আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
96 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (9 points)
১. বিশেষ একটি নিয়ত নিয়ে প্ল্যান করেছিলাম টানা ৪০ দিন জামায়াত এ নামাজ পরব এক ওয়াক্তও মিস হবে করব না । ল্যাব ফাইনাল থাকার কারণে জোহরের নামাজ জামায়াত এ পড়তে পরি নি আর ঘুম এর কারণে একদিন ফজর জামায়াত এ মিস হয়েছে । এখন আমি কি আবার ও শুরু থেকে কাউন্ট করব ৪০ দিন  যেহেতু নিয়ত টা এমনই  ছিল এবং আশা  করছিলাম এর বদলতে আল্লহ আমার সার্বিক অবস্থার পরিবর্তন করে দিবেন
২. আমার রুটিন অনুযায়ী আমি ৯-১০ টায় ঘুমে যাই এবং ফজর এর ওয়াক্ত হবার আগেই উঠে যাই । এজন্য মাঝে মাঝেই ইশা এর সুন্নত এবং বিতর তখন পরি কিন্তু ইদানিং গত ২-৩ দীন খেয়াল করলাম মাঝে মাঝেই ফজর এর আজান এ উঠে গেছি মানে আমার সুন্নত এবং বিতর মিস হয়ে গেছে । এখন  মিস হওয়া বিতর কি কাযা পরতে হবে ? হলে কোন সময় পরব?
৩. কোন নন মাহরাম কে অসুস্থ দেখলে তার সুস্থতার জন্য নফল নামাজ পড়ে দুয়া করলে  কি গুনাহ হবে কি না ? পরিচিত নন মাহরাম দের জন্য কতটুকু দুয়া করা বৈধ ?

1 Answer

0 votes
by (575,580 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
হ্যাঁ, আপনি আবার ও শুরু থেকে ৪০ দিন কাউন্ট করতে পারবেন।

কোনো সমস্যা নেই।

উল্লেখ্য, এটা আপনার উপর আবশ্যক নয়,শুধু নিয়ত বা প্ল্যানের দ্বারা আপনার উপর কাজটি আবশ্যক হয়ে যায়নি।

তদুপরি উক্ত কাজটি করতে পারলে ভালো,অনেক ফজিলত পূর্ণ একটি আমল।

(০২)
বিতির নামাজ ওয়াজিব, ছুটে গেলে সেটির কাজা আদায় করাও ওয়াজিব।

বিতির নামাজের কাজা আপনাকে তিন রাকাত আদায় করতে হবে।
স্বাভাবিক ভাবে শেষ রাকাতে রুকুর আগে তাকবির বলে হাত বেধে দোয়ায়ে কুনুত পড়বেন।
জনসম্মুখে বা মসজিদে বিতর এর কাজা আদায় করলে ৩য় রাকাতে দোয়ায়ে কুনুতের আগে হাত উত্তোলন করবেননা।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- « إِذَا رَقَدَ أَحَدُكُمْ عَنِ الصَّلاَةِ أَوْ غَفَلَ عَنْهَا فَلْيُصَلِّهَا إِذَا ذَكَرَهَا فَإِنَّ اللَّهَ يَقُولُ أَقِمِ الصَّلاَةَ لِذِكْرِى

অনুবাদ-যখন তোমাদের কেউ নামায ছেড়ে ঘুমিয়ে পড়ে, বা নামায থেকে গাফেল হয়ে যায়, তাহলে তার যখন বোধোদয় হবে তখন সে যেন তা আদায় করে নেয়। কেননা আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন-আমাকে স্মরণ হলে নামায আদায় কর।
(সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৬০১
মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১২৯৩২
সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-৪১৮২)

ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় বর্ণিত রয়েছে,

وفي الفتاوى رجل يقضي الفوائت فإنه يقضي الوتر وإن لم يستيقن أنه هل بقي عليه وتر أو لم يبق فإنه يصلي ثلاث ركعات ويقنت ثم يقعد قدر التشهد ثم يصلي ركعة أخرى فإن كان وترا فقد أداه وإن لم يكن فقد صلى التطوع أربعا ولا يضره القنوت في التطوع

ফাতাওয়ার কিতাব সমূহে বর্ণিত রয়েছে,একজন ব্যক্তি সে তার জীবনের ছুটে যাওয়া নামায সমূহের কা'যা করতেছে।তাহলে সে বিতিরেরও কা'যা করবে।যদি নিশ্চিত না থাকে যে,তার উপর কোনো বিতির কা'যা রয়েছে কি না?তাহলে সে তিন রা'কাত কা'যা পড়বে,এবং কুনুত করবে।অতঃপর তাশাহুদ পরিমাণ সময় বৈঠক করবে।অতঃপর আরো এক রাকাত পড়বে।যদি সেটা বিতির হয়ে থাকে, তাহলে সেটা আদায় হয়ে যাবে।আর যদি বিতির না হয়ে থাকে,তাহলে তো সে চার রাকাত পড়েই নিয়েছে যা নফল হিসেবে গণ্য হবে।নফল নামাযে কুনুত করাতে কোনো সমস্যা নেই।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/১২৫)

বিতির নামাজের কাযা সংক্রান্ত জানুনঃ-

আরো জানুনঃ  


মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

وَ کَذٰلِکَ اَعۡثَرۡنَا عَلَیۡہِمۡ لِیَعۡلَمُوۡۤا اَنَّ وَعۡدَ اللّٰہِ حَقٌّ وَّ اَنَّ السَّاعَۃَ لَا رَیۡبَ فِیۡہَا ۚ٭ اِذۡ یَتَنَازَعُوۡنَ بَیۡنَہُمۡ اَمۡرَہُمۡ فَقَالُوا ابۡنُوۡا عَلَیۡہِمۡ بُنۡیَانًا ؕ رَبُّہُمۡ اَعۡلَمُ بِہِمۡ ؕ قَالَ الَّذِیۡنَ غَلَبُوۡا عَلٰۤی اَمۡرِہِمۡ لَنَتَّخِذَنَّ عَلَیۡہِمۡ مَّسۡجِدًا ﴿۲۱﴾ 

এভাবে আমি (মানুষকে) তাদের বিষয়ে জানিয়ে দিলাম, যাতে তারা জানতে পারে যে আল্লাহর ওয়াদা সত্য এবং কিয়ামত বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। যখন তারা তাদের কর্তব্যের বিষয়ে নিজেদের মধ্যে বিতর্ক করছিল, তখন অনেকে বলল, তাদের ওপর এক স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করো। তাদের প্রতিপালক তাদের বিষয়ে ভালো জানেন। তাদের কর্তব্য বিষয়ে যাদের মত প্রবল হলো তারা বলল, নিশ্চয়ই আমরা তাদের পাশে মসজিদ নির্মাণ করব।
(সুরা কাহাফ ২১)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
আপনাকে সেই বিতর নামাজ গুলোর কাজা অবশ্যই আদায় করতে হবে।
তবে ইশার সুন্নাতের কাজা আদায় করতে হবেনা।

আপনি নামাজের নিষিদ্ধ ওয়াক্ত ব্যাতিত যেকোনো সময় বিতর নামাজের কাজা আদায় করতে পারবেন।

তবে মসজিদে বা জনসম্মুখে বিতিরকে কা'যা করলে হাতু উত্তোলন করে কুনুত করা যাবে না।
যেমন রদ্দুল মুহতারে বর্ণিত রয়েছে- 
أما في القضاء عند الناس فلا يرفع حتى لا يطلع أحد على تقصيره. اه
বিতিরের নামাযকে যদি মসজিদে বা জনসম্মুখে কা'যা করা হয়,তাহলে কুনুতের সময় তাকবীর অবশ্যই বলা যাবে, তবে হাত উত্তোলন করা যাবে না।

হাদীসে এসেছে-

عَنْ عُقْبَةَ بْنَ عَامِرٍ الْجُهَنِيَّ، يَقُولُ ثَلاَثُ سَاعَاتٍ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَنْهَانَا أَنْ نُصَلِّيَ فِيهِنَّ أَوْ نَقْبُرَ فِيهِنَّ مَوْتَانَا حِينَ تَطْلُعُ الشَّمْسُ بَازِغَةً حَتَّى تَرْتَفِعَ وَحِينَ يَقُومُ قَائِمُ الظَّهِيرَةِ حَتَّى تَمِيلَ وَحِينَ تَضَيَّفُ الشَّمْسُ لِلْغُرُوبِ حَتَّى تَغْرُبَ .

উকবা ইবনু আমির জুহানী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনতিনটি সময় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের সালাত আদায় করতে ও মৃত ব্যাক্তিকে কবরস্থ করতে নিষেধ করেছেন (১) যখন সুর্য আলোকিত হয়ে উদয় হয়যাবৎ না ঊর্ধাকাশে উঠে; (২) যখন দ্বিপ্রহর হয়যাবৎ না সুর্য হেলে পড়ে আর (৩) যখন সুর্য অস্ত যাওয়ার উপক্রম হয়যাবৎ না সম্পূর্ণ অস্ত যায়।( সুনান আন-নাসায়ী ,৫৬১)


(০৩)
গুনাহ হবেনা।
তবে মনের মধ্যে যেনো তার প্রতি আকর্ষন সৃষ্টি না হয়,সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 774 views
...