আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
59 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (4 points)
আসসালামুয়ালাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহি ওয়া বারকাতুহ উস্তায
সালাফি এবং হানাফি এদের মধ্যে পার্থক্য অনেক আছে । সালাফিরা হচ্ছেন কুরআন সুন্নাহ অনুযায়ী সব মত কে মেনে চলেন আর হানাফি বা অন্য যে ৩ মাজহাব আছে এদের মধ্যে হচ্ছে এই ৪ ইমাম তাদের নিজস্ব মতামত বের করেছেন ইজমা কিয়াসের মাধ্যমে , কিন্তু অনেক মাসায়েল মাসয়ালা ভিন্ন ভিন্ন ,আমার প্রশ্ন জাগে যে যেটা জায়েজ সেটা তো সব মাজহাবে জায়েজ হ‌ওয়ার কথা আর যেটা নাজায়েজ সেটা তো সব মাজহাবে‌ই নাজায়েজ হ‌ওয়ার কথা । এক কথায় সালাফিরা কুরআন সুন্নাহর বাইরে মানুষ অর্থাৎ ৪ ইমাম এর মতামত কে প্রাধান্য দেন না আর ৪ মাজহাব অনুসারী রা হচ্ছেন যারা মানুষ এর মতামত কে অর্থাৎ ৪ ইমাম বলা কথা গুলো কে ও প্রাধান্য দেন।

 সালাফি মাজহাবে তো সব মাসায়েল মাসয়ালা অবশ্যই আছে তাইনা আর অবশ্যই তা কুরআন সুন্নাহ অনুযায়ীই আছে ,না হয় তাদের ফতোয়া গুলো কিভাবে বের করেন ?।যেমন ধরেন এক সাথে ৩ তালাক দিলে হানাফি মাজহাবে এ তালাক হয়ে যায় কিন্তু সালাফি তে ১ বৈঠকে ৩ টা দিলে ও ১ টাই হবে তালাক । সালাফিদের মতে ৩ তালাক আলাদা সময় এ দিতে হবে এটা হানাফি রা ও মানে , কিন্তু সমস্যা হল অনেক মানুষ রাগের মাথায় এক সময়ের মধ্যেই ৩ তালাক দিয়ে দেয় ।এটা সুন্নাহ বিরোধী বিদয়াত । এটা করলে গুনাহ হবে ঠিক কিন্তু তালাক ১ টাই হবে সালাফি অনুযায়ী ,আর হানাফি অনুযায়ী ৩ তালাক হয়ে যাবে যদি ও এটা হারাম বিদয়াত কিন্তু ৩ তালাক পতিত হয়ে যাবে । আর সালাফিদের মতামত টা অনেক শক্তিশালী আর ৪ মাজহাব এর টা ও নেওয়া যাবে এটা হচ্ছে ইজতিহাদি মাসয়ালা রাষ্ট যেটা নেয় ।
একটা মত হচ্ছে খুব শক্তিশালী যেটা ৩ তালাক দিক আর ১০০ তালাক দিক একটাই হবে
আর দ্বিতীয় টা হলে ৩ তালাক একসাথে দিলে ও ৩ তালাক হয়ে যাবে ।

 সালাফিরা সম্পুর্ণ কুরআন সুন্নাহের আলোকে চলে কিন্তু ৪ মাজহাব রা নিজস্ব ইজতিহাদ এর মাধ্যমে যে মতকে পেয়েছেন সেটা প্রাধান্য দিয়েছেন যার ফলে অনেক মাসয়ালা ভিন্ন ও । যেমন আর একটা উদাহরণ ধরুন হিজাবের ওপর মাথা মাসেহ করলে হানাফি অনুযায়ী হবেনা কিন্তু সালাফি অনুযায়ী হবে দলীল হিসেবে উম্মে সালমা ( রা) খিমারের উপর মাসেহ করেছেন তাহলে এখানে তো এটাই সহি হ‌ওয়ার কথা কিন্তু হানাফি অনুযায়ী এটা নাজায়েজ কেন? যদি হাদিস এই দলীল পাওয়া যায়??
প্রত্যাহিক জীবনের তো সমস্যা নবী সাহাবীদের যুগে ও ছিল তাহলে উনাদের মালায়ালা গুলো থেকেই আমাদের সমস্যা গুলো ও বের করা যায় যেমন তালাক , হিজাবের ওপর মাসেহ,এরকম আরো অনেক মাসয়ালা মাসায়েল আছে যেগুলো সাহাবিদের যুগ থেকে ও ছিল কিন্তু সেইগুলোই কেন মাজহাব অনুযায়ী আবার ভিন্ন মতামত এসেছে ?? বর্তমান এ অনেক কিছু আসসে যেগুলো আগে ছিলনো যেমন মোবাইল ফোন ব্যবহার করা যাবে কিনা? ওয়াইফাই কোম্পানি তে জব করা যাবে কিনা ইত্যাদি যা আগের যূগে ছিলনা এসবের মাসয়ালা পাওয়ার ও তো কোনো কথায় নাই এসব বিষয়ে ইজমা কিয়াস এর মাধ্যমে আলেমরা বের করেন এটা বুঝতে পারছি কিন্তু যেগুলো সাহাবিদের থেকেই পাওয়া যায় সেগুলো ও কেন ভিন্ন ভিন্ন মতামত??


৪ মাজহাব কে অনুসরন না করে কি সালফি অনুসরণ করলে এটা কি সরল সঠিক পথ নয়?
যেসব মাসয়ালা ৪ মাজহাব অনুসরণকারীদের দরকার হয় সেগুলো তো সালাফিদের ও দরকার হয় আর তারা ও তো মাসয়ালা গুলোর উত্তর পান কুরআন সুন্নাহর আলোকে তাহলে কি মাজহাব না মানলে ও কোনো সমস্যা হবে , সালাফি অনুসরণ করে কি আমরা সঠিক ভাবে চলতে পারবোনা?

 বি দ্র: আমি হানাফি মাজহাব অনুসারী। সালাফি অর্থাৎ আহলে হাদীস সম্পর্কে জানতে পেরে আমার এসব প্রশ্নের জাগছে । আর মাজহাব ভেদে ভিন্ন ভিন্ন মতামত কেন ,এক মাজহাবে যেটা জায়েজ অন্য মাজহাবে সেটা না জায়েজ কেন এই প্রশ্ন আগে থেকেই জেগেছে মনে ? কিছু মাসয়ালা আছে যেটা এক‌ই মাসয়ালার ২-৩ টা ও সঠিক, যেমন হাত বুকের উপর,নাভির উপর হাত ছেড়ে দিয়ে ও নামাজ হবে এরকম মাসয়ালার ক্ষেত্রে ভিন্ন । কিন্তু অনেক এমন মাসয়ালা আছে সেটা সরাসরি বলা হয় যে জায়েজ বা নাজায়েজ এমনটা কেন??
আমার জানার বলার মধ্যে অনেক ভুল থাকতে পারে দয়া করে আমাকে ভুল টা ধরিয়ে দিয়ে আমার প্রশ্নের উত্তর টা দিলে অনেক উপকৃত হবো ইং শা আল্লহ।

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

একই মাসয়ালাতে একাধিক মত কেনো?
মাযহাব কিভাবে হলো?
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حديث ابْنِ عُمَرَ، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَنَا، لَمَّا رَجَعَ مِنَ الأَحْزَابِ: لاَ يُصَلِّيَنَّ أَحَدٌ الْعَصْرَ إِلاَّ فِي بَنِي قُرَيْظَةَ فَأَدْرَكَ بَعْضُهُمُ الْعَصْرَ فِي الطَّرِيقِ فَقَالَ بَعْضُهُمْ: لاَ نُصَلِّي حَتَّى نَأْتِيَهَا وقَالَ بَعْضُهُمْ: بَلْ نُصَلِّي، لَمْ يُرَدْ مِنَّا ذلِكَ فَذُكِرَ لِلنَبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَلَمْ يُعَنِّفْ وَاحِدًا مِنْهُمْ

ইবনু ‘উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আহযাব যুদ্ধ হতে ফিরার পথে আমাদেরকে বললেন, বনু কুরাইযা এলাকায় পৌছার পূর্বে কেউ যেন ‘আসর সলাত আদায় না করে। কিন্তু অনেকের রাস্তাতেই আসরের সময় হয়ে গেল, তখন তাদের কেউ কেউ বললেন, আমরা সেখানে না পৌছে সলাত আদায় করব না। আবার কেউ কেউ বললেন, আমরা সলাত আদায় করে নেব, আমাদের নিষেধ করার এ উদ্দেশ্য ছিল না (বরং উদ্দেশ্য ছিল তাড়াতাড়ি যাওয়া) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এ কথা উল্লেখ করা হলে, তিনি তাদের কারোর সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করেননি।
(অর্থাৎ উভয়ই ছহীহ ছিলো)
সহীহুল বুখারী, পৰ্ব ১২ খাওফ, অধ্যায় ৫, হাঃ ৯৪৬; মুসলিম, পর্ব ৩২: জিহাদ, অধ্যায় ২৩, হাঃ ১৭৭০

ﻋَﻦْ ﻋَﻤْﺮِﻭ ﺑْﻦِ ﺍﻟْﻌَﺎﺹِ ﻗَﺎﻝَ ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ – ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ- « ﺇِﺫَﺍ ﺣَﻜَﻢَ ﺍﻟْﺤَﺎﻛِﻢُ ﻓَﺎﺟْﺘَﻬَﺪَ ﻓَﺄَﺻَﺎﺏَ ﻓَﻠَﻪُ ﺃَﺟْﺮَﺍﻥِ ﻭَﺇِﺫَﺍ ﺣَﻜَﻢَ ﻓَﺎﺟْﺘَﻬَﺪَ ﻓَﺄَﺧْﻄَﺄَ ﻓَﻠَﻪُ ﺃَﺟْﺮٌ

হযরত আমর বিন আস রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ যখন কোন বিশেষজ্ঞ হুকুম বলতে গিয়ে ইজতিহাদ করে,

আর তার ইজতিহাদ সঠিক হয়, তাহলে তার জন্য রয়েছে দু’টি সওয়াব। আর যদি ইজতিহাদে ভুল হয়, তাহলে তার জন্য রয়েছে একটি সওয়াব।
{সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৬৯১৯, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৪৫৮৪, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৫৭৬}

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
যখন কোনো মাসয়ালার ব্যপারে কুরআন/হাদীসে সুস্পষ্ট দলিল পাওয়া যায়,বিপরীত মুখী কোনো দলিল পাওয়া না যায়,সেক্ষেত্রে সেই মাসয়ালা নিয়ে মূলত কোনো ইমামের মতবিরোধ নেই।

তবে শরীয়তে অনেক মাসয়ালা আছে,যেক্ষেত্রে সুস্পষ্ট দলিল হাদীস খুজে পাওয়া যায়না,সেক্ষেত্রে ইমাম গন কুরআন হাদীসের আলোকে ইজতিহাদ করে মাসয়াকা বের করেন। আর এমতাবস্থায় উপরে উল্লেখিত হাদীসের মতো ইমামদের মাঝে মতবিরোধ হয়ে গিয়েছে। 

যেটা মূলত শরীয়তে অগ্রহণযোগ্য নয়।
কেননা উপরে উল্লেখিত ১ম হাদীসে সাহাবাদের মাঝে এরুপ পরিস্থিতি হলে রাসুলুল্লাহ সাঃ তাদের কারোর সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করেননি।
(অর্থাৎ উভয়ই ছহীহ ছিলো)

★আবার অনেক মাসয়ালায় মতবিরোধ এর কারন একই মাসয়ালায় একাধিক রকমের হাদীস পাওয়া যাওয়া।

সবই রাসুলুল্লাহ সাঃ এ-র হাদীস।
কোনোটাকে অস্বীকার করার সুযোগ নেই।
ভূল বলারও সুযোগ নেই।
কেননা সবই রাসুলুল্লাহ সাঃ থেকে প্রমানিত। 
,
এক্ষেত্রে ফিকহী ইমামগন কোনো মাসয়ালার ক্ষেত্রে এরকম একাধিক রকমের হাদীস পেলে তারা যেই হাদীসের মান সবচেয়ে শক্তিশালী, যেই হাদীস অনুপাতে রাসুলুল্লাহ সাঃ এর শেষ জীবনের আমল ছিলো,যেই হাদীসের উপর আমল করলে কুরআনের সাথে বেশি সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়,যেই রকমের হাদীসের আধিক্যতা হাদীসের কিতাবে আছে,ইত্যাদি আরো কতিপয় বিষয় লক্ষ্য করে একটি মতকে প্রাধান্য দেন।

যেই ইমাম তার সর্বোচ্চ মেহনতের পর যেই মতকে প্রাধান্য দেন,সেই মাযহাবের অনুসারী গন সেই মত অনুযায়ী আমল করবেন।

★হাদীসের ক্ষেত্রে এরকম একাধিক রকমের হাদিস অনেক মাসয়ালা ক্ষেত্রেই রয়েছে।
যাহা সংখ্যায় বলা কষ্টসাধ্য।
প্রাই মতবিরোধ পূর্ণ মাসয়ালায় এরকম একাধিক রকমের হাদীস রয়েছে।

https://ifatwa.info/19397/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
সাহাবায়ে কেরাম ইসলাম গ্রহণের পর দ্বীনি জ্ঞান অর্জনের পর একেকজন একেকদিকে হিজরত করতেন। কেউবা যুদ্ধের জন্য  আবার কেউবা দাওয়াতের কাজের নিমিত্তে দূর দূরান্তে সফর করতেন। তাদের কেউ একজন মদিনা ত্যাগের পূ্র্বে রাসূলুল্লাহ সাঃ এর যে আমল প্রত্যক্ষ করে গেছেন, সেই আ’মলের দাওয়াতই তারা দিতেন। কিন্তু তাদের মদিনা ত্যাগের পর অহীর মাধ্যমে রাসূলুল্লাহ সাঃ উক্ত আমলকে পাল্টিয়ে দেন। এবং পরবর্তীতে কোনো সাহাবী অন্যত্র দাওয়াত দিতে গেলে রাসুলুল্লাহ সাঃ এর সর্বশেষ আ’মলের দাওয়াত দিতে থাকেন। এভাবেই মূলত আ’মলের মধ্যে পার্থক্য হয়ে যায়। 

 ﺣﺪﺛﻨﺎ ﺣﻔﺺ ﺑﻦ ﻋﻤﺮ ﻋﻦ ﺷﻌﺒﺔ ﻋﻦ ﺃﺑﻲ ﻋﻮﻥ ﻋﻦ
ﺍﻟﺤﺎﺭﺙ ﺑﻦ ﻋﻤﺮﻭ ﺍﺑﻦ ﺃﺧﻲ ﺍﻟﻤﻐﻴﺮﺓ ﺑﻦ ﺷﻌﺒﺔ ﻋﻦ ﺃﻧﺎﺱ ﻣﻦ ﺃﻫﻞ ﺣﻤﺺ ﻣﻦ ﺃﺻﺤﺎﺏ ﻣﻌﺎﺫ ﺑﻦ ﺟﺒﻞ ﺃﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻟﻤﺎ ﺃﺭﺍﺩ ﺃﻥ ﻳﺒﻌﺚ ﻣﻌﺎﺫﺍ ﺇﻟﻰ ﺍﻟﻴﻤﻦ ﻗﺎﻝ ﻛﻴﻒ ﺗﻘﻀﻲ ﺇﺫﺍ ﻋﺮﺽ ﻟﻚ ﻗﻀﺎﺀ ﻗﺎﻝ ﺃﻗﻀﻲ ﺑﻜﺘﺎﺏ ﺍﻟﻠﻪ ﻗﺎﻝ ﻓﺈﻥ ﻟﻢ ﺗﺠﺪ ﻓﻲ ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﻠﻪ ﻗﺎﻝ ﻓﺒﺴﻨﺔ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ ﻓﺈﻥ ﻟﻢ ﺗﺠﺪ ﻓﻲ ﺳﻨﺔ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻭﻻ ﻓﻲ ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﻠﻪ ﻗﺎﻝ ﺃﺟﺘﻬﺪ ﺭﺃﻳﻲ ﻭﻻ ﺁﻟﻮ ﻓﻀﺮﺏ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﺻﺪﺭﻩ ﻭﻗﺎﻝ ﺍﻟﺤﻤﺪ ﻟﻠﻪ ﺍﻟﺬﻱ ﻭﻓﻖ ﺭﺳﻮﻝ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﻟﻤﺎ ﻳﺮﺿﻲ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ 
ﺑﺎﺏ ﺍﺟﺘﻬﺎﺩ ﺍﻟﺮﺃﻱ ﻓﻲ ﺍﻟﻘﻀﺎﺀ

রাসূলুল্লাহ সাঃ যখন মু'আয রাযি.কে ইয়ামন প্রেরণের ইচ্ছা করলেন,তখন তাকে বললেন,তুমি কিভাবে বিচার পরিচালনা করবে? যখন তোমার সামনে বিচারকার্য উপস্থিত হবে।তখন মু'আয রাযি উত্তরে বললেন,আমি কিতাবুল্লাহ দ্বারা বিচার কার্য পরিচালনা করব।রাসূলুল্লাহ আবার জিজ্ঞাসা করলেন,যদি তুমি কিতাবুল্লাহে সেই বিষয়কে খুঁজে না পাও তখন কি করবে?মু'আয রাযি বললেন,তখন সুন্নাতে রাসূল দ্বারা বিচারকার্য পরিচালনা করব।রাসূলুল্লাহ সাঃ আবার বললেন,যদি তুমি কিতাবুল্লাহ বা সুন্নাতে রাসূলে খুঁজে না পাও তবে কি করবে?মু'আয রাযি বললেন,তাহলে নিজে ইজতেহাদ করে বিচার কার্য করব,এবং এতে কোনোপ্রকার ত্রুতি থাকবে না।একথা শুনে খুশিতে রাসূলুল্লাহ সাঃ মু'আয রাযি এর  সিনায় হাত বুলিয়ে বললেন,'সমস্ত প্রশংসা ঐ আল্লাহর যিনি উনার রাসূলের দূতকে এমন জিনিষ এর তাওফিক দিয়েছেন যে বিষয়ে রাসূলুল্লাহ খুশি ও আনন্দিত। (সুনানে আবু-দাউদ- ৩৫৯২)

দেখুন!
মু'আয রাযি.কুরআন-হাদীসকে সামনে রেখে তার আলোকে ইজতেহাদ করার কথা বলছেন,আর রাসূলুল্লাহ সাঃও এ কথা শুনে খুশি হলেন।
আর বিষয়ে কুরআন-হাদীসের সরাসরি কোনো নস নেই তাতে ইজতেহাদ করার নামই হল মাযহাব।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
নির্দিষ্ট মাযহাব অনুসরণ করা ওয়াজিব।

এ সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলা বলেন,
فَاسْأَلُواْ أَهْلَ الذِّكْرِ إِن كُنتُمْ لاَ تَعْلَمُونَ
জ্ঞানীদেরকে জিজ্ঞেস কর, যদি তোমাদের জানা না থাকে।(সূরা নাহল-৪৩)

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ أَطِيعُواْ اللّهَ وَأَطِيعُواْ الرَّسُولَ وَأُوْلِي الأَمْرِ مِنكُمْ 
হে ঈমানদারগণ! আল্লাহর নির্দেশ মান্য কর, নির্দেশ মান্য কর রসূলের এবং তোমাদের মধ্যে যারা বিচারক তাদের। (সূরা নিসা-৫৯)

উক্ত আয়াতে اولي الامرউলূল আমর এর ব্যখ্যায় হযরত জাবের রাযি, হযরত ইবনে আব্বাস রাযি,আ'তা রাহ,মুজাহিদ রাহ,যাহহাক,আবুল আলিয়া রাহ,হাসান বসরি রাহ সহ অসংখ্য সাহাবা, তাবেঈন ও তাবে তাবেঈন উল্লেখ করেন যে,এখানে উলূল আমর দ্বারা খুলাফা,উলামা,ফুকাহা উদ্দেশ্য।স্বয়ং আহলে হাদীসদের ইমাম নাওয়াব সিদ্দিক হাসান খান রাহও এ ব্যখ্যাকে নিজ তাফসীরের কিতাবে উল্লেখ করেছেন।
তাছাড়া হাদীসে এসেছে,
انما شفاء العي السوال 
বক্রতা বা অজ্ঞদের শে'ফা হল,তারা জ্ঞানীদেরকে জিজ্ঞাসা করবে।
এখন প্রশ্ন হল জ্ঞানী কারা?সমাজে যাদেরকে আলেম বলা হয়,তারাই কি জ্ঞানী?না এর জন্য বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্যর প্রয়োজন রয়েছে?

যার তাকলীদ করা হবে, তার বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে উলামায়ে কেরাম একটা পরিমাণ নির্ধারণ করে দিয়েঝেন।
শাহ ওয়ালী উল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলভী রাহ, উনার অমর গ্রন্থ আকিদাতুল-জায়্যিদ এ সম্পর্কে বিস্তারিত লিখেছেন।মোটকথাঃ এ সমস্ত শর্তসমূহ আজকাল প্রায় বিরল।

 তাকলীদের দু'টি শাখা রয়েছে যথাঃ-
(১)তাকলীদে শাখসী বা ব্যক্তি তাকলীদ।অর্থাৎ শরীয়তের প্রত্যেকটি মাস'আলায় নির্দিষ্ট কোনো একজনকে তাকলীদ করা।
(২)তাকলীদে গায়রে শাখসী বা স্বাধীন তাকলীদ, অর্থাৎ যেকোনো মাস'আলায় যেকোনো একজনকে তাকলীদ করা।সহজ কথা নিজের ইচ্ছানুযায়ী একেক মাস'আলায় একেকজনের তাকলীদ করা।

মুতাওয়াতির পর্যায়ের বর্ণনার মাধ্যমে প্রমাণিত রয়েছে যে, কারো কোনো মাস'আলা জানা না থাকলে না,তিনি বিজ্ঞজনের তাকলীদ করবেন।তাকলীদ করা ফরয।এটা হলো মতলকে তাকলীদ তথা সাধারণ তাকলীদের বিধান।সমস্ত উলামায়ে কেরাম এমনকি আহলে হাদীসের মুহাক্বিক ইমামগনও মতলকে তাকলীদ তথা সাধারণ তাকলীদকে স্বীকার করে থাকেন।অধিকাংশ আহলে হাদীস সাধারণ তাকলীদের ফরযিয়্যাতেরও প্রবক্তা।

সুতরাং অজ্ঞদের জন্য বিজ্ঞজনের তাকলীদ করা যে ফরয,এতে কারো দ্বিমত নেই,মতবিরোধ নেই।

তাকলীদের পদ্ধতি নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে।
তাকলীদে শাখসী করা হবে না গায়রে শাখসী করা হকে।
আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাত তাকলীদে শাখসী গ্রহণযোগ্য মনে করেন।এবং এ ব্যাপারে তারা ওয়াজিবের বিধান প্রয়োগ করেন।ফরযের বিধান এজন্য আরোপ করেন না।
,
কেননা সাধারণ তাকলীদের দু'টি শাখা রয়েছে।(ক)তাকলীদে শাখসী(খ)তাকলীদে গায়রে শাখসী।যেহেতু সর্বসম্মতভাবে মতলকে তাকলীদ ফরয।এবং তার দু'টি শাখা রয়েছে।তাই কোনো একটাকে মেনে নিলেই ফরয বিধান যে তাকলীদ রয়েছে,সেটা পালন হয়ে যাবে। চায় শাখসীকে পালন করা হোক বা গায়রে শাখসীকে পালন করা হোক।সুতরাং তাকলীদে গায়রে শাখসী করা দ্বারা ঠিক সেভাবেই ফরয দায়িত্ব আদায় হবে,যেভাবে তাকলীদে শাখসী দ্বারা ফরয দায়িত্ব আদায় হয়। 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,

মুজতাহিদ ফিল মাযহাব তথা যিনি নিজে নিজে সরাসরি কুরআন-হাদীস থেকে শরীয়ত বুঝার ক্ষমতা রাখেন।
অর্থাৎ যিনি নিম্নোক্ত পাঁচটি বিষয়ে যথেষ্ট পারদর্শী থাকবেন।(১) তাফসীর(২)হাদীস ও হাদীসের রাবী(৩)আরবী ভাষা(৪)সালাফে সালেহীনদের বর্ণনাকৃত মাসাঈল ও তাদের মন্তব্য সমূহ।(৫)এবং কুরআন-হাদীস থেকে কিয়াস করে হুকুম বের করা যোগ্যতা।
উপরোক্ত বিষয়ে পারদর্শী কোনো ব্যক্তির জন্য তাকলীদে শাখসীর কোনো প্রয়োজন নেই।উনার কাছে নিজ ইমামের বিপরিত কোনো একটি দিক কুরআন-সুন্নাহর অধিক নিকটবর্তী প্রমাণিত হলে, উনি সেটার উপরই আ'মল করবেন। এমনকি তখন উনার জন্য নিজ ইমামের অনুসরণ বৈধ হবে না।(মাযহাব কি ও কেন দ্রষ্টব্য)

এছাড়া অন্য সবার জন্য নিজ ইমামের প্রত্যেকটি মতামতকে মান্য করা ওয়াজিব।
আরো জানতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/1936

আরো জানুনঃ- 

মুজতাহিদ সংক্রান্ত জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...