আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
45 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (4 points)
reshown by
‎আবদুল্লাহ বিন মুগাফ্‌ফাল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তার ছেলেকে বলতে শুনলেন, ‘‘হে আল্লাহ্‌! আমি জান্নাতে প্রবেশ করে আপনার নিকট জান্নাতের ডান দিকের শ্বেত প্রাসাদ প্রার্থনা করি’’। তখন তিনি বলেন, হে বৎস! আল্লাহ্‌র নিকট জান্নাত প্রার্থনা করো এবং জাহান্নাম থেকে আশ্রয় চাও। কেননা আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলতে শুনেছিঃ অচিরেই এমন এক সম্প্রদায়ের আবির্ভাব হবে যারা দুআ’য় অতিরঞ্জন করবে। [৩১৯৬]

ফুটনোট: [৩১৯৬] আবূ দাউদ ৯৬, আহমাদ ১৬৩৫৪, ১৬৩৫৯, ২০০৩১। মিশকাত ৪১৮, সহীহ আবূ দাউদ ৮৬, ইরওয়া’ ১৪০।

১)উপরের হাদিসটি দোয়া করার ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করেছে।আমার প্রশ্ন হলো দুনিয়াবি কিছু চাওয়ার ক্ষেত্রে সীমালঙ্ঘন করছি কিনা কিভাবে বুঝতে পারি?

২)কোনো কিছু নির্দিষ্ট করে চাওয়া কি সীমালঙ্ঘন?
৩)আমি দেশের বাইরে সেটেল হতে চাচ্ছি,বিভিন্ন দেশে চেষ্টা করছি।এখন আমি যদি "আল্লাহ আমাকে বাইরে সেটেল্ড করে দাও" না বলে বলি "আল্লাহ আমাকে অমুক শহরেই সেটেল্ড করে দাও" এটা কি বাড়াবাড়ি/সীমালঙ্ঘন হবে?

1 Answer

0 votes
by (54,510 points)
reshown by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

https://ifatwa.info/14196/   নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে,

এমন কিছু মুহুর্ত আছে,যেই সময়ে দোয়া করলে দোয়া কবুল হওয়া সংক্রান্ত হাদীস শরীফে এসেছে। রাতের শেষভাগে দোয়া করা। হাদীস শরীফে এসেছেঃ  

حَدَّثَنَا الْقَعْنَبِيُّ، عَنْ مَالِكٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، وَعَنْ أَبِي عَبْدِ اللهِ الأَغَرِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " يَنْزِلُ رَبُّنَا تَبَارَكَ وَتَعَالَى كُلَّ لَيْلَةٍ إِلَى سَمَاءِ الدُّنْيَا حِينَ يَبْقَى ثُلُثُ اللَّيْلِ الآخِرُ، فَيَقُولُ : مَنْ يَدْعُونِي فَأَسْتَجِيبَ لَهُ، مَنْ يَسْأَلُنِي فَأُعْطِيَهُ، مَنْ يَسْتَغْفِرُنِي فَأَغْفِرَ لَهُ " .

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আমাদের মহা মহীয়ান রবব প্রতি রাতের এক তৃতীয়াংশ অবশিষ্ট থাকতে দুনিয়ার নিকটবর্তী আকাশে অবতরণ করে বলেন, আছে কেউ আমাকে ডাকবে, আমি তার ডাকে সাড়া দিবো? আছে কেউ আমার কাছে চাইবে, আমি তাকে দান করবো? আছে কি কেউ আমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবে, আমি তাকে ক্ষমা করে দিবো।

(বুখারী (অধ্যায় : তাহাজ্জুদ, অনুঃ রাতের শেষ ভাগে ও সলাতে দু‘আ করা, হাঃ ১১৪৫), মুসলিম (অধ্যায় : মুসাফিরের সলাত, অনুঃ রাতের শেষাংশে দু‘আ যিকিরে উৎসাহ দান)

এটি দোয়া কবুলের সর্বশ্রেষ্ঠ সময়। প্রতি রাতে এ সময় আল্লাহ তাআলা প্রথম আসমানে নেমে আসেন এবং বান্দার ফরিয়াদ শোনেন।

আজান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়ের দোয়ারাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আজান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়ের দোয়া ফিরিয়ে দেয়া হয় না।’ (আবু দাউদ)

বিস্তারিত জানুনঃ  https://ifatwa.info/5249/

(০২) দোয়া কবুল না হওয়ার বেশকিছু কারন রয়েছে।  যেমন: খাদ্য হারাম হলে দোয়া কবুল হবেনা।

 আল্লাহ্ তাআলা বলেন, “আল্লাহ্ তো কেবল মুত্তাকীদের থেকেই কবুল করেন”[সূরা মায়েদা, আয়াত: ২৭]

ইবাদতে ও দুআ কবুল হওয়ার ব্যাপারে হালাল খাদ্যের অনেক প্রভাব রয়েছে। খাদ্য হালাল না হলে ইবাদত ও দুআ কবুল হওয়ার যোগ্য হয় না। হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

« أيها الناس إن الله طيب لا يقبل إلا طيبا وإن الله أمر المؤمنين بما أمر به المرسلين فقال ( يا أيها الرسل كلوا من الطيبات واعملوا صالحا إنى بما تعملون عليم) وقال (يا أيها الذين آمنوا كلوا من طيبات ما رزقناكم) ». ثم ذكر الرجل يطيل السفر أشعث أغبر يمد يديه إلى السماء يا رب يا رب ومطعمه حرام ومشربه حرام وملبسه حرام وغذى بالحرام فأنى يستجاب لذلك ».

তরজামা: হে লোক সকল! আল্লাহ তাআলা হলেন পবিত্র। আর তিনি পবিত্রতা ছাড়া কবুলই করেন না। আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে তাই নির্দেশ দিয়েছেন যা রাসূলগণকে দিয়েছেন।  তিনি বলেছেন “হে রাসূলগণ পবিত্র বস্তু আহার করুন এবং সৎকাজ করুন। আপনারা যা করেন সে বিষয়ে আমি পরিজ্ঞাত”।  (সূরা মুমিনুন-৫২)

তিনি অন্যত্র ইরশাদ করেন “হে ঈমানদারগণ, তোমরা পবিত্র বস্তু-সামগ্রী আহার কর, যেগুলো আমি তোমাদেরকে রুযী হিসাবে দান করেছি। (সূরা বাকারহ -১৭২)

 এরপর এক লোকের কথা বললেন যে দীর্ঘ সফর করে আসে। এবং অত্যন্ত ব্যাকুলভাবে দু‘ হাত তুলে আল্লাহর দরবারে বলতে থাকে, ইয়া পরওয়ারদেগার! ইয়া রব! । কিন্তু যেহেতু সে ব্যক্তির পানাহার সামগ্রী হারাম উপার্জনের, পরিধেয় পোষাক- পরিচ্ছদ হারাম পয়সায় সংগৃহীত, এমতাবস্থায় তার দেয়া কি করে কবুল হতে পারে?।  (মুসলিম শরীফ, হাদীস নং ২৩৯৩)

বিস্তারিত জানুনঃ  https://ifatwa.info/5249/

আত্মীয়তা সম্পর্ক ছিন্নকারীর দোয়া কবুল হবেনা।

মা বাবাকে যারা কষ্ট দেয়,তাদের দোয়া কবুল হয়না।

(০৩)পবিত্রতা অর্জন: পবিত্রতা অর্জনের পর দোয়া করলে আল্লাহতায়ালা সেই দোয়া কবুল করবেন।

বিনয়ের সঙ্গে দোয়া করা: বিনয়ের সঙ্গে দু’হাত তুলে দোয়া করা।

মিনতিভরা কন্ঠে দোয়া করা: মিনতি ও নম্রতার সঙ্গে দোয়া করলে তা ইবাদত হিসেবে গন্য হয়।

দু’হাত তুলে দোয়া করা: বিনয়, নম্রতা ও দাসত্ব প্রকাশ করার জন্য দোয়ার সময় দু’হাতের তালু আসমানের দিকে রাখতে হবে।

আল্লাহর প্রশংসা ও দরুদ শরীফসহ দোয়া করা : আল্লাহর প্রশংসা ও দরুদ শরীফসহ দোয়া করা। আল্লাহর প্রশংসা যেমন, ‘আলহামদু লিল্লাহি রব্বিল আলামিন’ দোয়ার শুরুতে বলা। এছাড়া ইসমে আজমের সহিত দোয়া করা উত্তম।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

১. দুনিয়াবী কোন বিষয়ে দোয়া চেষ্টা করার পর যদি আল্লাহ তাআলা কাঙ্ক্ষিত বিষয়টি দিয়ে দেন এর অর্থ হলো যে, আল্লাহ তা'আলা আপনার দোয়া কবুল করেছেন। কিন্তু যে বিষয়ে দোয়া করা হচ্ছে, উক্ত বিষয় যদি আপনি না পেয়ে থাকেন বা আপনার হস্তগত না হয়, এতে আল্লাহ তায়ালার প্রতি অভিমান বা অসন্তুষ্টি প্রকাশ করা যাবে না। হতে পারে আপনার কোন কল্যাণ নেই। বিধায়, আল্লাহ তায়ালা আপনাকে তা দান করছেন না। কিন্তু এরপরেও যদি কোন ব্যক্তি উক্ত বিষয় নিয়ে বারংবার আল্লাহ তাআলার প্রতি অভিযোগ বা আপত্তি উপস্থাপন করে তা হবে বাড়াবাড়ি করার নামান্তর।

২-৩. কোন কিছু নির্দিষ্ট করে দোয়া করা জায়েজ আছে। তবে দোয়াটি এমন হওয়া চাই যে,  “হে আল্লাহ উক্ত বস্তুটি যদি আমার জন্য কল্যাণকর হয়, তাহলে আপনি আমাকে তা দান করুন”। ঠিক তেমনি ভাবে আপনার প্রত্যাশা অনুযায়ী এমন দোয়া করা উচিত যেহে আল্লাহ অমুক দেশে যাওয়া যদি আমার জন্য কল্যাণ করা হয় তাহলে সেখানে যাওয়ার আপনি দ্রুত ব্যবস্থা করে দিন। আর যদি কল্যাণকর না হয় তাহলে তাহলে আপনি আমার জন্য এর চেয়ে উত্তম ফায়সালা করুন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...