জবাবঃ-
জানাযার নামায যা বাস্তবিক নামাযের মত নয় বরং এটি শুধমাত্র একটি দু'আর সমষ্টি। এজন্য তাতে রু'কু সেজদা নেই।বরং এতে দু'আই অগ্রগণ্য।
এবং দু'আর আদাব হচ্ছে,প্রতি দু'আর পূর্বে আল্লাহর হামদ ও ছানা করতে হয়।বিধায় এখানেও আল্লাহর হামদ-ছানা দিয়ে শুরু করতে হবে।যে জন্য কোনো ক্বেরাত জানাযার নামাযে মাশরু'বা নিয়মসিদ্ধ নয়।
যেমনঃ- হযরত না'ফে রাহ, থেকে বর্ণিত আছে যে,
ﻋﻦ ﻧﺎﻓﻊ ﺃﻥ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﻋﻤﺮ ﻛﺎﻥ ﻻ ﻳﻘﺮﺃ ﻓﻲ ﺍﻟﺼﻼﺓ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﺠﻨﺎﺯﺓ
হযরত ইবনে উমর রাঃ জানাযার নামাযে ক্বেরাত (সূরা ফাতেহা)পড়তেন না।(মু'আত্তা মালিক-৫৩৫)
এ সম্পর্কে বিদগ্ধ গবেষক আল্লামা ইবনে তাইমিয়্যাহ রাহ বলেনঃ-
ﻭﺗﻨﺎﺯﻉ ﺍﻟﻌﻠﻤﺎﺀ ﻓﻲ ﺍﻟﻘﺮﺍﺀﺓ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﺠﻨﺎﺯﺓ ﻋﻠﻰ ﺛﻼﺛﻪ ﺃﻗﻮﺍﻝ : ﻗﻴﻞ : ﻻ ﺗﺴﺘﺤﺐ ﺑﺤﺎﻝ , ﻛﻤﺎ ﻫﻮ ﻣﺬﻫﺐ ﺃﺑﻲ ﺣﻨﻴﻔﺔ ﻭﻣﺎﻟﻚ ، ﻭﻗﻴﻞ : ﺑﻞ ﻳﺠﺐ ﻓﻴﻬﺎ ﺍﻟﻘﺮﺍﺀﺓ ﺑﺎﻟﻔﺎﺗﺤﺔ ، ﻛﻤﺎ ﻳﻘﻮﻟﻪ ﻣﻦ ﻳﻘﻮﻟﻪ ﻣﻦ ﺃﺻﺤﺎﺏ ﺍﻟﺸﺎﻓﻌﻲ ﻭﺃﺣﻤﺪ ، ﻭﻗﻴﻞ : ﺑﻞ ﻗﺮﺍﺀﺓ ﺍﻟﻔﺎﺗﺤﺔ ﻓﻴﻬﺎ ﺳﻨﺔ , ﻭﺇﻥ ﻟﻢ ﻳﻘﺮﺃ ﺑﻞ ﺩﻋﺎ ﺑﻼ ﻗﺮﺍﺀﺓ ﺟﺎﺯ , ﻭﻫﺬﺍ ﻫﻮ ﺍﻟﺼﻮﺍﺏ
ভাবার্থঃ-জানাযার নামাযে সূরায়ে ফাতেহা পড়া নিয়ে উলামায়ে কেরাম তিন দলে বিভক্ত।
ইমাম আবু হানিফা ও ইমাম মালিক রাহ, বলেন কোনো অবস্থাতেই মুস্তাহাব নয়।
ইমাম শা'ফী ও ইমাম আহমদ রাহ, বলেনঃসূরায়ে ফাতেহা পড়া ওয়াজিব।
কেউ কেউ বলেনঃ সূরায়ে ফাতেহা পড়া সুন্নাত।
যদি কেউ সূরায়ে ফাতেহা ক্বেরাত হিসেবে না পড়ে দু'আ হিসেবে পড়ে নেয়,তাহলে বৈধ আছে।
এবং এটাই গ্রহণযোগ্য ও সঠিক অভিমত। (ফাতাওয়ায়ে কুবরাঃ২/১২১)
এ'লাউস সুনানে হযরত যফর আহমদ উসমানী রাহ বলেনঃ দু'আ হিসেবে সুরায়ে ফাতেহা পড়ার অনুমোদন রয়েছে।
সূরা ফাতেহা ছাড়া নামাজ হবে না সম্ভলিত যে হাদিস বর্ণিত আছে,তা দ্বারা পূর্ণ নামায উদ্দেশ্য।
বাদায়ে সানায়ে-তে বর্ণিত আছে,
ﻭﻗﻮﻟﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﺍﻟﺴﻼﻡ } ﻻ ﺻﻼﺓ ﺇﻻ ﺑﻔﺎﺗﺤﺔ ﺍﻟﻜﺘﺎﺏ { ﻭﻻ ﺻﻼﺓ ﺇﻻ ﺑﻘﺮﺍﺀﺓ ﻻ ﻳﺘﻨﺎﻭﻝ ﺻﻼﺓ ﺍﻟﺠﻨﺎﺯﺓ ; ﻷﻧﻬﺎ ﻟﻴﺴﺖ ﺑﺼﻼﺓ ﺣﻘﻴﻘﺔ ﺇﻧﻤﺎ ﻫﻲ ﺩﻋﺎﺀ ﻭﺍﺳﺘﻐﻔﺎﺭ ﻟﻠﻤﻴﺖ
ﺍﻟﻜﺘﺐ » ﺑﺪﺍﺋﻊ ﺍﻟﺼﻨﺎﺋﻊ ﻓﻲ ﺗﺮﺗﻴﺐ ﺍﻟﺸﺮﺍﺋﻊ » ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﺼﻼﺓ
» ﻓﺼﻞ ﺑﻴﺎﻥ ﻓﺮﻳﻀﺔ ﺻﻼﺓ ﺍﻟﺠﻨﺎﺯﺓ ﻭﻛﻴﻔﻴﺔ ﻓﺮﺿﻴﺘﻬﺎ »
ﻓﺼﻞ ﺑﻴﺎﻥ ﻛﻴﻔﻴﺔ ﺍﻟﺼﻼﺓ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﺠﻨﺎﺯﺓ،١/٣١٤
"সূরা ফাতেহা ছাড়া নামাজ হবে না" সম্ভলিত হাদিস সালাতে জানাযাকে শামিল রাখবে না।কেননা তা বাস্তবিক অর্থে সালাত নয়।বরং তা মায়্যিতের জন্য দু'আ ও ইস্তেগফার মাত্র।(বাদায়ে সানায়ে-১/৩১৪)
জানাযার নামায চার তাকবীরে ফরযে কেফায়া।প্রথম তাকবীরের পর ছানা বা আল্লাহর প্রশংসা জ্ঞাপক কিছু পড়তে হবে।তারপর দ্বিতীয় তাকবীরের পর নবীর উপর দরুদ পাঠ করতে হবে।অতঃপর তৃতীয় তাকবীরের পর নির্ধারিত দু'আ " অাল্লাহুম্মাগফির লি-হায়্যিনা ওয়া মায়্যিত ওয়া শাহিদনা ওয়া কাবিরিনা ওয়া যাকারিনা ওয়া উনছানা" শেষ পর্যন্ত পূর্ণ দু'আকে পড়তে হবে।