আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
87 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (10 points)
" আমি জানিনা আল্লাহর কাছে আপনি পছন্দনীয় নাকি আমি।" -  এই বাক্যটা নিজেকে মুসলিম দাবি
করেন এমন একজন বলেছেন। এই বাক্যর সাথে
একমত নই। একজন মুসলিম যিনি বিশ্বাস করেন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা এক ও অদ্বিতীয়, আল্লাহ ছাড়া সত্যিকারের কোনো ইলাহ নেই এবং মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর বান্দা ও রাসূল, তিনি যদি ভালো মুসলিম নাও হোন এমনকি জালিমও হোন তাও তিনি একজন মুশরিক অর্থাৎ যিনি আল্লাহর সাথে শরীক করেন এবং মূর্তি পূজা করেন তার চেয়ে উত্তম এবং আল্লাহর কাছে পছন্দনীয়। যদি সে মুশরিক দুনিয়ার চোখে ভালো মানুষ কিংবা মজলুমও হোন তাও। হয়তো আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা তাকে দুনিয়াতেই এর উত্তম প্রতিদান দিবেন। তাকে তার উত্তম কাজের জন্য দুনিয়াতে সম্মানিত করবেন। অথবা তাকে হিদায়াতের জন্য কবুল করেও নিতে পারেন। কিন্তু যতক্ষণ পর্যন্ত তিনি আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লার এক এবং একচ্ছত্র ক্ষমতাকে অস্বীকার করবেন, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লার সাথে শরীক করে  মূর্তি পূজা করবেন, রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে আল্লাহর বান্দা এবং রাসূল হিসেবে অবিশ্বাস করবেন ততক্ষণ তিনি একজন অবিশ্বাসী অর্থাৎ কাফির বা অমুসলিম। পাশাপাশি মূর্তি পূজা করার জন্য একজন মুশরিক। আল্লাহ তায়ালার কাছে সবচেয়ে অপছন্দনীয় গুরুতর জঘন্য অন্যায় হচ্ছে শিরিক করা। একজন মুসলিম ব্যক্তি তাওহীদের বাণীকে দৃঢ়ভাবে অন্তরে বিশ্বাস করে এবং মুখে তা স্বীকার করে। সে ভালো মুসলিম না হলে, জালিম হলে এর শাস্তি সে দুনিয়াতে পাবে। পরকালীন শাস্তি তো আছেই। কিন্তু অন্তরে যদি অণু পরিমাণ ঈমান থাকে এটা শাস্তির পর তার পরকালীন নাজাতের জন্য ইন শা আল্লাহ উছিলা হবে। কিন্তু অবিশ্বাসী বা কাফির অথবা মুশরিক ব্যক্তি শত ভালো কাজ করলেও ঈমান না থাকার জন্য আল্লাহর কাছে পছন্দনীয় হবেন না যার জন্য তার পরকালীন মুক্তি আশা করা যায় না। তাই আল্লাহর কাছে পছন্দনীয় হলেন একজন ঈমানদার ব্যক্তি, কোনো কাফির অথবা মুশরিক ব্যক্তি নয়। আমরা ঈমানদারদের সাথে ঈমানদারের তুলনা করতে পারি। ঈমানদার জালেমের সাথে ঈমানদার জালেমের। ভালো ঈমানদারদের সাথে আরও ভালো ঈমানদারের। কিন্তু ঈমানদারের সাথে আমরা কাফির অথবা মুশরিকের তুলনা করতে পারি না। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা মাজলুমের দুআ কবুল করেন। মাজলুম হোক তিনি মুসলিম, কাফির অথবা মুশরিক আল্লাহর কাছে তিনি সমানভাবে একজন মাজলুমই। কিন্তু আল্লাহর কাছে কাফির, মুশরিক মাজলুমের চেয়ে ঈমানদার মাজলুম বেশি পছন্দনীয়। অর্থাৎ আল্লাহর কাছে মাজলুম সবাই সমান কিন্তু পছন্দনীয় তিনি যার ঈমান রয়েছে। আমরা মুসলিমরা হিন্দু অথবা কোনো অমুসলিম ভাই বোনকে ততটুকু ভালোবাসি যতটুকু এবং যেভাবে আল্লাহ আমাদেরকে ভালোবাসতে বলেছেন। মন্দির পাহারা দেয়াসহ আমাদের কোনো কাজ যদি প্রসংশার দাবি রাখে সেটা শুধুমাত্র আমাদের দ্বীনের জন্য। দ্বীনের প্রতি ভালোবাসা থেকে মুসলিম হিসেবে  আমাদের দায়িত্ববোধ থেকে। মুসলিম হিসেবে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লার পক্ষ থেকে আমাদের প্রতি  অর্পিত দায়িত্ব হিসেবে আমাদের মুসলিম, অমুসলিম সাধারণ নিরপরাধ প্রতিবেশী, দেশের নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে। আমরা শরঈ আইন বিশ্বাসী মুসলিমরা প্রয়োজনে অন্য ধর্মের নিরপরাধ দেশপ্রেমিক ভাই বোনদের জান-মাল রক্ষায় নিজেদের জীবন দিতেও প্রস্তুত থাকি শুধুমাত্র আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লার প্রতি ভালোবাসা থেকে নিজেদের ঈমানী দায়িত্ববোধের জন্য।
তাই বাক্যটা এমন হতে পারত, "আমি জানিনা আল্লাহর কাছে আমি পছন্দনীয় থাকতে পারব কিনা নাকি আপনাকে আল্লাহ পছন্দ করবেন।" অথবা "আমি জানিনা আল্লাহ আমাকে হিদায়াতের ওপর বহাল রাখবেন কিনা, নাকি আপনাকে কবুল করবেন।"

উস্তায উপরের লেখাটাতে আকীদাগত শরঈ ভুল হলে একটু বিস্তারিত যদি বিশ্লেষণ করতেন ইন শা আল্লাহ।
by (10 points)
https://www.facebook.com/amatullah.nafiza/videos/1262795018291677/?app=fbl
 এই লিংকের ভিডিওটার ক্ষেত্রে কথাগুলো লেখা। 

1 Answer

0 votes
by (59,970 points)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/94928/ নং ফাতওয়াতে আমরা বলেছি যে,

হাদীস শরীফে এসেছেঃ-  আবূ হারূন আল-আবদী (রহঃ) থেকে বর্ণিত।

عَنْ أَبِي هَارُونَ الْعَبْدِيِّ، قَالَ كُنَّا إِذَا أَتَيْنَا أَبَا سَعِيدٍ الْخُدْرِيَّ قَالَ مَرْحَبًا بِوَصِيَّةِ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ . إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ لَنَا " إِنَّ النَّاسَ لَكُمْ تَبَعٌ وَإِنَّهُمْ سَيَأْتُونَكُمْ مِنْ أَقْطَارِ الأَرْضِ يَتَفَقَّهُونَ فِي الدِّينِ فَإِذَا جَاءُوكُمْ فَاسْتَوْصُوا بِهِمْ خَيْرًا "

 তিনি বলেন, আমরা আবূ সাঈদ আল খুদরী (রাঃ) -এর কাছে এলেই তিনি বলতেনঃ তোমাদের জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ওসিয়ত অনুযায়ী স্বাগতম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের বলতেনঃ লোকেরা অবশ্যই তোমাদের অনুগামী। অচিরেই পৃথিবীর দিকদিগন্ত থেকে লোকেরা তোমাদের নিকট দ্বীনি ইলম অর্জনের জন্য আসবে। তারা যখন তোমাদের নিকট আসবে,তখন তোমরা তাদেরকে ভালো ও উত্তম উপদেশ দিবে। (সুনানু তিরমিযি-২৪৯,তিরমিযী ২৬৫০-৫১, মুওয়াত্ত্বা মালিক ২৪৭।)


সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

অতীব জরুরী ও সাধারণ মাস'আলা মাসাঈল আয়ত্বে না থাকার কারণে দৈনন্দিন জীবনে দ্বীন-ইসলাম পালন করতে, যে সমস্ত দ্বীনি ভাই-বোন থমকে দাড়ান, এবং যাদের দ্বীনি ইলম অর্জনের কাছাকাছি কোনো নির্ভরযোগ্য মাধ্যম নেই, মূলত তাদেরকে দিকনির্দেশনা দিতেই আমাদের এ ক্ষুদ্র প্রয়াস .....


মুহতারাম/মুহতারামাহ!

দ্বীনের পরিধি অনেক ব্যাপক, সকল বিষয়ে আলোচনা করা বা দিকনির্দেশনা দেওয়া স্বল্প পরিসরের এই ভার্চুয়ালি মাধ্যম দ্বারা আমাদের পক্ষে সম্ভব নাও হতে পারে। চেষ্টা করলেও প্রশ্নকারীর পিপাসা মিটানো সম্ভব হবে না। প্রত্যেক বিষয়ে আমরা শুধুমাত্র সামান্য আলোকপাত করে থাকি।


উপরোক্ত প্রশ্নগুলোর উত্তরের জন্য আপনার এলাকার সংশ্লিষ্ট উলামায় কেরামের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করা আপনার জন্য কল্যাণকর হবে বলেই আমাদের ধারণা।


তাছাড়া ইলম অর্জনের জন্য সফর করা অত্যান্ত  জরুরী। এবং কষ্ট করে ইলম অর্জন করাই আমাদের  আকাবির আসলাফদের রীতি ও নীতি। এদিকেই কুরআনের এই আয়াত ইঙ্গিত দিচ্ছে,

 ۚفَلَوْلَا نَفَرَ مِن كُلِّ فِرْقَةٍ مِّنْهُمْ طَائِفَةٌ لِّيَتَفَقَّهُوا فِي الدِّينِ وَلِيُنذِرُوا قَوْمَهُمْ إِذَا رَجَعُوا إِلَيْهِمْ لَعَلَّهُمْ يَحْذَرُونَ

তাদের প্রত্যেক দলের একটি অংশ কেন বের হলো না, যাতে দ্বীনের জ্ঞান লাভ করে এবং সংবাদ দান করে স্ব-জাতিকে, যখন তারা তাদের কাছে প্রত্যাবর্তন করবে, যেন তারা বাঁচতে পারে। (সূরা তাওবাহ-১২২)


সুতরাং আপনাকে বলবো, আপনি বিস্তারিত জানতে স্ব-শরীরে কোনো দারুল ইফতায় যোগাযোগ করবেন।

প্রশ্ন করার জন্য আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ। আল্লাহ তা'আলা আপনার ইলম অর্জনের স্পৃহাকে আরো বাড়িয়ে দিক, আমীন।


প্রত্যেকটা বিষয়ের সাথে নিম্নের হাদীসকে লক্ষ্য রাখবেন।

হাসান ইবনে আলী রাযি থেকে বর্ণিত রয়েছে।

ﻭﻋﻦ ﺍﻟﺤَﺴَﻦِ ﺑﻦ ﻋَﻠﻲٍّ ﺭﺿﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋﻨﻬﻤﺎ ﻗَﺎﻝَ : ﺣَﻔِﻈْﺖُ ﻣِﻦْ ﺭَﺳُﻮﻝ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﷺ : « ﺩَﻉْ ﻣَﺎ ﻳَﺮِﻳﺒُﻚَ ﺇِﻟﻰ ﻣَﺎ ﻻ ﻳﺮِﻳﺒُﻚ » ﺭﻭﺍﻩُ ﺍﻟﺘﺮﻣﺬﻱ ﻭﻗﺎﻝ : ﺣﺪﻳﺚٌ ﺣﺴﻦٌ ﺻﺤﻴﺢٌ

তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ কে বলতে শুনেছি।তিনি বলেন,সন্দেহ যুক্ত জিনিষকে পরিহার করে সন্দেহমুক্ত জিনিষকে গ্রহণ করো।(সুনানু তিরমিযি-২৪৪২)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...