দাওয়াত ও তাবলীগের কাজ অনেক বড় কাজ। অনেক সওয়াবের কাজ।
,
দাওয়াতে তাবলিগের সব ক’টি কাজই কিন্তু সুন্নাহ সম্মত। রাসূল সাঃ উপরোক্ত প্রতিটি কাজই করেছেন।
বাকি দাওয়াত দিতে বের হবার জন্য এখানে যে নির্দিষ্ট পরিমাণ দিনের পদ্ধতি রাখা হয়েছে, যেমন তিনদিন, চল্লিশ দিন, এক বছর, তিন বছর ইত্যাদি।
এ পরিমাণটা নির্দিষ্ট করা হয়েছে প্রশিক্ষণ ও দাওয়াত পদ্ধতির শৃংখলার জন্য। হুবহু এ পদ্ধতিতে সুন্নাহ বলা যাবে না। বাকি সুন্নাহের বাস্তবায়নের একটি মাধ্যম হওয়ায় তা’ও প্রশংসনীয় পদ্ধতি।
قُلْ إِن كَانَ آبَاؤُكُمْ وَأَبْنَاؤُكُمْ وَإِخْوَانُكُمْ وَأَزْوَاجُكُمْ وَعَشِيرَتُكُمْ وَأَمْوَالٌ اقْتَرَفْتُمُوهَا وَتِجَارَةٌ تَخْشَوْنَ كَسَادَهَا وَمَسَاكِنُ تَرْضَوْنَهَا أَحَبَّ إِلَيْكُم مِّنَ اللَّهِ وَرَسُولِهِ وَجِهَادٍ فِي سَبِيلِهِ فَتَرَبَّصُوا حَتَّىٰ يَأْتِيَ اللَّهُ بِأَمْرِهِ ۗ وَاللَّهُ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الْفَاسِقِينَ [٩:٢٤]
বল, তোমাদের নিকট যদি তোমাদের পিতা তোমাদের সন্তান, তোমাদের ভাই তোমাদের পত্নী, তোমাদের গোত্র তোমাদের অর্জিত ধন-সম্পদ, তোমাদের ব্যবসা যা বন্ধ হয়ে যাওয়ার ভয় কর এবং তোমাদের বাসস্থান-যাকে তোমরা পছন্দ কর-আল্লাহ, তাঁর রসূল ও তাঁর রাস্তায় জেহাদ তথা চেষ্টা-মেহনত [তাবলীগী সফর] করা থেকে অধিক প্রিয় হয়, তবে অপেক্ষা কর, আল্লাহর বিধান আসা পর্যন্ত, আর আল্লাহ ফাসেক সম্প্রদায়কে হেদায়েত করেন না। {সূরা তাওবা-২৪}
এ আয়াতে স্পষ্ট ভাষায় সন্তান সন্ততি, স্ত্রী আর বাসস্থানের মোহাব্বতে আল্লাহর রাস্তায় বের না হওয়ার ব্যাপারে কঠিন হুশিয়ারী উচ্চারিত হয়েছে।
,
عن البراء « أن النبي صلى الله عليه وسلم بعث خالد بن الوليد إلى أهل اليمن يدعوهم إلى الإسلام ، قال البراء : فكنت فيمن خرج مع خالد بن الوليد فأقمنا ستة أشهر ندعوهم إلى الإسلام فلم يجيبوه ، ثم إن النبي صلى الله عليه وسلم بعث علي بن أبي طالب رضي الله عنه فأمره أن يقفل خالدا إلى رجل كان ممن يمم مع خالد ، ومن أحب أن يعقب مع علي فليعقب معه ، قال البراء فكنت فيمن عقب مع علي ، فلما دنونا من القوم خرجوا لنا فصلى بنا علي ثم صفنا صفا واحدا ، ثم تقدم بين أيدينا وقرأ عليهم كتاب رسول الله صلى الله عليه وسلم ، فأسلمت همدان جمعا ، فكتب علي إلى رسول الله صلى الله عليه وسلم بإسلامهم ، فلما قرأ رسول الله صلى الله عليه وسلم الكتاب خر ساجدا ، ثم رفع رأسه فقال : » السلام على همدان ، السلام على همدان « أخرجه البخاري في الصحيح مختصرا من وجه آخر عن إبراهيم بن يوسف
অর্থঃ হযরত বারা রাঃ বলেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইয়ামান প্রদেশে তাবলীগের উদ্দেশ্যে হযরত খালীদ ইবেন ওয়ালিদ রাদিয়াল্লাহু আনহুকে পাঠান। আমিও তাঁদের সাথে ছিলাম। আমরা দীর্ঘ ৬মাস যাবত সেখানে দাওয়াত ও তাবলীগের কাজ অনবরত করে চলেছিলাম, কিন্তু তাদের কেউ তখনো আমাদের দাওয়াত কবুল করছিলো না। অতপর হযরত আলী রাযিয়াল্লাহু আনহুকে রাসূল আমীরের দায়িত্ব দিয়ে খালীদ রাযিয়াল্লাহু কে ফিরে যেতে বলেন এবং তাঁর সাথে যারা ফিরতে চায় তারা ফিরতে পারবে আর যারা থেকে যেতে চায় তারা থাকতে পারে। আমি হযরত আলী রাযিয়াল্লাহু আনহুর সাথে আরো সময় বাড়িয়ে নিলাম।
অতপর, আলী রাযিয়াল্লাহু আনহু আমাদেরকে নিয়ে নামাজ আদায় করলেন। পরে আমরা কাতারবন্দী হয়ে দাঁড়ালাম, এরপরে তিনি আমাদের মাঝে এগিয়ে এসে রাসূলুল্লাহর দাওয়াতনামা পড়ে শুনালেন। সাথে সাথে হামদান গোত্রের সবাই একই সাথে ইসলাম কবুল করে নিলেন।
এই খুশির সংবাদ লিখে হযরত আলী রাযিয়াল্লাহু আনহু রাসূলুল্লাহর নিকট পত্র পাঠালেন। যখন রাসূল উক্ত পত্রখানি পড়লেন, তখন সেজদায় লুটিয়ে পড়লেন। অতপর, মাথা উঠিয়ে বললেন, হামদানগোত্রের উপর শান্তি বর্ষিত হোক, হামদানগোত্রের উপর শান্তি বর্ষিত হোক।
অন্য রেওয়াতে আছে, উক্ত জামাত নিয়ে হযরত আলী রাযিয়াল্লাহু আনহু ৪ মাস পর ফিরে এলেন, বিদায় হজ্বের সময়। অতএব, উভয় আমীরের নেতৃত্বে আমাদের সময় অতিবাহিত হলো, প্রায় ১ বৎসর। (দালায়েলুন নাবাবিয়্যাহ লিলবায়হাকী, হাদীস নং-২১৩২, হায়াতুস সাহাবাহ, ১ম খ, পৃষ্ঠাঃ ১৭৯/ ১৪০, বুখারী শরীফ ২য় খন্ড, কিতাবুল মাগাজী।
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই বোন,
,
সামগ্রিকভাবে তাবলিগ-জামায়াতের মাধ্যমে দীনের অনেক ফায়দা হচ্ছে। এ দলের সাথে অংশগ্রহণ করা খুবই উত্তম। তবে যেহেতু অনেক সময় জামায়াতের আমীররা আলেম হন না, তাই তাদে্র মুখ থেকে যেন-তেন কথা বের হয়ে পড়ে। এরূপ পরিস্থিতিতে তাদেরকে ভালোবাসা দিয়ে নরম কথার মাধ্যমে বুঝিয়ে দিতে হবে। যদি এতে কাজ না হয় তাহলে জামায়াতের বড়দের কাছে বিষয়টি পেশ করতে হবে এবং বড়দের মাধ্যমে বিষয়টি বুঝিয়ে দিতে হবে। তবু তাবলিগ-জামায়াতকে উপেক্ষা করা যাবে না। (ফাতাওয়া উসমানি ১/২৪৬)
,
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যেহেতু তার জন্য ফ্যামিলিতে এখন সময় দেওয়া খুবই প্রয়োজন, ফ্যামিলিতে তার খুবই দরকার,সুতরাং এহেন পরিস্থিতিতে চাপে ফেলে ১২০ দিন সময় লাগানোর আদেশ করা ঠিক নয়।
তাই এহেন পরিস্থিতিতে সেই জামাতের আমীর সাহেবকে ভালোবাসা দিয়ে নরম কথার মাধ্যমে বুঝিয়ে দিতে হবে। যদি এতে কাজ না হয় তাহলে নিজ এলাকার তাবলীগ জামায়াতের বড়দের কাছে বিষয়টি পেশ করতে হবে এবং বড়দের মাধ্যমে বিষয়টি বুঝিয়ে দিতে হবে।