আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
65 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (17 points)
আসসালামু আলাইকুম,

আমরা সবাই জানি রাসুল (সাঃ) এর নাম শুনলে অবশ্যই দরুদ পড়তে হবে। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে স্পেসিফিক ভাবে জানতে চাচ্ছি, সেইগুলোর বিধান কি হবে তা আপনার নিকট জানতে চাচ্ছি।

১) কলেমা তৈয়েবা পড়ার সময় "মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ" বলার পরেও কি দরুদ পড়া ওয়াজিব?

২) আজানের সময় "আশ হাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ" শোনার পর অনেকেই দরুদ পড়ে, সেটার বিধান কি?

৩) সুরা "মুহাম্মাদ" একটি সুরার নাম, সেই সুরার নাম নেওয়ার পরেও কি দরুদ পড়া ওয়াজিব?

৪) সুরা মুহাম্মাদে দুই নাম্বার আয়াতে রাসুল (সাঃ) এর নাম লেখা আছে, সেটা বা অন্য জায়গায় কোরআন তিলওয়াতের সময় তার নাম পড়লে কি দরুদ পড়া ওয়াজিব হবে?

৬) এছাড়াও অনেক নাশিদ বা নাতে রাসুলে এক সাথে একাধিকবার নবী (সাঃ) এর নাম নেওয়া হয়। সেই ক্ষেত্রে কি প্রতিবার আলাদা দরুদ পড়া লাগবে?

৭) জুনুবি অবস্থায় রাসুল (সাঃ) এর নাম শুনলে দরুদ পাঠের হুকুম কি হবে?

জাযাকাল্লাহু খাইরান।

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

https://ifatwa.info/8206/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 

শরীয়তের বিধান হলো মহানবী (সা.)-এর নাম বললে ও শুনলে তাঁর প্রতি দরুদ পড়া ওয়াজিব। তবে বারবার তাঁর নাম বললে ও শুনলে প্রথমবার দরুদ পড়া ওয়াজিব, অন্যান্য বার মুস্তাহাব। মুখে উচ্চারণ করলে যেমন দরুদ ও সালাম ওয়াজিব, তেমনি কলমে লিখলেও ওয়াজিব। জীবনে একবার দরুদ পড়া ফরজ।
,
আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, ‘অবশ্যই আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতারা নবীর প্রতি সালাত প্রেরণ করেন। হে মুমিনরা! তোমরাও তাঁর প্রতি যথাযথ সালাত ও সালাম পেশ করো।’ (সুরা : আহজাব, আয়াত : ৫৬)
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
 
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ الدَّوْرَقِيُّ، حَدَّثَنَا رِبْعِيُّ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ إِسْحَاقَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " رَغِمَ أَنْفُ رَجُلٍ ذُكِرْتُ عِنْدَهُ فَلَمْ يُصَلِّ عَلَىَّ وَرَغِمَ أَنْفُ رَجُلٍ دَخَلَ عَلَيْهِ رَمَضَانُ ثُمَّ انْسَلَخَ قَبْلَ أَنْ يُغْفَرَ لَهُ وَرَغِمَ أَنْفُ رَجُلٍ أَدْرَكَ عِنْدَهُ أَبَوَاهُ الْكِبَرَ فَلَمْ يُدْخِلاَهُ الْجَنَّةَ " . قَالَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ وَأَظُنُّهُ قَالَ أَوْ أَحَدُهُمَا . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ جَابِرٍ وَأَنَسٍ وَهَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ . وَرِبْعِيُّ بْنُ إِبْرَاهِيمَ هُوَ أَخُو إِسْمَاعِيلَ بْنِ إِبْرَاهِيمَ وَهُوَ ثِقَةٌ وَهُوَ ابْنُ عُلَيَّةَ . وَيُرْوَى عَنْ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ قَالَ إِذَا صَلَّى الرَّجُلُ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مَرَّةً فِي الْمَجْلِسِ أَجْزَأَ عَنْهُ مَا كَانَ فِي ذَلِكَ الْمَجْلِسِ .

আহামাদ ইবন ইবরাহীম দাওরাকী (রহঃ) ...... আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ঐ ব্যক্তির নাক ধূলিমলিন হোক, যার কাছে আমার উল্লেখ করা হল অথচ আমার উপর দরুদ পাঠ করল না। ওই ব্যক্তির নাক ধূলিমলিন হোক, যার জীবনে রমযান মাস এল কিন্তু তাকে ক্ষমাপ্রাপ্ত না করেই তা অতিবাহিত হয়ে গেল। ওই ব্যক্তির নাক ধূলিমলিন হোক, যে তার পিতামাতাকে (বা তাদের একজনকে) বৃদ্ধাবস্থায় পেল কিন্তু তাদের খেদমত করার মাধ্যমে সে জান্নাতী হতে পারলনা। আবদুর রহমান বলেনঃ আমি মনে করি তিনি বলেছেন তাদের (পিতামাতার) একজনকে পেল। 

এই বিষয়ে জাবির ও আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকেও হাদীস বর্ণিত আছে। হাদীসটি হাসান এই সূত্রে গারীব। রিবই ইবন ইবরাহীম (রহঃ) ইসমাইল ইবন ইবরাহীম ইবন উলাইয়্যা-এর ভাই। ইনি নির্ভরযোগ্য। কোন কোন আলিম থেকে বর্ণিত আছে যে, কোন ব্যক্তি যদি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর মজলিসে একবার দ্রুদ পাঠ করে, তবে ঐ বৈঠকের জন্য তা-ই যথেষ্ট।
(তিরমিজি ৩৫৪৫,মিশকাত ৯২৭, তা'লীকুর রাগীব ২/২৮৩)
,
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ مُوسَى، وَزِيَادُ بْنُ أَيُّوبَ، قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو عَامِرٍ الْعَقَدِيُّ، عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ بِلاَلٍ، عَنْ عُمَارَةَ بْنِ غَزِيَّةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَلِيِّ بْنِ حُسَيْنِ بْنِ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ حُسَيْنِ بْنِ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " الْبَخِيلُ الَّذِي مَنْ ذُكِرْتُ عِنْدَهُ فَلَمْ يُصَلِّ عَلَىَّ "

ইয়াহইয়া ইবন মূসা ও যিয়াদ ইবন আয়্যূব (রহঃ) ..... আলী ইবন আবূ তালিব রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কৃপন সেই ব্যক্তি, যার নিকট আমার উল্লেখ করা হল কিন্তু সে আমার উপর দরুদ পাঠ করল না। 
(মিশকাত ৯৩৩, সালাতের ফাযিলাত ১৪/৩১-৩৯, তা'লীকুর রাগীব ২/২৪৮, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ৩৫৪৬ [আল মাদানী প্রকাশনী]
,
একই মজলিসে একাধিকবার রাসুলুল্লাহ সাঃ এর নাম বলা হলে ১ম বার দরুদ শরীফ পাঠ ওয়াজিব।
১ম বার তৎক্ষনাৎ দরূদ না পড়লে গুনাহ হবে।
,
এর পরবর্তীতে  তৎক্ষনাৎ দুরূদ না পড়লে গুনাহ  হবেনা।
যদি দরুদ নাও পড়ে,তাহলেও গুনাহ হবেনা।
কারন এক্ষেত্রে দরুদ শরীফ পাঠ মুস্তাহাব।   

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
(০১)
এক্ষেত্রে দরুদ পাঠ ওয়াজিব।

(০২)
এটি নিয়মের খেলাফ কাজ।

এক্ষেত্রে আযানের জবাব হিসেবে "আশ হাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ" বলাই উচিত 
কেননা হাদীস শরীফে এমনটিই এসেছে। 

(০৩)
এক্ষেত্রে তিলাওয়াত রত অবস্থায় থাকলে দরুদ পাঠ আবশ্যক নয়।

অন্যথায় এমনিতেই সুরাটির নাম বললে দরুদ শরীফ পাঠ করে নিবেন।

(০৪)
এক্ষেত্রে দরুদ পড়া ওয়াজিব হবেনা।

(০৬)
সেই ক্ষেত্রে কি প্রতিবার আলাদা দরুদ পড়া লাগবেনা।
একবার দরুদ পাঠ করাই যথেষ্ট। 

(০৭)
এক্ষেত্রে দরুদ পাঠ করতে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। দরুদ শরীফ পাঠ করা যাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...