আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
69 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (8 points)
reshown by
আসসালামু আলাইকুম।
বেশ কিছুদিন ধরে একটা বিষয় নিয়ে বেশ পেরেশানিতে ছিলাম।আজকে ক্লাসে একজন(নন মাহরাম) ডেকে নিয়ে সেই টপিকে এ কথা বলে। এরপর বাসায় এসে কিছুটা অস্থিরতা অনুভব করি,কেমন খটকা লাগছে,হিসাব সরলভাবে মিলছিল না। বাসায় আমাকে দেখে জিঙ্সেস করেছে কী হয়েছে তোমার এরকম লাগছে কেন।পরে আমি আমার বাসায় জানাই, আজকে যা যা হয়েছে।এরপর আমাকে বলে তোমার কথা শুনা ঠিক হয়নি একদমই,এটা হয়তো কেনো ট্রাপে ফেলার চিন্তা,কোনো একটা ষড়যন্ত্র হচ্ছে,,, এরকম আরও কথা।

এবং আমি রিয়েলাইজ করলাম, সামনে খুব ভালই বিপদে ফেলানোর চেষ্টা করবে কেও কেও,হয়রানী করবে হয়তো।হতে পারে মিথ্যে অপবাদও দিতে পারে।তাদের কাছে অসম্ভব কিছু না।

এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে -

১. কেও যদি অপবাদ দেয় সেক্ষেত্রে যার উপর অপবাদ দেওয়া হবে তার করণীয় কী?(হতে পারে কেও ছবি দিয়ে ঝামেলা করবে সোশ্যাল মিডিয়ায় বা অন্যকোনোভাবে)এক্ষেত্রে কী চুপ থাকবে নাকি প্রতিবাদ করবে?যার বিরুদ্ধে এরকম করার পসিবিলিটি আছে সে যথেষ্ট বোকা।

২. কয়েকজন মিলে কারো বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করলে তাকে অপদস্ত করার চেষ্টা করলে,শুধুমাত্র হিংসা,বা প্রতিশোধপরায়ণ থেকে যদি এমনটা করে থাকে এক্ষেত্রে শাস্তি কী?এ ব্যাপারে হাদিস /কুরআনের বানী গুলো শুনতে চাচ্ছি
by (8 points)
edited by
Sfghjkkytggbnnmmhgghhhhggshsjdndnndbdbdndnxnxnxnxnxn

1 Answer

0 votes
by (54,300 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

ইসলামী দৃষ্টিতে অপর মুসলমানকে অপবাদ দেওয়া কবিরা গুনাহ। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন-

وَالَّذِينَ يُؤْذُونَ الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ بِغَيْرِ مَا اكْتَسَبُوا فَقَدِ احْتَمَلُوا بُهْتَانًا وَإِثْمًا مُبِينًا [٣٣:٥٨]

যারা বিনা অপরাধে মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদেরকে কষ্ট দেয়, তারা মিথ্যা অপবাদ ও প্রকাশ্য পাপের বোঝা বহন করে। {সূরা আহযাব-৫৮}

অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-

إِنَّ الَّذِينَ يَرْمُونَ الْمُحْصَنَاتِ الْغَافِلَاتِ الْمُؤْمِنَاتِ لُعِنُوا فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ وَلَهُمْ عَذَابٌ عَظِيمٌ [٢٤:٢٣]يَوْمَ تَشْهَدُ عَلَيْهِمْ أَلْسِنَتُهُمْ وَأَيْدِيهِمْ وَأَرْجُلُهُمْ بِمَا كَانُوا يَعْمَلُونَ [٢٤:٢٤] يَوْمَئِذٍ يُوَفِّيهِمُ اللَّهُ دِينَهُمُ الْحَقَّ وَيَعْلَمُونَ أَنَّ اللَّهَ هُوَ الْحَقُّ الْمُبِينُ [٢٤:٢٥]

যারা সতী-সাধ্বী, নিরীহ ঈমানদার নারীদের প্রতি অপবাদ আরোপ করে, তারা ইহকালে ও পরকালে ধিকৃত এবং তাদের জন্যে রয়েছে গুরুতর শাস্তি। যেদিন প্রকাশ করে দেবে তাদের জিহবা, তাদের হাত ও তাদের পা, যা কিছু তারা করত; সেদিন আল্লাহ তাদের সমুচিত শাস্তি পুরোপুরি দেবেন এবং তারা জানতে পারবে যে, অল্লাহই সত্য, স্পষ্ট ব্যক্তকারী। {সূরা নূর-২৩-২৫

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ-

وَ اِنۡ عَاقَبۡتُمۡ فَعَاقِبُوۡا بِمِثۡلِ مَا عُوۡقِبۡتُمۡ بِهٖ ؕ وَ لَئِنۡ صَبَرۡتُمۡ لَهُوَ خَیۡرٌ لِّلصّٰبِرِیۡنَ

‘আর যদি কাউকে তোমরা শাস্তি দাও, তবে ততখানি শাস্তি দেবে যতখানি অন্যায় তোমাদের প্রতি করা হয়েছে। আর যদি সবর করো তাহলে তা তার জন্যই উত্তম।’ (সুরা নাহল : আয়াত ১২৬)

এ আয়াতে আল্লাহ তাআলা প্রতিশোধের কথা যেমন বলেছেন, তেমনি সবর তথা ধৈর্যধারণ করার কথাও উল্লেখ করেছেন। ইসলামে উভয়টি জায়েয আর প্রতিশোধ নেওয়ার থেকে সবর অবলম্বন করা উত্তম।

প্রতিশোধ গ্রহণআল্লাহর পথে দাওয়াত দানকারীদের আইনগত অধিকার দেওয়া হয়েছে যে, যারা নির্যাতন চালায়, তাদের কাছ থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ করা বৈধ, কিন্তু শর্ত হলো- প্রতিশোধ গ্রহণের ক্ষেত্রে নির্যাতনের সীমা অতিক্রম করা যাবে না। যতটুকু জুলুম প্রতিপক্ষের তরফ থেকে করা হয়, প্রতিশোধ ততটুকুই গ্রহণ করতে হবে; বেশি হতে পারবে না।

ইসলামে প্রতিশোধ গ্রহণ জায়েয তবে সবরে রয়েছে সর্বোত্তম কল্যাণ।  তবে প্রতিশোধের ক্ষেত্রে অবশ্যই জুলুমের মাত্রাকে ছাড়িয়ে যাওয়া যাবে না। এটাই ইসলামের চূড়ান্ত ঘোষণা।

আরো জানুনঃ-  https://ifatwa.info/32721/

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ

اِدۡفَعۡ بِالَّتِیۡ ہِیَ اَحۡسَنُ السَّیِّئَۃَ ؕ نَحۡنُ اَعۡلَمُ بِمَا یَصِفُوۡنَ ﴿۹۶﴾

মন্দের মুকাবিলা করুন যা উত্তম তা দ্বারা; তারা (আমাকে) যে গুণে গুণান্বিত করে আমরা সে সম্বন্ধে সবিশেষ অবগত। (সূরা মুমিনূন : ৯৬)

এই আয়াতের অর্থ মুহাদ্দিসিনে কেরামগন এইভাবেও করেছেনঃ ‘কেহ যদি তোমার সহিত অন্যায় ব্যবহার করে তুমি সদ্ব্যবহার দ্বারা তাহার প্রতিশোধ লও, তাহা হইলে যাহার সহিত তোমার শত্রুতা আছে সে তোমার পরম বন্ধু হইবে’।

এই আয়াতের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে,

অর্থাৎ আপনি মন্দকে উত্তম দ্বারা, যুলুমকে ইনসাফ দ্বারা এবং নির্দয়তাকে দয়া দ্বারা প্রতিহত করুন। এটা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে প্রদত্ত উত্তম চরিত্রের শিক্ষা, যা মুসলিমদের পারস্পরিক কাজ কারবারে সর্বদাই প্রচলিত আছে।

অন্য আয়াতে আল্লাহ্ তায়ালা বলেন, মন্দ প্রতিহত করুন তা দ্বারা যা উৎকৃষ্ট; ফলে আপনার ও যার মধ্যে শক্ৰতা আছে, সে হয়ে যাবে অন্তরঙ্গ বন্ধুর মত। আর এটি শুধু তারাই প্ৰাপ্ত হবে যারা ধৈর্যশীল। আর এর অধিকারী তারাই হবে কেবল যারা মহাভাগ্যবান।” [সূরা ফুসসিলাত: ৩৪৩৫]

অর্থাৎ যুলুম ও নির্যাতনের জওয়াবে কাফের ও মুশরিকদের ক্ষমা ও মার্জনাই করতে থাক। কারও কারও মতে, কাফেরদেরকে প্রত্যাঘাত না করার নির্দেশ পরবর্তীকালে জেহাদের আয়াত দ্বারা রহিত হয়ে গেছে। কারও কারও মতে, উম্মতের নিজেদের মধ্যে এর বিধান ঠিকই কার্যকর। শুধু কাফেরদের ক্ষেত্রে তা রহিত হয়েছে। [ফাতহুল কাদীর]

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন/বোন!

যিনি আপনাকে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছেন,তিনি কবিরা করছেন। তার শাস্তি সে ভোগ করবে যদি সে আপনার নিকট ক্ষমা না চায় বা আপনি তাকে ক্ষমা না করেন। আপনি তার দেওয়া কোন প্রকারের মিথ্যা অপবাদ বা নিন্দা নিজের গায়ে মাখবেন না। যে যা খুশি বলুক না কেনো নিজেকে অবিচল রাখবেন। যেহেতু আপনি কোন খারাপ কাজ করেননি। তাহলে এনিয়ে এতো বেশী পেরেশান হওয়ার কোন কারণ নেই। তবে বিশেষ প্রয়োজনে আপনি স্থানীয় প্রশাসনিক সহযোগিতা নিতে পারেন। আপনি তার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করুন। সর্বদা গুনাহ থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করুন। ইবাদতের প্রতি মনোযোগ বৃদ্ধি করার চেষ্টা করুন। আরো জানুন:

https://ifatwa.info/10915/

https://ifatwa.info/83269/


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...