আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
43 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (5 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু
আমার পরিচিত এক ভাইয়ের প্রশ্ন:

আমি মোঃ আজিম খান IOM       এর আলিম কোষের স্টুডেন্ট আমি ভারত বর্ষ থেকে বলছি

আমি এই ভারতবর্ষে ব্যাংকের মাধ্যমে যে ইন্টারেস্ট আসে ওটা জায়েজ কিনা না জায়েজ এটা নিয়ে আমি মেহনত  করি 2010  সাল পজন্ত । আমি ভারতবর্ষের অনেক জায়গায় ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করি যে এই ভারতবর্ষে ওটা জায়েজ কি জায়েজ না । মূলত দুটো মত আমার কাছে স্পষ্ট ভাবে আসে একমত হচ্ছে যারা জামাতপন্থী তারা বলছে এটা কখনোই জায়েজ নয় এটা হারাম হারাম হারাম হারাম অন্যদিকে আরেকটা মত একটা পন্থা একটা দল সে সাজেস্ট করছে এটা ভারত বর্ষ মত জায়গা থেকে এটা হালাল এখানে মুসলিম শাসিত কোন রাজা নেই বা সংখ্যালঘু এক এক্ষেত্রে এই ইন্টারেস্টটা এখানে নেওয়া জায়েজ ।

যে  মতটা নাজায়েজ বলে ঘোষণা করছে তাদের বক্তব্য এটা জায়েজ তখনই হবে সেই দেশেই হবে যে দেশের  মুসলিমরা প্রকাশ্যে নামাজ পড়তে পারেনা বা কোন ফরজ কাজ করতে পারে না এই ইন্টারেস্ট নেওয়া জায়েজ আছে কিন্তু ভারতবর্ষে এখনো সেই পরিস্থিতি নেই যে নামাজপ্রকাশ্যভাবে পড়া যায় না। তাই সেই জায়গা থেকে দাঁড়িয়ে এই ইন্টারেস্টটা এ দেশে নেওয়া হারাম ।।

২০১৫-১৬ সাল এর দিকে ভারতবর্ষের পরিস্থিতিটা কিছু মুসলিম  বিরোধী হয়ে যাওয়ায় এবং আমাদের ভারতবর্ষের বেশ কিছু গ্রাম অঞ্চলে মুসলমান ভাইদের অবস্থা খুব করুন দেখায় এমন হয় তারা পয়সার জন্য ট্রিটমেন্ট করতে পারেনা।
 অপারেশন করতে পারে না কেউ খুব দুরারোগ্য ভুগছে ট্রিটমেন্ট করার মত পয়সা া পায় না কেউ দুবেলা ঠিকমতো খাবারও খেতে পারি না এসব আমার চোখে আশাতে ২০১৫-১৬ সালের পর থেকে ব্যাংকের মাধ্যমে যে ইন্টারেস্ট পায় সেটা নিতে থাকি এবং সেটা এবং সেটা সমস্তটাই আমার মুসলিম ভাইদের দিকে আমি দান করে দিই ।
আমার এখানে তিনটে প্রশ্ন মুসলিম তরিকা অনুযায়ী জানার ইচ্ছা আছে
১) ভারতবর্ষ এরকম পরিস্থিতিতে ব্যাংকের মাধ্যমে ইন্টারেস্টটা নেওয়া জায়েজ আছে কিনা?

২) জায়েজ না হয় তাহলে আমি যে পয়সাটা নিচ্ছি এবং সেটা সমস্ত টাই আমি দান করে দিচ্ছি আমি দান করে দিচ্ছি সেটা কি আমি হারাম বা গুণার কাজ করছি  ????

৩) যে ইন্টারেস্ট আমারটা আমার সেভিংস অ্যাকাউন্টে ঢুকে সেখানে government thirty percent tax সেখানে government 30% ট্যাক্স ইনকাম ট্যাক্স আমাকে দিতে হয় তাই আমি যে ইন্টারেস্ট এমনটা ঢুকে তার থেকে থার্টি পার্সেন্ট টেক্স জমা করার জন্য জমা দি আর বাকিটা দান করি এই হিসেবে আমি হিসাবে আমি মেন্টেন করি আমাকে কি পুরো টাকাটাই দান করতে হবে নাকি গভর্মেন্ট আমাকে কি পুরো টাকাটাই দান করতে হবে নাকি গভর্মেন্ট আমাকে কি পুরো টাকাটাই দান করতে হবে নাকি গভর্মেন্টকে যেটা দিচ্ছি সেটা বাদ দিয়ে বাকিটা দান করতে হবে

1 Answer

0 votes
by (547,020 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

https://ifatwa.info/102547 নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন  

الَّذِينَ يَأْكُلُونَ الرِّبَا لَا يَقُومُونَ إِلَّا كَمَا يَقُومُ الَّذِي يَتَخَبَّطُهُ الشَّيْطَانُ مِنَ الْمَسِّ ۚ ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمْ قَالُوا إِنَّمَا الْبَيْعُ مِثْلُ الرِّبَا ۗ وَأَحَلَّ اللَّهُ الْبَيْعَ وَحَرَّمَ الرِّبَا ۚ فَمَنْ جَاءَهُ مَوْعِظَةٌ مِنْ رَبِّهِ فَانْتَهَىٰ فَلَهُ مَا سَلَفَ وَأَمْرُهُ إِلَى اللَّهِ ۖ وَمَنْ عَادَ فَأُولَٰئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ ۖ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ [٢:٢٧٥

যারা সুদ খায়, তারা কিয়ামতে দন্ডায়মান হবে, যেভাবে দন্ডায়মান হয় ঐ ব্যক্তি, যাকে শয়তান আসর করে মোহাবিষ্ট করে দেয়। তাদের এ অবস্থার কারণ এই যে, তারা বলেছেঃ ক্রয়-বিক্রয় ও তো সুদ নেয়ারই মত! অথচ আল্লাহ তা’আলা ক্রয়-বিক্রয় বৈধ করেছেন এবং সুদ হারাম করেছেন। অতঃপর যার কাছে তার পালনকর্তার পক্ষ থেকে উপদেশ এসেছে এবং সে বিরত হয়েছে, পূর্বে যা হয়ে গেছে, তা তার। তার ব্যাপার আল্লাহর উপর নির্ভরশীল। আর যারা পুনরায় সুদ নেয়, তারাই দোযখে যাবে। তারা সেখানে চিরকাল অবস্থান করবে। {সূরা বাকারা-২৭৫}

হাদীস শরীফে এসেছে  
عبد الله بن مسعود عن أبيه عن النبي صلى الله عليه وسلم قال لعن الله آكل الربا وموكله وشاهديه وكاتبه

হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাঃ এর পিতা থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-“যে সুদ খায়, যে সুদ খাওয়ায়, তার সাক্ষী যে হয়, আর দলিল যে লিখে তাদের সকলেরই উপর আল্লাহ তায়ালা অভিশাপ করেছেন। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস নং-৩৮০৯, মুসনাদে আবি ইয়ালা, হাদিস নং-৪৯৮১)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
অমুসলিম দেশে সুদ খাওয়া ও নেওয়া মুসলমানদের জন্য জায়েজ নেই।

اعلاء السنن:

"ولو سلمنا جواز الربا بین المسلم والحربی فی الہند،فلا ریب ان جانب احتیاط والتوقی عنہ اولیٰ واحریٰ."

(کتاب البیوع، ابواب بیوع الربا،ج:14،ص:368،ط:ادارۃ القرآن کراچی)

যদি আমরা ভারতে একজন মুসলমান এবং একজন যোদ্ধার মধ্যে সুদ গ্রহণের অনুমতি গ্রহণ করি, তবে সন্দেহ নেই যে সতর্কতা এবং এড়িয়ে চলার দিকটি উত্তম এবং গুরুত্বপূর্ণ।

الفروق للقرافی:

"فان اختلف العلماء فی فعل هل هو مباح او حرام فالورع الترک."

( الفرق السادس والعشرون والمئتان من الفروق، ج: 4، ص:27،ط:عالم الکتب) 

কোনো কাজ জায়েজ না হারাম এ বিষয়ে আলেমদের মতভেদ থাকলে তাকওয়াই পরিত্যাগ।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
অমুসলিম দেশে সুদ খাওয়া ও নেওয়া মুসলমানদের জন্য জায়েজ নেই।
তবে বিষয়টি মতবিরোধ পূর্ণ মাসয়ালা।

কেহ কেহ বলেন,অমুসলিমদের থেকে সূদ গ্রহণে বাধা নেই। তবে তাদেরকে সূদ দেওয়া যাবে না। যার দলীল হিসাবে তারা একটি হাদীছ পেশ করেছেন যেখানে বলা হয়েছে যে, لَا رِبًا بَيْن الْمُسلم وَالْحَرْبِيّ فِي دَار الْحَرْب ‘দারুল হারবে মুসলিম ও হারবীর মধ্যে কোন সূদ নেই’ (ইবনু হাজার, আদ-দিরায়াহ হা/৭৯৮)।

বর্ণনাটি মুনকার ও যঈফ (সিলসিলা যঈফাহ হা/৬৫৩৩)। 

নববী রহঃ বলেন, বর্ণনাটি মুরসাল ও যঈফ এবং এতে কোন দলীল নেই (আল-মাজমূ‘ ৯/৩৯২)। 

ইমাম শাফেঈ (রহঃ) বলেন, যা দ্বারা আবু ইউসুফ আবু হানীফার জন্য দলীল গ্রহণ করেছেন তা প্রমাণিত নয়। অতএব তাতে কোন দলীল নেই’ (কিতাবুল উম্ম ৭/৩৭৯)।

★কুরআনের অকাট্য আয়াতের বিপরীতে এমন হাদীস দিয়ে দলিল দিলে সেই দলিলের গ্রহনযোগ্যতা থাকেনা।
সুতরাং অমুসলিম দেশে সুদ খাওয়া ও নেওয়া মুসলমানদের জন্য জায়েজ নেই।
হারাম।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
(০১)
জায়েজ নেই।

(০২)
এক্ষেত্রে আপনি যদি উক্ত ইন্টারেস্ট এর টাকা নিয়ে ছওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরিব মিসকিনদের মাঝে দান করে দেন,সেক্ষেত্রে আপনি গুনাহগার হবেননা। 

(০৩)
গভর্মেন্টকে যেটা দিচ্ছেন,সেটা তো আপনার ব্যাক্তিগত খরচ হিসেবে প্রযোজ্য। 
সুতরাং সেখানে ইন্টারেস্ট এর টাকা দেয়া মানে নিজেই ইন্টারেস্ট এর টাকা ব্যবহার করা।

এ জন্য আপনি ইন্টারেস্ট এর পুরো টাকা ছওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরিব মিসকিনদের মাঝে দান করে দিবেন,আর আপনাকে যে government 30% ট্যাক্স ইনকাম ট্যাক্স  দিতে হয়,সেটা আপনি নিজের হালাল টাকা (মূলধন) হতে দিবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...