আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

–1 vote
560 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (12 points)
আসসালামু আলাইকুম।
একটা ই-কমার্স সাইট বাজারে থেকে অনেক কম দামে বিভিন্ন প্রোডাক্ট দিচ্ছে যদিও ৪/৫ মাস পর। আমি সেখান থেকে বাইক কিনে পরবর্তীতে তা আরেকটু ভালো দামে সেল করতে চাই। কিন্তু সমস্যা হলো, তারা কিছু কিছু সময় বাইক না দিয়ে বর্তমান বাজার মূল্যের চেক দেয় যা অফারের মূল্যের চেয়ে বেশি। টাকার বদলে টাকা নেয়া তো অবশ্যই স্পষ্টত সুদ। কিন্তু আমি যেহেতু ব্যবসা করতে চাচ্ছি, তাই আমি জানতে চাচ্ছি বিষয়টা। আমি যদি ২ লাখ টাকার বাইক অফারে ১ লাখ টাকা দিয়ে কিনতে চাই সেক্ষেত্রে তারা বাইক না দিয়ে ২ লাখ টাকা মূল্যের চেক দিয়ে দিলো। আমি যদি সেই ২ লাখ টাকা দিয়ে বাইক কিনে পরবর্তীতে ১.৭/১.৮ লাখ টাকায় বিক্রি করি তাহলে তা কি জায়েজ হবে? তারা যদি আমাকে বাইকও দিতো তাহলেও আমি একই দামে বিক্রি করার চেষ্টা করতাম। এটা শুধু বাইক নয় অন্য যেকোনো প্রোডাক্টের ক্ষেত্রে করা যাবে কি? জায়েজ হবে? আমি আসলে সুদের সাথে কোনোভাবেই সম্পৃক্ত হতে চাচ্ছি না। তাই এটা জানা প্রয়োজন।

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আপনি প্রথমে টাকা দিচ্ছেন।১/২মাস পর প্রডাক্ট হাতে পাবেন।এটার নাম হল,বয়ে সালাম।অর্থাৎ টাকা আগে দেওয়া এবং মাল পরবর্তীতে হস্তগত হওয়া।বয়ে সালাম জায়েয।
হযরত ইবনে আব্বাস রাযি থেকে বর্ণিত
عن ابن عباس رضي الله عنهما قال : " قَدِمَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ المَدِينَةَ وَهُمْ يُسْلِفُونَ بِالتَّمْرِ السَّنَتَيْنِ وَالثَّلاَثَ، فَقَالَ: ( مَنْ أَسْلَفَ فِي شَيْءٍ، فَفِي كَيْلٍ مَعْلُومٍ، وَوَزْنٍ مَعْلُومٍ، إِلَى أَجَلٍ مَعْلُومٍ)
তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মদীনায় আসেন তখন মদীনাবাসী ফলে দু’ ও তিন বছরের মেয়াদি সালাম ব্যবসা করত। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, কোন ব্যক্তি সালাম ব্যবসা করলে সে যেন নির্দিষ্ট মাপে এবং নির্দিষ্ট ওজনে নির্দিষ্ট মেয়াদে সালাম করে।(সহীহ বোখারী-২২৪০,সহীহ মুসলিম-৪২০২)
বিস্তারিত জানুন- ৯৭৯৬

তবে আপনি মাল গ্রহণ না করে ব্যাংক চেক গ্রহণ করতে পারবেন না।কেননা সেটা সুদ হয়ে যাবে।টাকার বদলে টাকা সুদ।কিন্তু টাকার বদলে পন্য বা পন্যর বদলে টাকা সুদের অন্তর্ভুক্ত হবে না।

সুদ বলা হয়,ঋণ নেয়ার পর ঋনদাতাকে কিছু দেয়ার চুক্তি করা।
আল্লাহ তা'আলা বলেন-
ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻳَﺄْﻛُﻠُﻮﻥَ ﺍﻟﺮِّﺑَﺎ ﻻَ ﻳَﻘُﻮﻣُﻮﻥَ ﺇِﻻَّ ﻛَﻤَﺎ ﻳَﻘُﻮﻡُ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﻳَﺘَﺨَﺒَّﻄُﻪُ ﺍﻟﺸَّﻴْﻄَﺎﻥُ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﻤَﺲِّ ﺫَﻟِﻚَ ﺑِﺄَﻧَّﻬُﻢْ ﻗَﺎﻟُﻮﺍْ ﺇِﻧَّﻤَﺎ ﺍﻟْﺒَﻴْﻊُ ﻣِﺜْﻞُ ﺍﻟﺮِّﺑَﺎ ﻭَﺃَﺣَﻞَّ ﺍﻟﻠّﻪُ ﺍﻟْﺒَﻴْﻊَ ﻭَﺣَﺮَّﻡَ ﺍﻟﺮِّﺑَﺎ ﻓَﻤَﻦ ﺟَﺎﺀﻩُ ﻣَﻮْﻋِﻈَﺔٌ ﻣِّﻦ ﺭَّﺑِّﻪِ ﻓَﺎﻧﺘَﻬَﻰَ ﻓَﻠَﻪُ ﻣَﺎ ﺳَﻠَﻒَ ﻭَﺃَﻣْﺮُﻩُ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﻠّﻪِ ﻭَﻣَﻦْ ﻋَﺎﺩَ ﻓَﺄُﻭْﻟَـﺌِﻚَ ﺃَﺻْﺤَﺎﺏُ ﺍﻟﻨَّﺎﺭِ ﻫُﻢْ ﻓِﻴﻬَﺎ ﺧَﺎﻟِﺪُﻭﻥَ
যারা সুদ খায়, তারা কিয়ামতে দন্ডায়মান হবে, যেভাবে দন্ডায়মান হয় ঐ ব্যক্তি, যাকে শয়তান আসর করে মোহাবিষ্ট করে দেয়।
তাদের এ অবস্থার কারণ এই যে, তারা বলেছেঃ ক্রয়-বিক্রয় ও তো সুদ নেয়ারই মত!
অথচ আল্লা’হ তা’আলা ক্রয়-বিক্রয় বৈধ করেছেন এবং সুদ হারাম করেছেন। 
অতঃপর যার কাছে তার পালনকর্তার পক্ষ থেকে উপদেশ এসেছে এবং সে বিরত হয়েছে, পূর্বে যা হয়ে গেছে, তা তার। তার ব্যাপার আল্লাহর উপর নির্ভরশীল। 
আর যারা পুনরায় সুদ নেয়, তারাই দোযখে যাবে। তারা সেখানে চিরকাল অবস্থান করবে।
সূরা বাকারা-২৭৫;

রিবা বা সূদ কাকে বলে?
বর্ণিত রয়েছে  এ ব্যপারে উলামায়ে কেরামগণ একমত যে, প্রত্যেক ঐ ঋণ যা মুনাফাকে টেনে নিয়ে আসবে তাই রিবা বা সুদ হিসেবে পরিগণিত হবে।

যেমন
ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﺃَﺑُﻮ ﺑَﻜْﺮٍ ﻗَﺎﻝَ : ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﺣَﻔْﺺٌ، ﻋَﻦْ ﺃَﺷْﻌَﺚَ، ﻋَﻦِ ﺍﻟْﺤَﻜَﻢِ، ﻋَﻦْ ﺇِﺑْﺮَﺍﻫِﻴﻢَ، ﻗَﺎﻝَ : « ﻛُﻞُّ ﻗَﺮْﺽٍ ﺟَﺮَّ ﻣَﻨْﻔَﻌَﺔً، ﻓَﻬُﻮَ ﺭِﺑًﺎ » ﻣﺼﻨﻒ ﺍﺑﻦ ﺃﺑﻲ ﺷﻴﺒﺔ 
তরজমাঃ-
প্রত্যেক ঐ ঋণ যা মুনাফাকে টেনে নিয়ে আসবে তাই রিবা বা সুদ।
মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বাহ-২০৬৯০

মুনাফার শর্তে ঋণ দিলে তা রিবার অন্তর্ভুক্ত।তবে শর্ত ব্যতীত যদি ঋণদার ঋণ পরিশোধের সময় কিছুটা বেশী দিয়ে দিলে তা রিবার অন্তর্ভুক্ত হবে না।বরং তা বৈধ-ই হবে।



(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (12 points)
আসসালামু আলাইকুম। আমি দুঃখিত, উত্তরটা আমি আসলে বুঝতে পারিনি। আমি আসলে ডিরেক্ট উত্তর পেলে বুঝতে পারতাম। যদি এ পদ্ধতিতে ব্যবসা জায়েজ হয় তাহলে "জায়েজ" আর না হলে " জায়েজ না" বললেই আমি বুঝে নিবো। কারণ, ব্যাংক চেক এর জন্য আমি ২ মাস পরেই নিতে পারবো। আর টাকা তুলতে লাগবে আরো ২ মাস। টোটাল ৪ মাস পর আমি যদি ১ লাখ টাকা অফারের বাইকের জন্য ২ লাখ টাকা পাই। ২ লাখ টাকা নিলে সেটা সুদ হবে বুঝতে পারছি কিন্তু সেই ২ লাখ টাকা দিয়ে বাইক কিনে যদি ১ লক্ষ ৬০/৭০ হাজার টাকায় বিক্রি করি তাহলে তাতেও কি সুদের মিশ্রন থাকবে? এটা জায়েজ হবে কিনা শুধু সেটাই জানতে চাচ্ছি মুহতারাম।  
by (597,330 points)
সেই দুই লাখ টাকা দিয়ে আপনি কখন বাইক কিনবেন?দুই লাখ পাবেন কোথাও?পদ্ধতি কি?
পরিস্কার করে সম্পূূূূর্ণ পদ্ধতি আমাদেরকে বলুন।জাযাকাাাল্ল
by (12 points)
জ্বি সেই ২ লাখ টাকা দিয়েই বাইক কিনবো এবং সেল করতে চাচ্ছি। আমি আসলে পদ্ধতিটাই উপরে বলেছি এবং তা জায়েজ কিনা জানতে চেয়েছি। আমি আবার পরিষ্কার করছি। শায়েখ ধরুন, মার্কেটে ২ লাখ টাকার একটা বাইক ই-কমার্স সাইটে অফারে ১ লক্ষ টাকায় দেয়া হচ্ছে। যেকোনো প্রোডাক্ট ৭-৪৫ কর্মদিবসের মাঝে দেয়ার কথা। কিন্তু তা দিতে দিতে ৪-৫ মাস বা তারও বেশি সময় লাগে। তো অনেকেই আছে ৪৫ কর্মদিবসের পরে চাইলে চেক নিয়ে আসতে পারে। আমি যদিও চেক নিতে চাই না। কিন্তু মাঝে মাঝে দেরি করলেও তারা বাইক না দিয়ে মার্কেট প্রাইস থেকে ৫/১০/১৫ হাজার টাকা কম মূল্যের চেক দেয় অর্থাৎ যদি বাইকের মার্কেট প্রাইস হয় ২ লক্ষ টাকা তারা ১ লক্ষ ৯০ হাজার টাকার চেক দিয়ে দেয়। তো, এই চেক নেয়া এবং সেই টাকা অবশ্যই সুদ। কিন্তু  আমি যদি সেই ১ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা দিয়ে নতুন বাইক কিনে তা যদি আমার ইনভেস্টকৃত ১ লাখ টাকার বেশি যেমন ১ লক্ষ ৬০/৭০ হাজার টাকায় সেল করি তা কি জায়েজ হবে কিনা? কারণ আমিতো বাইকের অপেক্ষায় ছিলাম। দেরি করেও তারা বাইক দেয় নি। টাকা দিয়েছে। উল্লেখ্য, অন্য মডেলের বাইক কিংবা ঐ একই মডেলের বাইক আরো ১০ হাজার বাড়তি যোগ করে ২ লাখ মিলায়ে বাইক কিনে সেল করার ব্যপারটাও হতে পারে। আর ই-কমার্স সাইট দেরি না করলেও ৪৫ তম কর্মদিবসের পরে কেউ চাইলে নিজ ইচ্ছায় বাইক না নিয়ে চেক নিয়ে এভাবে চেকের টাকায় কিনে তারপর বিক্রি করে ব্যবসা করতে পারবো কিনা? 
আমি মোট ২ টি প্রশ্ন করেছি এখানে তাই শায়েখ ২ টি উত্তর আশা করছি।
by (597,330 points)
আপনি আমাকে কল দিবেন।০১৭১৭৯১৭৬৮৬
by (597,330 points)
আপনার বর্ণিত  এ পদ্ধতি জায়েয হবে না।
by
আমি অলরেডি ইনভেস্ট করে ফেলেছি... এখন অবস্থা যদি এমন হয়, ওরা কোনভাবেই আমার পণ্য দিতে পারবে না... চেক নিতে বাধ্য করে, সেক্ষেত্রে কি হালাল হবে? সেক্ষেত্রে কি করা উচিৎ?? 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 131 views
...