আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
131 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (15 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ।
১।আমার প্রথম প্রশ্ন, যতটুকু জানি শরিয়তে নতুন উদ্ভাবিত কোনো বিষয় কে বিদআত বলে।যা নবী সা বলেন নি বা করেন নি তা কে শরিয়ত মনে করাকে বিদআত বলে। আমরা হানাফী মাজহাবের অনুসারী রা যয়ীফ হাদিস থেকেও সাধারণত আমল করে থাকি। কিন্তু এই যইফ হাদিসে আমলের উপর আমাদের কে কেউ কেউ বিদআতি কেনো বলে? যইফ হাদিস সনদ দুর্বল হলেও তো সেটা জাল নয়। আমরা তো নবী সা কথার উপর ই আমল করছি তাও যদি কেউ বিদআতি বলে তাকে কি বলে উত্তর দিবো?
২।সূরা ইয়াসীন, মাগরিবের পর ওয়াকিয়া, রাতে সূরা তাকাসূর,মূলক ইত্যাতি ইত্যাদি সূরা গুলো আমল করার ব্যাপারে কোন ফজিলত গুলা যথাযথ। মাগরিবের পর সূরা ওয়াক্বিয়া পড়লে সম্পদে বারাকাহ আসে এটা কি সহিহ নয়?

৩।আমি বা আমরা সাধারণ  মানুষ রা প্রাথমিক ভাবে কোনো কিছু জানতে ইউটিবে সার্চ দিয়ে থাকি সেটা প্রাথমিক ভাবে জানার জন্য।  শায়খ আহমাদুল্লাহ হুজুর বর্তমানে বেশ জনপ্রিয় নেট দুনিয়ায়।  উনার প্রচুর প্রশ্নউত্তর পর্ব ও আছে। আমি যতটুকু জানি উনি হানাফি। কিন্তু মাঝে  মাঝে দেখি উনি হাদিসের সনদ দুর্বল হলে সেটা হাইলাইট করেন। যেমনঃ সূরা ওয়াক্বিয়ার বিষয়টা নিয়ে সার্চ দেওয়ার পর আহলে হাদিসের অনলাইন এ জনপ্রিয় বক্তাদের মধ্যে কেউ কেউ বললেন এমন কিছু বিশুদ্ধ নয়। আবার সাথে কেউ কেউ বললেন এগুলো বিশুদ্ধ নয় এবং নবী সা যা করতে বলেনি তা উনার করতে বলার উপর মনে করে করলে বিদআত হয়ে যাবে। শায়খ আহমাদুল্লাহ আমল করা যাবে কি যাবে না তা বলে নি শুধু বললেন এটা সহীহ নয়। কিছু বর্নণা আছে কিন্তু দুর্বল। সূরা কাহাফের ক্ষেত্রে উনি সরাসরি বলেছেন এটা আমল যোগ্য,সূরা মূলক আমলযোগ্য কিন্তু ওয়াক্বিয়া বা ইয়াসিনের ব্যাপারে তা বলেন নি। আই ফতোয়া তে কয়েকটি প্রশ্নে দেখলাম ওয়াকিয়া আমলের কথা। আর ফজরের পর সূরা ইয়াসীন পড়া তো আমাদের মাদ্রাদা থেকে পড়ার ও নির্দেশ দেওয়া হয়।
উনি হানাফি হওয়া সত্তেও কিছু বিষয়ে মিল কেনো পড়ে না আমি একটু এটা জানতে চাই। সাধারণ কেউ আসলে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে যাই তাই জানতে চাচ্ছি। কেউ কেউ জিগ্যেস করে বসেন কার কথা শুনবো আমরা সাধারণ মানুষ? একেক জন একেক কথা বলেন একেক ভাবে।


৪।বিভিন্ন বইয়ে বিভিন্ন জন বলে থাকেন এটার এই ফজিলত কোনোটা কিভাবে বুঝবো কোনটা আমল যোগ্য?

আমাকে একজন আমার বড় নির্দেশ দিয়েছেন অনেক বেশি বেশি সূরা ইয়াসিন পড়ার জন্য। এতে নাকি আমার জীবনের সমস্যা গুলো দূরীভুত হবে। উনাকে কোনো এক বড় বুযুর্গ আলেম নাকি বলে দিয়েছেন। এভাবে কুরআনের নিদিষ্ট কোনো সূরা সমস্যা সমাধানের নিয়ত করে পড়লে কি সেটা বিদআত হয়ে যাবে?(যদি হাদিসে না থাকে হাদিস না মনে করে পড়লে)


৫।আমলী সূরা গুলো রুকইয়া এবং আমল উভয়ের নিয়ত এক সাথে করলে কি দুটোরই ফায়দা পাওয়া যাবে?


আফওয়ান এত গুলো প্রশ্ন করার জন্য।
জাঝাকুমুল্লাহু খইরান ফিদ্দুনইয়া ওয়াল আখিরহ।

1 Answer

0 votes
by (62,670 points)

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/7225/ নং ফাতওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,

মুহাদ্দিসিনে কেরামের নীতি অনুযায়ী বলা যায়, যে ফাযাইলে আ'মালের ক্ষেত্রে যঈফ হাদীসকে বর্ণনা করা ও তার উপর আ'মল করা জায়েয রয়েছে। তবে মাওযু (বানোয়াট/মিথ্যা) বর্ণনার ভিত্তিতে আ'মল করা জায়েয হবে না।


যঈফ হাদীসের উপর আ'মল করা সম্পর্কে জারাহ- তা'দিল এর ইমাম 'ইবনুস সালাহ রাহ,' বলেন,

ﻳﺠﻮﺯ ﻋﻨﺪ ﺃﻫﻞ ﺍﻟﺤﺪﻳﺚ ﻭﻏﻴﺮﻫﻢ ﺍﻟﺘﺴﺎﻫﻞ ﻓﻲ ﺍﻷﺳﺎﻧﻴﺪ ، ﻭﺭﻭﺍﻳﺔ ﻣﺎ ﺳﻮﻯ ﺍﻟﻤﻮﺿﻮﻉ ﻣﻦ ﺃﻧﻮﺍﻉ ﺍﻷﺣﺎﺩﻳﺚ ﺍﻟﻀﻌﻴﻔﺔ، ﻣﻦ ﻏﻴﺮ ﺍﻫﺘﻤﺎﻡ ﺑﺒﻴﺎﻥ ﺿﻌﻔﻬﺎ، ﻓﻴﻤﺎ ﺳﻮﻯ ﺻﻔﺎﺕ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ ﻭﺃﺣﻜﺎﻡ ﺍﻟﺸﺮﻳﻌﺔ ﻣﻦ ﺍﻟﺤﻼﻝ ﻭﺍﻟﺤﺮﺍﻡ ﻭﻏﻴﺮﻫﻤﺎ . ﻭﺫﻟﻚ ﻛﺎﻟﻤﻮﺍﻋﻆ، ﻭﺍﻟﻘﺼﺺ، ﻭﻓﻀﺎﺋﻞ ﺍﻷﻋﻤﺎﻝ، ﻭﺳﺎﺋﺮ ﻓﻨﻮﻥ ﺍﻟﺘﺮﻏﻴﺐ ﻭﺍﻟﺘﺮﻫﻴﺐ، ﻭﺳﺎﺋﺮ ﻣﺎ ﺗﻌﻠﻖ ﻟﻪ ﺑﺎﻷﺣﻜﺎﻡ ﻭﺍﻟﻌﻘﺎﺋﺪ، ﻭﻣﻤﻦ ﺭﻭﻳﻨﺎ ﻋﻨﻪ ﺍﻟﺘﻨﺼﻴﺺ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﺘﺴﺎﻫﻞ ﻓﻲ ﻧﺤﻮ ﺫﻟﻚ : ( ﻋﺒﺪ ﺍﻟﺮﺣﻤﻦ ﺑﻦ ﻣﻬﺪﻱ ) ، ( ﺃﺣﻤﺪ ﺑﻦ ﺣﻨﺒﻞ ) ، ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﻤﺎ

মুহাদ্দিসিনে কেরামদের নিকট মাওযু ব্যতীত যঈফ তথা সনদের দুর্বলতা সম্ভলিত হাদীস সমূহ কে বর্ণনা করা জায়েয রয়েছে। এক্ষেত্রে দুর্বলতা কে জনসমক্ষে প্রকাশ করা জরুরী নয়।

তবে শর্ত হল, উক্ত যঈফ হাদীস আল্লাহর সিফাত এবং হালাল-হারাম বা আক্বাঈদ সম্ভলিত হতে পারবে না। সুতরাং ওয়াজ, পূর্ববর্তী ঘটনা, এবং ফাযাইলে আ'মাল ও  সকল উৎসাহ প্রদাণ মূলক বিষয়ে যঈফ হাদীসকে বর্ণনা করা যাবে এবং তার ভিত্তিতে আ'মল করা যাবে। যেমন আব্দুর রহমান ইবনে মাহদি রাহ, আহমদ ইবনে হাম্বল রাহ থেকে হাদীস বর্ণনা করা যাবে। (মু'আক্বাদাহ ইবনে সালাহ)


ইমাম নববী রাহ উনার কিতাব 'তাক্বরীব' এ লিখেন,

ﻭﻳﺠﻮﺯ ﻋﻨﺪ ﺃﻫﻞ ﺍﻟﺤﺪﻳﺚ ﻭﻏﻴﺮﻫﻢ ﺍﻟﺘﺴﺎﻫﻞ ﻓﻲ ﺍﻷﺳﺎﻧﻴﺪ

ﻭﺭﻭﺍﻳﺔ ﻣﺎ ﺳﻮﻯ ﺍﻟﻤﻮﺿﻮﻉ ﻣﻦ ﺍﻟﻀﻌﻴﻒ ﻭﺍﻟﻌﻤﻞ ﺑﻪ ﻣﻦ ﻏﻴﺮ ﺑﻴﺎﻥ ﺿﻌﻔﻪ ﻓﻲ ﻏﻴﺮ ﺻﻔﺎﺕﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ ﻭﺍﻷﺣﻜﺎﻡ ﻛﺎﻟﺤﻼﻝ ﻭﺍﻟﺤﺮﺍﻡ ﻭﻣﺎ ﻳﺘﻌﻠﻖ ﺑﺎﻟﻌﻘﺎﺋﺪ ﻭﺍﻷﺣﻜﺎﻡ

এবং মুহাদ্দিসিনে কেরামের নিকট সনদে দুর্বলতা গ্রহণযোগ্য রয়েছে। মাওযু ব্যতীত সনদ হিসেবে যঈফ (দুর্বল) হাদীস বর্ণনা করা জায়েয রয়েছে এবং এর ভিত্তিতে আ'মল করাও জায়েয রয়েছে। এক্ষেত্রে যঈফ উল্লেখ করা জরুরী নয়। তবে শর্ত হল, সেই যঈফ হাদীস আল্লাহর সিফাত, হালাল-হারাম, আক্বাঈদ সম্ভলিত হতে পারবে না।

বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/984  


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!


১. পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে। আর ফাযাইলে আ'মালের ক্ষেত্রে যঈফ হাদীসকে বর্ণনা করা ও তার উপর আ'মল করাকে বিদআত বলা মারাত্মক ভুল।

২. সূরা ইয়াসিন ও ওয়াকিয়া সম্পর্কে জানুন- https://ifatwa.info/8144/

 https://ifatwa.info/1655/

সূরা মূলক সম্পর্কে জানুন - https://ifatwa.info/26674/


৩. আপনি অফলাইনে কোনো নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান থেকে দ্বীনি ইলম অর্জন করার চেষ্টা করবেন। আর অনলাইন থেকে নিতে হলে অবশ্যই নির্ভরযোগ্য আলেম থেকে নিতে হবে। কারণ অনলাইনে বিভিন্ন ধরনের বক্তব্য ও কথা পাওয়া যায়।

সুতরাং এক্ষেত্রে খুব সাবধানতার সাথে নির্ভরযোগ্য আলেম থেকে গ্রহণ করতে হবে।

আপনি শায়খ আহমাদুল্লাহ হাফি. এর বক্তব্য শুনতে পারেন।


৪. এই ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো হয় আপনি আল্লাহ তায়ালার কাছে দুআ করতে থাকুন।

৫. এভাবে পড়তে থাকুন এবং আল্লাহ তায়ালার কাছে দুআ করতে থাকুন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...