আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
83 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (4 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
মুহতারাম,একজন আগে প্রেম করতো।কিন্তু, মেয়ের বাড়িতে ১মে তার প্রেমের সম্পর্ক মেনে নেয়নি।কারণ,মেয়ের পরিবার আরো ভালো জায়গায় বিয়ে দিতে চায়,তাছাড়া ছেলের বয়সও অল্প,পড়াশোনাও শেষ হয়নি,চাকরি-বাকরিও করেনা।কিন্তু ছেলে  মেয়ে হারাম থেকে বাঁচার জন্য বিয়ে করতে চায়।তো এরপর একদিন তারা শুধু দুইজন পুরুষ ব্যক্তির সামনে কবুল বলে বিয়ে করেন।এখন বিয়েটা কি জায়েজ হয়েছে বা সহীহ হয়েছে? যেহেতু দুইজন সাক্ষী রেখে পাত্রপাত্র ইজাব কবুল করলে বিয়ে সহীহ হয়ে যায়?

তারা তো হানাফী ফিকের।তবে,আগের লিখাগুলোতে দেখলাম,হানাফি ফিকে কুফু না মিললে গোপন বিয়ে বাতিল হয়ে যায়,এক্ষেত্রে কি কুফু না মিলায় বাতিল হয়ে যাবে? আর যদি তারা,সংসার করে তা কি জিনা হিসেবে বিবেচিত হবে?

আর,কুফুর ব্যাপারে যদি বলি:

মেয়ের পরিবার উচ্চ শিক্ষিত,তাদের নিজেদের বাড়ি জায়গা জমি সবই আছে।

অন্যদিকে ছেলেদের পরিবারে তার বাবা মা কেউই শিক্ষিত নন,মা ক্লাস ৫ পর্যন্ত পড়লেও বাবা একদমই পড়াশোনা করেনি।আর,তাদের নিজেদের কোনো বাড়ি,বা তেমন কোনো জায়গা জমি নেই,মেয়ের পরিবার যেমন আশা করে।তবে,ছেলের বাবা ব্যবসা করে আর মা গার্মেন্টসে জব করে,এমনিতে ভালোই চলে,এতটাও যে খারাপ অবস্থা তা না,কিন্তু মেয়েদের তুলনায় কম,যেমন মেয়েদের পরিবারে সবাই কম বেশি ডাক্তার,উকিল,ব্যবসায়ী এমন।


কিন্তু মেয়ে দ্বীন পালন করত চায় বিদায় তার এসব নিয়ে আগ্রহ তেমন নাই,সে ছেলের চরিত্র, ব্যবহার এগুলোতেই বেশি মনোযোগ দিয়ে বিয়ে করে ফেলেছে।এখন বিয়েটাকি জায়েজ হয়েছে?


আর,মেয়ের পরিবার ১ম থেকেই  এই ছেলের সাথে বিয়ে দেওয়ার বিপক্ষে ছিলো।কিন্তু, এরপর মেয়ের কান্নাকাটি দেখে মেয়ের মায়ের মন নরম হয়,তিনি আশ্বাস দেন যে, ঠিকাছে তোরা পড়াশোনা করতে থাক,এই ছেলের সাথেই তোর বিয়ে দিব। তবে মেয়ে তখন বলেছে যে সে হারাম থেকে বাঁচতে চায়,এখনি এই ছেলেকে বিয়ে করতে চায়। কিন্তু,তখন মেয়ের পরিবার রাজি হয়না,নানাভাবে বুঝায় যে আগে পড়াশোনা কর,ছেলেও কিছু একটা করুক,একটা ঘর তুলুক,কিন্তু, তবুও মেয়ে না মানায় বলে যে আচ্ছা তাহলে ছেলেকে বল ছেলের বাবা মা নিয়ে আসতে তখন কাবিন করিয়ে দিব,কিন্তু ছেলের মা বাবা ছেলে প্রতিষ্ঠিত না হলে আসতে চায়না।তাই,আর বিয়েটা হয়নি।তবে,কিছুদিন আগে মেয়ের বড় বোনের বিয়ে হয়েছে ডাক্তারের সাথে,তখন মেয়ের মা মেয়েকে বলে ও যেন ঐ ছেলেকেও বলে ভালো করে পড়াশোনা করতে যেন সেও ভালো কিছু করত পারে,সবার সাথে গর্ব করে বলতে পারে মেয়ের জামাই ওমুক করে।

আর এদিকে যে তারা গোপনে বিয়ে করেছে  সেই কথা কেউ জানেনা। তবে এক্ষেত্রে বিয়েটা কি সহীহ হয়েছে?কুফু না মিলা সত্ত্বেও মেয়ের বাড়ি রাজি হওয়ায় কি এই বিয়ে সহীহ হয়ে যাবে?নাকি বাতিল?

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

শরীয়তের বিধান হলো যদি দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক সমঝদার সাক্ষ্যির সামনে প্রাপ্ত বয়স্ক পাত্র ও পাত্রি যদি প্রস্তাব দেয় এবং অপরপক্ষ তা গ্রহণ করে নেয়, তাহলে ইসলামী শরীয়াহ মুতাবিক বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যায়। অভিভাবকের সম্মতি থাকুক বা না থাকুক। অভিভাবক জানুক বা না জানুক।

 তবে যদি গায়রে কুফুতে বিবাহ করে, তথা এমন পাত্রীকে বিবাহ করে, যার কারণে ছেলে বা মেয়ের পারিবারিক সম্মান বিনষ্ট হয়, তাহলে পিতা সে বিয়ে আদালতের মাধ্যমে ভেঙ্গে দিতে পারে। যদি কুফুতে বিবাহ করে, তাহলে পিতা এ অধিকারও পাবে না।
,
রাসুল সাঃ কুফু মিলাইতে বলেছেনঃ
 
وَعَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «تُنْكَحُ الْمَرْأَةُ لِأَرْبَعٍ : لِمَالِهَا وَلِحَسَبِهَا وَلِجَمَالِهَا وَلِدِينِهَا فَاظْفَرْ بِذَاتِ الدَّيْنِ تَرِبَتْ يَدَاكَ»
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (মূলত) চারটি গুণের কারণে নারীকে বিবাহ করা হয়- নারীর ধন-সম্পদ, অথবা বংশ-মর্যাদা, অথবা রূপ-সৌন্দর্য, অথবা তার ধর্মভীরুর কারণে। (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন) সুতরাং ধর্মভীরুকে প্রাধান্য দিয়ে বিবাহ করে সফল হও। আর যদি এরূপ না কর তাহলে তোমার দু’ হাত ধূলায় ধূসরিত হোক (ধর্মভীরু মহিলাকে প্রাধান্য না দিলে ধ্বংস অবধারিত)!
(সহীহ বুখারী ৫০৯০, মুসলিম ১৪৬৬, নাসায়ী ৩২৩০, আবূ দাঊদ ২০৪৭, ইবনু মাজাহ ১৮৫৮, আহমাদ ৯৫২১, ইরওয়া ১৭৮৩, সহীহ আল জামি‘ ৩০০৩।)

কুফু সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ  https://www.ifatwa.info/4541/

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে মেয়ে ও ছেলে উভয়ে যদি প্রাপ্ত বয়স্ক অবস্থায় দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ সাক্ষ্যীর উপস্থিতিতে বিয়ের প্রস্তাব ও প্রস্তাব গ্রহণ সম্পন্ন করেন, তাহলে তাদের বিয়ে ইসলামী শরীয়াহ মুতাবিক শুদ্ধ হয়ে যাবে।
,
যদিও তাদের পরিবার কিছুই না জানে বা রাজি না থাকে। কিংবা তারা অনুমতি নাও দিয়ে থাকে।

তবে যেহেতু ছেলে মেয়ের মাঝে কুফুর সামঞ্জস্যতা নেই,তাই মেয়ের বাবা বিবাহের বিষয়টি জানা মাত্র তিনি অধিকার পাবেন আদালতের মাধ্যমে এই বিবাহ বিচ্ছেদ করে দেয়ার।

এই অধিকার তার আছে,তবে তিনি যদি তার অধিকার প্রয়োগ না করেন,সেটা তার নিজস্ব ব্যপার।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ؛ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «الْأَيِّمُ أَحَقُّ بِنَفْسِهَا مِنْ وَلِيِّهَا.

হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, মেয়ে তার ব্যক্তিগত বিষয়ে অভিভাবকের চেয়ে অধিক হকদার। {মুয়াত্তা মালিক, হাদীস নং-৮৮৮, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৪২১, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১৮৮৮, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২০৯৮, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২২৩৪, সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-১১০৮, সুনানে নাসায়ী, হাদীস নং-৩২৬০, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৪০৮৪, সুনানে দারাকুতনী, হাদীস নং-৩৫৭৬}

বিস্তারিত জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...