আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
130 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (17 points)
আমি জয়েন ফ্যামিলিতে থাকি। এখানে আমাকে একটা ঘর দেয়া হলেও পুরোপুরি আমার না। ঘরে দেবররা সর্বক্ষণ থাকেন তাই দরজা ভিজিয়ে রাখি। কিন্তু ঘরের মুরব্বি(মহিলা) কোনরকম নক বা শব্দ না করে অর্থাৎ আমাকে কোন সুযোগ না দিয়েই রুমে প্রবেশ করেন। এবং যাওয়ার সময় অধিকাংশ সময়ে খোলা রেখে চলে যান। বেশিরভাগ সময়েই স্বামী সহ রুমে থাকি এবং তখন বিব্রতকর অবস্থা তৈরি হয়। আমি বাড়িতে অনুপস্থিত থাকলে তারা আমাকে দেয়া রুম ব্যাবহার করেন।  রুমের বাইরে সারাক্ষণ পর্দা করে থাকি তাই রুমে আসলে নিজের মত করে থাকতে হয় রিলাক্সের জন্য।খুবই বিরক্ত হই এতে, বিরক্ত হওয়াতে কি অন্যায় আছে? এই রাগ কি সয়তানের পক্ষ থেকে? মানে রাগ করা যৌক্তিক কিনা?যেহেতু তারা ঘরেরই মানুঢ। কোন মুরব্বি বুঝের অভাবে এরকম করলে কী করার আছে? কুরান হাদিসের আলোকে একজন স্ত্রীর প্রাইভেসি সম্পর্কে জানতে চাই

1 Answer

0 votes
by (679,640 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে রাগ করা যৌক্তিক।
আপনি আপনার স্বামীর মাধ্যমেই হোক বা অন্য যেকোনক ভাবেই হোক, সকলকেই এই বিষয় গুলি জানিয়ে দিবেন।
,
তাহলে আশা করি আর সমস্যা হবেনা,ইনশাআল্লাহ। 
,   
একে অপরের ঘরে বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করলে বহু রকমের বিব্রতকর ও বিরক্তিকর পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।  যথা-
★ঘরে কখনো একান্ত ব্যক্তিগত কাজ করা হয় যা অন্য কারো দৃষ্টিগোচর হওয়া ঘরের বাসিন্দার অপছন্দ।

★কখনো একান্ত জরুরি কাপড় ছাড়া অন্য কাপড় খুলে রাখা হয় (বা খুলে যায়)। এ অবস্থায় বিনা অনুমতিতে কেউ প্রবেশ করে ফেললে সে বিব্রত বোধ করে।

★আবার কখনো কোনো বিষয়ে গভীর মনোনিবেশ করা হয়। এক্ষেত্রে অকস্মাৎ কেউ এসে পড়লে সে চমকে উঠে; দিল-দেমাগের উপর চোট পড়ার আশংকা থাকে। এ সমস্যাগুলো কারো একান্ত কক্ষে বিনা অনুমতিতে প্রবেশের দ্বারা ঘটতে পারে।
ইত্যাদি ইত্যাদি।   

মাহরাম আত্মীয়দের (যাদের পারস্পরিক বিবাহ হারাম) পরস্পরের মধ্যে পর্দার বিধান না থাকলেও একে অপরের ‘সতর’ দেখা নাজায়েয। আর ব্যক্তিগত কাজ, অবস্থা ও অবস্থান তো প্রত্যেকেরই কমবেশি থাকে। এ কারণে প্রাপ্তবয়স্ক মাহরামদেরও একে অন্যের ঘরে গেলে সর্বদা অনুমতি নেওয়া উচিত। পিতা-মাতা, প্রাপ্তবয়স্ক ভাই-বোন, ছেলে-মেয়ে সকল মাহরামের ক্ষেত্রে এ বিধান প্রযোজ্য।

তবে সাবালকত্বে পৌঁছেনি এমন শিশুরা যেহেতু সাধারণত ঘরে ছোটাছুটি করে তাই তারা শুধু ঐ সময়গুলোতে অনুমতি নিবে যে সময়গুলোতে বড়রা বিশ্রাম ও একান্তে অবস্থান করে। এছাড়া অন্য সময়ে তাদের অনুমতি নিতে হবে না। বড়দের কর্তব্য নিজেদের বিশ্রাম ও একান্তে অবস্থানের সময়গুলোতে শিশুদের অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করার শিক্ষা দেওয়া ও উদ্বুদ্ধ করা। যাতে এ সময়গুলোতে তারাও অনুমতি ছাড়া বড়দের ঘরে প্রবেশ না করে।

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ইরশাদ করেন-

یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا لِیَسْتَاْذِنْكُمُ الَّذِیْنَ مَلَكَتْ اَیْمَانُكُمْ وَ الَّذِیْنَ لَمْ یَبْلُغُوا الْحُلُمَ مِنْكُمْ ثَلٰثَ مَرّٰتٍ  مِنْ قَبْلِ صَلٰوةِ الْفَجْرِ وَ حِیْنَ تَضَعُوْنَ ثِیَابَكُمْ مِّنَ الظَّهِیْرَةِ وَ مِنْۢ بَعْدِ صَلٰوةِ الْعِشَآءِ  ثَلٰثُ عَوْرٰتٍ لَّكُمْ  لَیْسَ عَلَیْكُمْ وَ لَا عَلَیْهِمْ جُنَاحٌۢ بَعْدَهُنَّ  طَوّٰفُوْنَ عَلَیْكُمْ بَعْضُكُمْ عَلٰی بَعْضٍ كَذٰلِكَ یُبَیِّنُ اللهُ لَكُمُ الْاٰیٰتِ   وَ اللهُ عَلِیْمٌ حَكِیْمٌ . وَ اِذَا بَلَغَ الْاَطْفَالُ مِنْكُمُ الْحُلُمَ فَلْیَسْتَاْذِنُوْا كَمَا اسْتَاْذَنَ الَّذِیْنَ مِنْ قَبْلِهِمْ كَذٰلِكَ یُبَیِّنُ اللهُ لَكُمْ اٰیٰتِهٖ  وَ اللهُ عَلِیْمٌ حَكِیْمٌ.

হে মুমিনগণ! তোমাদের মালিকানাধীন দাস-দাসীরা এবং তোমাদের মধ্যে যারা এখনো সাবালকত্বে পৌঁছেনি সেই শিশুরা যেন তিনটি সময়ে অনুমতি গ্রহণ করে- ফজরের নামাযের আগে, দুপুর বেলা যখন তোমরা পোশাক খুলে রাখ এবং এশার নামাযের পর। এ তিনটি তোমাদের গোপনীয়তা অবলম্বনের সময়।  এ তিন সময় ছাড়া অন্য সময়ে তোমাদের ও তাদের প্রতি কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। তোমাদের পরস্পরের মধ্যে তো সার্বক্ষণিক যাতায়াত থাকেই। এভাবেই আল্লাহ তোমাদের কাছে তার আয়াতসমূহ সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করে  থাকেন। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। তোমাদের শিশুরা সাবালক হয়ে গেলে যেন অনুমতি গ্রহণ করে, যেমন তাদের আগের বয়ঃপ্রাপ্তরা অনুমতি গ্রহণ করে আসছে। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। -সূরা নূর (২৪) : ৫৮-৫৯

এখানে বিশেষ তিনটি সময়ে শিশুদেরকেও অনুমতি নিয়ে প্রবেশের আদেশ করা হয়েছে। কারণ, এ সময়গুলোতে সাধারণত মানুষ একটু খোলামেলা থাকতে পছন্দ করে। এ অবস্থায় হঠাৎ কেউ উপস্থিত হয়ে গেলে পর্দাহীনতার আশংকা থাকে আর আরাম-বিশ্রামের তো বিঘ্নতা ঘটেই। কিন্তু অন্য সময়ে যেহেতু এসব ভয় থাকে না আবার তারা বেশি বেশি যাতায়াতও করে তাই তখন তারা বিনা অনুমতিতেও প্রবেশ করতে পারবে। কিন্তু সাবালকত্বে পৌঁছে যাওয়া ছেলে-মেয়ে এবং বড়দের অনুমতির বিষয়টি এ তিন সময়ে সীমাবদ্ধ না করে তাদেরকে সাধারণভাবে অনুমতি নেওয়ার আদেশ করা হয়েছে।


আতা ইবনে আবী রাবাহ থেকে বর্ণিত, আমি ইবনে আব্বাস রা.-কে জিজ্ঞাসা করলাম,  বোনের কাছে গেলে কি আমি অনুমতি নিব? বললেন, হাঁ। বর্ণনাকারী বলেন, আমি আবার জিজ্ঞাসা করলাম, আমার প্রতিপালনে দুটি বোন আছে, আমি তাদের দেখাশোনা করি এবং তাদের জন্য খরচ করি, তাদের কাছে গেলেও কি আমার অনুমতি নিতে হবে? বললেন, হাঁ। তোমার কি তাদেরকে বিবস্ত্র দেখা পছন্দ হবে? এরপর তিনি সূরা নূরের ৫৮ ও  ৫৯ নং আয়াত পাঠ করে বলেন, সকলের জন্য অনুমতি নেওয়া জরুরি। (-আল আদাবুল মুফরাদ, বর্ণনা ১০৬৩)
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যেকোনো সময়ে আপনার রুমে কোনো মহিলা বা মাহরাম পুরুষ  প্রবেশ করতে হলে সালাম বা গলা আওয়াজ করে হলেও একটু জানান দিতে হবে।

বিস্তারিত জানুনঃ  
,
 গায়রে মাহরামদের তো আপনার রুমে প্রবেশ জায়েজ নেই।
হ্যাঁ যদি আপনি পরিপূর্ণ পর্দা করা অবস্থায় থাকেন,আর সেখানে অন্য কেহ উপস্থিত থাকেই,তাহলে অনুমতি স্বাপেক্ষে গায়রে মাহরাম পুরুষ আপনার রুমে প্রবেশ করতে পারে।      


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...