আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
159 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (14 points)
closed by
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহি ওয়া বারকাতূহ সম্মানিত উস্তায
১. যিহার সম্পর্কে সূরা আহযাব এর ৪নাম্বার আয়াত।এর পরে সূরা মুজাদালাহ এর প্রথম ৪ আয়াত নাযিল হয় খাওলা বিনতে মালেক বিন সা'লাবা রাঃ এর ঘটনার প্রেক্ষিতে।
★সূরা মুজাদালাহ এর ২য় আয়াতের তাফসীরে বলা হয়েছে, "পক্ষান্তরে যদি কেউ তার স্ত্রীকে মায়ের পরিবর্তে নিজের মেয়ে অথবা নিজের বোনের পিঠের মত বলে দেয়, তাহলে তা যিহার গণ্য হবে কি না? ইমাম মালিক এবং ইমামা আবূ হানীফা (রঃ) এটাকেও যিহার গণ্য করেছেন।"
অনুরূপভাবে এ ব্যাপারেও মতভেদ রয়েছে যে, যদি কেউ বলে যে, 'তুমি আমার মায়ের মত' এবং পিঠের কথা উল্লেখই না করে। তাহলে এ ব্যাপারে আলেমগণ বলেন, যদি যিহারের নিয়তে উক্ত শব্দ ব্যবহার করে, তাহলে তা যিহার হবে, অন্যথা হবে না। ইমাম আবূ হানীফা (রঃ) বলেন, যদি এমন কোন অঙ্গের সাথে তুলনা করে, যা দেখা জায়েয, তবে তা যিহার হবে না।
এখানে আরও বর্ণনা(মতভেদ) এসেছে ইমাম শাফেয়ী রঃ এর।

৩য় নাম্বার আয়াতে বলা হয়েছে,রুজু বা প্রত্যাহার সম্পর্কে, কীভাবে এর কাফফারা আদায় করবে তা নিয়ে।যিহার করার পরে স্ত্রীর সাথে ঘনিষ্ঠ হওয়ার পূর্বে কাফফারা আদায় করতে হবে।কাফফারার রুলস হলো-
ক) একজন গোলাম আযাদ করা অথবা
খ) বিরতিহীন ৬০ দিন অর্থাৎ ২ মাস রোজা রাখা এটাতেও অক্ষম হলে
গ) ৬০ জন মিসকিনকে পেটপুরে খাবার খাওয়ানো।
অনুরূপ সকল মিসকীনকে একই সাথে খাওয়ানোও জরুরী নয়, বরং একাধিক কিস্তীর মাধ্যমে এ সংখ্যা পূরণ করা যেতে পারে। (ফাতহুল ক্বাদীর) তবে এটা জরুরী যে, যতক্ষণ না নির্দিষ্ট সংখ্যা পূরণ হয়েছে, ততক্ষণ পর্যন্ত স্ত্রীর সাথে সহবাস করা জায়েয হবে না।

এখানে আমার প্রশ্ন হচ্ছে -
(a) যিহার গন্য হওয়ার ব্যাপারে একাধিক ইমামগনের ইখতিলাফ রয়েছে। আমরা কোন মতবাদটিকে সঠিক বলে বিবেচনা করবো বা গ্রহণ করবো??
(b) যিহারের নিয়তে উক্ত বাক্য গুলো বললে যিহার হবে অন্যথায় হবে না।এখানে অনেক মানুষ যিহার সম্পর্কে জানেনই না বা অনেকে জানলেও যিহার হবে এরকম কিছু মনে না করেই বলে ফেলে , তাদের ক্ষেত্রে বিধান কীরকম হবে?
বা এক্ষেত্রে নিয়তটা ঠিক কীরকম হতে হয়?
(c) কাফফারা হিসেবে একজন গোলাম আযাদ করা... কিন্তু বর্তমানে দাস দাসীর প্রথা নেই তবে কী গোলাম আযাদের ব্যাপারে বিধানটা কীভাবে আসবে?
(d) হাসব্যান্ড ওয়াইফ একই বাসায় থেকে দূরত্ব মেইনটেইন করা অসম্ভব প্রায়।কাফফারা আদায় করার সময় বিরতীহীন ভাবে ২ মাস রোজা রাখলে সহধর্মিণী কোথায় থাকবে?

জাযাকাল্লহু খইরন ফিদ-দুনইয়া ওয়াল আখিরহ
closed

1 Answer

0 votes
by (574,050 points)
selected by
 
Best answer
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

শরীয়তের পরিভাষায় যিহার’বলা হয় নিজের স্ত্রীর কোনো অঙ্গ কে ‘মা’ অথবা ‘স্থায়ীভাবে বিবাহ হারাম’ এমন কোন মহিলার এমন কোনো অঙ্গ যেটা দেখা হারাম,এমন অঙ্গের সমতুল্য বলে আখ্যায়িত করে  (যেমনঃপৃষ্ঠদেশের সমতুল্যবলে আখ্যায়িত করে) তাহাকে আরবীতে ‘যিহার’ বলা হয়।
এতে তার নিয়ত যাই থাকুক না কেনো,
যিহার হয়ে যাবে।
উদাহরণঃ স্বামী স্ত্রীকে বলবে, তুমি আমার নিকট আমার মায়ের পিঠের সমতুল্য। আমার বোন যেমন আমার জন্য হারাম তুমিও তেমনি আমার জন্য হারাম। তোমার শরীরের এক চতুর্থ অংশ আমার জন্য আমার ধাত্রীমায়ের মত হারাম ইত্যাদি। 

আর যদি স্থায়ীভাবে বিবাহ হারাম’ এমন মহিলার কোনো অঙ্গের সাথে তুলনা না করে এই ভাবে বলে যে তুমি আমার তার (মা বা অন্য কেউ) মতো,তাহলে তার নিয়ত দেখতে হবে।
যদি সে মায়ের মত বলতে মায়ের মত গুণবতী, যত্নশীল বা মায়ের মত ভালবাসে  উদ্দেশ্য নেয়,তাহলে কোনো কিছুই হবেনা।
এক্ষেত্রে যিহার তখনই হবে যখন নিয়ত থাকবে যে মা-বোন যে দিক থেকে হারাম সে দিক থেকে স্ত্রীকে হারাম বানালে।
(নাজমুল ফাতওয়া ৬/৩১৭)
,
আর যিহার করলে কাফফারা আদায় ব্যতীত স্বামীর জন্য স্ত্রীকে স্পর্শ করা বা তার সঙ্গে একত্রে সংসার করা হারাম।

যিহার করলে কাফ্ফারা আদায় করতে বলা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

وَالَّذِيْنَ يُظٰهِرُوْنَ مِن نِّسَائِهِمْ ثُمَّ يَعُوْدُوْنَ لِمَا قَالُوْا فَتَحْرِيْرُ رَقَبَةٍ مِّنْ قَبْلِ أَن يَّتَمَاسَّا ذٰلِكُمْ تُوْعَظُوْنَ بِهِ وَاللهُ بِمَا تَعْمَلُوْنَ خَبِيْرٌ"(سورۃ المجادلۃ:۲،۳،۴)

“যারা নিজেদের স্ত্রীদের সাথে যিহার করে, তারপর তারা তাদের উক্তি ফিরিয়ে নেয়, তাদের জন্য একে অপরকে স্পর্শ করার পূর্বে একজন দাস মুক্তির বিধান দেয়া হলো। এটা তোমাদের জন্য নির্দেশ। আর তোমরা যা কিছুই করনা কেন,
সে সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা সবই জানেন। এ ছাড়া যে ব্যক্তি গোলাম অর্থাৎ দাস আজাদ করার ক্ষমতা রাখে না তারজন্য একে অপরকে স্পর্শ করার পূর্বে একটানা ২মাস রোযা রাখতে হবে। আর যে ব্যক্তি এটারও সামর্থ্য রাখে না,
তাহ’লে তাকে ৬০জন মিসকিন অর্থাৎ গরীব মানুষকে খানা খাওয়াতে হবে। এই বিধান এ জন্য যে, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের উপরে তোমরা ঈমান রাখ।
এটা আল্লাহর সীমারেখা। আর কাফিরদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি” (আল- মুজাদালাহ,৩-৪)।

আরো জানুনঃ  

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
(a)
আপনি যেই মাযহাব মানেন,সেই মাযহাবের মত অবলম্বন করবেন।

(B)
মাসয়ালাঃ-
কেহ যদি তা স্ত্রীকে বলে তুমি আমার আমার (মা বা অন্য কেউ) মতো,তাহলে তার নিয়ত দেখতে হবে।
যদি সে মায়ের মত বলতে মায়ের মত গুণবতী, যত্নশীল বা মায়ের মত ভালবাসে  উদ্দেশ্য নেয়,তাহলে কোনো কিছুই হবেনা।
এক্ষেত্রে যিহার তখনই হবে যখন নিয়ত থাকবে যে মা-বোন যে দিক থেকে হারাম সে দিক থেকে স্ত্রীকে হারাম বানালে।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
এক্ষেত্রে যে ব্যাক্তি উক্ত বাক্য "হারাম" এর নিয়তে না বলবে,সেক্ষেত্রে যিহার হবেনা।

(C)
এক্ষেত্রে ২য় স্টেপে যেতে হবে।
তাহা হলো বিরতিহীন ৬০ দিন অর্থাৎ ২ মাস রোজা রাখা।

(D)
কাফফারা আদায় করার সময় বিরতীহীন ভাবে ২ মাস রোজা রাখলে সহধর্মিণী স্বামীর বাসাতেই থাকবে।
তবে কাফফারা আদায়ের আগ পর্যন্ত কোনোক্রমেই সহবাস যেনো না হয়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...