আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
46 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (20 points)
আসসালামু আলাইকুম। একজন বোনের পক্ষ থেকে প্রশ্ন:
এক মহিলার বিয়ের পর থেকেই তাঁর সংসারে ঝগড়া-বিবাদ লেগেই থাকত। তাঁর স্বামী তাঁর ভরণ পোষণ দিতে চাইতো না। এরকমটা পাঁচ বছর পর্যন্ত চললো। এর মধ্যে সেই মহিলার স্বামী অনেকবার তাদের বিয়েটাকে অস্বীকার করেন। ঐ লোক বলেন, তিনি নাকি তার ডাক নাম দিয়ে বিয়ে করেছেন তাই ওনাদের বিয়েটা হয়নি। অথচ ওনাকে বিয়ে করতে কেও বাধ্য করেনি। স্বেচ্ছায় উনি বিয়েটা করেছেন। বিয়ের সময় ওনার দিক থেকে কোনো সাক্ষী ছিলো না। মেয়ের দিক থেকে দুইজন মহিলা আর তিনজন পুরুষ সাক্ষী ছিলো। কিন্তু ঐ লোক এখন বলছে বিয়েটা হয়নি। এবং অনেকবার বলেছেন যে তিনি (ঐ লোক) ঐ মহিলাকে (তার স্ত্রীকে) আর রাখতে চাননা। এই কথা তিনি অনেকবার বলেছেন। পরবর্তীতে উনি শেষবারের মতো অনেক স্পষ্টভাবে, ঠান্ডা মাথায় জানিয়ে দিয়েছেন যে তিনি আর তাঁর কাছে (ভুক্তভুগী মহিলার কাছে) ফিরবেন না, তিনি আর তাঁর ভরণপোষণ দিতে পারবেন না। গত দেড় বছর ধরে তাদের মধ্যে আর কোনো দেখা সাক্ষাৎ হয়নি। এখন ঐ মহিলা সম্পর্কটার একটা ফয়সালা করতে চাচ্ছেন। তিনি তালাক চাচ্ছেন। কিন্তু ঐ লোক সরাসরি 'আমি তালাক দিলাম' এই কথাও বলতে রাজি না। কারণ তার মতে, যখন বিয়েটাই হয়নি তখন তালাক কিসের।
এখন ঐ মহিলার প্রশ্ন হচ্ছে তাদের সম্পর্কটা কি এখনও আছে নাকি শেষ হয়েগেছে? আর যদি থেকে থাকে তাহলে কিভাবে শেষ করতে পারে?

1 Answer

0 votes
by (565,980 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

https://www.ifatwa.info/68501/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে, 
ইসলামী শরীয়তে বিবাহ শুদ্ধ হবার জন্য কয়েকটি শর্ত রয়েছে। যথা-
বর ও কনেকে কিংবা তাদের প্রতিনিধিকে ইজাব তথা প্রস্তাবনা ও কবুল বলতে হয়।

উক্ত ইজাব ও কবুলটি বলতে হয় দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক মসলিম পুরুষ বা একজন পুরুষ ও দুইজন মহিলার সামনে।

قوله صلى الله عليه وسلم : ( لا نكاح إلا بولي وشاهدي عدل ) رواه البيهقي من حديث عمران وعائشة ، وصححه الألباني في صحيح الجامع (7557) 
বিয়ের আকদের সময় সাক্ষী রাখতে হবে। রাসুলুল্লাহ  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “অভিভাবক ও দুইজন সাক্ষী ছাড়া কোন বিবাহ নেই।” [তাবারানী কর্তৃক সংকলিত, সহীহ জামে (৭৫৫৮)]।

 নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী- “তোমরা বিয়ের বিষয়টি ঘোষণা কর।”[মুসনাদে আহমাদ এবং সহীহ জামে গ্রন্থে হাদিসটিকে ‘হাসান’ বলা হয়েছে (১০৭২)]
۔
ইজাব ও কবুলটি উভয় সাক্ষ্যি স্বকর্ণে শুনতে হবে।

উক্ত তিনটির কোন একটি শর্ত না পাওয়া গেলে ইসলামী শরীয়তে বিবাহ শুদ্ধ হয় না।

উপরোক্ত তিনটি শর্ত  পাওয়া গেলে বিবাহ হবে,অন্যথায় বিবাহ হবেনা।

আরো জানুনঃ- 

★শরীয়তের বিধান হলো,বিবাহের ইজাব কবুলের সময় কাজি সাহেব যদি ছেলে/মেয়ের বাবার নামের ক্ষেত্রে ভুল বলে অর্থাৎ ছেলে/মেয়ের বাবার নামের ক্ষেত্রে অন্য নাম বা সৎ বাবার নাম বলে,এবং তার দিকে ছেলে/মেয়েকে নিসবত করে,তাহলে সেই ছেলে/মেয়ের বিবাহ শুদ্ধ হবেনা।

অবশ্য যদি ছেলে/মেয়ে নিজেই সেই বিবাহের মজলিসে উপস্থিত থাকে,এবং উকিলের পরিবর্তে নিজেই ইজাব কবুল করে বা তার দিকে ইশারা করে ইজাব কবুল করা হয়,তাহলে ছেলে/মেয়ের বাবার নামে ভুল হওয়া সত্ত্বেও উক্ত বিবাহ হয়ে যাবে।

الدر المختار وحاشية ابن عابدين (رد المحتار) (3/ 26)
'' (غلط وكيلها بالنكاح في اسم أبيها بغير حضورها لم يصح)؛ للجهالة وكذا لو غلط في اسم بنته إلا إذا كانت حاضرةً وأشار إليها فيصح۔
(قوله: لم يصح)؛ لأن الغائبة يشترط ذكر اسمها واسم أبيها وجدها، وتقدم أنه إذا عرفها الشهود يكفي ذكر اسمها فقط خلافاً لابن الفضل، وعند الخصاف يكفي مطلقاً، والظاهر أنه في مسألتنا لا يصح عند الكل؛ لأن ذكر الاسم وحده لا يصرفها عن المراد إلى غيره، بخلاف ذكر الاسم منسوباً إلى أب آخر، فإن فاطمة بنت أحمد لا تصدق على فاطمة بنت محمد، تأمل، وكذا يقال فيما لو غلط في اسمها، (قوله: إلا إذا كانت حاضرةً إلخ) راجع إلى المسألتين: أي فإنها لو كانت مشاراً إليها وغلط في اسم أبيها أو اسمها لا يضر؛ لأن تعريف الإشارة الحسية أقوى من التسمية، لما في التسمية من الاشتراك لعارض فتلغو التسمية عندها، كما لو قال: اقتديت بزيد هذا، فإذا هو عمرو، فإنه يصح''
সারমর্মঃ-
যদি উকিল মেয়ের অনুপস্থিতিতে মেয়ের বাবার নামে ভুল করে,তাহলে উক্ত বিবাহ শুদ্ধ হবেনা।
হ্যাঁ যদি মেয়ে সেই মজলিসে উপস্থিত থাকে,এবং তার দিকে ইশারা করা হয়,সেক্ষেত্রে উক্ত বিবাহ হয়ে যাবে।

বিবাহের ইজাব কবুলের বলার সময় ছেলে নিজেই যদি সেখানে উপস্থিত থাকে,ইজাব/কবুল করে, সেক্ষেত্রে ছেলে বাবার নামে ভুল হলেও সেই বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যাবে। 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত বিবাহ শুদ্ধ হয়েছিলো।
তারা এখনো বৈধ স্বামী স্ত্রী।

এক্ষেত্রে স্ত্রী যদি স্বামীর পক্ষ থেকে তালাক এর অনুমতি পেয়ে থাকে,সেক্ষেত্রে স্বামী প্রদত্ত তালাকের অধিকার বলে সে নিজের নফসের উপর তালাক প্রদান করতে পারবে।

এতে তাদের বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যাবে।

আর যদি স্ত্রী যদি স্বামীর পক্ষ থেকে তালাক এর অনুমতি না পেয়ে থাকে,সেক্ষেত্রে স্ত্রী  খোলা তালাকের আবেদন করতে পারে।

খোলা তালাক সংক্রান্ত জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...