আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
38 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (18 points)
السلام عليكم و رحمة الله و بركاته

১) আল্লাহর উপর কিভাবে তাওয়াক্কুল করতে হয়?
আমি আমার জীবনসঙ্গী হিসেবে একজন উত্তম কাউকে আশা করি। কিন্তু  বার বার আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল হারাই ফেলি যদি জীবনসঙ্গী  খারাপ হয়  এইরকম বাজে চিন্তা আসে..  আবার চিন্তা করি,,  আল্লাহর  কাছে কোনোকিছুর অভাব নাই আল্লাহ আমাকে উত্তম কিছু দিবেন ঠকাবেন না, যদি উত্তম কিছু না-ই দেন তাহলে কেন আমাকে ধৈর্যের পরিক্ষা  নিচ্ছে আর দুয়া  করার তৌফিক দিয়েছে৷ তারপরও বারবার আমি তাওয়াক্কুল হারাই ফেলি।
আল্লাহর উপর আমার তাওয়াক্কুলের অভাব ফিল করি।
আমি কিভাবে আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল বাড়াতে পাড়ি???
২)আমার অনেক খারাপ বাজে চিন্তা আসে আমি নিজে আনি নাকি শয়তান আনে আমার জানা নেই। মাঝে মাঝে মনে হয় আমি নিজেই চিন্তাগুলো আনি । আমার  বার বার মনে হয়,, ইসলাম কি সত্য?  আল্লাহ কি সত্যিই আছেন?  নবী সঃ  কি সত্যিই এসেছিলেন?  আজকে দুয়া করতেছিলাম ইউসুফ আঃ এর কথা মনে পড়লো,, জুলেখার ফিতনা থেকে আল্লাহ তাকে কিভাবে বাঁচালেন!  এগুলো চিন্তা  করতে করতে একপর্যায়ে,, মনের মধ্যে  আসে, ইউসুফ নবীর সাথে কি সত্যি এমন ঘটনা ঘটলো? ইউসুফ আঃ কি সত্যি  পৃথিবীতে ছিলেন?  তারা কি সত্যিই ছিলেন নাকি এগুলো কাল্পনিক গল্প?  (আল্লাহুম্মাগফিরলি)

আমি যে আল্লাহকে বিশ্বাস  করিনা এমন কিন্তু  না!   আমি আল্লাহর সকল বিধিবিধান মেনে চলার চেষ্টা করি।  আমি  আল্লাহকে বড্ড   ভালোবাসি আমার রাসূলকেও।
কিন্তু  তারপরও এমন চিন্তা  করি,
৩) আমার ইমান কি নষ্ট  হয়ে গেছে?
৪) আমি কিভাবে ইমান বাড়াতে পারি??
৫) এই চিন্তাগুলো কিভাবে দূর করতে পারি??
আমাকে নসিহা করুন প্লিজ প্লিজ
আমার এই বাজে চিন্তাগুলো কিভাবে দূর করতে পারি??

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
তাওয়াক্কুল অর্থ আল্লাহর ওপর সম্পূর্ণ ভরসা করা। ইবনু রজব (রহ.) বলেছেন, ‘দুনিয়া ও আখিরাতের সব কাজে কল্যাণ লাভ ও অকল্যাণ প্রতিহত করতে আন্তরিকভাবে আল্লাহর ওপর ভরসা করাকে তাওয়াক্কুল বলা হয়।’ (ইবনু রজব, জামেউল উলুম ওয়াল হিকাম, পৃষ্ঠা ৪৩৬)

তাওয়াক্কুলের মূল কথা হলো অন্তর থেকে আল্লাহর ওপর ভরসা করা, সেই সঙ্গে পার্থিব নানা উপায়-উপকরণ ব্যবহার করা এবং পরিপূর্ণ বিশ্বাস রাখা যে আল্লাহর হুকুম না হলে এই কাজ সম্পন্ন হওয়া সম্ভব নয়। আর আল্লাহ চাইলে যেকোনো কাজ অবশ্যই সংঘটিত হবে।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
তাওয়াক্কুলের জন্য নিজের সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। তারপর ফলাফলের জন্য আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করতে হবে। 

আরো করনীয়ঃ-
তাওহীদের পথে দৃঢ় থাকা। 
বান্দা যখন তাওহীদ বা আল্লাহর একত্ববাদে বিশ্বাস নিশ্চিত করতে পারবে, তখন তার তাওয়াক্কুলের একটি বিরাট অংশ অর্জিত হবে। 

আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ-  

فَإِنْ تَوَلَّوْا فَقُلْ حَسْبِيَ اللهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ 

‘এসত্ত্বেও যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে বলে দাও, আমার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট। তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। তার উপরেই আমি ভরসা করি’ (তওবা ৯/১২৯)। 

আল্লাহকে যথেষ্ট ভাবাই তো তাওহীদ ও তাওয়াক্কুল।

সকল কাজে আল্লাহর উপর নির্ভর করা।

সুখে-দুঃখে, সম্পদে-বিপদে সর্বাবস্থায় আমাদেরকে আল্লাহর উপর নির্ভর করতে হবে। এই নির্ভরতা কোনমতেই ঐসব জাহেল মূর্খদের মত হবে না যারা সুযোগ-সুবিধা ও উপায়-উপকরণ হাতের নাগালে পেলে আল্লাহকে ভুলে বসে থাকে এবং উপায়-উপকরণ নিয়ে মেতে থাকে; আর সুযোগ-সুবিধা ও উপায়-উপকরণ হাতছাড়া হয়ে গেলে তখনই কেবল আল্লাহর উপর ভরসা করে।

আল্লাহর প্রতি সুধারণা পোষণ। 

মুমিন বান্দা যতই তার রবের উপর ভরসা করবে ততই তার প্রতি সুধারণা পোষণ করবে। সে জেনে রাখবে যে, মালিকের উপর যে ভরসা করে মালিক তার জন্য যথেষ্ট, তার আর অন্য কিছু প্রয়োজন নেই।

এতে করে তার অন্তর অস্থিরতায় ভুগবে না এবং দুনিয়া তার হাতে এল কিংবা হাতছাড়া হ’ল বলে কোন পরোয়া করবে না। কেননা তার নির্ভরতা তো তার মালিক আল্লাহর উপর। 

হাদীছে কুদসীতে এসেছে, আল্লাহ বলেন,

أَنَا عِنْدَ ظَنِّ عَبْدِىْ بِىْ 

‘আমার বান্দা আমার সম্পর্কে যেমন ধারণা করে আমি তার নিকট তেমনই’।

সুতরাং সুধারণা যেমন আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুলের দিকে আহবান জানায়, তেমনি আল্লাহর প্রতি তাওয়াক্কুলের মাঝেও অবশ্যই সুধারণা থাকে।

আন্তরিকভাবে আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পণ।
দুনিয়াতে একজন হীন ক্রীতদাস যেমন তার মনিবের অনুগত থাকে এবং তার কথা মেনে চলে, তেমন করে বান্দা যদি আল্লাহকে আনুগত্য ও মান্য করে তাহ’লেই ভরসা অর্জিত হবে।

(২-৫)
ওয়াসওয়াসা হল এমন এক মানসিক রোগ যা একজন মুসলিমকে বিভ্রান্ত করার জন্য শয়তানের পক্ষ থেকে মনে আসা  কুমন্ত্রনার ফাঁদ। এই রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা এখন কম নয়।  কিন্তু এই রোগ সম্পর্কে ধারনা বা ইলমে জ্ঞান না থাকার ফলে একজন সাধারন ব্যক্তি ধীরে ধীরে মানসিক রোগীতে পরিণত করতে পারে। কারণ শুরুতেই যদি এর চিকিৎসা না করা হয়, তাহলে এটি বাড়তে থাকে।

আমরা আমাদের বিগত সহস্রাধিক প্রশ্ন রিসার্চ করে দেখেছি যে ওয়াসওয়াসা আক্রান্ত ব্যক্তি বিভিন্ন মাসলা মাসায়েল বা ফতোয়ার প্রশ্নের উত্তর ঘাটাঘাটি করে আরও বেশি ওয়াসওয়াসাতে আক্রান্ত হয়ে যায়। এবং প্রশ্নের উত্তর হল একজন ওয়াসওয়াসা আক্রান্ত রোগীদের রোগ বৃদ্ধির খোরাক। এবং একটা প্রশ্ন উত্তর পাওয়ার পর একজন ওয়াসওয়াসা আক্রান্ত ব্যক্তি ক্রমাগত একই প্রশ্ন বারবার ঘুরিয়ে পেচিয়ে শতাধিকবার করতে থাকেন।  যেটা উনাকে বরং ক্রমাগত অধিকতরও খারাপের দিকে নিয়ে যেতে থাকে। 

বিষয়গুলো পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ওয়াসওয়াসা আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে নিচের দেওয়া বাধ্যতামূলক সুস্থ হওয়ার কোর্সটি কমপ্লিট না হওয়া পর্যন্ত কোনো প্রশ্নের উত্তর দেয়া হবে না । 

এবং আমরা আশা করছি এবং আল্লাহর উপরে ভরসা রেখে বলছি যারা নিচের এই কোর্সটি করবেন ইনশাআল্লাহ সুস্থ হয়ে যাবেন। 

আর কোর্সের ভিতরে একটা অংশে আমাদের মুফতি সাহেবদের সাথে সরাসরি জুম মিটিংয়ের মাধ্যমে প্রশ্ন-উত্তরের ব্যবস্থা থাকবে। 

আল্লাহ আমাদের সমস্ত শারীরিক ও মানসিক রোগ থেকে হেফাজত করুন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...