp=sharing

1 Answer

0 votes
by (61,230 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম

জবাব:-

https://ifatwa.info/19722/  নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ক্ষতিকর প্রাণী হত্যা: ক্ষতিকর প্রাণী হত্যা করা জায়েয।

প্রাণীকে এভাবে বোকা রেখে হত্যা করা জায়েয হবে না, বরং ঐ প্রাণীকে হত্যার প্রয়োজন হলে,তাকে উত্তমরূপে হত্যা করতে হবে।

কোনো প্রাণীকে যথাসম্ভব কষ্ট দিয়ে হত্যা করা যাবে না।নবীজী সাঃ বলেনঃ

ﺇﻥّ ﺍﻟﻠﻪَ ﻛَﺘَﺐَ ﺍﻹِﺣْﺴَﺎﻥَ ﻋَﻠَﻰْ ﻛُﻞِّ ﺷَﻲْﺀٍ ، ﻓَﺈِﺫَﺍ ﻗَﺘَﻠْﺘُﻢْ ﻓَﺄَﺣْﺴِﻨُﻮﺍ ﺍﻟﻘِﺘْﻠَﺔَ ، ﻭَﺇِﺫَﺍ ﺫَﺑَﺤْﺘُﻢْ ﻓَﺄَﺣْﺴِﻨُﻮﺍ ﺍﻟﺬّﺑْﺢَ ، ﻭَﻟْﻴُﺤِﺪَّ ﺃَﺣَﺪُﻛُﻢْ ﺷَﻔْﺮَﺗَﻪ ، ﻓَﻠْﻴُﺮِﺡْ ﺫَﺑِﻴْﺤَﺘَﻪ

নিশ্চয় আল্লাহ তা'আলা প্রত্যক জিনিষের জন্য উত্তম আচরনের কথা লিখে দিয়েছেন।সুতরাং যখন তোমরা হত্যা করবে তখন তোমরা উত্তমভাবে হত্যা করো।আর যখন তোমরা জবেহ করবে তখন উত্তমভাবে যবেহ করো।তোমাদের মধ্য থেকে কেউ যেন প্রথমে তার চুরিকে খোব দ্বার দেয়/তেজ করে তারপর সে উক্ত জন্তুর উপর চুরি প্রয়োগ করে জবেহ করার চেষ্টা করে।(সহীহ মুসলিম-১৯৫৫)

https://ifatwa.info/7517/ নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে, শরীয়তের বিধান হলো মাছ ছাড়া অন্য কোন জলজ প্রাণী খাওয়া জায়েয নাই।

সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত  অক্টোপাস, কাকড়া যেহেতু মাছ নয়, তাই এগুলো খাওয়াও জায়েয নাই। (ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৩/১১৪ আল বাহরুর রায়েক ৮/৪৮৫ হাশিয়ায়ে তাহতাবী ৪/৩৬০ ইমদাদুল ফাতাওয়া ৪/১১৮)

শামুক ঝিনুক ইত্যাদিরও একই হুকুম। এগুলো খাওয়া হলো নয়।

 এগুলো হারাম হওয়ার অন্যতম একটি কারন হলো   এগুলো কোরআনে বর্ণিত ‘খাবায়েস (নোংরাবস্তু) এর অন্তর্ভুক্ত

وَيُحَرِّمُ عَلَيهِمُ الخَبائِثَ

খাবায়েস নিষিদ্ধ। (আলআরাফ ১৫৭)।

খাবায়েস বলা হয়,

 كل ما يستخبثه الطبع

অর্থাৎ, যা মানুষ স্বভাবত ঘৃণা করে।

 (দ্রঃ তাফসীরে কাবীর, আওয়াউল বায়ান, আললুবাব, আলহাবী সংশ্লিষ্ট আয়াত)।

আর মাছ ছাড়া অন্যান্য জলজ প্রাণীকে মানুষ স্বভাবতই ঘৃণা করে। সুতরাং সেগুলোও নিষিদ্ধ।

এ ধরণের জলজ প্রাণী রাসূলুল্লাহ ও সাহাবায়ে কেরাম খেয়েছেন বলে প্রমাণ পাওয়া যায় না।

অধিকন্তু হাদীসে এসেছে,

 انَّ طَبِيبًا سَأَلَ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ ضِفْدَعٍ يَجْعَلُهَا فِي دَوَاءٍ فَنَهَاهُ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ قَتْلِهَا

অর্থাৎ, আব্দুর রহমান বিন উসমান রাযি. থেকে বর্ণিত আছে যে, রসূলুল্লাহ জনৈক চিকিৎসককে ব্যাঙ মেরে ওষুধ বানাতে নিষেধ করেছিলেন। (আবু দাউদ ৩৮৭১)। অথচ ব্যাঙ জলজ প্রাণী।

আবদুল্লাহ ইবনে উমার রাযি. থেকে বর্ণিত হাদীসে এসেছে,

أحلت لنا ميتتان ودمان فأما الميتتان فالحوت والجراد وأما الدمان فالكبد والطحال

রাসূলুল্লাহ বলেছেন, তোমাদের জন্য দু প্রকারের মৃত জীব ও দু ধরনের রক্ত হালাল করা হয়েছে। মৃত জীব দুটি হলো মাছ ও টিড্ডি এবং দু প্রকারের রক্ত হলো কলিজা ও প্লীহা। (ইবনে মাজাহ ৩৩১৫, আহমাদ ৫৬৯০, দারাকুতনী ৪৬৮৭, শারহুস সুন্নাহ ২৮০৩। সনদ সহিহ।)

আরো জানুনঃ  https://ifatwa.info/2652/?show=2654#a2654

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

শামুক মারার ক্ষেত্রে হুকুম হল, শামুক যদি ক্ষতিকর বা বিষাক্ত অথবা মানুষের খাদ্য শস্য নষ্ট করে দেয় তবে তা মেরে ফেলা জায়েয। কিন্তু যদি তা ক্ষতিকর না হয় সেক্ষেত্রে না মেরে বাসা-বাড়ি বা ক্ষেত থেকে তা যেকোন ভাবে অপসারণ করে দেয়াই শ্রেয়। (ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩৬১; আদ্দুররুল মুখতরা ৬/৪৭৪; আলমাওসুআতুল ফিকহিয়া, কুয়েত ১৭/২৮৪; ইমদাদুল আহকাম ৪/৫১৯)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...