আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
39 views
in ব্যবসা ও চাকুরী (Business & Job) by (6 points)

আসসালামু আলাইকুম। 

 

১. আমি একটি কোম্পানিতে জব করি। কাস্টমারের সাথে সারাদিন লেনদেন শেষে ক্যাশ টাকাগুলো কোম্পানির মূল একাউন্টে প্রদানের ২ টি উপায় আছে। এক হলো সরাসরি ব্যাংকে প্রদান, দ্বিতীয় নিকটস্থ নগদ/বিকাশের দোকানে গিয়ে আমাদের ব্রাঞ্চের মার্চেন্ট নাম্বারে পেমেন্ট প্রদান। 

এক্ষেত্রে ক্যাশ ইনের মাধ্যমে আমার পার্সোনাল একাউন্টে নিয়ে পেমেন্ট করতে পারি অথবা দোকান্দাররের পারসোনাল থেকে মার্চেন্টে প্রদান করে নিই। উভয়টির মধ্যে কোম্পানি মার্চেন্টে পেমেন্ট প্রদান করাকে উৎসাহিত করে। (মার্চেন্ট টু মুল একাউন্টে অটোমেশন করা আছে, পেমেন্ট করলে নির্দিষ্ট সময় পর কোম্পানির একাউন্টে অটোমেটিক টাকা যোগ হয়ে যায়)

 

২. কোন গ্রাহক বিকাশ বা নগদ দোকানে গিয়ে দুইভাবে টাকা তুলে থাকে। এক হলো এজেন্টের মাধ্যমে ক্যাশ আউট করে (এতে নির্দিষ্ট চার্জ ব্যাংকিং কোম্পানি অটো কেটে রাখে) দ্বিতীয়, দোকানদার গ্রাহককে অফার করে যাতে এজেন্টে টাকা না দিয়ে তার পার্সোনাল একাউন্টে প্রদান করতে। এজেন্টে যে পরিমাণ ক্যাশ আউট খরচ হয় তার সমপরিমাণ খরচ সহ নিয়ে বা টাকার পরিমাণ যদি বেশি হয় তাহলে ক্যাশ আউট খরচ থেকে কিছু কম নিয়ে ট্রান্সফার করিয়ে নেয়। এতে গ্রাহক কিছুটা কম খরচে টাকা তুলতে পারে।

 

***পার্সোনাল একাউন্ট থেকে মার্চেন্ট নাম্বারে টাকা পাঠালে কোনরকম চার্জ পারসোনাল একাউন্ট থেকে কাটেনা***

 

এখন আমার কোম্পানির ক্যাশ টাকা যখন বিকাশ নগদের দোকানে এসে পেমেন্ট করি তখন দোকানদার গ্রাহকের কাছ থেকে খরচ বাবদ যে টাকা নিয়েছে সেটা পুরোটাই লাভের মধ্যে থেকে যায়। (অর্থাৎ ধরে নিই গ্রাহকের কাছে থেকে দোকান্দার ১০১০ টাকা খরচসহ সেন্ড মানি গ্রহণ করে গ্রাহককে ১০০০ টাকা দিয়েছে। আমি সেই দোকানদার থেকে আমার কোম্পানির মার্চেন্টে ১০০০ টাকা ক্যাশ দিলে উনি সেটা পেমেন্ট করে দেয় আর ১০ টাকা উনার একাউন্টে লাভ হিসেবে থেকে যায়।)

 

প্রশ্ন হলো দোকানদার এবং আমার মধ্যে যদি সমঝোতা হয় যে নির্দিষ্ট একটা পার্সেন্ট লাভ সে আমার সাথে শেয়ার করে, নিয়মিত লেনদেন করার কারণে। ধরে নিই ৩০ পার্সেন্ট আমার বাকি ৭০ পার্সেন্ট দোকান্দারের বা স্বেচ্ছায় উভয় যে চুক্তি হবে সেভাবেই শেয়ার হবে। এভাবে লাভ শেয়ার করা যাবে কিনা।

 

উল্লেখ্য যেহেতু আমার কোম্পানি থেকে মার্চেন্টের মাধ্যমে লেনদেন উৎসাহিত করে (এটা কোম্পানির একান্ত সিদ্ধান্ত), গ্রাহকও কিছু কম খরচে দোকান থেকে টাকা তুলতে পারে (যদিও দোকানদার কোন গ্রাহককে পার্সোনালে টাকা দিতে বাধ্য করছে না শুধু অফার করে কোন গ্রাহক চাইলে পারসোনালে দেয়, তা না হলে এজেন্টে দেয়), দোকানদার কিছু বেশি লাভ করতে পারছে আমার থেকে ক্যাশ টাকা পেয়ে, লাভের অংশ যাইই পাই এটা নিয়ে আমার কোম্পানি কোন দাবীদাওয়া নাই, কারণ কোম্পানি দিনশেষে মুল টাকা পেলে আর সমস্যা নাই। 

 

সংযোজনঃ কোন গ্রাহক দোকানে এজেন্টের মাধ্যমে ক্যাশ আউট করলে ফিক্সড রেটে চার্জ কাটে গ্রাহকের মুল একাউন্ট থেকে, তা যত পরিমাণই হোক। আর এই পুরো টাকা পায় ব্যাংকি কোম্পানি। আর ক্যাশ ইন/আউট বাবদ এজেন্ট কিছু পার্সেন্টেজ ব্যাংকিং কোম্পানি থেকে কমিশন পায় যেটা তার ব্যবসায়িক লাভ। 

উপরোক্ত পদ্ধতিতে লেন্দেন করলে যদিও এজেন্টের মাধ্যমে লেনদেন বাদ পরে যায়, তবুও কোন গ্রাহক স্বেচ্ছায় দোকান্দারের সাথে পার্সোনালে লেন্দেন করে আর সেই টাকা মার্চেন্টে প্রদান করে সবাই যদি যার যার জায়গা থেকে লাভবান হওয়া যায় তাতে শরীয় কোন সমস্যা আছে কিনা?

সংক্ষেপেঃ

সাধারণ গ্রাহকের পারসোনাল টু বিকাশ/নগদ ব্যবসায়ীর পারসোনাল একাউন্টে টাকা পাঠিয়ে ক্যাশ উত্তোলন করা জায়েজ কিনা? (যদিও ক্যাশ আউট চার্জ থেকে অনেক কম খরচে টাকা তুলতে পারছে)

বিকাশ ব্যবসায়ীর পারসোনাল টু আমার কোম্পানির মার্চেন্টে ট্রান্সফার করে দোকানদার ও আমার সাথে লাভ শেয়ার জায়েজ কিনা?

1 Answer

0 votes
by (556,680 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

শরীয়তের বিধান হলো টাকার বিনিময়ে টাকা নিলে কোনো কমবেশি করা যাবেনা।
কম বেশি করলে সেটি সূদ হবে।
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ

حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ، حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ عُمَرَ، حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَبِي الْخَلِيلِ، عَنْ مُسْلِمٍ الْمَكِّيِّ، عَنْ أَبِي الأَشْعَثِ الصَّنْعَانِيِّ، عَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " الذَّهَبُ بِالذَّهَبِ تِبْرُهَا وَعَيْنُهَا وَالْفِضَّةُ بِالْفِضَّةِ تِبْرُهَا وَعَيْنُهَا وَالْبُرُّ بِالْبُرِّ مُدْىٌ بِمُدْىٍ وَالشَّعِيرُ بِالشَّعِيرِ مُدْىٌ بِمُدْىٍ وَالتَّمْرُ بِالتَّمْرِ مُدْىٌ بِمُدْىٍ وَالْمِلْحُ بِالْمِلْحِ مُدْىٌ بِمُدْىٍ فَمَنْ زَادَ أَوِ ازْدَادَ فَقَدْ أَرْبَى وَلاَ بَأْسَ بِبَيْعِ الذَّهَبِ بِالْفِضَّةِ - وَالْفِضَّةُ أَكْثَرُهُمَا - يَدًا بِيَدٍ وَأَمَّا نَسِيئَةً فَلاَ وَلاَ بَأْسَ بِبَيْعِ الْبُرِّ بِالشَّعِيرِ وَالشَّعِيرُ أَكْثَرُهُمَا يَدًا بِيَدٍ وَأَمَّا نَسِيئَةً فَلاَ "

হাসান ইবন আলী (রহঃ) ........... উবাদা ইবন সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সোনা সোনার বিনিময়ে সমান সমান বিক্রি করবে, চাই তা সোনার পাত হোক বা স্বর্ণ মুদ্রাই হোক এবং রুপা রুপার বিনিময়ে সমান সমান বিক্রি করবে, চাই তা রুপার পাত হোক বা রৌপ্য মুদ্রাই হোক। আর গম গমের বিনিময়ে এক মুদ এক মুদের বিনিময়ে বিক্রি করতে হবে এবং যবের বিনিময়ে যবও এক মুদের বিনিময়ে এক মুদ বিক্রি করতে হবে। আর খেজুর খেজুরের বদলে এক মুদের বিনিময়ে এক মুদ বিক্রি করতে হবে। একই ভাবে লবণ লবণের বিনিময়ে এক মুদের বদলে এক মুদ বিক্রি করতে হবে। এই প্রকারের একই ধরনের জিনিসের মধ্যে যে ব্যক্তি বেশী নিবে বা দিবে, তা-ই সূদ হবে।

তবে সোনাকে রুপার বিনিময়ে এ অবস্থায় বিক্রি করা, যখন রুপা উভয় অংশের মধ্যে অধিক হবে, তবে তা দূষণীয় নয়। তবে এতে শর্ত হলো- লেন-দেন হাতে হাতে হতে হবে, বাকীতে বিক্রি জায়িয হবে না। একই রূপে গম যবের বিনিময়ে বিক্রি করা দূষণীয় নয়, যখন যবের অংশ উভয়ের মধ্যে অধিক হবে। তবে তা এ শর্তে যে, লেন-দেন হাতে হাতে হতে হবে এবং এতেও বাকী বিক্রি বৈধ নয়।
(আবু দাউদ ৩৩১৬)

حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ خَالِدٍ، عَنْ أَبِي قِلَابَةَ، عَنْ أَبِي الْأَشْعَثِ الصَّنْعَانِيِّ، عَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِهَذَا الْخَبَرِ يَزِيدُ، وَيَنْقُصُ وَزَادَ قَالَ: فَإِذَا اخْتَلَفَتْ هَذِهِ الْأَصْنَافُ فَبِيعُوا، كَيْفَ شِئْتُمْ، إِذَا كَانَ يَدًا بِيَدٍ 

‘উবাদাহ ইবনু সামিত (রাঃ) থেকে পূর্বোক্ত হাদীসটি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সূত্রে কিছুটা কম-বেশি করে বর্ণিত হয়েছে। এতে অতিরিক্ত রয়েছেঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ এসব ক্ষেত্রে এক ধরণের বস্তু অন্য ধরণের বস্তুর সাথে বিনিময় হলে তোমরা ইচ্ছামত পরিমাণ নির্ধারণ করতে পারো। তবে আদান-প্রদান হতে হবে নগদে।
(আবু দাউদ ৩৩৫০)

হারাম টাকার বিধান হল, তা প্রাথমিকভাবে মূল মালিকের কাছে ফেরত দেয়া।নতুবা সওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরীবদের মাঝে সদকা করে দেয়া।

 من ملك بملك خبيث ولم يمكنه الرد الى المالك فسبيله التصدق على الفقراء
 (معارف السنن، كتاب الطهارة، باب ما جاء لا تقبل صلاة بغير طهور-1/34، الفتاوى الشامية، باب البيع الفاسد، مطلب فى من ورث مالا حراما-7/301، كتاب الحظر والإباحة، فصل فى البيع-9/554، بذل المجهود، كتاب الطهارة، باب فرض الوضوء- 1/37

যদি কারো নিকট কোনো হারাম মাল থাকে,তাহলে ঐ মালকে তার মালিকের নিকট ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব না হলে সেটি ফকিরদেরকে সদকাহ করে দিতে হবে।
(মাআরিফুস সুন্নাহ ১/৩৪)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
দোকানদারের পার্সোনাল একাউন্টে ১০০০ টাকা সেন্ড মানি করলে দোকানদার লভ্যাংশ বাবদ অতিরিক্ত যে টাকা আপনার থেকে নিবে,সেটা সুদের অন্তর্ভুক্ত। 
কেননা এক্ষেত্রে তার একাউন্টে তো ১০০০ টাকা জমা থাকেই, অতিরিক্ত যে টাকা সে নিবে,সেটা তো কোম্পানিকে তার দিতে হচ্ছেনা,পুরোটাই তার একাউন্টে জমা থাকে।
সুতরাং এটি সুদের অন্তর্ভুক্ত। 

বিধায় উক্ত অতিরিক্ত টাকা নেয়া দোকানদারের জন্য যেমন জায়েজ নেই,তেমনি সেখান হতে কোনো পার্সেন্ট নেয়া আপনার জন্যেও জায়েজ নেই।

সুতরাং সাধারণ গ্রাহকের পারসোনাল টু বিকাশ/নগদ ব্যবসায়ীর পারসোনাল একাউন্টে সেন্ড মানি করে টাকা উত্তোলন করা জায়েজ,তবে দোকনদারকে মূল টাকা হতে অতিরিক্ত প্রদান করা নাজায়েজ।

★তাই প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে বিকাশ ব্যবসায়ীর পারসোনাল টু আপনার কোম্পানির মার্চেন্টে ট্রান্সফার করে দোকানদার ও আপনার সাথে লাভ শেয়ার জায়েজ হবেনা। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...