আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
75 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (14 points)
১।নারীরা তো প্রোফাইল পিকচার দেয়া জায়েজ নয়।এখন এ বিষয়ে কাউকে নাসিহা করার সময় প্রমাণ দিতে বলে।তখন কি কি আয়াত ও হাদিস বলা যায় একটু ব্যাখ্যা সহ বলবেন?

২।তখন অনেকে বলে মেয়েরা যেহেতু পর্দা করেও প্রোফাইল পিক দিতে পারবে না তাহলে তো মেয়েদের নিকাব পড়ে যে চোখ দেখা যায় তা কিভাবে জায়েজ হয়?এমন প্রশ্নে কিভাবে উত্তর দিবো?

৩।আল্লাহর নামে এভাবে মানত করা কি জায়েজ যে আমি এতো রাকাত সালাত পড়বো বা এই কয়টা রোজা রাখবো?যদি কারো পর্যাপ্ত টাকা না থাকে তখন তো গোপন দান সাদাকাহ বেশি করতে পারে না তাই কি মানত করতে পারবে?

1 Answer

0 votes
by (61,230 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

https://ifatwa.info/17341/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ 

ইসলামের মৌলিক বিধান হচ্ছে, জড়বস্তুর ছবি তোলা ও আঁকায় শরয়ী কোন বিধিনিষেধ নেই। আর প্রাণীর ছবি প্রয়োজন ছাড়া তোলা, সংরক্ষণ করা, প্রকাশ করা, ব্যবহার করা হারাম।  তবে শরীয়তে ছবি বলতে কী বোঝায়, এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা ও বিশ্লেষণ রয়েছে।

আরো জানুনঃ  https://ifatwa.info/4522/

অনেক বিশেষজ্ঞের মতে ডিজিটাল ক্যামেরায় ছবি তোলা, কম্পিউটার ও মোবাইলে সংরক্ষিত ছবিও ‘নিষিদ্ধ ছবির অন্তর্ভুক্ত বিধায় এটিও হারাম।

সহিহ হাদিসে এসেছে,

আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ বলেছেন,

كُلُّ مُصَوِّرٍ فِي النَّارِ يُجْعَلُ لَهُ بِكُلِّ صُورَةٍ صَوَّرَهَا نَفْسٌ فَيُعَذِِّبُهُ فِي جَهَنَّمَ

প্রত্যেক ছবিনির্মাতা জাহান্নামে যাবে, তার নির্মিত প্রতিটি ছবি পরিবর্তে একটি করে প্রাণ সৃষ্টি করা হবে, যা তাকে জাহান্নামে শাস্তি দিতে থাকবে। (বুখারী ২২২৫, ৫৯৬৩, মুসলিম ৫৬৬২)

হাদিস শরীফে এসেছে,

قال حدثنا الاعمش عن مسلم قال كنا مع مسروق فى دار يسار بن نمير فراى فى صفته تماثيل فقال سمعت عبد الله قال سمعت النبى يقول ان اشد الناس عذابا عند الله المصورون

মাশ তিনি  মুসলিম হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি মাসরুকের  সঙ্গে ইয়াসার ইবনে নুমাইরের ঘরে ছিলাম, তিন ঘরের মধ্যে প্রাণীর ছবি দেখতে পেলেন, অতঃপর বললেন, আমি হযরত আব্দুল্লাহ্  রাযি.-এর নিকট শুনেছি, রাসূলুল্লাহ বলেছেন, ‘নিশ্চয় মানুষের মধ্যে ঐ ব্যক্তিকে আল্লাহ্ তাআলা কঠিন শাস্তি দেবেন, যে ব্যক্তি প্রাণীর ছবি তোলে বা আঁকে। (বুখারী ২/৮৮০)

আরো জানুনঃ https://ifatwa.info/2253/

তবে কিছু কিছু বিশেষজ্ঞের মতে তা জায়েয।

তাদের বক্তব্য হলো কম্পিউটার ও মোবাইল স্ক্রীনে থাকা প্রাণীর (অশ্লীল ও নারীর ছবি ছাড়া) ছবি প্রিন্ট করার আগ পর্যন্ত জায়েজ বলেছেন জামিয়া বিন্নুরিয়া পাকিস্তানের ফাতওয়া বিভাগ।

কম্পিউটার স্ক্রীনে বা মোবাইল স্ক্রীনে ছবি না রাখাটাও তাক্বওয়ার দাবী।

আরো জানুনঃ https://ifatwa.info/5371/

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,

১. বিজ্ঞ ইসলামী স্কলারদের মতে বোরকা পরিহিত অবস্থায় তোলা নারীদের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপলোড করা জায়েজ হবেনা, অন্য কোনো গায়রে মাহরামের সামনে দেখানো জায়েজ হবেনা। সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে এরকম ছবি সেইভ করে সেটা প্রোফাইল পিকচার হিসেবে ইউজ করলে জায়েজ হবেনা, পর্দার খেলাফ হবে। তবে প্রশ্নেল্লিখিত বিষয়টি নিয়ে । আলেমদের মাঝে এখতেলাফ আছে। সর্বোপরি  উত্তম ইহাই যে, সতর্কতামূলক এ জাতীয়  পিকচার প্রোফাইলে দেওয়া থেকে বিরত থাকা।আরো জানুন: https://ifatwa.info/80652/

২. নারীদের চোখ ও ভ্রুর পর্দার বিধান হল যে, নারীদের জন্য করনীয় হলো এমন নেকাব পড়া, যা দ্বারা শুধু চোখ খোলা থাকবে,কপাল+ ভ্রু ঢাকা থাকবে। তবে চেষ্টার পরেও সামান্য দেখা গেলে (এটি ঢাকা যেহেতু কষ্টকর) তাই এতে সমস্যা হবেনা।

https://ifatwa.info/33678/  ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ  ইচ্ছাকৃত সৌন্দর্য প্রদর্শনের নিমিত্তে ভ্রু খুলে রাখা কখনো জায়েয হবে না। তবে অনিচ্ছাকৃত হলে কোনো সমস্যা হবে না।

কিন্তু ফেসবুকে প্রোফাইলে নারীর ছবি দেওয়া সাধারণত এমন কোন প্রয়োজন নয়  যে,  ছবি আপলোড করতেই হবে, না করলে কোন সমস্যা হবে। বরং নারীর পর্দাযুক্ত ছবি দেওয়ার মাধ্যমেও অনেক সময় গায়রে মাহরাম বখাটে ছেলেরা নারী প্রোফাইল মনে করে অহেতুক মেসেজ করে এবং এখান থেকে অনেক ফেতনা তৈরি হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

৩. জ্বী আপনি সেভাবে মান্নত করতে পারবেন। তবে মান্নত শরিয়তে পছন্দনীয় নয়। শরিয়ত উদ্বুদ্ধ করে নফল সদকার প্রতি; মান্নতের প্রতি নয়।

 হাদীস শরীফে এসেছে, আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাযি.) থেকে বর্ণিত, তিনি বর্ণনা করেছেন-

أَخَذَ رَسُولُ اللَّهِ يَوْمًا يَنْهَانَا عَنِ النَّذْرِ وَيَقُولُ إِنَّهُ لاَ يَرُدُّ شَيْئًا وَإِنَّمَا يُسْتَخْرَجُ بِهِ مِنَ الشَّحِيحِ

রাসূলুল্লাহ (সা.) একদিন আমাদের মান্নত করতে নিষেধ করেছেন। আর বলেছেন, মান্নত কোনো কিছুকে ফেরাতে পারে না। তবে মান্নতের মাধ্যমে কৃপণ ব্যক্তির সম্পদ বের করা হয়। (মুসলিম শরীফ, হাদীস নং- ৪৩২৫)।

আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, মান্নত এমন কোনো কিছুকে আদম সন্তানের নিকটবর্তী করে দিতে পারে না যা আল্লাহ তাআলা তার জন্য তাকদীরে নির্দিষ্ট করেননি। তবে মান্নত কখনো তাকদীরের সাথে মিলে যায়। এর মাধ্যমে কৃপণের নিকট হতে ঐ সম্পদ বের করে নিয়ে আসা হয় যা কৃপণ (এমনিতে) বের করতে চায় না। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৬৪০

আরো জানুন: https://ifatwa.info/18326/


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...