আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
63 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (18 points)
reshown by
আসসালামু আলাইকুম শায়েখ।
আমি কিছুদিন পর এক মেয়েকে বিয়ে করব।উনার আগে একটা বিয়ে হয়েছিল।তাই আমি জানতে চেয়েছিলাম যে উনার বিয়ে শুদ্ধ হয়েছে কিনা এবং তাকে বিয়ে করা আমার জন্য হালাল হবে নাকি।
মেয়েটার ১ম স্বামী নেশা করত আর জুয়াও খেলত।তো এই জিনিসটা মেয়ের পছন্দ ছিল না।ওদের বিয়ের সময় মেয়েকে খালি জিজ্ঞাস করেছিল যে তুমি বিয়েতে রাজি নাকি।মেয়ে বলেছিল হ্যা,কবুল বলেনি।এরপর কিছুদিন স্বামীর কাছে থেকে স্বামীর এসব অপকর্ম দেখে তার বাবার বাড়ি চলে আসে।মেয়েটা স্বামীকে তালাক দিতে চাচ্ছিল প্রথমে,কিন্তু স্বামী চাইনি প্রথমে।তাও মেয়েটা স্বামীর কাছে ফিরে যাইনি।এরপর একদিন ফোনে ওদের অনেক জগড়া হয়,স্বামী মেয়েকে অনেক আজে বাজে কথা বলে।পরে মেয়ে বলেছিল আমাকে তালাক দিয়ে দে যেহেতু আমি এমন।পরে স্বামী বলেছিল যে,যা যা তোর মতো মেয়েরে আমি তালাক দিলাম। ১ তালাক,২ তালাক, ৩ তালাক।এরপর কল কেটে দিয়েছিল।এরপর ওর স্বামী আবার চেষ্টা করেছিল যাতে মেয়েটা সংসার করে।কিন্তু কলে তালাকের কথা বলার পর তাদের আইনীভাবেও তালাক হয়ে যায়।এরপর ২ বছর ধরে তার কাছে যায় নি।তাদের মধ্যে সংসারও আর ঠিক হয়নি।ছেলে তাকে তার মহরানাও পরিশোধ করেনি।পরবর্তিতে তালাকের পর মেয়ে মহরানা মাফ করে দেয়।
১। ওদের তালাক কি হয়েছে?
২। এখন আমি কি মেয়েকে বিয়ে করতে পারব?আমার কি সামনে কোনো বাধার সম্মুখীন হতে হবে ইসলামিক বিধান অনুযায়ী?
৩। যদি তালাক না হয়ে থাকে তাহলে ইসলামিক বিধান অনুযায়ী কি করলে তালাক হবে?
৪। মেয়ের পক্ষ থেকে কি তালাক দেওয়ার কোন উপায় আছে?

1 Answer

0 votes
by (59,940 points)

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/55291/  নং ফাতাওয়াতে আমরা বলেছি যে,

তালাক দেওয়ার অধিকার শুধু স্বামীর। হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم رَجُلٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّ سَيِّدِي زَوَّجَنِي أَمَتَهُ وَهُوَ يُرِيدُ أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنِي وَبَيْنَهَا قَالَ فَصَعِدَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الْمِنْبَرَ فَقَالَ يَا أَيُّهَا النَّاسُ مَا بَالُ أَحَدِكُمْ يُزَوِّجُ عَبْدَهُ أَمَتَهُ ثُمَّ يُرِيدُ أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنَهُمَا إِنَّمَا الطَّلَاقُ لِمَنْ أَخَذَ بِالسَّاقِ

ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকটে এসে বললো, হে আল্লাহর রসূল! আমার মনিব তাঁর বাদীকে আমার সাথে বিবাহ দিয়েছে। এখন সে আমার আর আমার স্ত্রীর মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়। রাবী বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মিম্বারে আরোহণ করলেন, অতঃপর বললেন, হে লোকসকল! তোমাদের কারো এরূপ আচরণ কেন করো যে, সে তার গোলামের সাথে তার বাদীর বিবাহ দেয়, অতঃপর তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়? নারীর ঊরু স্পর্শ করা যার জন্য বৈধ, তালাকের অধিকার তার। [সুনানে ইবনে মাজাহ ২০৮১]


হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " ثَلاَثٌ جِدُّهُنَّ جِدٌّ وَهَزْلُهُنَّ جِدٌّ النِّكَاحُ وَالطَّلاَقُ وَالرَّجْعَةُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ .

আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তিনটি বিষয় এমন যেগুলির যথার্থ তো যথার্থই এমনকি সেগুলোর কৌতুকের ব্যবহারও যথার্থ: বিবাহ, তালাক, রাজআত। - ইবনু মাজাহ ২০৩৯, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ১১৮৫ ইমাম আবূ ঈসা (রহঃ) বলেন, এই হাদীসটি হাসান-গারীব।


শরীয়তের বিধান অনুযায়ী মহিলা নিজের উপর কেবল তখনি তালাক পতিত করতে পারবে, যদি স্বামী তাকে তালাক দেবার অধিকার দিয়ে থাকে। এটি নিকাহ নামার ১৮ নং ধারাতে হ্যাঁ লেখার মাধ্যমেই হোক, বা পরবর্তীতে মৌখিক বা লিখিত ভাবেই হোক।

সুতরাং স্বামী যদি স্ত্রীকে তালাকের ক্ষমতা প্রদান করে,আর স্ত্রী স্বামী কর্তৃক তালাকে তাভবিজের ক্ষমতাবলে লিখিত বা মৌখিকভাবে নিজের নফসের উপর তালাক দিয়ে দিলে সেটি পতিত হয়ে যাবে।


আরো জানুনঃ

https://ifatwa.info/12329/


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই!


তালাক দেওয়ার অধিকার শুধু স্বামীর। তবে যদি স্বামী তার স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার অধিকার দিয়ে দেয় তাহলে সে ক্ষেত্রে স্ত্রী সে তার নিজের নফসের উপর তালাক দিতে পারবে। এভাবে বললে (আমি আমার নিজের উপর তালাক দিলাম) তালাক হবে। অন্যথায় স্ত্রী যদি স্বামীকে বলে যে, ‘আমি তোমাকে তালাক দিলাম’ তাহলে এতে কোনো তালাক পতিত হয় না।


প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে প্রথম বিয়ে ও তালাক হয়েছে কি না জানতে হলে বিবাহের কাবিননামা, ডিভোর্সড পেপার দেখার প্রয়োজন। কিছু অস্পষ্টতা থাকায় বিস্তারিত উত্তর দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাই বিয়ের কাবিননামা, তালাকনামা নিয়ে নিকটস্ত কোনো নির্ভরযোগ্য ইফতা বিভাগে সরাসরি যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করা হলো।


প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আমাদের পরামর্শ থাকবে যে, নির্ভরযোগ্য ইফতা বিভাগে সরাসরি যোগাযোগ করে সব কাগজপত্র সাবমিট করে সেখান থেকে ফতোয়া নেওয়ার পর, তারপর বিয়ের দিকে অগ্রসর হবেন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...