আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
154 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (1 point)
edited by
আসসালামু আলাইকুম। হানাফি মাজহাব অনুসারে দিবেন দয়া করে।আমরা দুইজন নিজেদের পরিবারকে না জানিয়ে দেনমোহরে উল্লেখ করা ছাড়া নিজেরা দুইজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে বিয়ে করি।

ঘটনা১:এই যে,আমার স্ত্রীর সাথে ঝগড়ার এক পর্যায়ে আমার স্ত্রী হাত কেটে আমাকে ছবি পাঠিয়ে জোরাজোরি করে আমার থেকে তালাক দাবি করে। আমি তালাক দিতে না চাইলে আমার স্ত্রী 'আমাকে হুমকি দেয় যে,তাকে আমি তালাক না দিলে সে তার হাতের রগ কেটেফেলবে।আমি আমার স্ত্রীকে শান্ত করার জন্যে বলি যে,আমি আমার বন্ধুদের সামনে বলে দিবো।তালাক হয়ে যাবে এ ভয়ে আমি তালাক শব্দটি মুখ দিয়ে উচ্চারণ করিনি ।আমি উত্তেজিত ছিলাম দেখে আমার বন্ধু আমাকে জিজ্ঞাসা করলে আমি বলি যে, ডিভোর্স দিয়ে ফেলছি। কিন্তু আমার মনের মধ্যে তালাকের কোনো নিয়ত ছিল না এবং কাকে ডিভোর্স দিয়েছি তা উল্লেখ করিনি, আমার জানা ছিল না যে,ডিভোর্স দিয়ে ফেলছি বললে তালাক হতে পারে। আমার বন্ধু যখন জিজ্ঞাসা করে তালাক দিয়ে ফেলছি কিনা, উত্তরে আমি তালাকের নিয়ত ছাড়া ও তাদের থেকে লুকানোর জন্যে বলি, হ্যা। আমাকে আমার স্ত্রী যেহেতু অতিরিক্ত মানসিক চাপ দিয়েছিল পরবর্তীতে আমার মনে পড়ে না যে,আমি আমার বন্ধুকে কী বলেছিলাম।
প্রশ্ন-যেহেতু নিজের ইচ্ছা ছাড়া ও তালাকের নিয়ত ছাড়া মানসিক চাপের সম্মুখীন হয়ে ডিভোর্স দিয়ে ফেলছি বলেছি এবং জানতাম না যে, ডিভোর্স দিয়ে ফেলছি বললে তালাক হয়ে যায় ও পরবর্তীতে আমার নিজের-ই মনে পড়ে না যে, আমি আমার বন্ধুকে কী বলেছি, এ অবস্থায় কী আমাদের তালাক হয়েছিল?

ঘটনা ২: আমার স্ত্রী আবার আমার সাথে নানা বিষয়ে ঝগড়ায় লিপ্ত হয়ে তালাক চাই, আর আমি আমার স্ত্রীকে রাগ নিয়ে তালাক দিয়ে ফেলি।

ঘটনা ৩ঃ তারপর আমরা মনে করেছিলাম যে আমাদের দুই তালাক হয়ে গিয়েছে।তাই আমরা দুইজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে ৫০,০০০ টাকা দেনমোহরে বিয়ে করি।স্ত্রী পুনরায় স্বামীকে তালাকের জন্যে আমাকে অনেক জোরাজোরি করে। জোরাজোরির এক পর্যায়ে প্রচন্ড ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে প্রাণনাশের হুমকিস্বরূপ স্ত্রী স্বামীকে একথা বলতে বাধ্য হয় যে-আমাকে তালাক না দিলে আমি অনেকগুলো ঔষধ খেয়ে মরে যাবো। আর আমার মৃত্যুর জন্যে দায়ী হবে তুমি, আমি তোমাকে আমার মৃত্যুর জন্যে তোমাকে দায়ী করে যাবো।আমার স্ত্রী টানা ১৫দিন আমাকে এত মানসিক চাপ দেই আর মানসিক টর্চার করে । তার এত চাপের পরেও আমি তাঁকে তালাক দিতে চাই নাই। তার এত টর্চার এর পর স্ত্রীর কান্নাকাটি করে সুইসাইড এর হুমকি দেই। তারপর আমি স্বাভাবিকভাবে থাকার ক্ষমতা হারিয়ে দুশ্চিন্তাই পড়ে মানসিকভাবে অসুস্থ হওয়ার পর্যায় চলে যাই। স্ত্রীর জীবন,নিজের জীবন আর পরিবারের মানুষের জীবনের ভয় করে নিজের জীবন হারানোর ভয় করে তালাক দিয়ে ফেলি। কিন্তু আমার কোনো ইচ্ছা ছিলো না তালাক দেওয়ার। আমি আমার স্ত্রীর সাথে সংসার করতে চেয়েছিলাম।আমার 'স্ত্রী 'আমাকে এতো জোরাজোরি করে, এতো মানসিক চাপ দেয়, এতো মানসিক টর্চার করে, এতো মানসিক যন্ত্রণা দেয় যে, এবং এতগুলো হুমকি দেই যে,আমি ক্ষণিকের জন্যে আমার ভালো-মন্দ নির্বাচন করার শক্তি হারিয়ে দিশেহারা হয়ে কোনো উপায় না পেয়ে নিজের জীবন বাঁচানোর ভয়ে তাকে তালাক দিতে বাধ্য হই, কিন্তু তাকে তালাক দেওয়ার কোনো নিয়ত বা ইচ্ছা ছিল না।

প্রশ্ন-যেহেতু আমার তালাক দেওয়ার কোনো নিয়ত ছিল না ও আমি আমার স্ত্রীর মানসিক চাপে ভালো-মন্দ নির্বাচনের শক্তি ক্ষণিকের জন্যে হারিয়ে জীবনের ভয় করে তালাক দিই, এই তালাক কী হয়েছে?

ঘটনা ৪:-পরবর্তীতে স্ত্রী আমাকে সেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তা ভেঙে ফেলে এবং আমি রাগারাগি করলে সে আমার সাথে থাকতে চাই না, তখন আমি রাগ নিয়ে তালাক দিয়ে ফেলি।

প্রশ্ন-এখন আমার স্ত্রী নিজের ভুল নিজে বুঝতে পেরেছে এবং সে ভুলগুলো শুধরিয়ে সে আমার সাথে থাকতে চাই এবং আমিও আমার স্ত্রীর সাথে থাকতে চাই ।যেহেতু আমি অনিচ্ছাকৃত ,ভালো-মন্দ নির্বাচনের শক্তি হারিয়ে দিশেহারা হয়ে মানসিক চাপে, মৃত্যুর হুমকি এড়াতে, নিজের জীবন বাঁচানোর জন্যে,আমার নিজের-ই মনে পরে না যে আমি আমার বন্ধুকে কী বলেছি। এরপর আমাদের কী একসাথে থাকার কোনো সুযোগ আছে?আর  আমাদের কী তিন তালাক সম্পন্ন হয়েছে?

1 Answer

0 votes
by (60,240 points)

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/101480/  নং ফাতওয়াতে আমরা বলেছি যে,


আলহামদুলিল্লাহ!

(১) বিশুদ্ধমতানুযায়ী মিথ্যা স্বীকারোক্তি দ্বারা তালাক পতিত হয় না। সুতরাং আপনার বন্ধুর প্রশ্নের জবাবে যে বলেছেন যে, 'তালাক দিয়ে ফেলছেন' এদ্বারা তালাক হবে না।

(২) আপনার স্ত্রী আপনার সাথে নানা বিষয়ে ঝগড়ায় লিপ্ত হয়ে তালাক চেয়েছিলো, আর আপনি প্রতিউত্তরে বলেছেন যে, আপনি রাগে স্ত্রীকে তালাক দিয়ে ফেলেছেন। সুতরাং এদ্বারা তালাক পতিত হয়ে যাবে।

তালাকের নির্দিষ্ট কোনো নিয়ত না থাকলে, এক তালাক পতিত হবে।

(৩) এক্ষেত্রেও তালাক পতিত হয়ে যাবে। তালাকের নির্দিষ্ট কোনো নিয়ত না থাকলে, এক তালাক পতিত হবে।

(৪) এদ্বারাও তালাক পতিত হয়ে যাবে। তালাকের নির্দিষ্ট কোনো নিয়ত না থাকলে, এক তালাক পতিত হবে।

আরো বিস্তারিত জানুন - https://ifatwa.info/101411/


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই!


দ্বীনের পরিধি অনেক ব্যাপক, সকল বিষয়ে আলোচনা করা বা দিকনির্দেশনা দেওয়া স্বল্প পরিসরের এই ভার্চুয়ালি মাধ্যম দ্বারা আমাদের পক্ষে সম্ভব নাও হতে পারে। চেষ্টা করলেও প্রশ্নকারীর পিপাসা মিটানো সম্ভব হবে না। প্রত্যেক বিষয়ে আমরা শুধুমাত্র সামান্য আলোকপাত করে থাকি।


উপরোক্ত প্রশ্নগুলোর উত্তরের জন্য আপনার এলাকার সংশ্লিষ্ট উলামায় কেরামের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করা আপনার জন্য কল্যাণকর হবে বলেই আমাদের ধারণা।

সুতরাং আপনাকে বলবো, আপনি বিস্তারিত জানতে স্ব-শরীরে কোনো দারুল ইফতায় যোগাযোগ করবেন।

প্রশ্ন করার জন্য আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ। আল্লাহ তা'আলা আপনার ইলম অর্জনের স্পৃহাকে আরো বাড়িয়ে দিক, আমীন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...