আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
35 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (5 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ,

উস্তাদ আমি পারিবারিক দিক থেকে হানাফি মাজহাব এর অনুসারী। মোটামুটি ওইভাবেই আমল করি। কিন্তু কিছুদিন আগে হাসব্যান্ড এর সাথে তালাক সংক্রান্ত বিষয়ে ঝামেলা হলে আমি ইউটিউবে সার্চ করে দেখি তালাক নিয়ে আহলে হাদিস দের ফতোয়া। আর সেটা দেখে আমি স্বস্তি পাই, তখন থেকেই আহলে হাদিস দের ভালো লাগতে শুরু হয়, তাদের বয়ান শুনি তাদের প্রতি একটা ভক্তি বিশ্বাস কাজ করতে শুরু করে, আবার যখন হানাফি মাজহাব এর ফতোয়া দেখি তালাক নিয়ে তখন দলিলের দিক থেকে হানাফি মাজহাব কে শক্তিশালী মনে হতো, কিন্তু ভাবতাম আহলে হাদিস ও তো কুরআন হাদিসের আলোকেই ফতোয়া দেয়,, তারপর থেকে তাদের বিভিন্ন বিষয়ে ফতোয়া অধিক সহীহ, আর যুক্তিাম্মত মনে হতে থাকে, যেমন হুরমত মুসাহারা, তারাবি ৮ রাকাআত, মেয়েদের নামাজ ছেলেদের মতো, মাঝে মাঝে ভাবতাম এটা অধিক সতর্কতার, তাই কয়েকবার চেষ্টা করেছি ছেলেদের মতো নামাজ পড়ার,  কিন্তু পারিনি, বা কষ্টসাধ্য হয়ে যায় এমন, পরে ভাবলাম আমি তো এমন অনেক আলেম ফলো করি যারা বলে মেয়েদের নামাজে পার্থক্য করে নামাজ পড়লে নামাজ হবে না এমন টা না। এটা মাজহাব এর ফতোয়া। সুতরাং আবারো আগের মতোই নামাজ পড়তে থাকি। এই ছাড়া ও কয়েকবার মনে মনে ভেবেছি আহলে হাদিস দের কথা শুনবো বা তাদের ফতোয়া গুলো মানবো যেহেতু অধিক শক্তিশালী দলিল আর সতর্কতার  মনে হয়েছে। তাদের কথা অনুযায়ী আমি কোরআন সুন্নাহর অনুসরন করবো, বা আমি একবার আমার ভাই এর কাছে এটাই বলছি বলে মনেহয় যে আমি একক কেনো মাজহাবে অন্ধ বিশ্বাস করিনা কোরআন এবং সুন্নাহ অনুসরন করি, কিন্তু আমি যে পুরোপুরি আহলে হাদিস হয়ে গেছি বেপার টা কিন্তু এমন না। কিন্তু আমি সর্বদা নিজেকে হানাফি বলেই পরিচয় দেই সবার কাছে এবং নামাজ রোজা ওভাবেই করি। আর আহমাদুল্লাহ হুজুরকে সর্বদা ফলো করি সব বেপারে।

এর মধ্যে আমার হাসবেন্ড এর সাথে ২ তালাক হয় পুরোপুরি নিশ্চিত হই, এবং তারপর ৩ তালাক ও হয় বুঝতে পারি। আর এগুলো ভিন্ন ভিন্ন সময়ে হয়,  তো শরয়ী হালালা করার জন্য দ্বিতীয় বিয়ে করতে হবে যেটা আমি জানি, আর তখন ২ জন স্বাক্ষীর সামনে ইজাব কবুল দ্বারা বিয়ে হবে যেটা হানাফি মাজহাব মতে বিয়ে শুদ্ধ হয়ে যাবে,  তো আমিও এটা বিশ্বাস করি আর এভাবে বিয়ে করি,  যদিও পূর্বে অভিভাবকের অনুমতি ছাড়া বিয়ে হবেনা এটাকে সবচেয়ে শক্তিশালী মত মনে করতাম, আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর হুজুর, আরো অনেকের ভিডিও দেখে তাই ভাবতাম, কিন্তু আমি অবিভাবকের অনুমতি ছাড়াই দ্বিতীয় বিয়ে করি হানাফি মাজহাব মতে, আর বিয়ের আগের দিন ও হাসবেন্ড এর কাছে এক প্রসঙ্গে বলি যে আমি হানাফি। এবং এই মতে যে বিয়ে সহীহ হয়ে যাবে সেটা ও পরিপূর্ণ বিশ্বাস করি।  এবং আহমাদুল্লাহ হুজুরের বয়ানেও দেখি যে তিনি বলেছেন এভাবে বিয়ে শুদ্ধ হয়ে যায়। আর সেটাই বিশ্বাস করি। এখন আমার প্রশ্ন হলো,,

১.আমি কি আসলে হানাফি মাজহাব এর?? আমার বিয়েটা কি সহীহ হয়েছিল অভিভাবক ছাড়া?  স্বামী সম্পূর্ণ হানাফি। আহমাদুল্লাহ এর বয়ানে শুনেছি বাংলাদেশে বেশিরভাগ যেই মাজহাব চলে, সেই মাযহাব ফলো করে এমন কেউ যদি ওই অনুযায়ী বিয়ে করে ফেলে তাহলে নাকি সেটা বিশুদ্ধ  হয়ে যাবে।
২. আমি এগুলো ঘাটাঘাটি করার পর জানতে পারি যে একটা মাজহাব মানলে পরিপূর্ণ মানতে হয়। এখন আমি যদি এখন থেকে অন্য কোনো দিকে না ঝুঁকে সম্পূর্ণরুপে হানাফি মাজহাবই ফলো করি তাহলে কি এই বিয়ে টা সহীহ হবে আমার জন্য? আমি কি হানাফি মাজহাব অনুযায়ী ফতোয়া গ্রহণ করে তার উপর আমল করতে পারবো??

1 Answer

0 votes
by (547,020 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

https://ifatwa.info/82185/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
কে কোন মাযহাব মানছে? কে কোন ইমামকে মানছে? এটাকে দেখে ফাতাওয়া দেওয়া হবে না।বরং যিনি ফাতাওয়া দিচ্ছেন, উনি উনার মাযহাবের আলোকেই ফাতাওয়া দিবেন।এটাই ফিকহের মূলনীতি।

যেমন, বৃটিশ হাইকোর্টে উঠে এটা বলা যাবে যে, আমাদের জন্য বাংলাদেশের ল অনুযায়ী রায় দেন, বরং কোর্ট যেহেতু বৃটিশ, তাই তারা তাদের তথা ইউ,কে  এর আইন অনুযায়ী রায় দিবে।

আমরা হানাফি ফিকহের মূলনীতির আলোকে ফাতাওয়া দিয়ে থাকি। সুতরাং অন্য মাযহাবে কি আছে, বা কে কোন মাযহাবকে ফলো করছে, সেটা আমাদের দেখার বিষয় নয়। যে যে মাযহাবকে অনুসরণ করবে, তার একান্ত দায়িত্ব সে ঐ মাযহাবের আলেমের নিকট মাস'আলা জিজ্ঞাসা করবে,ও সেই অনুযায়ী আ'মল করবে। স্বামী স্ত্রীর মধ্যে পরস্পর পরস্পরের মাযহাব ভিন্ন হলে, স্বামীর মাযহাবের আলোকেই বিষয়টার সমাধান বা নিষ্পত্তি হবে।

শরীয়তের বিধান হলো যদি দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক (বালেগ) সমঝদার (বুঝবান) সাক্ষ্যির সামনে প্রাপ্ত বয়স্ক (বালেগ) পাত্র ও পাত্রি (বালিগাহ)  যদি প্রস্তাব দেয় এবং অপরপক্ষ তা গ্রহণ করে নেয়, তাহলে ইসলামী শরীয়াহ মুতাবিক বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যায়। অভিভাবকের সম্মতি থাকুক বা না থাকুক। অভিভাবক জানুক বা না জানুক।

তবে যদি গায়রে কুফুতে বিবাহ করে, তথা এমন পাত্রীকে বিবাহ করে, যার কারণে ছেলে বা মেয়ের পারিবারিক সম্মান বিনষ্ট হয়, তাহলে পিতা সে বিয়ে আদালতের মাধ্যমে ভেঙ্গে দিতে পারে। যদি কুফুতে বিবাহ করে, তাহলে পিতা এ অধিকারও পাবে না।

বিস্তারিত জানুনঃ- 
,
রাসুল সাঃ কুফু মিলাইতে বলেছেনঃ

وَعَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «تُنْكَحُ الْمَرْأَةُ لِأَرْبَعٍ : لِمَالِهَا وَلِحَسَبِهَا وَلِجَمَالِهَا وَلِدِينِهَا فَاظْفَرْ بِذَاتِ الدَّيْنِ تَرِبَتْ يَدَاكَ»

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (মূলত) চারটি গুণের কারণে নারীকে বিবাহ করা হয়- নারীর ধন-সম্পদ, অথবা বংশ-মর্যাদা, অথবা রূপ-সৌন্দর্য, অথবা তার ধর্মভীরুর কারণে। (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন) সুতরাং ধর্মভীরুকে প্রাধান্য দিয়ে বিবাহ করে সফল হও। আর যদি এরূপ না কর তাহলে তোমার দু’ হাত ধূলায় ধূসরিত হোক (ধর্মভীরু মহিলাকে প্রাধান্য না দিলে ধ্বংস অবধারিত)!
(সহীহ বুখারী ৫০৯০, মুসলিম ১৪৬৬, নাসায়ী ৩২৩০, আবূ দাঊদ ২০৪৭, ইবনু মাজাহ ১৮৫৮, আহমাদ ৯৫২১, ইরওয়া ১৭৮৩, সহীহ আল জামি‘ ৩০০৩।)

কুফু সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ  https://www.ifatwa.info/4541/

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি যে শরয়ী হালালাহ এর জন্য ২য় বিবাহ করেছেন,সেটা সহীহ হয়েছে।

শরয়ী হালালাহ সংক্রান্ত জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...