জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم
(০১)
ইসলামের মৌলিক বিধান হচ্ছে, জড়বস্তুর ছবি তোলা ও আঁকায় শরয়ী কোন বিধিনিষেধ নেই। আর প্রাণীর ছবি প্রয়োজন ছাড়া তোলা, সংরক্ষণ করা, প্রকাশ করা, ব্যবহার করা হারাম।
,
হাদিস শরীফে এসেছে,
قال حدثنا الاعمش عن مسلم قال كنا مع مسروق فى دار يسار بن نمير فراى فى صفته تماثيل فقال سمعت عبد الله قال سمعت النبى ﷺ يقول ان اشد الناس عذابا عند الله المصورون
আ’মাশ তিনি মুসলিম হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি মাসরুকের সঙ্গে ইয়াসার ইবনে নুমাইরের ঘরে ছিলাম, তিন ঘরের মধ্যে প্রাণীর ছবি দেখতে পেলেন, অতঃপর বললেন, আমি হযরত আব্দুল্লাহ্ রাযি.-এর নিকট শুনেছি, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, ‘নিশ্চয় মানুষের মধ্যে ঐ ব্যক্তিকে আল্লাহ্ তাআলা কঠিন শাস্তি দেবেন, যে ব্যক্তি প্রাণীর ছবি তোলে বা আঁকে।’ (বুখারী ২/৮৮০)
ছবি তোলা হারাম কেন,জানুনঃ
,
এখানে কিছু মাসআলা আলাদাভাবে প্রথমে বুঝে নিনঃ
১
স্বামী এবং স্ত্রী পরস্পরের পুরো শরীর দেখা জায়েজ আছে।
২
সুস্থ্য সবল থাকা অবস্থায় স্বামী তার স্ত্রী থেকে চার মাসের মাঝে একবার হলেও শারীরিক সম্পর্কে জড়ানো ওয়াজিব। আর যদি স্বামীর অবর্তমানে স্ত্রীর গোনাহে জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে, তাহলে চার দিনের মাঝে একবার স্ত্রীর হক আদায় করা আবশ্যক।
৩
জিনার গোনাহে জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা না থাকলে হস্তমৈথুন করা জায়েজ নয়। গোনাহের কাজ।
৪
শরীয়ত সমর্থিত তীব্র প্রয়োজন ছাড়া ছবি তোলা জায়েজ নয়।
মোবাইলে স্ত্রীর অশ্লীল ছবি দেখা কোন সমাধান নয়। বরং এর দ্বারা অন্তর কলুষিত হয়। অন্তর মরে যায়।
স্ত্রীর সর্বাঙ্গ সরাসরি দেখা জায়েজ আছে। যদিও গোপনাঙ্গের দিকে সরাসরি তাকানো উচিত নয়। এতে স্মৃতিশক্তি কমে যায়।
অপ্রয়োজনে ছবি তুলা যেহেতু হারাম। আর উলঙ্গ ছবি সেতো আরো মারাত্মক গোনাহের কাজ।
তাই এহেন দৃষ্টিকটূ ও অপছন্দনীয় কাজগুলো পরিত্যাগ করতে হবে।
,
★ইসলামী স্কলাররা বলেছেন যে ইন্টারনেটে চ্যাটিং প্রোগ্রামের মাধ্যমে স্ত্রীর সাথে কথা বলে অথবা তাকে দেখে বা তার ছবি দেখে তৃপ্ত হওয়া জায়েয।
তবে সাবধান থাকতে হবে অন্য কেউ যেন স্বামী-স্ত্রীর আলাপচারিতা শুনতে না পায়, অথবা গোয়েন্দাগিরি না করে।
,
★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
আপনি স্ত্রীর পার্সোনাল ছবি রাখতে পারবেননা।
কারন এই উদ্দেশ্যে ছবি তোলা জায়েজ নেই।
,
★সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন যেহেতু মুমিন মুত্তাকীদের জন্য অপরিহার্য বিষয়, তাই এক্ষেত্রে
সর্বোচ্চ সতর্কতা হচ্ছে, আপনি সরাসরি ভিডিও কলেই কথা বলবেন।
মোবাইলেও কোনো ছবি/ভিডিও রাখবেননা।
বিস্তারিত জানুনঃ
,
(০২)
স্বামী বা স্ত্রীর গোনাহে জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকলে কিছুতেই চার মাসের বেশি সময় স্ত্রী থেকে দূরে থাকার অনুমতি ইসলাম প্রদান করে না।
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে কোনোভাবেই উভয়ের কাহারই গুনাহে জড়িলে পড়ার সম্ভাবনা না থাকলে চার মাসেরও বেশি সময় স্বামী স্ত্রী মিলিত না হয়ে থাকত পারবে।
,
চার মাসের ভিতর কমপক্ষে একবার স্ত্রীর সাথে সহবাস করা ওয়াজিব তা বর্ণনা করতে যেয়ে তিনি উমর রাযি এর নিম্নোক্ত নির্দেশনামা উল্লেখ করে লিখেন,
وَيُؤَيِّدُ ذَلِكَ أَنَّ عُمَرَ - رَضِيَ اللَّهُ تَعَالَى عَنْهُ - لَمَّا سَمِعَ فِي اللَّيْلِ امْرَأَةً تَقُولُ: فَوَاَللَّهِ لَوْلَا اللَّهُ تُخْشَى عَوَاقِبُهُ لَزُحْزِحَ مِنْ هَذَا السَّرِيرِ جَوَانِبُهُ فَسَأَلَ عَنْهَا فَإِذَا زَوْجُهَا فِي الْجِهَادِ، فَسَأَلَ بِنْتَه حَفْصَةَ: كَمْ تَصْبِرُ الْمَرْأَةُ عَنْ الرَّجُلِ: فَقَالَتْ أَرْبَعَةَ أَشْهُرٍ، فَأَمَرَ أُمَرَاءَ الْأَجْنَادِ أَنْ لَا يَتَخَلَّفَ الْمُتَزَوِّجُ عَنْ أَهْلِهِ أَكْثَرَ مِنْهَا، وَلَوْ لَمْ يَكُنْ فِي هَذِهِ الْمُدَّةِ زِيَادَةُ مُضَارَّةٍ بِهَا لَمَا شَرَعَ اللَّهُ تَعَالَى الْفِرَاقَ بِالْإِيلَاءِ فِيهَا.
অনুবাদঃউমর রাযি রাত্রে একদিন এক মহিলাকে বিরহের কবিতা গাইতে শুনলেন,যে কবিতার মাধ্যমে সে বলতেছিলো..........
"আল্লাহর কসম! যদি আল্লাহর শাস্তির ভয় না থাকতো,তাহলে এখন আমার খাটের চারপাশ প্রকম্পিত হতো"
উমর রাযি ঐ মহিলাকে তার স্বামী সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন,তখন ঐ মহিলা জানালো যে তার স্বামী বর্তমানে জিহাদে আছে,তখন উমর রাযি উনার মেয়ে হাফসা রাযি কে জিজ্ঞাসা করলেন,একজন মহিলা স্বামী ব্যতীত কতদিন পর্যন্ত সবর করতে পারে?হাফসা রাযি বললেনঃ চার মাস।এর পর সেনাবাহিনীর কমান্ডারদের কাছে সংবাদ প্রেরণ করলেন,কোনো বিবাহিত মুজাহিদ সেনা যেন চার মাসের বেশী সময় নিজ পরিবার(স্ত্রী) থেকে দূরে না থাকে।(অতঃপর ইবনে আবেদীন শামী রাহ আরেকটি কিয়াস উল্লেখ করে বলেনঃ)তাছাড়া যদি সহবাস ব্যতীত চার মাস কষ্টকর না হতো,তাহলে কেন আল্লাহ ই'লা (চার মাস সহবাস না করার শপথ করা)এর কারণে বৈবাহিক সম্পর্ককে বিচ্ছেদযোগ্য করবেন।{রদ্দুল মুহতার;৩/২০৩}
আরো জানুনঃ
তবে গুনাহ থেকে হেফাযত এবং পূর্ণ নিরাপত্তার মধ্যে থাকার শর্তে স্বামী-স্ত্রী উভয়ে পারস্পরিক সম্মতিতে দীর্ঘ সময় দূরে থাকায় শরী‘আতে কোন বাধা নেই।
ওমর (রাঃ) নিজ কন্যা হাফছাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করে সে সময়ে মুজাহিদদের জন্য সর্বোচ্চ ছয় মাস বাইরে থাকার ব্যাপারে সময় নির্ধারণ করেছিলেন (মুছান্নাফ আব্দুর রাযযাক হা/১২৫৯৪)।