আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
110 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (1 point)
স্বামীর আনুগত্য বলতে কতটুকু বোঝায়? আমি যদি তার শারীরিক চাহিদা পূরণ করি, সাধ্যমত সংসারের কাজ করি, এরপর বাকি সময় আমি দ্বীনি ইলম, আমার ব্যাক্তিগত উন্নয়ন সহ অন্যান্য হালাল এবং সওয়াবের কাজে ব্যয় করি (হতে পারে ঘরে বসে হালাল আয় করা যাতে মানুষের উপকার ও হয়), এগুলোতেও কি স্বামী চাইলেই বাঁধা দিতে পারবে? এবং মেনে না নিলে কি আমার পাপ হবে? বা, আমি যদি এমন কাউকে জীবনসঙ্গী হিসেবে চাই, যে আমাকে সংসার ছাড়াও অন্যান্য কাজে উৎসাহ দিবে (ঘরের বাইরে যাওয়া, বেপর্দা থাকা, ফ্রি মিক্সিং নয়), সাহায্য করবে, এটা কি দোষনীয় হবে?

*আমি অবিবাহিত, বিবাহের কথা চলছে।

1 Answer

0 votes
by (573,660 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم 

স্ত্রী তার স্বামীর আনুগত্য করবে যদি সে হারাম এবং সাধ্যের অতিরিক্ত কোন কাজের আদেশ না করে। সেই সাথে যথাসাধ্য তার সেবা করবে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

عَنْ أَنَسٍ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «الْمَرْأَةُ إِذَا صَلَّتْ خَمْسَهَا وَصَامَتْ شَهْرَهَا وَأَحْصَنَتْ فَرْجَهَا وَأَطَاعَتْ بَعْلَهَا فَلْتَدْخُلْ مِنْ أَىِّ أَبْوَابِ الْجَنَّةِ شَاءَتْ»

আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোনো মহিলা যদি পাঁচ ওয়াক্ত সলাত আদায় করে, রমাযানের সিয়াম পালন করে, গুপ্তাঙ্গের হিফাযাত করে, স্বামীর একান্ত অনুগত হয়। তার জন্য জান্নাতের যে কোনো দরজা দিয়ে ইচ্ছা প্রবেশের সুযোগ থাকবে।
(মিশকাত ৩২৫৪.হিলইয়াতুল আওলিয়া ৬/৩০৮।)

أَخْبَرَنَا قُتَيْبَةُ قَالَ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ ابْنِ عَجْلَانَ عَنْ سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قِيلَ لِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَيُّ النِّسَاءِ خَيْرٌ قَالَ الَّتِي تَسُرُّهُ إِذَا نَظَرَ وَتُطِيعُهُ إِذَا أَمَرَ وَلَا تُخَالِفُهُ فِي نَفْسِهَا وَمَالِهَا بِمَا يَكْرَهُ 

কুতায়বা (রহঃ) ... আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে প্রশ্ন করা হলো, কোন মহিলা উত্তম? তিনি বললেনঃ যে মহিলার প্রতি দৃষ্টিপাত স্বামীকে সন্তুষ্ট করে। সে আদেশ করলে তা সম্পন্ন করে, এবং তার বাড়ীর ও তার মালের ব্যাপারে যা অপছন্দ করে, সে তার বিরোধিতা করে।
(সুনানে নাসায়ী ৩২৩৪.মিশকাত ৩২৭২, সহীহাহ ১৮৩৮।)

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:

لَوْ كُنْتُ آمِرًا أَحَدًا أَنْ يَسْجُدَ لِغَيْرِ اللهِ لأَمَرْتُ الْمَرْأَةَ أَنْ تَسْجُدَ لِزَوْجِهَا وَالَّذِى
نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ لاَ تُؤَدِّى الْمَرْأَةُ حَقَّ رَبِّهَا حَتَّى تُؤَدِّىَ حَقَّ زَوْجِهَا وَلَوْ سَأَلَهَا نَفْسَهَا وَهِىَ عَلَى قَتَبٍ لَمْ تَمْنَعْهُ-

“যদি আমি কাউকে নির্দেশ দিতাম আল্লাহ ব্যতীত অন্যকে সিজদা করার, তাহ’লে স্ত্রীকে নির্দেশ দিতাম তার স্বামীকে সিজদা করার জন্য।ঐ সত্তার শপথ করে বলছি যার হাতে আমার জীবন, মহিলারা ঐ পর্যন্ত আল্লাহর হক আদায় করতে পারে না যতক্ষণ পর্যন্ত সে স্বামীর হক আদায় না করে, এমনকি স্বামী যদি যাত্রা পথে ঘোড়ার পৃষ্ঠেও তাকেও আহবান করে তখনও তাকে বাধা না দেয়।” (ইবনে মাজাহ হা/১৮৫৩; সহীহাহ হা/১২০৩।)

নারীদের পক্ষ থেকে হযরত আসমা বিনতে ইয়াযিদ রা. নবীজীর দরবারে গিয়ে আরয করেন, নারীদের পক্ষ থেকে আমি আপনার কাছে আগমন করেছি। (আল্লাহর রাসূল!) আল্লাহ তাআলা আপনাকে নারী ও পুরুষ সবার কাছেই রাসূল হিসেবে প্রেরণ করেছেন। আমরা আপনার উপর ও আপনার প্রতিপালকের উপর ঈমান এনেছি। আমরা নারীরা তো ঘরের কাজ-কর্ম আঞ্জাম দেই। সন্তান গর্ভে ধারণ করি। (তাদের লালন-পালন করি) আমাদের উপর (বিভিন্ন ইবাদাতের ক্ষেত্রে) পুরুষদের ফযীলত রয়েছে। তারা জামাতের সাথে নামায আদায় করে। রোগী দেখতে যায়। জানাযায় শরীক হয়। একের পর এক হজ্ব করে। সবচেয়ে বড় ফযীলতের ব্যাপার হল তারা আল্লাহর পথে জিহাদ করতে পারে। তো আমরা কীভাবে তাদের মত ফযীলত ও সাওয়াব লাভ করতে পারব? নবীজী তখন সাহাবায়ে কেরামের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, কোনো দ্বীনী বিষয়ে তোমরা কি কোনো নারীকে এর চেয়ে সুন্দর প্রশ্ন করতে শুনেছ কখনো? এরপর নবীজী সে নারীকে লক্ষ করে বললেন, তুমি আমার  কথা ভালোভাবে  অনুধাবন কর এবং অন্যান্য মহিলাদেরও একথা জানিয়ে দাও যে, স্বামীর সাথে সদাচরণ করা, তার সন্তুষ্টি কামনা করা ও তার পছন্দনীয় কাজ করা এসকল আমলের সমতুল্য সাওয়াব ও মর্যাদা রাখে। -শুআবুল ঈমান, বায়হাকী, হাদীস ৮৩৬৯; মুসনাদে বাযযার, হাদীস ৫২০৯।

স্বামীর হক সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ 

চার মাযহাব সম্বলীত সর্ব বৃহৎ ফেক্বাহী গ্রন্থ 'আল-মাওসু'আতুল ফেক্বহিয়্যায়' রয়েছে,

" ﻃﺎﻋﺔ ﺍﻟﻤﺨﻠﻮﻗﻴﻦ - ﻣﻤّﻦ ﺗﺠﺐ ﻃﺎﻋﺘﻬﻢ – ﻛﺎﻟﻮﺍﻟﺪﻳﻦ ، ﻭﺍﻟﺰّﻭﺝ ، ﻭﻭﻻﺓ ﺍﻷﻣﺮ : ﻓﺈﻥّ ﻭﺟﻮﺏ ﻃﺎﻋﺘﻬﻢ ﻣﻘﻴّﺪ ﺑﺄﻥ ﻻ ﻳﻜﻮﻥ ﻓﻲ ﻣﻌﺼﻴﺔ ، ﺇﺫ ﻻ ﻃﺎﻋﺔ ﻟﻤﺨﻠﻮﻕ ﻓﻲ ﻣﻌﺼﻴﺔ ﺍﻟﺨﺎﻟﻖ " ﺍﻧﺘﻬﻰ

যাদের আদেশ-নিষেধ এর অনুসরণ শরীয়ত কর্তৃক ওয়াজিব।যেমন-মাতাপিতা,স্বামী,সরকারী বিধিনিষেধ,এর অনুসরণ ওয়াজিব।
এ হুকুম ব্যাপক হারে প্রযোজ্য হবে না বরং ঐ সময়-ই প্রযোজ্য হবে যখন তা গুনাহের কাজ হবে না।কেননা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত রয়েছে আল্লাহর অবাধ্যতায় কোনো মাখলুকের অনুসরণ করা যাবে না।(২৮/৩২৭)

স্বামীর আদেশকে মান্য করা মূলত তিনটি মূলনীতির আলোকে হয়ে থাকে।

(১)আদেশ কোনো মুবাহ বিষয়ে হতে হবে।কোনো ওয়াজিব তরকের ব্যাপারে হতে পারবে না। এবং কোন হারাম কাজের জড়িত হওয়ার জন্যও হতে পারবে না।
(২)যে কাজের আদেশ স্বামী দিবেন,এতে তার ফায়দা থাকতে হবে,বা শরীয়তের পছন্দসই কাজ হতে হবে।
(৩)যে কাজের আদেশ স্বামী দিবে,তা তাদের স্ত্রীর জন্য ক্ষতিকারক হতে পারবে না।

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/1707

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-
https://www.ifatwa.info/1722

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,

স্বামীর হক পূর্ণ ভাবে আদায়ের পর অতিরিক্ত সময়ে আপনি কোনো হালাল কাজ করলে স্বামীর জন্য কোনোক্রমেই সমীচীন নয় যে সে আপনার হালাল কোনো কাজে বাধা দিবে।

প্রয়োজনে ঘরের বাইরে যেতে দিবে,এমন স্বামী চাইতে কোনো সমস্যা নেই।

তবে বিনা প্রয়োজনে এমনিতেই বাহিরে যেতে দিবে,গায়রে মাহরামদের সামনে বেপর্দা থাকতে দিবে,এমন স্বামী চাওয়া কোনো দ্বীনদার নারীর জন্য কাম্য নয়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
জাযাকুমুল্লাহু খইর।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 248 views
...