আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
111 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (5 points)

আসসালামুয়ালাইকুম
আমি সত্য কথা বলা, গীবত করা এবং পাপ লুকানো এই তিন টি বিষয়ে confused হয়ে গেছি।
প্রত্যেক মুসলিম এর ই সরবাবস্থায় সত্য কথা বলা উচিত এবং মিথ্যা পরিহার করা উচিত। ৩ টি অবস্থা আছে যেখানে মিথ্যা বলা জায়েয। 
এখন অনেক সময় গীবত ও তো সত্য কথা। তাহলে আমরা কোন কোন পয়েন্ট মাথায় রাখলে গুলিয়ে ফেলবো না। আমি ৬ টা অবস্থার ব্যাপারে জেনেছি এবং আমি নিজে কিছু পয়েন্ট নিজের সুবিধার জন্য বানিয়েছি।
অন্যায়কারীর অনুপথিতিতে বলা- 
১। নিজে অন্যায়ের শিকার হলে আমি জালিম সম্বন্ধে অপর কে জানাতে পারব। সেইটা যেকোনো কারণে যাকে খুশী। 
২। প্রকাশ্য পাপী কে নিয়ে সমালোচনা করলে গীবত হয়না।(এমন leader যে অনেক মানষ এর উপর নিরজাতন করেছে)
৩। নির্দিষ্ট নাম না বলে অনাওকারী সম্বন্ধে বললে গীবত হয়না। 
৪। উমুক জায়গার লোক সবাই এমন। এ ধরনের কথা বলা যদিও ঠিক নয় তবে গীবত হয় না। 
৫। অমুসলিমদের নাম ধরে physical appearance ছাড়া কিছু বললে গীবত হয়না তবে বলা উচিত না।
এই পয়েন্ট গুলো কি ঠিক? ভুল হলে সংশধোন করে দিবেন দয়া করে।


পাপ গোপন করাঃ কোন মুসলিম গোপনে(কোন মানুষ তাকে দেখেনি), পাপ করে ফেললে সেই গুনাহ প্রকাশ না করে তাওবাহ করে নিজেকে সংশোধন করবে। এখানে পাপ বলতে কি সেই পাপ যেগুলা আল্লাহ অকাট্য দলিল দারা  নিষেধ করেছেন( যেমনঃ হত্যা, জিনাহ) নাকি তার সাথে এইসব পাপ ও অন্তর্ভুক্ত যেমন traffic signal ভাঙ্গা, পরিক্ষায় দেখে লেখা, movie দেখা ( যে ধরণের কাজ গুলো হারাম হয় কেবল মাত্র কারন থাকার কারণে। কারন অনুপস্থিত হলে সেইগুলও আর গুনাহ নয়) । এই পাপ গুলোর ক্ষেত্রে -
১। নিজে কাউকে না বলা।
২। অন্য কেউ জিজ্ঞেস করলে 
- যদি প্রকাশ করলে ক্ষতি হয় তাহলে না বলা
- যদি প্রকাশ না করলে বড় ক্ষতি হয় তাহলে বলে দেয়া
এগুলো কি ঠিক?
৩।আমার অন্যায় যদি মানুষ হাতে নাতে ধরে ফেলে তাহলে গোপন করতে হবে নাকি বলে দিতে হবে? কারণ এই অবস্থায় না বললে মানুষ আমাকে মুনাফিক বলবে। আর আর বেশি বিপদে পড়তে হবে। আমাকে boycott করা হতে পারে। এই পরিস্থিতে তে কি গোপন করতে হয় নাকি বলে দিতে হয়। (আল্লাহ দলিলে যেগুলো হারাম বলেছেন আর যেগুলো নানা কারণে হারাম তবে কারণ অনুস্পথিত থাকলে হালাল হয়ে যায়)।

.৪।কোন শারীয়াহ আদালতে আমার অপরাধের কারণে ধরা হলে সেইখানে কি সত্য কথা বললে বেশি লাভ আখেরাতের নাকি গোপন করলে বেশি লাভ আখিরাতে?

৫। আমি বান্দার হক সংক্রান্ত অন্যায় করলে কি তাকে আকবারিয়ে বলে দিতে হবে? নাকি সুধু ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে? আর সে যদি প্রমান সহ আমাকে ধরে তখন কি করব? প্রমান ছাড়া সন্দেহ করল তবে তাকে জানালে বেশি ক্ষতি নাই তখন কি বলে দিব আর ক্ষমা চাবো ?

৬। আমি কাউকে অন্যের অধিকার হরণ করতে দেখলে তাকে নাসিহাহ করার পর সেই অন্যায়কারী ভাল না হলে, যার অধিকার হরণ করা হচ্ছে তাকে কি বলে দিতে হবে? কারণ এতে তার অনেক বিপদ হতে পারে?

৭। প্রকাশ্যভাবে জাদের গোপন অন্যায় প্রকাশিত হয়ে গেছে তাদের নিয়ে হাসি তামাশা করা কি হারাম? যদি হাসি তামাশা না করে নিজেদের ইস্লাহ এর জন্য নাম ধরে বলা হয় তাহলে কি গুনাহ হবে? 
এই বিষোয়গুলো আমি অনেক গুলিয়ে ফেলেছি। দয়া করে confusion দূর করলে অনেক উপকৃত হতাম।

Suicide:
আমি যদি এমন কোন পরিস্থিতিতে পরি যেখানে সবার জীবন বিপদের মুখে। কোন পদক্ষেপ না নিলে সবাই মারা যাবে। একজন কে অন্নদের বাচাতে সেচ্ছায় প্রান দিতে হবে। এই পরিস্থিতিতে যদি নিজে সেচ্ছায় অন্যদের বাচানোর নিয়তে জীবন দিয়ে দেই তাহলে কি আত্মহত্যা হবে নাকি আমি শহিদ হব। (in general case)
particularly-

১। কোন দেহরক্ষী যার protection এ নিয়োজিত তাকে বাচানর লক্ষে যদি গুলিবিদ্ধ হন। মানে গুলির সামনে চলে আসেন কেবলমাত্র ওই ব্যাক্তি বা অই ব্যাক্তির নির্দিষ্ট ব্যাক্তিকে  বাচাতে তাহলে কি suicide হবে?( muslim and non muslim আলাদা করে বইলেন)
২।কোথাও আগুন লাগলে ভিতরে মানুষকে বাচাতে গিয়ে মারা গেলে কি তা suicide হবে?

অনুগ্রহ করে নির্দিষ্ট করে উত্তর দিবেন please

 


১। পাপ 
 

1 Answer

0 votes
by (59,970 points)

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://www.ifatwa.info/1715  নং ফাতওয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে,

যে সমস্ত কারণে গিবত করা বৈধ হয়।

 أمور تباح فيها الغيبة: الأصل في الغيبة التحريم للأدلة الثابتة في ذلك، ومع هذا فقد ذكر النووي وغيره من العلماء أمورا ستة تباح فيها الغيبة لما فيها من المصلحة؛ ولأن المجوز في ذلك غرض شرعي لا يمكن الوصول إليه إلا بها وتلك الأمور هي:

কুরআন-হাদীসের অসংখ্য দলীল প্রমাণ থাকায় গীবত মূলত হারাম। তবে ইমাম নববী রাহ সহ অনেক উলামায়ে কেরাম ছয়টি বিষয়ে গীবতের অনুমোদন দিয়ে থাকেন। বিভিন্ন মুসলিহত ও হেকমত থাকর ধরুণই উলামায়ে কেরাম মূলত এ অনুমতি দিয়ে থাকেন। শরীয়য়ত অনুমোদিত কিছু উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে এই রুখসত প্রদান করা হচ্ছে, কেননা গীবত ব্যতীত এই উদ্দেশ্য হাসিল হওয়া প্রায়-ই অসম্ভব।


(এক) জালিমের জুলুম থেকে বাঁচতে বিচারকের নিকট জালিমের বিরুদ্ধে নালিশ/গিবত করা বৈধ। যেমন মজলুম ব্যক্তি বিচারকের নিকট গিয়ে বলল, অমুক ব্যক্তি আমার উপর জুলুম-নির্যাতন করেছে এবং আমার সাথে সে এমন এমন ব্যবহার করেছে। আমার অমুক অমুক জিনিষ সে ছিনিয়ে নিয়ে গেছে।


(দুই) মন্দকে পরিবর্তন করতে এবং গোনাহগারকে নেকির দিকে ফিরিয়ে নিয়ে আসতে কারো গীবত করা। যেমন এমন কারো কাছে গিয়ে গিবত করা, যে ব্যক্তি ঐ মন্দকাজ সম্পাদনকারীকে ধমক দিতে পারে, ইত্যাদি ইত্যাদি। শর্ত এই যে, মন্দকে বিদূরিত করার উদ্দেশ্যই থাকতে হবে।উদ্দেশ্য যদি অন্য কিছু হয় তখন কিন্তু গীবত করা জায়েয হবে না বরং হারাম হবে।


(তিন) ফাতাওয়া চাওয়ার সময় কারো গিবত করা। এভাবে যে,কেউ কোনো মুফতী সাহেবের নিকট গিয়ে বলল, আমার উপর আমার বাবা,ভাই জুলুম-নির্যাতন করতেছে।আমার উপর তাদের এমন জুলুম করার কি কোনো অধিকার আছে? এখন কিভাবে আমি তাদের জুলুম-নির্যাতন থেকে নাজাত পেতে পারি এবং নিজের অধিকারকে আদায় করে নিতে পারি? ইত্যাদি ইত্যাদি। প্রয়োজনের খাতিরে এমনটা জায়েয। তবে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হলো, নাম ঠিকানা নির্দিষ্ট না করে এভাবে বলা যে,এক ব্যক্তি অন্যজনের সাথে এমন আচরণ করছে কিংবা একজন স্বামী তার স্ত্রীর সাথে এমন এমন আচরণ করছে। তখন কাউকে নির্দিষ্ট করে পরিচয় প্রদান ব্যতীত উদ্দেশ্য হাসিল হয়ে যাবে। তাছাড়া নির্দিষ্ট করে কারো পরিচয় প্রদান করাও জায়েয আছে। যেমন হাদীসে বর্ণিত রয়েছে,হযরত হিনদাহ রাযি রাসূলুল্লাহ সাঃ এর কাছে গিয়ে নিজ স্বামী আবু সুফিয়ান রাযি এর নামে নালিশ করে বললেন,যে ইয়া রাসূলুল্লাহ সাঃ! আমার স্বামী আবু সুফিয়ান একজন কৃপন লোক। রাসূলুল্লাহ সাঃ তখন তার এমন নাম উল্লেখ-কে বাধা প্রদান করেননি।


(চার) মুসলমানকে কারো মন্দ থেকে বাঁচাতে গিবত করা। এটা পাঁচ ভাবে হতে পারে।যথাঃ- (১) হাদীসের রাবীদের দোষত্রুটি নিয়ে আলোচনা করা।এটা সর্বসম্মতিক্রমে জায়েয। এমনকি শরীয়তকে বাঁচানোর জন্য এটা ওয়াজিব পর্যায়ের। (২) বিয়ে-শাদীতে কোনো এক পক্ষের খোঁজ নিতে গিয়ে মাশওয়ারার সময় কারো সম্পর্কে সঠিক সংবাদ দেয়া। (৩) ক্রেতাকে অজ্ঞাতবশত কোনো দোষণীয় জিনিষ ক্রয় করতে দেখলে, তখন তাকে সে সম্পর্কে সতর্ক করে দেয়া।বিক্রেতাকে কষ্ট দেয়া বা ফাসাদ সৃষ্টি করার মনোভাব থাকলে তখন জায়েয হবে না। (৪) যদি কেউ দেখে যে একজন ফকিহ কোনো এক ফাসিক বা বিদাতি লোকের নিকট থেকে দ্বীন গ্রহণ করছে,তাহলে নসিহতের উদ্দেশ্যে ঐ ফকিহকে বাস্তব হাল সম্পর্কে জ্ঞাত করা উচিত। (৫) যদি কোনো ব্যক্তির উপর কারো অভিভাবকত্ব থাকে,কিন্তু সে কোনো কারণে ঐ ব্যক্তির উপর কর্তৃত্ব বাস্তবায়ন করে ওকে শাসন করতে পারে না, এমতাবস্থায় সে তার অভিভাবক (অর্থাৎ ঐ অভিভাবকের অভিভাবক) এর নিকট প্রকৃত অবস্থা বর্ণনা করতে পারবে।


(পাঁচ) প্রকাশ্যে গোনাহ কারী বা বিদআতে অংশগ্রহণ কারীর গীবত করা। সুতরাং সে যা প্রকাশ্যে করবে সেটার গীবত করা জায়েয। তবে এছাড়া তার অন্যান্য দোষ নিয়ে আলোচনা করা জায়েয হবে না।


(ছয়) পরিচয় দিতে গিয়ে গিবত হয়ে যাওয়া।যেমন যদি কেউ কোনো লক্বব দ্বারা প্রসিদ্ধ থাকে, যেমন আ'মশ, 'রাজ, আযরাক্ব, ক্বাসির, 'মা আক্বতা' ইত্যাদি। এগুলো দ্বারা কারো পরিচয় প্রদান জায়েয রয়েছে। কিন্তু কাউকে ছোট করার জন্য তার এ সমস্ত লক্বব ব্যবহার করা জায়েয হবে না। হ্যাঁ যদি এগুলো ছাড়া অন্য কিছু দ্বারা ঐ ব্যক্তির পরিচয় করিয়ে দেয়ার কোনো সুযোগ থাকে, তাহলে সেটা দ্বারাই পরিচয় করিয়ে দেয়া উত্তম হবে। (আল-মাওসু'আতুল ফেকহিয়্যাহ-৩১/৩৩৫)


আরো বিস্তারিত জানুন - https://www.ifatwa.info/1715

গীবতের কাফফারা-  https://ifatwa.info/84030/

কয় জায়গায় গীবত করা জায়েজ তা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন- https://ifatwa.info/54907/

আত্মহত্যা সম্পর্কে জানুন - https://ifatwa.info/72349/


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!


দ্বীনের পরিধি অনেক ব্যাপক, সকল বিষয়ে আলোচনা করা বা দিকনির্দেশনা দেওয়া স্বল্প পরিসরের এই ভার্চুয়ালি মাধ্যম দ্বারা আমাদের পক্ষে সম্ভব নাও হতে পারে। চেষ্টা করলেও প্রশ্নকারীর পিপাসা মিটানো সম্ভব হবে না। প্রত্যেক বিষয়ে আমরা শুধুমাত্র সামান্য আলোকপাত করে থাকি।


উপরোক্ত প্রশ্নগুলোর উত্তরের জন্য আপনার এলাকার সংশ্লিষ্ট উলামায় কেরামের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করা আপনার জন্য কল্যাণকর হবে বলেই আমাদের ধারণা।

সুতরাং আপনাকে বলবো, আপনি বিস্তারিত জানতে স্ব-শরীরে কোনো দারুল ইফতায় যোগাযোগ করবেন।

প্রশ্ন করার জন্য আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ। আল্লাহ তা'আলা আপনার ইলম অর্জনের স্পৃহাকে আরো বাড়িয়ে দিক, আমীন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...