আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
69 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (1 point)
আসসালামু আলাইকুম।
আমার নিম্নোক্ত বিষয়টি জানার খুবই দরকার। শাইখ কষ্ট করে একটু জানাবার চেষ্টা করবেন....
আমি যার বিষয়ে জানতে চাই, তিনি আমার অতি নিকটতম মানুষ।
তার নাম আবদুল্লাহ।  তার বয়স যখন দশ দিন তখন তার মা এই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে যান। ছেলেটিকে তার দাদীমা লালন পালন করতে থাকেন। আর তার দাদীমার কাজে টুকটাক সাহায্য করার জন্য দাদীমার ভাতিজির মেয়ে ছিলেন।  সম্পর্কে আবদুল্লাহর ফুফাতো বোন। এই মেয়েটির বয়স তখন ১৩বছর ছিল।

আবদুল্লাহর বয়স যখন দুই বছর তখন তার বাবাকে আবার বিবাহ করে দেওয়া হয়। ঘরে নতুন মা আসেন। যে কিনা কখনো পেটে সন্তান ধারণ করতে পারবেন না বিশেষ অসুস্থতার কারণে।  এই নতুন মা স্বামীর ছেলেকে অর্থাৎ আবদুল্লাহকে নিজের ছেলে বলেই গ্রহণ করেন এবং ঐ ১৩বছরের মেয়েকেও মেয়ে হিসেবে পালতে নেন। এইভাবে চলতে থাকল....।  যখন আবদুল্লাহর বয়স ১১হলো তখন নতুন মা মনে করলেন এই দুইজনের ( আবদুল্লাহ আর তার দূর সম্পর্কের ফুফাতো বোন) পর্দা  করা উচিৎ। পরে নতুন মা কোথায় যেন পড়েন নবী করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)  এর একজন বোন ছিলেন - যাঁর নাম বারাকাহ ,কূনিয়ত উম্মে আয়মন ( রা.) যিনি নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর খাদেমা ছিলেন ,এবং যাঁর সাথে নবী দেখা করতেন।  এটা জানার পর থেকে নতুন মা তাদের দেখা করা জায়েজ মনে করেন।
তারপর তারা ভাইবোনের পরিচয়েই ছোট থেকে বড় হয়েছে।
একসাথে রয়েছে।  এখন আবদুল্লাহর বয়স ২৫ আর মেয়েটির বয়স ৩৭। তাদের সম্পর্ক একদম নিজের ভাই বোনের মতই। মেয়েটি তার স্বামী সন্তান সহ আবদুল্লাহ, আবদুল্লাহর মা বাবার সাথে একসঙ্গেই আছেন। তারা কখনোই পৃথক হননি হবার ইচ্ছাও নেই। আবদুল্লাহর বাবা মেয়েটির মায়ের মামাতো ভাই, তার সাথেও মেয়েটি দেখা করে।
এখন আমার জানতে চাওয়ার বিষয় তাদের  ( আবদুল্লাহ এবং আবদুল্লাহর বাবার সাথে ) দেখা করাটা জায়েজ নাকি নাজায়েজ।
দেখা করা নাজায়েজ হলে শুধু সেইটা বললেই হবে।
এনারা বাহিরে একদম ফুল পর্দা করেন। গায়রে মাহরামের সাথে একেবারেই দেখা করেন না এবং হাত মোজা পা মোজার সহিত চলেন।
আর এই দুইজনের কারো সাথে দেখা করা জায়েজ হলে বিশেষ করে আবদুল্লাহর সাথে দেখা করা জায়েজ হলে আপনাদের ফতোয়া বিভাগ থেকে কষ্ট করে ফতোয়াটা জানাবার চেষ্টা করার অনুরোধ করা হলো।
আমার আশেপাশে কেউ নেই যার থেকে আমি জানব এইজন্যই এখান থেকে জানতে চাওয়া ।
জাযাকাল্লাহু খইরন।

1 Answer

0 votes
by (61,230 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম

জবাব:-

https://www.ifatwa.info/60174/   নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে,

আল্লাহ তা'আলা বলেন,

ﻭَﻫُﻮَ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﺧَﻠَﻖَ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﻤَﺎﺀ ﺑَﺸَﺮًﺍ ﻓَﺠَﻌَﻠَﻪُ ﻧَﺴَﺒًﺎ ﻭَﺻِﻬْﺮًﺍ ﻭَﻛَﺎﻥَ ﺭَﺑُّﻚَ ﻗَﺪِﻳﺮًﺍ

তিনিই পানি থেকে সৃষ্টি করেছেন মানবকে, অতঃপর তাকে রক্তগত, বংশ ও বৈবাহিক সম্পর্কশীল করেছেন। তোমার পালনকর্তা সবকিছু করতে সক্ষম। (সূরা ফুরক্বান-৫৪)

হুরমতে মুসাহারাত অর্থ হল, নিকটাত্মীয় কে সম্মান প্রদর্শন করা। (হুরমত অর্থ সম্মান+এবং মুসাহারাত অর্থ নিকটাত্মীয়

দুই জন মানুষের মধ্যে যে সম্পর্ক পাওয়া যায় বা সমাজে চলমান রয়েছে,সেটা সাধারণত নসব তথা বংশগত কারণে হয়ে থাকে বা রেযা'আত তথা দুধ সম্পর্কের ভিত্তিতে প্রতিষ্টিত হয়ে থাকে কিংবা মুসাহারাহ তথা বৈবাহিক সম্পর্কের ভিত্তিতে প্রতিষ্টিত থাকে।

https://www.ifatwa.info/2722  নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে,

নারীদের মাহরাম পুরুষ:

১-বাপ, দাদা, নানা ও তাদের উর্ধ্বতন ক্রমানু পুরুষগণ।

২-সহোদর ভাই, বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয় ভাই।

৩-শ্বশুর, আপন দাদা শ্বশুর ও নানা শ্বশুর এবং তাদের উর্ধ্বতন ক্রমানু পুরুষগণ।

৪-আপন ছেলে, ছেলের ছেলে, মেয়ের ছেলে এবং তাদের ঔরষজাত পুত্র সন্তান এবং কন্যা সন্তানদের স্বামী।

৫-স্বামীর অন্য স্ত্রীর গর্ভজাত পুত্র।

৬-ভাতিজা, ভাগিনা তথা সহোদর, বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয় ভাই ও বোনের ছেলে ও তাদের অধঃস্থন কোন ছেলে।

৭-আপন চাচা অর্থাৎ বাপের সহোদর, বৈপিত্রেয় ও বৈমাত্রেয় ভাই।

৮-আপন মামা তথা মায়ের সহোদর, বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয় ভাই।

৯-দুধ সম্পর্কীয় ছেলে, উক্ত ছেলের ছেলে, দুধ সম্পর্কীয় মেয়ের ছেলে ও তাদের ঔরষজাত যে কোন পুত্র সন্তান এবং দুধ সম্পর্কীয় মেয়ের স্বামী।

১০-দুধ সম্পর্কীয় বাপ, চাচা, মামা, দাদা, নানা ও তাদের উর্ধ্বতন ক্রমানু পুরুষগণ।

১১-দুধ সম্পর্কীয় ভাই, দুধ ভাইয়ের ছেলে, দুধ বোনের ছেলে এবং তাদের ঔরষজাত যে কোন পুত্র সন্তান।

১২-শরীয়ত অনুমোদিত বৈধ স্বামী।

১৩-যৌন শক্তিহীন এমন বৃদ্ধ, যার মাঝে মহিলাদের প্রতি কোন আকর্ষণ নেই আবার মহিলাদেরও তার প্রতি কোন আকর্ষণ নেই।

১৪-অপ্রাপ্ত বয়স্ক এমন বালক যার মাঝে এখনো যৌন আকর্ষণ সৃষ্টি হয়নি

 https://ifatwa.info/36901/  নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে, আপনি যদি আপনার খালার দুধ পান করে থাকেন। তাহহলে আপনার খালার সাথে এবং আপনার উক্ত খালার সন্তানাদির সাথে আপনার দুধ সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছে।তবে আপনার বড় বা ছোট ভাই,যারা আপনার খালার দুধ পান করেনি,তাদের সাথে আপনার খালাতো ভাই/বোনের কোনো প্রকার দুধ সম্পর্ক স্থাপিত হয়নি।

সুতরাং আপনার বড় বা ছোট ভাই/বোন আপনার উক্ত খালাতো বোন-ভাইয়ের সাথে বিবাহ সম্পর্কে জড়াতে পারবে। এতে কোনো সমস্যা হবে না।

https://www.ifatwa.info/1870 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে,

কত বার দুধ পান করলে দুধ সম্পর্ক স্থাপিত হবে?এ সম্পর্কে মতভেদ রয়েছে- বিশুদ্ধ মতানুযায়ী একবার এক কাতরা দুধ পান করে নিলেও দুধ সম্পর্ক প্রমাণিত হয়ে যাবে।(ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যাহ-১৩/৬১৭)আল্লাহ-ই ভালো জানেন।

সম্মানিত প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন !

জ্বী না আব্দুল্লাহ এর জন্য তার ঐ ফুফাত বোনের সাথে দেখা করা জায়েয নেই। কারন, তিনি তার গায়রে মাহরাম। যদি যদি পরস্পরে দুধ ভাই হতেন তাহলে মাহরাম হতেন। নতুন মা দুজনকে ছেলে মেয়ে মনে করলেই আপন সন্তানের হুকুমে হয়ে যায় না। উম্মে আইমন রা. এর সাথে নবী সা. সম্পর্ক বিষয়টি নবীজির বিশেষ বৈশিষ্ট ছিল বা তাঁর সাথেই খাছ ছিল। সাধারণ উম্মতের জন্য তা প্রযোজ্য নয়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...