আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
47 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (6 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারহমাতুল্লাহি ওবারকাতুহ
উস্তাদ,,,,বাড়িতে আমার মায়ের সাথে প্রায় কথা কাটাকাটি, রাগারাগি বা অনেক সময় আম্মু আমাকে রাগে মারেও ২ /১ টা। তখন আমার খুব রাগ উঠে আরও অন্য কারনে অনেক রাগ আর অভিমান হয় আমার তাই জন্য আম্মুর সাথে কথাই বলি না।কথা নিজে বলতে চাই কিন্তু অভিমানের কারনে মুখ দিয়ে বেরই হয় না, হয়তবা ইগোও আছে। আম্মু সেগুলো বলে জাস্ট ওগুলোর উত্তর দেই বা কাজ করতে  বললে চুপ চাপ করি।।।এভাবে করে ৭ দিন বা ১ মাস ও হয়ে যায়। তখন আল্লাহর কাছে চাই আল্লাহ সব ঠিক করে দাও। তখন দেয় ঠিক করে।।
১.আমার এখন প্রশ্ন হচ্ছে যে এই কথা না বলে থাকা বা এটার জন্য আম্মু মনে কষ্ট পেলে কি আমার কবিরা গুনাহ হবে?? আমি অনেক চেষ্টা করেও রাগ কন্ট্রল করতে পারি না, বান্ধুবির মতো আমার আর আম্মুর বেশির ভাগই জগরা লাগে। আমি কি খুব বড় অন্যয় করে ফেলি। আমি বিষয়টা কিভাবে ঠিক করে রাখবো একটু যদি বলতেন।
২.উস্তাদ আমার আর একটা প্রশ্ন হলো, অতীতের স্রিতি কিভাবে ভোলানো সম্ভব,প্রাক্তনের? এত চেষ্টার পরেও না চাইতেও প্রতিদিন মনে পড়ে দিন দিন আরও বেশি করে দুরবলতা আসে। এগুলো থেকে সম্পূর্ণভাবে বাচার উপায়গুলো জানাবেন দয়া করে।।।।।

1 Answer

0 votes
by (547,020 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
মাতাপিতার বৈধ আদেশ মানা, তাদের সাথে উত্তম আচরণ করা শরীয়ত কর্তৃক আবশ্যক ঘোষনা করা হয়েছে।

আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَوَصَّيْنَا الْإِنسَانَ بِوَالِدَيْهِ إِحْسَانًا ۖ حَمَلَتْهُ أُمُّهُ كُرْهًا وَوَضَعَتْهُ كُرْهًا ۖ وَحَمْلُهُ وَفِصَالُهُ ثَلَاثُونَ شَهْرًا

“আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহারের আদেশ দিয়েছি। তার মা তাকে কষ্টসহকারে গর্ভে ধারণ করেছে এবং কষ্টসহকারে প্রসব করেছে। তাকে গর্ভে ধারণ করতে ও তার স্তন্য ছাড়তে লেগেছে ত্রিশ মাস।” (সূরা আহকাফ-১৫)
 
সর্বদা পিতা মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করা ও তাদের কথা মান্য করা সন্তানের দায়িত্ব৷ 

আল্লাহ তায়ালা বলেন-

وَقَضَىٰ رَبُّكَ أَلَّا تَعْبُدُوا إِلَّا إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا ۚ إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِندَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلَاهُمَا فَلَا تَقُل لَّهُمَا أُفٍّ وَلَا تَنْهَرْهُمَا وَقُل لَّهُمَا قَوْلًا كَرِيمًا

তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যে, তাঁকে ছাড়া অন্য কারও এবাদত করো না এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব-ব্যবহার কর। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়; তবে তাদেরকে ‘উহ’ শব্দটিও বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না এবং বল তাদেরকে শিষ্ঠাচারপূর্ণ কথা। (সূরা বনী ইসরাঈল, ২৩)
 
হাদিস শরীফে এসেছে-

ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﻣُﺴْﻠِﻢُ ﺑْﻦُ ﺇِﺑْﺮَﺍﻫِﻴﻢَ، ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﺟَﺮِﻳﺮُ ﺑْﻦُ ﺣَﺎﺯِﻡٍ، ﻋَﻦْ ﻣُﺤَﻤَّﺪِ ﺑْﻦِ ﺳِﻴﺮِﻳﻦَ، ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ، ﻋَﻦِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗَﺎﻝَ ” ﻟَﻢْ ﻳَﺘَﻜَﻠَّﻢْ ﻓِﻲ ﺍﻟْﻤَﻬْﺪِ ﺇِﻻَّ ﺛَﻼَﺛَﺔٌ ﻋِﻴﺴَﻰ، ﻭَﻛَﺎﻥَ ﻓِﻲ ﺑَﻨِﻲ ﺇِﺳْﺮَﺍﺋِﻴﻞَ ﺭَﺟُﻞٌ ﻳُﻘَﺎﻝُ ﻟَﻪُ ﺟُﺮَﻳْﺞٌ، ﻛَﺎﻥَ ﻳُﺼَﻠِّﻲ، ﻓَﺠَﺎﺀَﺗْﻪُ ﺃُﻣُّﻪُ ﻓَﺪَﻋَﺘْﻪُ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺃُﺟِﻴﺒُﻬَﺎ ﺃَﻭْ ﺃُﺻَﻠِّﻲ . ﻓَﻘَﺎﻟَﺖِ ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﻻَ ﺗُﻤِﺘْﻪُ ﺣَﺘَّﻰ ﺗُﺮِﻳَﻪُ ﻭُﺟُﻮﻩَ ﺍﻟْﻤُﻮﻣِﺴَﺎﺕِ . ﻭَﻛَﺎﻥَ ﺟُﺮَﻳْﺞٌ ﻓِﻲ ﺻَﻮْﻣَﻌَﺘِﻪِ، ﻓَﺘَﻌَﺮَّﺿَﺖْ ﻟَﻪُ ﺍﻣْﺮَﺃَﺓٌ ﻭَﻛَﻠَّﻤَﺘْﻪُ ﻓَﺄَﺑَﻰ، ﻓَﺄَﺗَﺖْ ﺭَﺍﻋِﻴًﺎ، ﻓَﺄَﻣْﻜَﻨَﺘْﻪُ ﻣِﻦْ ﻧَﻔْﺴِﻬَﺎ ﻓَﻮَﻟَﺪَﺕْ ﻏُﻼَﻣًﺎ، ﻓَﻘَﺎﻟَﺖْ ﻣِﻦْ ﺟُﺮَﻳْﺞٍ . ﻓَﺄَﺗَﻮْﻩُ ﻓَﻜَﺴَﺮُﻭﺍ ﺻَﻮْﻣَﻌَﺘَﻪُ، ﻭَﺃَﻧْﺰَﻟُﻮﻩُ ﻭَﺳَﺒُّﻮﻩُ، ﻓَﺘَﻮَﺿَّﺄَ ﻭَﺻَﻠَّﻰ ﺛُﻢَّ ﺃَﺗَﻰ ﺍﻟْﻐُﻼَﻡَ ﻓَﻘَﺎﻝَ ﻣَﻦْ ﺃَﺑُﻮﻙَ ﻳَﺎ ﻏُﻼَﻡُ ﻗَﺎﻝَ ﺍﻟﺮَّﺍﻋِﻲ . ﻗَﺎﻟُﻮﺍ ﻧَﺒْﻨِﻲ ﺻَﻮْﻣَﻌَﺘَﻚَ ﻣِﻦْ ﺫَﻫَﺐٍ . ﻗَﺎﻝَ ﻻَ ﺇِﻻَّ ﻣِﻦْ ﻃِﻴﻦ

আবূ হুরায়রা (রা:) থেকে বর্ণিত নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তিন জন শিশু ব্যতিত আর কেউ দোলনায় থেকে কথা বলেননি। বনী ইসরাঈলে এক ব্যক্তি ছিলো যাকে ‘জুরাইজ’ বলে ডাকা হতো একদা ইবাদাতে (নফল নামাজে) রত থাকা অবস্থায় তার মা এসে তাকে ডাকলো। সে ভাবল আমি কি তার ডাকে সাড়া দেব, না কি সালাত আদায় করতে থাকবো (জবাব না পেয়ে) অতপঃর তার মা বলল, ইয়া আল্লাহ! ব্যভিচারিণীর চেহারা না দেখা পর্যন্ত তুমি তাকে মৃত্যু দিওনা। জুরাইজ তার ইবাদাত খানায় থাকতো। একবার তার কাছে একটি মহিলা আসলো, সে (অসৎ উদ্দেশ্যে ) তার সাথে কথা বলল, কিন্তু জুরাইজ তা অস্বীকার করল। তারপর মহিলাটি একজন রাখালের নিকট গেল এবং তাকে দিয়ে মনের বাসনা পূরণ করল। পরে সে একটি পুত্র সন্তান প্রসব করলো। তাকে জিজ্ঞাসা করা হলো, এটি কার থেকে? স্ত্রী লোকটি বলল, জুরাইজ থেকে লোকেরা তার কাছে আসল এবং তার ইবাদাত খানা ভেঙ্গে দিল। আর তাকে নীচে নামিয়ে আনল ও তাকে গালি গালাজ করল। তখন জুরাইজ উযূ সেরে ইবাদাত করল.. এরপর নবজাত শিশুটির নিকট এসে তাকে জিজ্ঞাসা করল। হে শিশু! তোমার পিতা কে? সে জবাব দিল সেই রাখাল। তারা (বনী ইসরাঈলের লোকেরা) বলল, আমরা আপনার ইবাদতখানাটি সোনা দিয়ে তৈরি করে দিচ্ছি। সে বলল, না বরং মাটি দিয়ে(করো) [সহীহ বুখারী,কিতাবুল-আহাদিসে আম্বিয়া, হাদীস নং-৩১৯৪]

চার মাযহাব সম্বলীত সর্ব বৃহৎ ফেক্বাহী গ্রন্থ 'আল-মাওসু'আতুল ফেক্বহিয়্যায়' রয়েছে,
" ﻃﺎﻋﺔ ﺍﻟﻤﺨﻠﻮﻗﻴﻦ - ﻣﻤّﻦ ﺗﺠﺐ ﻃﺎﻋﺘﻬﻢ – ﻛﺎﻟﻮﺍﻟﺪﻳﻦ ، ﻭﺍﻟﺰّﻭﺝ ، ﻭﻭﻻﺓ ﺍﻷﻣﺮ : ﻓﺈﻥّ ﻭﺟﻮﺏ ﻃﺎﻋﺘﻬﻢ ﻣﻘﻴّﺪ ﺑﺄﻥ ﻻ ﻳﻜﻮﻥ ﻓﻲ ﻣﻌﺼﻴﺔ ، ﺇﺫ ﻻ ﻃﺎﻋﺔ ﻟﻤﺨﻠﻮﻕ ﻓﻲ ﻣﻌﺼﻴﺔ ﺍﻟﺨﺎﻟﻖ " ﺍﻧﺘﻬﻰ
যাদের আদেশ-নিষেধ এর অনুসরণ শরীয়ত কর্তৃক ওয়াজিব।যেমন-মাতাপিতা,স্বামী,সরকারী বিধিনিষেধ,এর অনুসরণ ওয়াজিব।
এ হুকুম ব্যাপক হারে প্রযোজ্য হবে না বরং ঐ সময়-ই প্রযোজ্য হবে যখন তা গুনাহের কাজ হবে না।কেননা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত রয়েছে আল্লাহর অবাধ্যতায় কোনো মাখলুকের অনুসরণ করা যাবে না।(২৮/৩২৭)

মাতাপিতার আদেশকে মান্য করা মূলত তিনটি মূলনীতির আলোকে হয়ে থাকে।
(১) তাদের আদেশ কোনো মুবাহ বিষয়ে হতে হবে।কোনো ওয়াজিব তরকের ব্যাপারে হতে পারবে না।এবং কোন হারাম কাজের জড়িত হওয়ার জন্যও হতে পারবে না।
(২)যে কাজের আদেশ তারা দিবেন,এতে তাদের ফায়দা থাকতে হবে,বা শরীয়তের পছন্দসই কাজ হতে হবে।
(৩)যে কাজের আদেশ দিচ্ছেন,তা তাদের সন্তানদের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারবে না।

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/1707

এ সম্পর্কে আরো জানুনঃ-https://www.ifatwa.info/1722

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
প্রশ্নের বিবরন মতে এভাবে আপনার আম্মুর সাথে রাগারাগির দরুন আপনার গুনাহ হবে।
কথা বন্ধ রাখার দরুন আপনার গুনাহ হবে।

হ্যাঁ, বিষয়টি যদি এমন হয় যে আপনার আম্মুর সাথে আপনার কথা হলেই ঝগড়াঝাটি হয়,রাগারাগি হয়,সেক্ষেত্রে নিজেকে এ থেকে বাঁচানোর আপনার আম্মুর সাথে কথা বলা কমিয়ে দিতে পারেন।
তবে তার কথার জবাব দিবেন,কাজের আদেশ দিলে সেটা করবেন,বাসাবাড়ির কাজে সহায়তা করবেন,নিয়মিত দেখা সাক্ষাৎ এর সময় কমপক্ষে সালাম বিনিময় করবেন।

(০২)
এক্ষেত্রে করনীয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...