জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
(০১)
আল্লাহ্ তাআলা বলেন:
يا ايها الذين امنوا اذا قمتم الي الصلوة فاغسلوا وجوهكم و ايديكم الي المرافق وامسحوا بروؤسكم وارجلكم الي الكعبين
“হে মুমিনগণ, যখন তোমরা সালাতের জন্য দাঁড়াতে চাও তখন তোমরা তোমাদের মুখমণ্ডল ও হাতগুলো কনুই পর্যন্ত ধুয়ে নাও এবং তোমাদের মাথায় মাসেহ কর এবং পায়ের টাখনু পর্যন্ত ধুয়ে নাও।”[সূরা মায়েদা, আয়াত: ৬]
,
সুতরাং শরীয়তের বিধান অনুযায়ী ওযুর ফরয ৪টি।
১। মাথার চুলের গোড়া থেকে থুতনীর নিচ পর্যন্ত এবং এক কানের লতি থেকে অন্য কানের লতি পর্যন্ত সমস্ত মুখ ধৌত করা
২। দুই হাত কনুই পর্যন্ত ধৌত করা।
৩। মাথা চার ভাগের এক ভাগ মাসেহ করা।
৪। দুই পা টখনুসহ ধৌত করা।
সুতরাং কুলি করা অযুর ফরজ নয়,বরং সেটা অযুর সুন্নাত।
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ مُوسَى، حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ مُوسَى الرَّازِيُّ، حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ عَمْرِو بْنِ يَحْيَى، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ زَيْدٍ، قَالَ رَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم مَضْمَضَ وَاسْتَنْشَقَ مِنْ كَفٍّ وَاحِدٍ فَعَلَ ذَلِكَ ثَلاَثًا
আবদুল্লাহ ইবনু যাইদ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এক আজলা পানি দিয়ে কুলি করতে ও নাক পরিষ্কার করতে দেখেছি। তিনি তিনবার এরকম করেছেন।
(তিরমিজি ২৮,আবু দাউদ ১১০)
যদি কুলি না করা হয়,নাকে পানি না দেওয়া হয়,তাহলেও অযু হয়ে যাবে,তবে সুন্নাত আদায় হবেনা।
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
প্রশ্নে উল্লেখিয় গোসল সাধারণ গোসল হলে (ফরজ গোসল না হলে) সেটার দ্বারা নামাজ কুরআন তেলাওয়াত কতা যাবে।
,
তবে অযুর ভিতরে যেহেতু কুলি করা,নাকে পানি দেওয়া সুন্নাত, তাই এই ছুরতে সেই সুন্নাত আদায় হবেনা।
,
তবে ফরজ গোসল হলে সেই গোসল দিয়ে নামাজ কুরআন তেলাওয়াত জায়েজ নেই।
,
(০২)
ছহীহ হাদীস দ্বারা প্রমানীত যে রাসুল সাঃ শুধু হাফসা রাঃ কে তালাক দিয়েছিলেন।
পরবর্তীতে তাকে আবার ফিরিয়ে নিয়েছিলেন।
,
জামিয়া বিন নুরি পাকিস্তানের 143909201352 নং ফতোয়া দ্রষ্টব্য।
আবু দাউদ শরীফের ২২৭৭ নং
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
حَدَّثَنَا سَهْلُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ الزُّبَيْرِ الْعَسْكَرِيُّ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ زَكَرِيَّا بْنِ أَبِي زَائِدَةَ، عَنْ صَالِحِ بْنِ صَالِحٍ، عَنْ سَلَمَةَ بْنِ كُهَيْلٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنْ عُمَرَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم طَلَّقَ حَفْصَةَ ثُمَّ رَاجَعَهَا .
সাহল ইবন মুহাম্মদ ইবন যুবায়র আসকারী .......... ইবন আববাস (রাঃ) ও উমার (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হা্ফসা (রাঃ) কে তালাক প্রদান করেন। এরপর তিনি তাঁকে পুনরায় স্বীয় স্ত্রী হিসাবে গ্রহণ করেন।
তাহক্বীকঃ সহীহ। ইবন মাজাহ ২০১৬,আবূ দাউদ ২২৮৩, দারেমী ২২৬৪, ইরওয়া ২০৭৭।
,
★হাফসা রাঃ কে তালাক প্রদানের কারন স্পষ্টভাবে কোনো হাদীসে আসেনি।
তবে মুহাক্কিকগন বলেছেন যে রাসুল সাঃ এর গোপন কথা অন্যকে জানিয়ে দেওয়ার কারনেই তালাক হয়েছিলো।
,
সুরা তাহরিম এর ০৩ নং আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
وَ اِذۡ اَسَرَّ النَّبِیُّ اِلٰی بَعۡضِ اَزۡوَاجِهٖ حَدِیۡثًا ۚ فَلَمَّا نَبَّاَتۡ بِهٖ وَ اَظۡهَرَهُ اللّٰهُ عَلَیۡهِ عَرَّفَ بَعۡضَهٗ وَ اَعۡرَضَ عَنۡۢ بَعۡضٍ ۚ فَلَمَّا نَبَّاَهَا بِهٖ قَالَتۡ مَنۡ اَنۡۢبَاَکَ هٰذَا ؕ قَالَ نَبَّاَنِیَ الۡعَلِیۡمُ الۡخَبِیۡرُ ﴿۳﴾
আর যখন নবী তার এক স্ত্রীকে গোপনে একটি কথা বলেছিলেন; অতঃপর যখন সে (স্ত্রী) অন্যকে তা জানিয়ে দিল এবং আল্লাহ তার (নবীর) কাছে এটি প্রকাশ করে দিলেন, তখন নবী কিছুটা তার স্ত্রীকে অবহিত করল আর কিছু এড়িয়ে গেল। যখন সে তাকে বিষয়টি জানাল তখন সে বলল, ‘আপনাকে এ সংবাদ কে দিল?’ সে বলল, ‘মহাজ্ঞানী ও সর্বজ্ঞ আল্লাহ আমাকে জানিয়েছেন।’
এই আয়াতের ব্যখ্যায় কিছু মুফাসসিরিনে কেরামগন বলেছেন
গোপন কথা ফাঁস করে দেয়ার কারণে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাফসা রাদিয়াল্লাহু আনহাকে তালাক দেয়ার ইচ্ছা করেন; কিন্তু আল্লাহ তা'আলা জিবরীল আলাইহিস সালামকে প্রেরণ করে তাকে তালাক থেকে বিরত রাখেন এবং বলে দেন যে, হাফসা রাদিয়াল্লাহু আনহা অনেক সালাত আদায় করে এবং অনেক সাওম পালন করে। তার নাম জান্নাতে আপনার স্ত্রীগণের তালিকায় লিখিত আছে। [মুস্তাদরাকে হাকিম: ৪/১৬, ৬৭৫৩, ৪/১৭, ৬৭৫৪, আত-তাবাকাতুল কুবরা লি ইবনে সা'দ: ৮/৮৪, তাবরানী; ১৮/৩৬৫, ৯৩৪, বুগইয়াতুল বাহিস: ২/৯১৪]
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
কেহ কেহ সাউদা রাঃ (যিনি বৃদ্ধা ছিলেন,) তাকে তালাক দেওয়া কথা বলেন।
,
এটি ছহীহ হাদীস দ্বারা প্রমানিত নয়।
এটা পাওয়া যায় যে সওদা (রা) তার পালাটুকু আয়েশা (রা)-কে দিয়েছিলেন। সেটা তালাক থেকে বাঁচতে নয়, বরং রাসূল (সা)-এর সন্তুষ্টি অর্জন করতে। কারণ, তখন আর তাঁর নিজের চাহিদা ছিল না। এর মধ্যে তার প্রতি রাসূল (সা) এর কোন অবিচার ছিল না বরং তিনি নিজেই স্ব-প্রণোদিত হয়ে এমনটা করেছিলেন। সহীহ বুখারীতে এসেছেঃ
“যখন আল্লাহ্র রাসূল কোন ভ্রমণে বের হতেন তখন সাথে কোন স্ত্রীকে নিবেন তার জন্য লটারী করতেন। লটারীতে যার নাম আসতো, তিনি তাকেই নিতেন। তিনি প্রত্যেক স্ত্রীর ( সাথে থাকার জন্য) রাত ও দিন নির্দিষ্ট করে দিতেন। কিন্তু সওদা আল্লাহ্র রাসূলকে সন্তুষ্ট করার জন্য নিজ পালা আয়েশাকে দিয়ে দিলেন।”
(সহীহ বুখারী, খণ্ড-৩, হাদীস নং-৭৬৬)
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ حَدَّثَنَا عُقْبَةُ بْنُ خَالِدٍ ح و حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الصَّبَّاحِ أَنْبَأَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ مُحَمَّدٍ جَمِيعًا عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيهِ عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ لَمَّا كَبِرَتْ سَوْدَةُ بِنْتُ زَمْعَةَ وَهَبَتْ يَوْمَهَا لِعَائِشَةَ فَكَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم «يَقْسِمُ لِعَائِشَةَ بِيَوْمِ سَوْدَةَ
‘আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সাওদা বিনতে যামআ (রাঃ) বার্ধক্যগ্রস্ত হয়ে পড়লে তিনি তার নির্ধারিত পালার দিনটি ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) -কে হেবা করেন। অতএব রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাওদা (রাঃ)-এর দিনটি ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) -এর ভাগে ফেলতেন।
সহীহুল বুখারী ৫২১২, মুসলিম ১৪৬৩, আবূ দাউদ ২১৩৮, আহমাদ ২৩৮৭৪, ২৩৯৫৬, ২৪৩৩৮, ইরওয়াহ ২০২০)
,
তবে তাকে তালাক দেওয়ার খবর ছহীহ হাদীসে আসেনি।
,
فهي رواية ضعيفة .
قال ابن الملقِّن – رحمه الله - :
وَهَذِه رِوَايَة الْبَيْهَقِيّ من حَدِيث هِشَام عَن أَبِيه : " أَنه عَلَيْهِ السَّلَام طلَّق سودةَ ، فلمَّا خرج إِلَى الصَّلَاة أمسكتْهُ بِثَوْبِهِ ، فقالتْ : مَا لي فِي الرِّجال حَاجَة ، وَلَكِنِّي أُرِيد أَن أُحْشَرَ فِي أَزوَاجك ، قَالَ : فراجَعَهَا ، وَجعل يَوْمهَا لعَائِشَة ، فَكَانَ يِقَسْم لَهَا بيومها ، وَيَوْم سَوْدَة " .
وَهَذَا مَعَ إرْسَاله : فِيهِ أَحْمد العطاردي ، وَهُوَ مِمَّن اخْتلف فِيهِ ، قَالَ الدَّارَقُطْنِيّ : لَا بَأْس بِهِ ، وَقَالَ ابْن عدي : رَأَيْتهمْ مُجْمِعِينَ عَلَى ضعفه ، وَقَالَ مُطيَّن : كَانَ يكذب .
" البدر المنير " ( 8 / 48 ) .
সারমর্মঃ সাউদা রাঃ কে তালাক দেওয়ার হাদীস জয়ীফ।
وكذبه رحمه الله ليس في الحديث ، وإلا كان حديثه موضوعاً ، وقد بيَّنه الإمام الذهبي رحمه الله فقال إنه كذب في لهجته ، لا في روايته .
قال رحمه الله :
قُلْت : يَعنِي فِي لَهْجَتِهِ ، لاَ أَنَّه يَكْذِبُ في الحَديثِ ، فَإِنَّ ذَلِكَ لَمْ يُوجَد مِنهُ ، وَلاَ تَفَرَّدَ بِشَيْءٍ ، وَمِمَّا يُقَوِّي أَنَّهُ صَدوقٌ فِي بَابِ الرِّوَايَةِ : أَنَّه رَوَى أَوْرَاقاً مِنَ " المَغَازِي " بِنُزُولٍ ، عَن أَبِيهِ ، عَن يُونُسَ بنِ بُكَيْرٍ ، وَقَد أَثنَى عَلَيهِ الخَطِيبُ ، وَقَوَّاهُ ، وَاحتَجَّ بِهِ البَيْهَقِيُّ فِي تَصَانِيْفِهِ .
" سير أعلام النبلاء " ( 25 / 55 ) .
وثمة رواية أخرى نحوها قال عنها الحافظ ابن كثير في " التفسير " ( 2 / 427 ) : غريب ، مرسل .
সারমর্মঃ মুহাদ্দিসিনে কেরামগন উক্ত রেওয়ায়েত কে মুরসাল বলেছেন।
অনেকেই জয়ীফ বলেছেন।