তাওয়াক্কুল অর্থ আল্লাহর ওপর সম্পূর্ণ ভরসা করা। ইবনু রজব (রহ.) বলেছেন, ‘দুনিয়া ও আখিরাতের সব কাজে কল্যাণ লাভ ও অকল্যাণ প্রতিহত করতে আন্তরিকভাবে আল্লাহর ওপর ভরসা করাকে তাওয়াক্কুল বলা হয়।’ (ইবনু রজব, জামেউল উলুম ওয়াল হিকাম, পৃষ্ঠা ৪৩৬)
তাওয়াক্কুলের মূল কথা হলো অন্তর থেকে আল্লাহর ওপর ভরসা করা, সেই সঙ্গে পার্থিব নানা উপায়-উপকরণ ব্যবহার করা এবং পরিপূর্ণ বিশ্বাস রাখা যে আল্লাহর হুকুম না হলে এই কাজ সম্পন্ন হওয়া সম্ভব নয়। আর আল্লাহ চাইলে যেকোনো কাজ অবশ্যই সংঘটিত হবে।
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
তাওয়াক্কুলের জন্য নিজের সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। তারপর ফলাফলের জন্য আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করতে হবে।
আরো করনীয়ঃ-
তাওহীদের পথে দৃঢ় থাকা।
বান্দা যখন তাওহীদ বা আল্লাহর একত্ববাদে বিশ্বাস নিশ্চিত করতে পারবে, তখন তার তাওয়াক্কুলের একটি বিরাট অংশ অর্জিত হবে।
আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ-
فَإِنْ تَوَلَّوْا فَقُلْ حَسْبِيَ اللهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ
‘এসত্ত্বেও যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে বলে দাও, আমার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট। তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। তার উপরেই আমি ভরসা করি’ (তওবা ৯/১২৯)।
আল্লাহকে যথেষ্ট ভাবাই তো তাওহীদ ও তাওয়াক্কুল।
সকল কাজে আল্লাহর উপর নির্ভর করা।
সুখে-দুঃখে, সম্পদে-বিপদে সর্বাবস্থায় আমাদেরকে আল্লাহর উপর নির্ভর করতে হবে। এই নির্ভরতা কোনমতেই ঐসব জাহেল মূর্খদের মত হবে না যারা সুযোগ-সুবিধা ও উপায়-উপকরণ হাতের নাগালে পেলে আল্লাহকে ভুলে বসে থাকে এবং উপায়-উপকরণ নিয়ে মেতে থাকে; আর সুযোগ-সুবিধা ও উপায়-উপকরণ হাতছাড়া হয়ে গেলে তখনই কেবল আল্লাহর উপর ভরসা করে।
আল্লাহর প্রতি সুধারণা পোষণ।
মুমিন বান্দা যতই তার রবের উপর ভরসা করবে ততই তার প্রতি সুধারণা পোষণ করবে। সে জেনে রাখবে যে, মালিকের উপর যে ভরসা করে মালিক তার জন্য যথেষ্ট, তার আর অন্য কিছু প্রয়োজন নেই।
এতে করে তার অন্তর অস্থিরতায় ভুগবে না এবং দুনিয়া তার হাতে এল কিংবা হাতছাড়া হ’ল বলে কোন পরোয়া করবে না। কেননা তার নির্ভরতা তো তার মালিক আল্লাহর উপর।
হাদীছে কুদসীতে এসেছে, আল্লাহ বলেন,
أَنَا عِنْدَ ظَنِّ عَبْدِىْ بِىْ
‘আমার বান্দা আমার সম্পর্কে যেমন ধারণা করে আমি তার নিকট তেমনই’।
সুতরাং সুধারণা যেমন আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুলের দিকে আহবান জানায়, তেমনি আল্লাহর প্রতি তাওয়াক্কুলের মাঝেও অবশ্যই সুধারণা থাকে।
আন্তরিকভাবে আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পণ।
দুনিয়াতে একজন হীন ক্রীতদাস যেমন তার মনিবের অনুগত থাকে এবং তার কথা মেনে চলে, তেমন করে বান্দা যদি আল্লাহকে আনুগত্য ও মান্য করে তাহ’লেই ভরসা অর্জিত হবে।
ওয়াসওয়াসা হল এমন এক মানসিক রোগ যা একজন মুসলিমকে বিভ্রান্ত করার জন্য শয়তানের পক্ষ থেকে মনে আসা কুমন্ত্রনার ফাঁদ। এই রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা এখন কম নয়। কিন্তু এই রোগ সম্পর্কে ধারনা বা ইলমে জ্ঞান না থাকার ফলে একজন সাধারন ব্যক্তি ধীরে ধীরে মানসিক রোগীতে পরিণত করতে পারে। কারণ শুরুতেই যদি এর চিকিৎসা না করা হয়, তাহলে এটি বাড়তে থাকে।
আমরা আমাদের বিগত সহস্রাধিক প্রশ্ন রিসার্চ করে দেখেছি যে ওয়াসওয়াসা আক্রান্ত ব্যক্তি বিভিন্ন মাসলা মাসায়েল বা ফতোয়ার প্রশ্নের উত্তর ঘাটাঘাটি করে আরও বেশি ওয়াসওয়াসাতে আক্রান্ত হয়ে যায়। এবং প্রশ্নের উত্তর হল একজন ওয়াসওয়াসা আক্রান্ত রোগীদের রোগ বৃদ্ধির খোরাক। এবং একটা প্রশ্ন উত্তর পাওয়ার পর একজন ওয়াসওয়াসা আক্রান্ত ব্যক্তি ক্রমাগত একই প্রশ্ন বারবার ঘুরিয়ে পেচিয়ে শতাধিকবার করতে থাকেন। যেটা উনাকে বরং ক্রমাগত অধিকতরও খারাপের দিকে নিয়ে যেতে থাকে।
বিষয়গুলো পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ওয়াসওয়াসা আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে নিচের দেওয়া বাধ্যতামূলক সুস্থ হওয়ার কোর্সটি কমপ্লিট না হওয়া পর্যন্ত কোনো প্রশ্নের উত্তর দেয়া হবে না ।
এবং আমরা আশা করছি এবং আল্লাহর উপরে ভরসা রেখে বলছি যারা নিচের এই কোর্সটি করবেন ইনশাআল্লাহ সুস্থ হয়ে যাবেন।
আর কোর্সের ভিতরে একটা অংশে আমাদের মুফতি সাহেবদের সাথে সরাসরি জুম মিটিংয়ের মাধ্যমে প্রশ্ন-উত্তরের ব্যবস্থা থাকবে।
আল্লাহ আমাদের সমস্ত শারীরিক ও মানসিক রোগ থেকে হেফাজত করুন।