ওয়া আলাইকুমুস-সালাম
ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু
بسم الله
الرحمن الرحيم
জবাব,
ইসলামী দৃষ্টিতে অপর মুসলমানকে অপবাদ দেওয়া কবিরা গুনাহ।
আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন-
وَالَّذِينَ
يُؤْذُونَ الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ بِغَيْرِ مَا اكْتَسَبُوا فَقَدِ احْتَمَلُوا بُهْتَانًا وَإِثْمًا مُبِينًا [٣٣:٥٨]
যারা বিনা অপরাধে মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদেরকে কষ্ট দেয়,
তারা মিথ্যা অপবাদ ও প্রকাশ্য পাপের বোঝা বহন করে। {সূরা আহযাব-৫৮}
অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-
إِنَّ
الَّذِينَ يَرْمُونَ الْمُحْصَنَاتِ الْغَافِلَاتِ الْمُؤْمِنَاتِ لُعِنُوا فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ وَلَهُمْ عَذَابٌ عَظِيمٌ [٢٤:٢٣]يَوْمَ تَشْهَدُ عَلَيْهِمْ أَلْسِنَتُهُمْ وَأَيْدِيهِمْ وَأَرْجُلُهُمْ بِمَا كَانُوا يَعْمَلُونَ [٢٤:٢٤] يَوْمَئِذٍ يُوَفِّيهِمُ اللَّهُ دِينَهُمُ الْحَقَّ وَيَعْلَمُونَ أَنَّ اللَّهَ هُوَ الْحَقُّ الْمُبِينُ [٢٤:٢٥]
যারা সতী-সাধ্বী, নিরীহ ঈমানদার নারীদের প্রতি অপবাদ আরোপ
করে, তারা ইহকালে ও পরকালে ধিকৃত এবং তাদের জন্যে রয়েছে গুরুতর শাস্তি। যেদিন প্রকাশ
করে দেবে তাদের জিহবা, তাদের হাত ও তাদের পা, যা কিছু তারা করত; সেদিন আল্লাহ তাদের
সমুচিত শাস্তি পুরোপুরি দেবেন এবং তারা জানতে পারবে যে, অল্লাহই সত্য, স্পষ্ট ব্যক্তকারী।
{সূরা নূর-২৩-২৫
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ-
وَ اِنۡ عَاقَبۡتُمۡ فَعَاقِبُوۡا
بِمِثۡلِ مَا عُوۡقِبۡتُمۡ بِهٖ ؕ وَ لَئِنۡ صَبَرۡتُمۡ لَهُوَ خَیۡرٌ لِّلصّٰبِرِیۡنَ
‘আর যদি কাউকে তোমরা শাস্তি দাও, তবে ততখানি
শাস্তি দেবে যতখানি অন্যায় তোমাদের প্রতি করা হয়েছে। আর যদি সবর করো তাহলে তা তার জন্যই
উত্তম।’ (সুরা নাহল : আয়াত ১২৬)
এ আয়াতে আল্লাহ তাআলা প্রতিশোধের কথা যেমন
বলেছেন, তেমনি সবর তথা ধৈর্যধারণ করার কথাও উল্লেখ করেছেন। ইসলামে উভয়টি জায়েয আর প্রতিশোধ
নেওয়ার থেকে সবর অবলম্বন করা উত্তম।
প্রতিশোধ গ্রহণআল্লাহর পথে দাওয়াত দানকারীদের
আইনগত অধিকার দেওয়া হয়েছে যে, যারা নির্যাতন চালায়, তাদের কাছ থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ
করা বৈধ, কিন্তু শর্ত হলো- প্রতিশোধ গ্রহণের ক্ষেত্রে নির্যাতনের সীমা অতিক্রম করা
যাবে না। যতটুকু জুলুম প্রতিপক্ষের তরফ থেকে করা হয়, প্রতিশোধ ততটুকুই গ্রহণ করতে হবে;
বেশি হতে পারবে না।
ইসলামে প্রতিশোধ গ্রহণ জায়েয তবে সবরে রয়েছে
সর্বোত্তম কল্যাণ। তবে প্রতিশোধের ক্ষেত্রে
অবশ্যই জুলুমের মাত্রাকে ছাড়িয়ে যাওয়া যাবে না। এটাই ইসলামের চূড়ান্ত ঘোষণা।
আরো জানুনঃ- https://ifatwa.info/32721/
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
اِدۡفَعۡ بِالَّتِیۡ ہِیَ
اَحۡسَنُ السَّیِّئَۃَ ؕ نَحۡنُ اَعۡلَمُ بِمَا یَصِفُوۡنَ ﴿۹۶﴾
মন্দের মুকাবিলা করুন যা উত্তম তা দ্বারা;
তারা (আমাকে) যে গুণে গুণান্বিত করে আমরা সে সম্বন্ধে সবিশেষ অবগত। (সূরা মুমিনূন
: ৯৬)
এই আয়াতের অর্থ মুহাদ্দিসিনে কেরামগন এইভাবেও
করেছেনঃ ‘কেহ যদি তোমার সহিত অন্যায় ব্যবহার করে তুমি সদ্ব্যবহার দ্বারা তাহার প্রতিশোধ
লও, তাহা হইলে যাহার সহিত তোমার শত্রুতা আছে সে তোমার পরম বন্ধু হইবে’।
এই আয়াতের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে,
অর্থাৎ আপনি মন্দকে উত্তম দ্বারা, যুলুমকে
ইনসাফ দ্বারা এবং নির্দয়তাকে দয়া দ্বারা প্রতিহত করুন। এটা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
'আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে প্রদত্ত উত্তম চরিত্রের শিক্ষা, যা মুসলিমদের পারস্পরিক কাজ
কারবারে সর্বদাই প্রচলিত আছে।
অন্য আয়াতে আল্লাহ্ তায়ালা বলেন, মন্দ প্রতিহত
করুন তা দ্বারা যা উৎকৃষ্ট; ফলে আপনার ও যার মধ্যে শক্ৰতা আছে, সে হয়ে যাবে অন্তরঙ্গ
বন্ধুর মত। আর এটি শুধু তারাই প্ৰাপ্ত হবে যারা ধৈর্যশীল। আর এর অধিকারী তারাই হবে
কেবল যারা মহাভাগ্যবান।” [সূরা ফুসসিলাত: ৩৪–৩৫]
অর্থাৎ যুলুম ও নির্যাতনের জওয়াবে কাফের
ও মুশরিকদের ক্ষমা ও মার্জনাই করতে থাক। কারও কারও মতে, কাফেরদেরকে প্রত্যাঘাত না করার
নির্দেশ পরবর্তীকালে জেহাদের আয়াত দ্বারা রহিত হয়ে গেছে। কারও কারও মতে, উম্মতের
নিজেদের মধ্যে এর বিধান ঠিকই কার্যকর। শুধু কাফেরদের ক্ষেত্রে তা রহিত হয়েছে। [ফাতহুল
কাদীর]
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন/বোন!
যিনি আপনাকে মিথ্যা অপবাদ
দিচ্ছেন,তিনি কবিরা করছেন। তার শাস্তি সে ভোগ করবে যদি সে আপনার নিকট ক্ষমা না চায়
বা আপনি তাকে ক্ষমা না করেন। আপনি তার দেওয়া কোন প্রকারের মিথ্যা অপবাদ বা নিন্দা নিজের
গায়ে মাখবেন না। যে যা খুশি বলুক না কেনো নিজেকে অবিচল রাখবেন। যেহেতু আপনি কোন খারাপ
কাজ করেননি। তাহলে এনিয়ে এতো বেশী পেরেশান হওয়ার কোন কারণ নেই। তবে বিশেষ প্রয়োজনে
আপনি স্থানীয় প্রশাসনিক সহযোগিতা নিতে পারেন। আপনি তার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করুন। সর্বদা
গুনাহ থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করুন। ইবাদতের প্রতি মনোযোগ বৃদ্ধি করার চেষ্টা করুন।
আরো জানুন:
https://ifatwa.info/10915/
https://ifatwa.info/83269/