আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
641 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (22 points)
closed by
ক) স্বপ্নের ব্যাখ্যার জন্য কোন কোন বই পড়া ভালো হবে? বাংলা তে অনুবাদ আছে এমন।
খ) স্বপ্নের ব্যাখ্যা দেওয়া কি ঠিক? আপনারা ব্যাখ্যা দিয়েছেন অনেক। এর কারন কি?  এইসব কি আসলেই মিলে যায়?
গ) নাবালক বাদে বাকি কেউ যদি কেরাত বিশুদ্ধ না পারে, সেক্ষেত্রে ইমাম কে হবে? কোন লোকই একদমই কুরআন পড়তে পারেনা।
ঘ) জামাত শুরুর পরে অনেক বড় তিন চার তলা মসজিদের মধ্যে কারেন্ট চলে গেল। কেউ নিজ থেকে ইমামের সাথে সাথে আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার বলছে না,যার কারনে অনেক মানুষ বুঝছেই না যে কখন রুকু আর কখন কি! এক্ষেত্রে কিভাবে নামায শেষ করবে তারা?

ঙ) ছবি তোলা ও আপ্লোড করা কি জায়েয?
closed

1 Answer

+1 vote
by (597,330 points)
edited by
 
Best answer
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(ক)স্বপ্ন ব্যখ্যা করার জন্য কুরআন হাদীসের পান্ডত্য প্রয়োজন।তবে নিজে বুঝার জন্য বাংলা ভাষায় ইবনে সিরিনের কোনো কিতাব পাওয়া গেলে সেটা সংগ্রহে রাখা যেতে পারে।

(খ)রাসূলুল্লাহ সাঃ স্বপ্নের ব্যখ্যা দিয়েছেন। ব্যাখ্যা দেওয়া যাবে।তবে যিনি দিবেন,এ সম্পর্কে উনার পান্ডত্য ও জানাশোনা থাকতে হবে।
হযরত ইবনে যামল(/যিমল)রাযি. থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,
ﻋَﻦِ ﺍﺑْﻦِ ﺯَﻣْﻞٍ ، ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ ﻗَﺎﻝَ : ﻛَﺎﻥَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺇِﺫَﺍ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﺼُّﺒْﺢَ ﺍﺳْﺘَﻘْﺒَﻞَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱَ ﺑِﻮَﺟْﻬِﻪِ ، ﻭَﻛَﺎﻥَ ﻳُﻌْﺠِﺒُﻪُ ﺍﻟﺮُّﺅْﻳَﺎ ، ﻓَﻴَﻘُﻮﻝُ : " ﻫَﻞْ ﺭَﺃَﻯ ﺃَﺣَﺪُﻛُﻢْ ﺭُﺅْﻳَﺎ ؟ " ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺍﺑْﻦُ ﺯَﻣْﻞٍ : ﻓَﻘُﻠْﺖُ : ﺃَﻧَـﺎ ﻳَﺎ ﻧَﺒِﻲَّ ﺍﻟﻠَّﻪِ . ﻓَﻘَﺎﻝَ : " ﺧَﻴْﺮٌ ﺗَﻠَﻘَّﺎﻩُ ، ﻭَﺷَﺮٌّ ﺗَﻮَﻗَّﺎﻩُ ، ﻭَﺧَﻴْﺮٌ ﻟَﻨَﺎ ، ﻭَﺷَﺮٌّ ﻷَﻋْﺪَﺍﺋِﻨَﺎ ، ﻭَﺍﻟْﺤَﻤْﺪُ ﻟِﻠَّﻪِ ﺭَﺏِّ ﺍﻟْﻌَﺎﻟَﻤِﻴﻦَ ، ﺍﻗْﺼُﺺ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাহিস সালাম যখন ফজরের নামায পড়তেন,তখন তিনি মানুষের দিকে মুখ ফিরিয়ে বসতেন,রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাহিস সালাম এর স্বপ্ন শোনা বড়ই পছন্দনীয় ছিলো।
অতঃপর উপস্থিত জনতাকে লক্ষ্য করে বললেন,তোমাদের মধ্যে কি কেউ আজ স্বপ্ন দেখেছো?
ইবনে যামল বললেন, হে 'রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালাম' আমি দেখেছি। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালাম নিম্নোক্ত দু'আ টি পড়লেন,
ﺧَﻴْﺮٌ ﺗَﻠَﻘَّﺎﻩُ ، ﻭَﺷَﺮٌّ ﺗَﻮَﻗَّﺎﻩُ ، ﻭَﺧَﻴْﺮٌ ﻟَﻨَﺎ ، ﻭَﺷَﺮٌّ ﻷَﻋْﺪَﺍﺋِﻨَﺎ ، ﻭَﺍﻟْﺤَﻤْﺪُ ﻟِﻠَّﻪِ ﺭَﺏِّ ﺍﻟْﻌَﺎﻟَﻤِﻴﻦَ ،
(আ'মলুল ইয়াওমি ওয়াল-লাইল-৭৬৬)

সুতরাং স্বপ্নব্যখ্যা দেওয়া জায়েয রয়েছে।আমরা মূলত ব্যখ্যা করি না।বরং পূর্ববর্তী সালাফদের ব্যখ্যাকে প্রকাশ করে থাকি।পূর্বে তারা লিখে গেছেন,স্বপ্নে কি দেখলে কি হতে পারে?তাদের সেই ব্যখ্যা মানুষের স্বপ্নের সাথে মিলিয়ে প্রকাশ করি মাত্র।স্বপ্ন ব্যখ্যা স্বপ্ন দ্রষ্টার আ'মলের উপর নির্ভর করে থাকে।স্বপ্ন দেখার পর তিনি যদি নেক কাজ বেশী বেশী করেন,তাহলে ভবিষ্যৎ ভালো হবে।আর নয়তো তেমন ভালো হবে না।স্বপ্ন ব্যখ্যা ১০০%কিছু নয়।বরং এটা একটা ইশারা।সেই ইশারাকে আমরা দেখিয়ে দেই।বাস্তব হতে পারে,আবার নাও হতে পারে।

(গ)
নাবালকের পিছনে সাবালকদের জন্য ইকতেদা করা সহীহ হবে না।এ নিয়ে যদিও মতবিরোধ রয়েছে।তবে বিশুদ্ধ মত হল,নাবালকের পিছনে সাবালকদের ইকতেদা বিশুদ্ধ হবে না।ফরয নামাযে ও না এবং নফল নামাযেও না।সুতরাং তারাবিহ এ ও ইকতেদা বিশুদ্ধ হবে না।জানুন-1222

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
কেউ কেউ যেহেতু নফলে ইক্তেদাকে বিশুদ্ধ বলেন,তাই এক্ষেত্রে নাবালকের ইমামতি বিশুদ্ধ হওয়াই যুক্তিযুক্ত।(বিষয়টা গবেষনার ধাবী রাখে,তাই পরবর্তীতে সংশোধন করে দিবো যদি উল্টো কিছু সামনে আসে)

(ঘ)
এমতাবস্থায় যাদের জন্য ইমামের সাথে নামায আদায় করা সম্ভবপর হবে না।তারা নামাযকে ভেঙ্গে দিয়ে নিজে নিজে পূনরায় ঐ নামাযকে পড়ে নিবেন।

(ঙ)
ছবি সম্পর্কে হাদীস শরীফে কঠোর নিষেধাজ্ঞা এসেছে,যেমনঃ- 
হযরত ইবনে আব্বাস রাযি থেকে বর্ণিত,
عن ﺍﺑﻦ ﻋﺒﺎﺱ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﻤﺎ ﻗﺎﻝ : ﺳﻤﻌﺖ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻳﻘﻮﻝ :( ﻣﻦ ﺻَﻮَّﺭ ﺻﻮﺭﺓ ﻓﻲ ﺍﻟﺪﻧﻴﺎ ﻛُﻠِّﻒ ﺃﻥ ﻳَﻨْﻔُﺦ ﻓﻴﻬﺎ ﺍﻟﺮُّﻭﺡ ﻳﻮﻡ ﺍﻟﻘﻴﺎﻣﺔ ﻭﻟﻴﺲ ﺑﻨﺎﻓﺦ )
তরজমাঃ- ইবনে আব্বাস রাঃ বলেন, আমি নবী কারীম সাঃ কে বলতে শুনেছি, যে তিনি বলেছেন,
যে ব্যক্তি পৃথিবীতে কোন(জানোয়ারের) ছবি আকবে,কিয়ামতের দিন তাকে দায়িত্ব দেয়া হবে,সে যেন উক্ত ছবির ভিতরে রূহ প্রদান করে, অথচ রূহ প্রদান করা তার জন্য কস্মিনকালে ও সম্ভব হবে না(অতঃপর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করে আযাব প্রদান করা হবে)(সহীহ বুখারী -৫৬১৮)

ﻭَﻗَﺎﻝَ : ﺇﻥْ ﻛُﻨْﺖَ ﻻَ ﺑُﺪَّ ﻓَﺎﻋِﻼً ﻓَﺎﺻْﻨَﻊِ ﺍﻟﺸَّﺠَﺮَ ، ﻭَﻣَﺎ ﻻَ ﻧَﻔْﺲَ ﻟَﻪ 
হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ কে এক ব্যক্তি ছবি আকার অনুমতি প্রার্থনা করলে তিনি উত্তরে বললেনঃযদি তোমার ছবি একে উপার্জন করতেই হয় তাহলে তুমি গাছের ছবি আকো বা এমন ছবি আকো যাতে কোনো প্রাণীর ছবি নেই।(সহীহ বুখারী- ২২২৫)বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- 2253

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
ছবি তুলা ও আপলোড করা গোনাহ।চায় মুবাইল দ্বারা তুলা হোক বা হাতে অঙ্কিত ছবি হোক। সবগুলোই হারাম ও নাজায়েয। শুধুমাত্র শরয়ী প্রয়োজনে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ছবির অনুমোদন রয়েছে


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (597,330 points)
সংশোধন ও সংযোজন করা হয়েছে
by (22 points)
ustad.. স্বপ্নের ব্যাখ্যা জানা কি মানব জীবনে দরকার আছে অনেক? 
by (597,330 points)
ইউসুফ আঃ এর সময়কার বাদশা যে বিষয়টা স্বপ্নে দেখেছিলো,যদি সে ভালো কোনো মুদাব্বিরের সন্ধান না পেতো,তাহলে সে অগ্রিম প্রস্তুতি নিতে পারতো না।এবং প্রজাদেরকে সুখে শান্তিতে রাখতে পারতো না।স্বপ্ন আল্লাহর তরফ থেকে একটি ইশারা।কুরআন হাদীসের আলোকে সেই ইশারাকে বুঝতে হবে। তবে কিছু স্বপ্ন মনের কল্পনা জল্পনাও থাকে।স্বপ্ন ব্যখা জানাও একটা গুরুত্ব পূর্ণ বিষয়।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

+1 vote
1 answer 2,748 views
...