আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
59 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (1 point)
আমি একজন মেয়ে।আমার বয়স ২৩।২০১৩ সালে সাকিন নামের একজনের সাথে আমার হারাম সম্পর্ক হয়।সাকিনের সাথে আমার যেনাও হয় বহুবার। ২০১৯ সালের শেষে আমার খালার ছেলে রিমনের সাথে আমার যেনা হয়। সাকিনের সাথে সম্পর্ক তখনও ছিল, যেনা হয়েছে এটা সাকিনকে জানায় সে কষ্ট পেলেও আমাকে মাফ করে দেই সম্পর্ক চলতে থাকে। সাকিনের সাথে ২০২১ সালে অক্টোবর মাসে আমার বাবা কে না জানিয়ে হানাফি মাযহাব মতে বিয়ে করি। সাকিন আহলে হাদিস মানত আর আমি হানাফি মাযহাব মতটা নিয়ে বিয়ে করেছিলাম তবে মাযহাব সম্পর্ক অবগত ছিলাম না। ২০২২ সালের শেষে সাকিন আমাকে (১তালাক,২তালাক,৩ তালাক,২০০০ তালাক) এমন টা বলে। তখন আমার আব্বা কে জানায় আমি যে বিয়ে করেছিলাম এভাবে সে তালাক দেয়, আব্বা বলে ২ বছর পর বিয়ে পড়াই দিব সংসার কইরো , আব্বা হানাফি মাযহাব বেশি মানত।সাকিন যেহেতু আহলে হাদিস মানত তাই আহলে হাদিসের আলেমের কাছে ফতুয়া নিতে গেলে আলেম ফতুয়া দেই যে (বিয়েও হয়নি তালাক ও হয়নি, মেয়ের বাবাকে বিয়ে পড়াতে বলেন তাহলে বিয়ে সহিহ হবে, যা হয়ছে যেনা হয়ছে তওবা করেন)। আমরা দুজন তাই মেনে নি এবং এই ফতুয়া মোতাবেক চলতে থাকি, আব্বা কে বিয়ে দিতে বললেও দেই না ২ বছর পর দিব সেটা বলে। তারপর আবার আমরা দুজন সম্পর্ক টা চালিয়ে যায়, কথা বলি, সহবাস ও করি। পরে আমিও আহলে হাদিস মানতে থাকি। সম্পর্ক চলমান থাকলেও দুজনের মধ্যে ঝামেলা হতো। ২০২৪ সালের প্রথমের দিকে হাচান নামে একজনের সাথে আমার কথা হতো, সে আমাকে বিয়ে করতে চাইতো। ২০২৪ সালে জুলাই মাসে হাচান আমার অনিচ্ছায় আমার সাথে জোর করে যেনা করে। প্রথমবার অনিচ্ছায় যেনা হইলেও পরে নিজের ইচ্ছা তেই ওর সাথে যেনা করতাম, এদিকে সাকিনের সাথেও সম্পর্ক ছিল ওর সাথেও সহবাস করতাম। সাকিনের সন্দেহ বাড়তে থাকে আমাদের মধ্যে ঝামেলা হতে থাকে। সেপ্টেম্বর এর ৪-১০ তারিখের মধ্যে সাকিনের সাথে আমার শেষ সহবাস হয়, বাচ্চা যেন না আসে তাই ফেমিকন পিল খেতাম। সেপ্টেম্বর এর ২০-২৫ তারিখের মধ্যে হাচানের সাথে সহবাস হয়। আর ২৭ কি ২৮ তারিখে আমার হায়েজ হয়। ২৬ সেপ্টেম্বর -১অক্টোবরের মধ্যে আমি আইনের সাহায্য নিয়ে সাকিন কে তালাকনামা পাঠিয়ে দি, যদিও এই ফতুয়া তে চলছিলাম বিয়েও হয়নি তালাক ও হয়নি, তবুও যেহেতু ওর কাছে কাবিননামা ছিল কোন ক্ষতি যেন না করতে পারে তাই তালাকনামা দিয়ে দি। ২৭কি ২৮তারিখে হায়েজ চলাকালিন হাচানের সাথে অনেকবার সহবাস হয়। ৫অক্টোবর আমাদের বিয়ে ঠিক হয়।৪,৫ অক্টোবর তারিখেও আমরা সহবাস করি। ৫ তারিখে হাচানের বাড়িতেই বিয়ে হয় এটাও আমার বাবা কে না জানিয়ে , কারন বাবা কে বললে আমাকে হাচানের সাথে সম্পর্ক রাখতে দিতো তবে বিয়ে এখন দিতো না বলতো আরো ৭-৮ মাস বা তার বেশি দিন পর দিব।
১.হাচানের সাথে বিয়ে টা কি সহিহ হয়েছে ??এখন কি হাচান আর আমি হালাল সম্পর্কে আছি?  হাচান হানাফি মাযহাব মানে তাই আমিও সাকিনের সাথে সম্পর্ক থেকে বের হয়ে হানাফি মাযহাব ফলো করতে থাকি আর যাই হয়ে যাক মৃত্যু পর্যন্ত মানব ইন শা আল্লাহ।
২.হাচান জানত সাকিনের সাথে আমার বিয়ে হয়েছে সহবাস হয়েছে, তাও আমাকে যদি মেনে নেই শরীয়তে আমাকে বিয়ে করতে কোন বাধা আছে কি? আর রিমনের কথা হাচান জানে না যদি জানে আর আমাকে মেনে নেই তাতে আমাকে বিয়ে করতে শরীয়তে কোন বাধা আছে কি?
৩.হাচান শুধু আমার সাথেই যেনা করেছে।বিয়েতে কবুলের আগে হাচান তওবা করে কবুল পড়েছে, আমি আল্লাহর কাছে মাফ চাইছি, তবে কবুল পড়ার আগে শুধু চাইনি, বিয়ের পর আমি খালেস অন্তর থেকে তওবা করেছি, এতে বিয়ে সহিহ আছে কি?

৪.হাচান ও নামাজ পড়ত বাদ দিত, আমি ও পড়তাম তবে ওর থেকে কম বাদ দিতাম, একজন নামাজ পড়ে আরেকজন যদি না পড়ে তাহলে বিয়ে জায়েজ হয় কি? আর বিয়ের পর যদি একজন পরে আরেকজন বাদ দেয় তাতে বিয়ে বৈধ থাকবে কি?

৫.হাচানের সাথে হায়েজ অবস্থায় যেনা করেছি, বিয়ের আগে মুহুর্তেও যেনা করেছি, বাচ্চা আসার সম্ভাবণা নাই ফেমিকন পিল খাচ্ছি অক্টোবর ১ তারিখ থেকে, তবে বাচ্চা পেটে যদি আসে তাহলে বিয়েটা সহিহ হবে কি?
৬,বেপর্দা হয়ে বেড়ালে কি স্ত্রী তালাক হয় কি?
৭.হাচানের আব্বা ছোট বেলাতেই মারা গেছে। হাচানের সৎ চাচার সাথে হাচানের মার আবার বিয়ে হয়। হাচানের সৎ চাচা এখন আমার সৎ শশুড়, সে যদি যেনার উদ্দেশ্য নিয়ে স্পর্শ করে আমাকে তাহলে কি হাচানের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন হবে কি না?

৮.হাচানের বাবার জায়গায় সৎ বাবার নাম দিয়ে বিয়ে পড়ানো হয়েছে তাতে কোন সমস্যা আছে কি? বিয়ে বৈধ হয়েছে কি?
৯.মুক্ত করে দিলাম, স্বাধীন করে দিলাম,এমন কথায় তালাক হয় কি যদি তালাকের নিয়ত ছাড়া বলে? ছেড়ে দিলাম এমন কথা তে তালাক হয় কি? বিয়ে টা যেন প্রকাশ না পায় তাই কেউ জিজ্ঞেস করলে গোপন করতে বিয়ে করি নি বা বিয়ে টা অস্বীকার করলে তালাক হবে কি? বা আমি সিঙ্গেল এমন কথা বলা যাবে কি?

১০.বাই, বিদায়, গুড বাই এমন কথা স্ত্রী কে বলা যায় কি?
১১.পরপুরুষের সাথে তিন তালাক আর হুরমতে মুসারাত ছাড়া বিয়ে হারাম হতে পারে এমন আর কি কিছু আছে?

১২.হায়েজের সময় যেনা করাতে কোন কাফফারা দিতে হবে কি? এখন আমি অনেক অনুতপ্ত নিজের পাপের কথা বলতে চাই নি তবে না বললেও সমাধান পাইতাম না।

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাবঃ- 
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
https://ifatwa.info/82185/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
কে কোন মাযহাব মানছে? কে কোন ইমামকে মানছে? এটাকে দেখে ফাতাওয়া দেওয়া হবে না।বরং যিনি ফাতাওয়া দিচ্ছেন, উনি উনার মাযহাবের আলোকেই ফাতাওয়া দিবেন।এটাই ফিকহের মূলনীতি।

যেমন, বৃটিশ হাইকোর্টে উঠে এটা বলা যাবে যে, আমাদের জন্য বাংলাদেশের ল অনুযায়ী রায় দেন, বরং কোর্ট যেহেতু বৃটিশ, তাই তারা তাদের তথা ইউ,কে  এর আইন অনুযায়ী রায় দিবে।

আমরা হানাফি ফিকহের মূলনীতির আলোকে ফাতাওয়া দিয়ে থাকি। সুতরাং অন্য মাযহাবে কি আছে, বা কে কোন মাযহাবকে ফলো করছে, সেটা আমাদের দেখার বিষয় নয়। যে যে মাযহাবকে অনুসরণ করবে, তার একান্ত দায়িত্ব সে ঐ মাযহাবের আলেমের নিকট মাস'আলা জিজ্ঞাসা করবে,ও সেই অনুযায়ী আ'মল করবে। স্বামী স্ত্রীর মধ্যে পরস্পর পরস্পরের মাযহাব ভিন্ন হলে, স্বামীর মাযহাবের আলোকেই বিষয়টার সমাধান বা নিষ্পত্তি হবে।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন,
প্রশ্নের বিবরন মতে সাকিনের সাথে আপনার বিবাহও হয়েছে, এবং ৩ তালাকও হয়েছে, সুতরাং আপনারা আর বিয়ে করতে পারবেন না। 

পরবর্তীতে আপনি যে শরীয়তের নিয়ম মেনে হাসানের সাথে বিবাহ বসেছেন,এই বিয়ে টা সহিহ হয়েছে।
এখন আপনি আর হাসান হালাল সম্পর্কে আছেন।

(০২)
না,এক্ষেত্রে শরীয়তের কোন বাধা নেই।

(১২)
হানাফি মাযহাব মোতাবেক এক্ষেত্রে কাফফারা আদায় করতে হবেনা।
খালেস দিলে তওবা যথেষ্ট। 

(৩-১১)
ওয়াসওয়াসা হল এমন এক মানসিক রোগ যা একজন মুসলিমকে বিভ্রান্ত করার জন্য শয়তানের পক্ষ থেকে মনে আসা  কুমন্ত্রনার ফাঁদ। এই রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা এখন কম নয়।  কিন্তু এই রোগ সম্পর্কে ধারনা বা ইলমে জ্ঞান না থাকার ফলে একজন সাধারন ব্যক্তি ধীরে ধীরে মানসিক রোগীতে পরিণত করতে পারে। কারণ শুরুতেই যদি এর চিকিৎসা না করা হয়, তাহলে এটি বাড়তে থাকে।

আমরা আমাদের বিগত সহস্রাধিক প্রশ্ন রিসার্চ করে দেখেছি যে ওয়াসওয়াসা আক্রান্ত ব্যক্তি বিভিন্ন মাসলা মাসায়েল বা ফতোয়ার প্রশ্নের উত্তর ঘাটাঘাটি করে আরও বেশি ওয়াসওয়াসাতে আক্রান্ত হয়ে যায়। এবং প্রশ্নের উত্তর হল একজন ওয়াসওয়াসা আক্রান্ত রোগীদের রোগ বৃদ্ধির খোরাক। এবং একটা প্রশ্ন উত্তর পাওয়ার পর একজন ওয়াসওয়াসা আক্রান্ত ব্যক্তি ক্রমাগত একই প্রশ্ন বারবার ঘুরিয়ে পেচিয়ে শতাধিকবার করতে থাকেন।  যেটা উনাকে বরং ক্রমাগত অধিকতরও খারাপের দিকে নিয়ে যেতে থাকে। 

বিষয়গুলো পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ওয়াসওয়াসা আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে নিচের দেওয়া বাধ্যতামূলক সুস্থ হওয়ার কোর্সটি কমপ্লিট না হওয়া পর্যন্ত কোনো প্রশ্নের উত্তর দেয়া হবে না । 

এবং আমরা আশা করছি এবং আল্লাহর উপরে ভরসা রেখে বলছি যারা নিচের এই কোর্সটি করবেন ইনশাআল্লাহ সুস্থ হয়ে যাবেন। 

আর কোর্সের ভিতরে একটা অংশে আমাদের মুফতি সাহেবদের সাথে সরাসরি জুম মিটিংয়ের মাধ্যমে প্রশ্ন-উত্তরের ব্যবস্থা থাকবে। 

আল্লাহ আমাদের সমস্ত শারীরিক ও মানসিক রোগ থেকে হেফাজত করুন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...